![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হঠাৎ করে বিন্দুর সাথে একটা ঝগড়া বেঁধে গেল। কোন কারণ সেই। একেবারেই অকারণে। সিন্দু তেমন কিছুই বলেনি।
বিন্দু সিন্দুর পাঁচ বছরের সংসার। একটা মেয়ে চৈতি। বয়স চার বছর।
বেশ কয়েকদিন হলো দুজনের খুব ভালো যাচ্ছে না। বিন্দু সাগরকে ফোন দেয়। বিভিন্ন ধরনের আজে-বাজে কথা বলে। সিন্দু তাকে বুঝায়।
“দেখ, বিয়ের আগে প্রেম সে যে কারো সাথেই হতে পারে। এখন তুমি সংসারী সংসার নিয়ে ভাবে।”
“একটু আধটু কথা বললে কিছু হয় না।”
“কিছু যদি না হবে বলার দরকার কি?”
“ও তুমি বুঝবে না।”
“বুঝি না তবে চেষ্টা করছি।”
“তাতে কি লাভ হবে?”
“কেবল লাভের হিসাব করতে নেই। তবে লোকসানের সময় বড়ই বিপদ হয়ে যাবে।”
দুজনের মাঝে বেশ লড়াই চলছে। রাগে সিন্দু বলে, “তুমি যাবে চলে যাও। চৈতিকে আমার কাছে রেখে যাও।”
“কেনো?”
“কানো, মানে? চৈতি আমার মেয়ে।”
“চৈতিকে আমি পেটে ধরছি।”
“আমি ওর বাবা।”
“মিথ্যে কথা। ওকে তুমি জন্ম দাওনি।”
সিন্দুর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। সন্তানের পিতাকে তা মা’ই জানে। তবু তুমি একবার হলেও বল চৈতি আমার মেয়ে। সে বলা মিথ্যা হলেও আমি ওকে নিয়ে বাঁচতে পারবো। তোমারতো সাগর আছে।”
“ওকে তুমি রাখতে পারবে না। সাগরের কাছেও নেব না। কারণ, ও সাগরেরও মেয়ে নয়। ওকে রাখার মত যোগ্যতা তোমার নেই। ওর বাপ কোটিপতি।”
“আমি তাকে জন্ম না দেই ভালোবাসা দিয়েছি। জন্ম দেওয়া যত সহজ ভালোবাসা অতো নগণ্য নয়।”
“শুধু ভালোবাসা দিয়ে কাউকে ধরে রাখা যায় না।”
“ভালোবাসা ছাড়াও যায় না।”
“ভালোবাসা সমতা চায়।”
“ভালোবাসা কিছু চায় না। শুধু দেয়। দেওয়ার মাঝেই ভালোবাসা। আমি চৈতির কাছ থেকে কিছু দাবী করি না। শুধু চৈতিকে চাই।“
“এখন কি পারবে?”
“আমি স্বার্থপর কিন্তু এতোটা নয়। তোমার কথায় জানলাম চৈতিকে আমি ধরে রাখতে পারবো না কিন্তু মন থেকে কোন দিন মুছতে পারবো?”
“আমি বুঝতে যাব কোনো।”
“আমার একটা কথা রাখবে, তুমি ওকে নিয়ে সাগরের কাছে নয় ওর সত্যিকারের বাবার কাছে যাও। আমি কোনই দুঃখ পাবো না।”
“আমার সাগরকে খুব দরকার।”
“আমাকেও এমন অনেক কথা বলেছিলে।”
“তখন কি জানতাম তুমি এমন?”
“এতোদিন থাকলে কেনো?”
“আমি জানতাম তোমার ব্যাংকে দুই কোটি টাকা আছে।”
“তোমার আজ যে চরিত্র ফুটে উৎছে তাতে তোমাকে কোন দিন মনেও করবো না। শুধু ভাববো মানুষ এমন হয় কি করে। তবে মাঝে মধ্যে চৈতিকে একটু দেখতে দিও।”
চৈতির কাছে এসে সিন্দুর অনেক কান্না পেল। চোখের জল কোন ভাবেই আটকে রাখতে পারল না। চৈতি তাকে জড়িয়ে ধরল। সিন্দু চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলল, “কোন কিছুর বিনিময় যদি কোন দিন মনে পড়ে আমার কাছে এসো আমি তোমাকে ফিরে দেব না। তুমি আমার মেয়ে। এ পরিচয় কেবল তোমার আর আমার মাঝেই থাক।”
চৈতিকে কতগুলি চুমু দিল। বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে একটু কাঁদল। চৈতিকে নিয়ে বিন্দুর কাছে গেল। বলল, “তুমি আজ ঠিক কাজটিই করেছো। এতো বড় একটা মিথ্যা এতোদিন গোপন থাকতে পারে না। আসলে, সত্য প্রকাশের জন্য এমন ঘটনা ঘটেই থাকে। ভালো থেকো।”
বিন্দু রেডি হলো। চৈতি বাবার কাছে এসে হাতটা ধরে চোখের জল ছেড়ে দিল। বলল, “বাবা, তাড়াতাড়ি আসপা। আমি তোমার সাথে আসপো।”
১ জুলাই ২০১৫ইং
অনিল চেয়ারম্যানের বাড়ি,
পুইশুর, কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ।
©somewhere in net ltd.