![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তিন মাস ভোগার পর খালেদ খান মারা গেল। দেনার দায়ে আবদ্ধ হলো মাজেদা বিবি। মাজেদা নিরুপায় তার উপর আবার বয়াস্ত মেয়ে। মেয়েতো নয় যেন ময়না পাখির ছা। বাবা তাকে সোনামনি বলে ডাকতো। নীরব দুটি চোখ। যৌবনের জোছনা খেলছে তার সর্বাঙ্গে। সারাদিন শুধু স্বপ্ন আঁকে। চাচাতো ভাই মনিরই যেন তার সব। তার স্বাদ,স্বপ্ন, সাধনা। বাবাই একদিন বলেছিল, মনির ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেবে। সেদিন থেকেই শুরু হয়েছিল স্বপ্ন বোনা।
মনি নবম শ্রেণির ছাত্রী। ছাত্রী হিসাবে বেশ ভালো। দুই গ্রাম ছেড়ে নিতাই পুরে তার স্কুল। অনেক দূরের পথ। আগে মনির তাকে স্কুলে নিয়ে যেত। কিন্তু তার কলেজে যাওয়ার পর এখন একাই যায়। একদিন মহিনুল তার পথ আটকিয়ে দাঁড়িয়েছিল। সে কিছু বলতে চায়। মনি তাকে পাত্তাই দেয়নি। শুধু মহিনুলকে নয় কাউকেই সে পাত্তা দেয়নি।
বাবার শোক কাটিয়ে না উঠতেই মতিন শেখ টাকার চাপ দিতে লাগল। পৃথিবীর সব শোকের চেয়ে বড় শোক হলো টাকার। মতিন সেই শোক চেপেছিল এতোদিন। সে আর সবুর করতে চায় না। মাজেদাকে তাগাদা দেয়। মাজেদা শুধু সময় চায়। মতিন আর সময় দিতে চায় না।
হঠাৎ করে একটা প্রস্তাব আসে। প্রস্তাবটা ভালো, মনির বিয়ে। কিন্তু বাকিটা খুব খারাপ। মাজেদা রাজী হলো না। রাজী হওয়ার মত প্রস্তাব নয়। সকল জমি-জমার দলিল মতিনের কাছে তবু। মাজেদা জমি বাড়ি ফেলে পালিয়ে যেতে চাইল। তাতে মনি রাজী হলো না। তারা কোথায় উঠবে? বিপদ তাদের পিছু নিয়েছে। ওরা যেখানে যাবে বিপদ ঘটাবেই। পথে হয়তো আরো বড় বিপদ হতে পারে ।
মতিনের সাথে মনির বিয়ে হলো। মাজেদা জমি-জমার দলির সহ সকল দেনার মুক্তি পেল। আরো মুক্তি পেল কন্যা দায় থেকে। শুধু মনির চোখে বেড়ে উঠল জল।
মনি মতিনের তিন নম্বর স্ত্রী হিসাবে এ বাড়িতে প্রবেশ করল। বেটার হাসি যেন ধরে না। ভাঙ্গা দাঁতের ফাঁকা দিয়ে হাসির বৃষ্টি ঝরছে। এ হাসির ঝলকে বাকী দাঁতগুলো পড়ে যাওয়ার আগাম সংকেত পাচ্ছে। চিকন দাড়িতে যেন বাতাস ধরছে। মনি নীরব। এ রাতটি সবার জীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ রাত হলেও মনির জীবনে সবচেয়ে দুঃখের রাত। এই রাতের স্বপ্নে সে যাকে চেয়েছিল সে আয়নায় ভিন্ন রূপ। একটা ভাসমান ঘাটের মড়া।
