নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলা স্যার

সুব্রত বৈরাগী

সুব্রত বৈরাগী › বিস্তারিত পোস্টঃ

নতুন পৃথিবী

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৯

দিবাকর ওয়ালে হাত দিয়ে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সিঁড়িতে পা হােচট খেয়ে পড়ে গেল। গড়িয়ে গেল নিচ তলায়। সিঁড়ির গ্রিল ধরে আবার উঠে দাঁড়াল। ওর চােখে জল। কেউ দেখে ফেলতে পারে সে ভয়ে সে জল সে মুছে ফেলল। আবার উপরের দিকে ওঠার চেষ্টা করল। একজন সেবিকা এসে তাকে তার বেডে নিয়ে গেল।
আজ নিশিতা আসবে। নিশিতার জন্যই সে বেরিয়েছিল। বাবা-মা’র প্রস্তাব সে মেনে নিতে পারেনি। সে বাড়ি থেকে একবারেই বেরিয়েছে। সে বাড়িতে আর ফিরবে না। কিন্তু গাড়িটা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল। রাস্তা ছেড়ে উল্টে গেল নিচে।

দিবাকর ভাবছিল বেলকোণীর দিকে যাচ্ছে। বুঝতে পারেনি এটা সিঁড়ির দিক। কতদিন নিশিতাকে দেখছে না। নিশিতা থাকলে সে চোখ না থাকলেও সব দেখতে পাবে। সেবিকাকে বলল, জানালার গ্রিলটা ধরিয়ে দিতে। দিবাকর গ্রিল ধরে বাইরে তাকাল। বেলা পড়ে আসছে। সূর্যের তাপ অনেক কম।
এ মাসটা দিবাকরের অনেক খারাপ কেটেছে। হাসপাতালে তার ভালো লাগছে না। নিশিতা এলে তার চােখ খুলবে। সে আবার দেখতে পাবে। কেন যে গাড়িটা এতো জােরে চালিয়ে ছিলাম তা ভাবতে পারেছিনা। শুধু মনে পড়ছে নিশিতা তাকে ফােনে বলেছিল, “বিকেল পাঁচটার আগে তােমাকে আসতে হবে।”
নিশিতা এলো। ওকে জানালা থেকে বেডে নিয়ে এলো। নিজ হাতে খাওয়ালো। দিবাকর যেন আজকের খাবারে পূর্ণ তৃপ্তি পেল।
নিশিতা ডাক্তারের কাছে গেল। দিবাকরও যেতে চেয়েছিল। কিন্তু, নিশিতা তাকে নেয়নি।
“তুমি কেনো যাবে?”
“তোমার সাথে।”
“কেনো?”
“তুমি ভয় পাচ্ছো? আমি ভয় পাচ্ছি না। তুমি পাশে থাকলে চােখ না থাকলেও আমি মনে কিছু করব না। অতএব যেতে পারি।”
“না যেতে পার না।”
“ঠিক আছে, তুমি গেলেতো আমারও যাওয়া।”
নিশিতা একাই ডাক্তারের চেম্বারে গেল। ডাক্তার বসতে বলল। আরো বলল, “দেখুন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু চােখ দুটোকে বাঁচাতে পারিনি।”
“আপনি এ কি বলছেন?”
“যা সত্য তাই। শুনেছি ওনার সাথে আপনার বিয়ে হতে যাচ্ছে। বিয়ের পর আপনার একটা চােখ .. .. .. .. ।”
“সেটা সম্ভব নয়। তাকে আমি ভালোবাসি। সে আমার কিছুই না। প্রয়োজনে এমন ভালোবাসা অনেক পাব। আমার চােখ গেলে চোখ পাব না। আমি চলি।”
“শুনুন। ভালোবাসা এমন ভাবে হয়না। ভালোবাসা হয় দুটি দেহের এক মনে। আপনি কােন দিন ভালোবাসতে পারেন না।”
নিশিতা ডাক্তারের কাছ থেকে বেরিয়ে এলো। দিবাকরের রুমের সামনে একটু দাঁড়াল। দিবাকর বুঝতে পারল না। সে হাত বাড়াল কিন্তু সে হাত কেউ ধরল না। দিবাকর হাত গুটিয়ে নিল। ভাবল এ নিশিতা নয় অন্য কেউ। দিবাকর নিশিতার অপেক্ষা করতে লাগল।

রাত্রে ডাক্তার এলো। দিবাকরকে সব কথা খুলে বলল। দিবাকর বিশ্বাসই করতে পারল না।
“দিবাকর সাহেব, অপ্রিয় সত্য কথাটাকে কেউ বিশ্বাস করে না। প্রিয় কথা মিথ্যা হলেও তা ভালো লাগে। আপনার সবচেয়ে সত্য কথাটি তাই ছিল মিথ্যা।”
“তার মানে?”
“নিশিতা আপনাকে কােন দিনই ভালোবাসেনি।”
“জানেন ডাক্তার, ওর জন্য আমি আমার মা-বাবাকে ছেড়ে এসেছি। ও বলেছিল, মরণেও আমার সাথে থাকবে। আমার বিয়ে ঠিক ছিল। সে আমার ছেলেবেলার খেলার সাথি। লেখা পড়া শেখেনি। আমার বাবা মাকে সঙ্গ দিয়েছে।”
“এবার কিন্তু আপনার বাড়িতে খবর না দিয়ে পারব না।”
দিবাকরকে দেখার জন্য নন্দিনী এলো। দিবাকর নন্দিনীকে ভালো চােখে দেখে না। ওই হলো দিবাকর আর নিশিতার মাঝে কাটা।
“তুমি কেনো এলে?”
নন্দিনী ভয়ে চুপ করে থাকল। কােনো কথা বলল না।
“তোমার জন্যই আজ আমার এ দশা।”
“আমি কােনো দিন তােমার অমঙ্গল কামনা করিনি।”
“থাক আর বলতে হবে না।”
নন্দিনী জানালা ধরে খানিক সময় বাইরে তাকাল। গোধূলি নেমে আসছে। চারিদিকে কেমন যেন একটা নীরবতা। নন্দিনী সেই নীরবতার মাঝে মিশিয়ে গেল। গােধূলির রঙে ও যেন মিলে গেল।
নন্দিনী ডাক্তার সেনের কাছে গেল।
“আমি নন্দিনী। দিবাকর দত্তের দেখাশুনা করতে এসেছি।”
“বসুন। তারপর বলুন কি বলতে চান?”
“আমার চােখ দুটো আপনি ওকে দিন। ওকে এ অবস্থায় দেখতে আমার দারুন কষ্ট হয়।”
“উনি আপনার কে?”
“কেউ না। কিন্তু সারা জীবন ওর অপেক্ষা করতে করতে আমি কখন যেন ওর হয়ে আছি। তাই এ সমান্য কিছু ওকে দিয়ে যেতে চাই। ও ওর চােখেতো কােন দিন আমায় খােজেনি। আমার চােখে খুঁজে নিক ওর নতুন পৃথিবী।”
“আপনার বাবা মা এটা মেনে নেবে?”
“আমার মা বাবা নেই। ছিল কিনা তাও জানি না। যতদূর জানি আমি ওদের বাড়িতেই মানুষ হয়েছি। ওদের আমি আমার বলে জেনেছি।”

“ভালোবাসা সামান্য জিনিস। চােখ হারালে কিন্তু চােখ পাবেন না।”
“ডাক্তার সাহেব, যে ভালোবাসায় আমি আমার সব হারিয়েছি তা আমার কাছে সামান্য নয়।”
“আপনি কি আমাকে ভালোবাসতে পারেন?”
“ভালোবাসা হাটের লাউ নয় যে এক ধামায় হাটে এসে চিমটির পর আরেক ধামায় উঠে যাবে। ও আমাকে সহ্য করতে পারে না। আমার চলে যেতে হবে। ওর জন্য কি আমি এতোটুকু করে যেতে পারি না? আপনি দ্রুত ব্যবস্থা নিন। আর পারলে আরেকটা ব্যবস্থা নিয়েন যাতে আমার পাপ দেহ আর বইতে না হয়।”
“আপনি একটু বসুন, দেখি কি করা যায়।”
ডাক্তার নন্দিনীকে রেখে দিবাকরের রুমে গেল।
দিবাকর বলল, “তুমি আবার এলে?”
“আমি।”
“ও, ডাক্তার সাহেব।”
“আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে এলাম।”
“করুন।”
“কালতো আপনার বিয়ে।”
“হাসালেন ডাক্তার সাহেব।”
“হাসির কি আছে। শুনুন, আপনাকে যদি এই অবস্থায় কেউ বিয়ে করতে চায় বিয়ে করবেন? আমি আপনার লগ্নটাকে ভ্রষ্ট করতে চাই না।”
“আমার জীবনের সব লগ্নই মিথ্যা।”
“অন্তত একটা লগ্ন সত্য হয়ে থাক?”
“না। আমি কারো করুণার পাত্র হতে চাই না।”