মতিনের ছেলে কলেজে পড়ে। থাকে শহরে। খুব একটা বাড়ি আসে না। আসার দরকারও হয়না। কোনদিন টাকারও অভাব হয়নি। সকালে ঘুম থেকে মনি মতিনের দিকে তাকাল। লিকলিকে একটা শরীর । সমস্ত হাড় গোণা যায়। মনির চোখের জল জলজল করছে। সে জলে একটা সব হারানো প্রশ্ন, অগ্নি বানের ফূলকি। কি পেলে তুমি আমাকে পেয়ে? আমি সেই তোমার আগেরই জিনিস। কি স্বাদ পেলে আমার ভিতরে? কিন্তু ভাঙ্গলে আমার সারা জীবনের সাধনার ধন, অক্ষত ভান্ডার। আমি তিলে তিলে যা আমার প্রাণ পুরুষের জন্য জমা রেখেছিলাম। মনির মাথা এলোমেলো হয়ে এলো। কয়েকটুকরো মেঘ ভেসে ভেসে তার নীল আকাশকে কালচে করে দিয়েছে। ওর চোখে শুধু অসহায় নীরব কান্না। ও এখন ভেঙ্গে যাওয়া আয়না।
দশদিন কাটল। মনি মায়ের বাড়ি এলো। মনির ভাইও এসেছে। মনি বসে বসে মনির ভাইয়ের কথা ভাবছে। হায়! মনির ভাই, তুমি একবারও বাড়ি এলি না, একটা চিঠিও দিলি না, একটা কথাও বললি না। বললি না, মনি ভালো থাকিস। মনির রাগ হলো। আর কোন দিন মনির ভাইয়ের সাথে কথা বলবে না। বলবে না, তুই সুখী হস। মনির তার কে? কেন বলবে?
মনি ঘর থেকে বেরুল। ইচ্ছা মনিরকে একটু দেখবে। মনতো আর মানে না। পুরানো সেই জাম গাছ তলে এসে দাঁড়াল। গাছের সাথে হেলান দিল। এ গাছটা কত ঘটনার সাক্ষী। মনির মনিকে দেখে গাছতলায় এলো। মনি যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। মনির তার পুরানো অভ্যাস ত্যাগ করতে পারল না। মনির হাত টেনে ধরল। মনি ঘরে মনিরের দিকে তাকাল। ওর চোখে জল। সমস্ত না বলা কথার বেদনা। মনির হাত ছেড়ে দিল। মনি চলে গেল। মনির গাছ তলায় দাঁড়াল। ও বুঝতে চেষ্টা করল মনি তাকে কি বলে গেল। মনির সাথে মুখ দেখাতে মনির লজ্জা করল। নিজেকে পাপী ভাবল। এ দেহ নিয়ে মনিরের সামনে সে যাবে না।
মনি স্বামীর বাড়ি চলে গেল। কিন্তু এখানে শান্তি নেই। বাবার মৃত্যুর সাথে সাথে ওর শান্তির মৃত্যু ঘটছে। ও নীরবে বসে আছে। বুড়ো এসে বলল, “মহিনুলকে একটা চিঠি লিখ সে যেন তাড়াতাড়ি বাড়ি আসে। আগে পাশের বাড়ি এসে চিঠি লিখতে হতো মতিনের সে অভাবটা কেটে গেছে।
মনি ছিঠি লিখছে কিন্তু চিঠির ভাষা ধীরে ধীরে যেন কেমন হয়ে আসছে। মনিরের কাছে না বলা কথাগুলো নীরবে ফুটে উঠছে কখনও বলা হয়ে ওঠেনি। এ চিঠি যেন ওর হৃদয়ের আয়না। মনি চিঠি ছিড়ে ফেলল। আবার লিখল। ইতি লিখে থমকে গেল। কি লিখবে এখানে? কিছুই লিখল না। পরের দেখল চিঠি বদল হলেও কথা বদল হয়নি। এবারও ছিড়তে চাইল কিন্তু বুড়ো এসে বলল, “তাড়াতাড়ি দাও।” ছেড়া হলো না। ভাজ করে চিঠি খানা ধরে দিল।
দশদিন পরে মহিনুল এলো। এ ঘর থেকে ও ঘরে চিঠি লেখা লোকটাকে খুঁজে বেড়াল। না পেয়ে নিরুপায় হয়ে বসে পড়ল। নিজের চৌকির কোণায় বসে পড়ল। জুতা খুলতে খুলতে দেখল আব্বার ঘরের জানালার দিকে। ঘরের জানালা দিয়ে বিকেলের রশ্মি উঁকি মারছে। সে আলোয় ফুটে উঠছে আরেকটি মুখ। মহিনুল থমকে গেল। জুতা খুলে বিছানায় এলিয়ে পড়ল। ঘুমের মত এলো। হঠাৎ ঘুম ভাঙ্গল। কে যেন ডাকছে। “আপনার খাবার রেডি খেয়ে যান।”