নন্দিনী দরজার পাশে এসে দাঁড়াল। ডাক্তার চলে গেলে নন্দিনী রুমের ভেতরে প্রবেশ করল। দিবাকর যেন টেরও পেল না। নন্দিনী দিবাকরের হাতটা ধরল। দিবাকর কিছুই বলল না।
“আমি চলে যাচ্ছি। আর কােন দিন তােমার সামনে আসব না। যদি কােন দিন কােন নীরব মুহুর্তে মনে পড়ে মিথ্যা করে হলেও একবার বল, আমি তােমাকে ভালোবাসি। মুখে না হলেও মনের অজান্তে। কথা দিলাম, আর কখনও তােমার চােখের সামনে দাঁড়াব না। তুমি দেখতে পাবে এক নতুন পৃথিবী। যে পৃখিবীতে নন্দিনী নাই। এমন কি নিশিতাও। যে তােমাকে ভালোবাসা দিয়ে গেল আর তুমি যাকে ভালোবাসা দিলে। যে পৃথিবীতে তুমি একা। নিশিতা তার লগ্ন ভ্রষ্ট করেনি। তুমি গ্রামে ফিরে যেও। তােমার বাবার স্বপ্ন সফল করো। তােমার হাসপাতালের নাম পাল্টিয়ে দিও। নন্দিনী নাম সেখানে মানায় না।”
নন্দিনীরই আগে জ্ঞান ফিরল। উঠতে চাইল। চােখের উপর হাত দিয়ে দেখল ব্যান্ডেজ। একটু হাসল। ডাক্তার এলো। নন্দিনীকে বলল, “কেমন লাগছে?”
“ভালো।”
“দিবাকর আপনাকে কিছুই দেয়নি কিন্তু আমি কি করে এতোবড় নিষ্ঠুর হই। তাই দিবাকরের অন্ধ চােখ আপনাকে দিলাম। অপারেশান ভালো হয়েছে। আমি আপনাকে নিয়েও আশাবাদী। আপনার থাকারও একটা ব্যবস্থা করেছি। দিবাকরের বাবা এসেছিলেন। চিন্তা করবেন না। আমি আপনার কথা বলিনি। আপনার এই নষ্ট চােখ দুটি আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টায় এনে দেখি কি হয়। আর আপনাকে এক্ষুণি চলে যেতে হবে। সাত দিন পর দিবাকরের চােখ খুলব।”
“ও আবার দেখতে পাবে ডাক্তার বাবু?”
“আপনি কি কান্নার চেষ্টা করছেন?”
“না ডাক্তার বাবু। আমি কােন দিন ওর চােখে কান্না দেখতে চাইনি। আজ আমি নিজেই সে চােখে জলে ডুবিয়ে দেব? আপনি আমার জীবনের কান্না মুছে দিয়েছেন ডাক্তার বাবু। আপনার ঋণ আমি কােন দিন শােধ করতে পারব না।”
“ডাক্তার প্রাণ দেয় নেয় না।”

অনেক দিন কাটল। দিবাকরের হাসপাতালে একজন চশমা পরা ভদ্রলোক এলেন। ডাক্তার দিবাকরের সামনে দাঁড়ালেন।
“কেমন আছেন? চিনতে পারলেন না এইতো? আমি ডাক্তার সেন। আপনার চােখ অপারেশান করেছিলাম।”
দিবাকর অবাক হলো। “কেমন আছেন? এখানে যে?”
“আসতে হলো। আপনার এতো বড় ধন আমার কাছে আর আমি না এসে পারি? আপনার কাছে একটা দেনা রয়েছি।”
“কি বলতে চান?”
“আপনার চােখ আমি টাকায় কিনিনি। টাকা নিয়েছিলাম তার একটা ব্যবস্থা করার জন্যে। কিন্তু এতো টাকা লাগেনি।”
“কে সে?”
“নন্দিনী।”
“ডাক্তার সাহেব।”
“বাকি টাকা রেখে গেলাম।”
“নন্দিনী এখন কােথায়?”
“হাসপাতালে।”
“কেন?”
“ক্যানসার। ব্ল্যাড ক্যানসার।”

ডাক্তার যে কখন চলে গেছেন দিবাকর তা বুঝতেও পারেনি। হঠাৎ যেন তার জ্ঞান ফিরল। দেখল তার সামনে কতগুলি টাকা। দিবাকর কিছু ভাবতে পারল না। হাসপাতালের বাইরে এলো।
হাসপাতালের দিকে তাকাল। নামটা লাল রঙে চিকচিক করছে, ‘সুধাকর সদন।’ বাবার স্বপ্ন নন্দিনী হাসপাতাল। দিবাকরের গাল বেয়ে গড়িয়ে গেল অশ্রু। সে আজ নন্দিনীর চােখে দেখছে। এ কান্নাও নন্দিনীর চােখে। নন্দিনীর এ চােখ সে সারা জীবন ভিজিয়ে রেখেছে। আজও সে জল থেমে গেল না। এ চােখ কাঁদার জন্যই সৃষ্টি।
দিবাকর নন্দিনীকে দেখার জন্য ডাক্তার সেনে হাসপাতালে এলো। নন্দিনী বেডে বসে আছে। চােখে ব্যান্ডেজ। দিবাকর সামনে দাঁড়াল। একটা কথাও বলল না। পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছে হলো। মনে পড়ল নন্দিনীর সে কথা, শুধু এক মুহুর্তও তােমাকে পাশে পেলে আমার জীবনের সব আশা পূর্ণ হয়। ডাক্তারের সাথে দেখা করতে এলো।
“আমি জানি আপনি আসবেন।”
“আমি নন্দিনীকে নিয়ে যেতে চাই।”
“নন্দিনী কেবল অপনার। তারপরও আপনাকে নিয়ে যেতে বলতে পারি না। মনের জাের থাকলে নেবেন। তবে, .. .. থাক।”
“বলুন না?”
“না থাক। আপনি নিয়ে যান।”