মহিনুল খাবার টেবিলে এলো। নীরবে খেয়ে ফিরে এলো। রাত্রে দুচোখে ঘুম ধরল না। সেদিনের সে কথা মনে পড়ল। সেই মনি। যাকে পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্ট করেছিল। সে আজ কত কাছের কিন্তু বহু দূরের। সে আজ পাশে কিন্তু কাছে নয়। চোখ মেললে দেখা যায় হাত বাড়িয়ে ধরা যায় না। মনিরকে ধিক্কার দিল। শালা, কাপুরুষ। আর একবার ভাবল , মনির যদি তাকে ভালো না বাসে? তবে ঠিকই আছে।
রাত বেড়ে উঠছে। মহিনুল জানালার কাছে দাঁড়াল। আব্বা এখনও ফেরেনি। মহিনুল জানালা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ও জানালায় একদিন তার মা দাঁড়াত। ওকে কোলে নিয়ে জানালার সিক ধরিয়ে দিত। ও জানালা মহিনুলের প্রিয় জানালা। ও জানালায় যে মুখ ফুটে আছে সে মুখে মায়ের মুখ ভেসে ওঠে না। ও চোখের জল সে মুছে দিতে পারে না। মহিনুল জানালা ছেড়ে বিছানায় এলো। অনেক রাত্রে আব্বা এসে দরজা খটখট করল। মহিনুল আর ও দিকে কান দিল না।
মতিন দেখল মহিনুল কেমন যেন একটু ভার ভার। জিজ্ঞেস করল, “আব্বা তোমার কি হয়েছে?”
“না কিছু না।”
“তোমার ছোট মা কি কিছু .. .. .. ?”
মহিনুল মতিনের দিকে তাকাল। মতিন থেমে গেল। কারণ, মনি সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। মহিনুল চলে গেল। মনিও মহিনুলের পিছন পিছন চলে গেল। বুড়োর একটু সন্দেহ হলো। যারা স্ত্রীর সোহাগ মেটাতে পারে না তারা স্ত্রীকে বেশি সন্দেহ করে। ভাবে এই বুঝি একটা কিছু ঘটায়। তাছাড়া এই বিষয়ে এ বুড়োর নজর বেশি। চোখে নেশা আছে, দেহে ক্ষমতা নেই, জোর নেই।
এ কদিন সে মনিকে চোখে চোখে রাখল। মহিনুলের সাথে তেমন কথা বলার সুযোগ দিল না। অতঃপর মহিনুল একদিন চলে গেল। মতিনের সকল সন্দেহ একটু থেমে গেল। কিন্তু যখন বাড়িতে মহিনুলের চিঠি এলো সন্দেহ দ্বিগুণ আকারে বেড়ে গেল। মনি গোপনে একটা চিঠি লিখল এবং বাড়িতে চিঠি লিখতে নিষেধ করল। কিন্তু হঠাৎ একদিন না বলেই মহিনুল বাড়ি হাজির। আব্বা হাটে গেছে। মনি গাছতলা বসে আছে। মহিনুল সামনে গিয়ে দাঁড়াল কিন্তু চিঠির মানুষটি খুঁজে পেলনা। ও বুঝল নারী নীরবী। ওর চোখে এবং মুখে যে কথা বলে মনে সে কথা বলে না। । ওরা একজনের বুকে শুয়ে আরেক জনের কথা কল্পনা করে। মনে মঞ্জিল সৃষ্টি করে।
রাত্রে বুড়ো এসে অবাক হয়। এবার একটা কিছু করা দরকার। তার বুক ফেটে যাচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। ভাবছে ছেলেটা যাক শালীরে দেখে নেব। কত ভাতারের দরকার।
মনির মুখে হাসি ফুটছে। এ হাসির আওয়াজে মতিন বিরাট সর্বনাস দেখল। এ বলা যায় না। মাঝে মাঝে মতিন গর্জে উঠতে চায় আবার থেমে যায়। এদিকে মহিনুলও যাওয়ার কথা তুলছেনা। একদিন মহিনুলকে বলল., “আব্বা কলেজ কি বন্ধ?”