নন্দিনীকে সুধাকর সদনে নিয়ে আসা হলো। নতুন হাসপাতালে নন্দিনীর ভালো লাগল না। ডাক্তার সেনের সেই পরিচিত স্বর ভেসে এলো না। কেবল যে মানুষটি তাকে উজ্জীবত করে রেখেছে। নন্দিনী নীরবে বসে আছে। হঠাৎ তার কাঁধের উপর একটা হাত পড়ল। ও বুঝতে পারল এ হাত ডাক্তার সেনের নয়।
“কে আপনি?”
“আমি।”
“দিবাকর।”
“হ্যাঁ।”
“কেমন আছো?”
“ভালো।”
“আমাকে কেন নিয়ে এলে?”
“যে কথা তুমি মিথ্যা করে শুনতে চেয়েছিলে তা সত্যিকরে বলতে।”
“দিবাকর। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে।”
“ভালোবাসার কােনো সময় নেই।”
“তুমি আমাকে যে ভালোবাস তার নাম ভালোবাসা নয় প্রতিদান।”
“আমি জানি আমার অন্ধত্ব জেনেও তুমি আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলে। কিন্তু তুমি কেবল অন্ধ নয় ব্ল্যাড ক্যানসারের রােগী।”
“আমার ব্ল্যাড ক্যানসার! ডাক্তার সেনতো একবারও বললেন না।”
“ডাক্তারেরা রােগীকে দুর্সংবাদ দেয় না।”
“কেন দেয় না? যে ডাক্তারেরা মানুষের মনে অনেক বড় আঘাত দিতে পারে তারা কি সামান্য মৃত্যুর সংবাদ দিতে পারে না?”
“নন্দিনী।”
“দিবাকর। আমি অসহায়। নিশিতার মত ডাক্তার হতে পারব না। তােমার মনের দেবীকে ঠেলে জায়গা করে নিতে পারব না। তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পার না?”
“পারব না। আমার সেই নিষ্পাপ হাতের খেলনা ভেঙ্গে ফেলতে পারব না। তাছাড়া ছুড়ে ফেলেও যাকে ভাঙ্গতে পারিনি সে ভাঙ্গার নয়।”
“দিবাকর।”
দিবাকর নীরব। রুমের বাইরে গেল আবার এলো। নন্দিনীর ক্যানসারের মাত্রা মাপার জন্য রক্ত নিল। পরীক্ষার পর দিবাকর বিশ্বাস করতে পারল না। কয়েকবার পরীক্ষা করল। একই ফলাফল। ডাক্তার সেনকে ফােন দিল। ডাক্তার সেন হাসলেন। বললেন, “দেখুন, নন্দিনীর ব্ল্যাড ক্যানসার হয়নি। আপনার সেই অন্ধ চােখ আমি নন্দিনীকে দিয়েছিলাম। আমার এতোদিনের শ্রম স্বার্থক হয়েছে। আমি চাই চােখ খুলে নন্দিনী আপনাকে দেখুক।”
“আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দেব।”
“আগে নন্দিনীর চােখ খুলুন।”
“আচ্ছা; ঠিক আছে।”
দিবাকর নন্দিনীর রুমে এলো। নন্দিনী জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
“নন্দিনী, এই মুহুর্তে তােমার কাকে দেখতে ইচ্ছে করছে?”
“আমি আর এ পৃথিবী দেখতে চাই না।”
“ডাক্তার সেনের এতোদিনের প্রচেষ্টা তুমি নষ্ট করতে চাও?”
“না।”
“তবে বলো।”
“তোমার নিশিতাকে। এ চােখের প্রিয় কেবল নিশিতা। অন্য কাউকে এ চােখ কােনদিন খােজেনি।”
“পারব না। তােমার চাওয়া বদলাও।”
“তুমি বুঝতে পার না আমি কি দেখতে চাই?”
“মুখে কেনো বললে না?”
“তোমার চােখের অমর্যাদা হবে বলে।”
দিবাকর নন্দিনী চােখ খুলল। নন্দিনী নীরবে তাকিয়ে আছে দিবাকরের দিকে। দিবাকর যেন বদলে গেছে। দিবাকর আজ কিছুটা অসহায়।

কোন একদিন দুজনে ডাক্তার সেনের হাসপাতালে এলো। নন্দিনীর চােখে আজ লাজুকতা ফুটে উঠছে। দিবাকরের সাথে লজ্জা হচ্ছে। তবু উঠল।
ডাক্তার সেনের নেমপ্লেটে অন্য কারো নাম। খােজ নিয়ে জানা গেল উনি গতকাল ব্ল্যাড ক্যানসারে মারা গেছেন।
নন্দিনীর গাল বেয়ে গড়িয়ে গেল অশ্রু। দিবাকরকে বলল, “কথা দিয়েছিলাম তােমার চােখ দিয়ে কােনদিন জল ঝরাবো না। আজ আর পারলাম না। কারণ, এ চােখ তার চেষ্টাই দেখতে শিখেছে। আমার নতুন পৃথিবী তারই দান। সে আমার নতুন পৃথিবীর নরপতি।
২৮ অক্টোবর ২০১২ইং
দি নিরাময় হাসপাতাল
পশ্চিম খাবাসপুর
ফরিদপুর।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:২৫

জনম দাসী বলেছেন: ক'ফোটা অশ্রু ছাড়া আর কিছু এ লেখার মাঝে রেখে যেতে পাড়লাম না। এ কার জীবনের কথা বলে গেলেন কবি!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.