“না, ক্লাশ চলছে। ভাবছি.. .. ... ।”
“কি ভাবছ?”
“বাড়িতে কয় দিন থাকি।”
“তা তোমার বাড়ি তুমি ছাড়া কে থাকবে? থাকো কিন্তু লেখা পড়ার যেন ক্ষতি না হয়।”
মতিন চলে গেল। কোন পথ খুঁজে পেল না। তার ভাবনার কোলে কোন সিদ্ধান্ত আসে না। কাজ কর্ম ছেড়ে বাড়িতে থাকতে শুরু করল। খাবার সময় চোখা-চুখি দেখে মতিন আর ভাত নেয় না। অর্ধেক পেটে উঠে যায়। উঠে জানালা দিয়ে আবার তাকায়। না, আর দেখা যায় না।
একদিন মহিনুল যাওয়ার জন্য তৈরি হলো। মতিন যেন জানে বাঁচে। সে মহিনুলকে অনেক টাকা দেয়।
“আব্বা এতো টাকা কেন?”
“লাগতে পারে। তুমিতো আবার তাড়াতাড়ি বাড়ি ফের না।”
“কি কন আব্বা? আমিতো আবার সামনের মাসেই বাড়ি আসব।”
মতিনের একটা টাকাও দিতে ইচ্ছে করল না। তবু টাকাগুলো ধরে দেয়।
মহিনুল চলে গেল মনিকে আচ্ছামত বকে। শুধু বকায় তার জ্বালা কমে না। মনে হয় পিটিয়ে তার যৌবনের স্বাদ মিটিয়ে দেয়। শালীর কত দরকার। কতগুলো অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করল। মনি কোন কেথার জবাব দিল না।
মতিন রহিমার সাথে মহিনুলের বিয়ে ঠিক করে। রহিমার মায়ের অনেক টাকা। কিন্তু রহিমাটা একটু হাবাগোবা। অনেক টাকাও পাবে শালীর একটা শিক্ষাও হবে।
মনিকে একটা চিঠি লিখতে লিখতে বলল। মনি মাথা ঝাকিয়ে হ্যাঁ জবাব দিল।
“তাতো হবাই। চিঠি একটু উল্টোপাল্টা হলে একেবারে বাহির কইরা দেব। বুঝবি কত সুখ।”
মনি চিঠি লিখল। চিঠির ভাষা বরাবরের মতই হলো। এবার যেন আরো একটু বদলালো। এ কথা আগে কোন দিন ওর মনে জাগেনি। আগে কোন দিন ভাবেওনি তার মনির ভাইয়ের জন্যও না।
মহিনুল বাড়িতে এলো। মনি জালানায় মাথা ঠেকিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। মহিনুল আজও মনির ভিতরে চিঠির মানুষটি খুঁজে পেল না। চিঠিতো সমাজ সংসার মানে না, লজ্জা ঘৃণা বোঝে না, শুধু মনের কথা ঝাপিয়ে ওঠে তার উপর।
মহিনুল বিয়েতে রাজী হলো না। মতিনের মাথা যেন খারাপ হয়ে গেল। মনি এসে বলল, “তার ওতো একটা মতামত আছে।”
মতিন গর্জে উঠল, “শালার মাগি, তোর জন্যিতো হয় না। তুই হলি সব নাটকের গুরু ঠাউর। তোরে আমি তালাক দেব। তালাক, তালাক, তালাক।”
মনি নীরব। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেউ নীরব থাকে না। সে কোন কথা বলল না। সে খুশি হয়েছে। কিন্তু কোথায় যেন একটা গড়মিল হয়ে গেল। কখন যেন ওর হিসেব পাল্টে গেছে। একটা না পাওয়ার নেশা ওর মনে ঘর তুলছে।
অনেক দিন কেটে গেল। মনিরের বউ একটা মেয়ে রেখে মারা গেল। মনি কেবল তাকেই রাখে। সেটাই যেন ওর সারা জীবনের সাধনা।
মাজেদা বিবির নীরবতা থেমে গেছে। মনির বিয়ের কথা এখন তেমন আর তোলে না। মনিও যেন এ দিকটাকে ভুলে থাকতে চায়। যা চায় তা পায়না বলে চাওয়া ভুলে গেছে। দিন ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে।
কোন এক বিকেলে মনি জানালায় দাঁড়িয়ে বিকেলের নীরবতা দেখছিল। ছোট্ট মেয়েটি ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ ওর প্রাণ মন কেঁপে উঠল। সারা শরীরে কেমন যেন চিনচিনিয়ে উঠল। ও দ্রুত বাইরে এলো। মহিনুলের সামনে দাঁড়িয়ে থমকে গেল। অস্ফূট স্বরে বলল, “কেমন আছেন?”
“ভালো।”
“অন্য খবর?”
“হ্যাঁ আব্বা মারা গেছে।”
মনি একটু নীরব হলো। জানতে চাইল না কিভাবে? কেন .. .. .. ?
ঘর থেকে একটা চেয়ার এনে গাছ তলায় বসতে দিল। মনি অধির আগ্রহে জাম গাছের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়াল । ভাবল মহিনুল হয়তো অনেক কথাই বলবে। ওর অনেক কথা বলার আছে। মনি প্রতিটি কথার জবাব দেবে। সব মানুষেরই কিছু প্রিয় জিনিস বা মানুষ থাকে তার কাছ থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। কিন্তু মহিনুল একটা কথাও বলল না।
বেলা ডুবতে বসছে। মনি মহিনুলকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলছে। ব্রীজটা যেন হঠাৎ করে সামনে এসে দাঁড়াল। মনি দাঁড়াল। মহিনুল ফিরে তাকাল। গোধূলির লাল রঙে মনির উচ্ছ্বাসিত মুখে নীরবতা। মনে হয় সে কিছু চায়। মহিনুল মাথা নিচু করে হাঁটা দিল। মনি বলল, “শোন। ভালো ভাবে যেও। আমাকে চিঠি দিও।”
মহিনুল আর পিছন ফিরে তাকাল না। আপনি থেকে তুমি কথাটির মাহিত্ব খুঁজল না।
মানুষের চাওয়াও একদিন বদলায়। মনি ব্রীজে দাঁড়িয়ে নীরবে পথ চলা দেখছে। আরো দেখছে সেদিনের সে ঘর, সংসার । মনির পাশে এসে দাঁড়াল। মেয়েটি মনিকে দেখে কান্না থামিয়েছে। কাছে আসতেই মনির কোলে ঝাপিয়ে পড়ল। মনির মনির পাশে দাঁড়াল । আঁধার ঘনিয়ে আসছে। মনির মনির কাঁধের উপর একটা হাত উঠিয়ে দিল। মনি সে হাত নামিয়ে দিল।
মনির পেল সে মনিকে কিন্তু সেদিনের মনিকে নয়। মনির মনে মনিরের স্থান ক্ষুয়ে বসে আছে মহিনুল। মনি বুঝল যা যাই তা ভুল করে চাই। যাকে চাইলাম তাকেই পেলাম কিন্তু আশা পূর্ণ হলো না।
১৭ সেপ্টেম্বও ২০১২ইং
ওমর আলীর বাড়ি
তেঁতুলিয়া, কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: সুন্দর গল্প তবে তিনটি জীবন নষ্ট হওয়ার গল্পও এটি। ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ।