নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিবেশ বন্ধু *** আমি কবি হতে আসিনি , কবি হয়েই জন্ম নিয়েছি । ।\n

পরিবেশ বন্ধু

আমি এক ঐতিহাসিক নব সৃষ্টি / মুক্ত লিখি দুর্বার দৃষ্টি

পরিবেশ বন্ধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজয়ের গল্প

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪০

৭১ এর রনাঙ্গন , সুনামগঞ্জ ''''''' ধরমপাশা ।।

*********পরিবেশ বন্ধু , মুক্তিযুদ্ধের গল্প

এম , জি, আর মাসউদ মিয়া

কবি / সাহিত্যিক গবেষক

গ্রাম , সৈয়দ পুর । ইউনিয়ন '' সেলবরষ ।

উপজেলা ''' ধরম পাশা । জেলা''''''' সুনামগঞ্জ । সিলেট ।।

জন্মতারিখ ৬ / ১০ / ১৯৭৭ ইং

পিতা ''''' মোহাম্মদ দেওয়ান আলী

মাতা '''''''' মোছা শামছুননাহার মাহমুদ ।।

বর্তমান টিকানা ''''''' ঢাকা মিরপুর ১২ডিওএসএইছ এলাকা ১০৩ নং বাসা ।।



স্বাধীনতার স্বপ্ন ।। গল্প

************





সুনামগঞ্জ জেলার কংস নদীর তীর ঘেঁষা ধরমপাশা একটি থানা শহর , উত্তরে হিমালয় পাহাড় , বনাঞ্চল হাওড় বেষ্টিত লোকালয় যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ।।

কংস নদীর দক্ষিন অংশ থেকে জেলা শহর নেত্রকোনা পর্যন্ত মুল রাস্তা বিশ্রিত । আবার মোহনগঞ্জ থেকে নেত্রকোনায় রেল যোগাযোগ বিশ্রিত সারাদেশের সাথে ।। ৭১ এ পাক হানাদার বাহিনী যখন সারা দেশে চালায় নারকীয় বর্বর হত্তাযজ্ঞ , । তখন ছাত্র জনতা , কৃষক শ্রমিক সহ সর্বস্তরের জনতা দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় ।।

গ্রামের নাম রাজনগর , ঘরের দাওয়ায় বসে আছে মাতবর ফজলুল হক , চাকর আবুল হোসেন প্রতিদিনের মত হুক্কায় তামাক সাজিয়ে সামনে খাড়া , মিয়া ভাই হুনলাম দেশে মেলেটারি আইছে , হমানে মানুষ কুত্তার লাহান গুলি কইরা মারতাছে

যদি এইহানে আইয়ে তয় আমরা কি বাচুম , আমাদের কি অইব ।

ঘর থেকে যুবতি মেয়ে কথার মধ্য বাগড়া দেয় । কি আর অইবেক , মরন ছাড়া আর গতি কি ।

এবার মৌনতা ভেঙ্গে বৃদ্ধ গলা সাধে , হুকায় ঠান দেয় , শব্দ আসে গর গর ।। হ্যারে

মা দেশে শকুন আইছে এরা যা ইচ্ছা তাই করতাছে , রক্ত চুষার মত হমানে মানুষ মারতাছে , বাড়ি ঘর জালাইয়া দিতাছে , আমি কই কি মা , তোমরা আবাতত আজকেই তোমার নানা বাড়ি চইলা যাও ।

বাজান এরা কি এইহানেও আইব ্‌ হা মা যা বললাম তাই কর , এখানে আসলে আর কারও নিস্থার নাই ।

আবুল তুমি আজকেই এদের লয়ে রয়ানা হও । বাজান তুমি যাইবানা , না মা , আমার গুরুত্ব পূর্ণ মেলা কাজ , । না বাজান তুমি এইখানে নিরাপদ নও, । সে আমি দেখব এবং আমি অবশ্যই তোমাদের সাথে মিলিত হব ।। ওরা পরিবারের বেশ কয়জন সদস্য সহ চলে যায় পাহাড়ের পাদদেশ ঘেরা গ্রাম মহেশ খলায় । যুদ্ধের এ পর্যায়ে হাজার হাজার মানুষ ছুটে শহর ছেড়ে গ্রামে ।।

মৃত্যুর ভয়াল খবরে মানুষ আতঙ্কিত , বাঙালী মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতিরোধ সংগ্রামে একের পর এক লোকালয় থেকে সব সময় আসে গুলির আওয়াজ ।। ফজলুল হক সবে বেরিয়ে পড়ে ঘর ছেড়ে । , ৮ / ১০ জন লোক আসে তার বাড়ী , তাদের গেরুয়া বসন দুএকজনের নিকট বন্ধুক , ঐ লোক দের সর্দার ছালাম দেয় তাকে ,ছালামের উত্তর দেয় বৃদ্ধ , । কি খবর আরমান হায়াত । আমি তোদের উদ্দেশেই মাত্র পা দিলাম আর তোরা যথা সময়ে উপস্থিত বেশ ভালই হল , চল কোথাও গিয়ে বসি ।।

না ফজু ভাই বসলে দেরি হয়ে যাবে যে ।।

আজ আমাদের সাবুচান যে সংবাদ নিয়ে এল তাতে আমাদের মুহূর্ত ক্ষন বিলম্ব করা

উচিৎ নয় ,। শুধু আপনার পরামর্শের অপেক্ষায় ।।

আচ্ছা সাবু সংবাদ টা জানি কি সবিস্তার খুলেবল ।

স্যার , পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী মোহনগঞ্জে ঘাটি গেড়েছে , টিক আলকদিয়া গ্রামের ওপারে , বধ্যভুমি বানিয়ে নির্বিচারে হত্তা করা হয়েছে মোহন গঞ্জ শেখ বাড়ীর বিশিষ্ট বাম নেতা বুদ্ধিজীবী সহ অনেক মানুষ কে । ওরা সম্ভবত আজ কালের মধ্যই আমাদের ধরম পাশায় কংস পেরিয়ে চলে আসবে ।।

কাজ কর , বেশি সময় নেওয়া যাবেনা আমাদের ১১ জনের মধ্য বন্ধুক মাত্র ২ টি

আমাদের এবারের মিশন হবে খুবই জুড়াল ।

কংশের সব যোগাযোগ বন্ধ করে দাও , আর আজ রাতেই আমরা সংঘটিত হয়ে একটা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলব ।

আমাদের সাথে সদ্য নতুন ট্রেনিং প্রাপ্ত বেশ কিছু তরুণ আজকেই যোগ দেবে ।।

জি স্যার ।।

কথাগুলু বলে একটু দম নিলেন গেরিলা কমান্ডার ফজলুল হক ।।

স্যার শুধু তাইনা , এদের চর রাজাকার , আলবদর আলছামস রা গ্রাম থেকে পালিয়ে লুকিয়ে

লুকিয়ে এদের কে মুক্তি যুদ্ধাদের গোপন সংবাদ ক্যাম্পে পৌঁছে দেয় ।। এবং টাকার বিনিময়ে

নারী দের সম্ভ্রম পর্যন্ত এদের হাত থেকে নিস্তার পায়না ।।

রাগে জ্বলে উটে গেরিলা কম্যান্ডার ।।

না না আর ওদের ক্ষমা নয়, এদের কে যেখানে পাওয়া যাবে , সেখানেই গাছের সাথে পশুর মত

বেধে উল্টা সব কয়টা হারামির গাঁয়ের চামড়া ছিলে লবন লাগাতে হবে ।। এরা মানুষ নয় এরা

মানুষ রূপী এক একটা জানোয়ার ।।

সবাই কথা কয়টা হজম করে আবার মাথা তুলে দ্বিগুণ রুষে নেতার দিক নির্দেশ এ এগিয়ে যায়

সম্মুখ পানে , চোখে স্বাধীনতার অবারিত স্বপ্ন বুকে অজেয় সাহস ।।



২ ,



কেহ চাষা , লাঙ্গল কাঁধে আর কেহ দিন মজুর , অথবা পথের ভিখারি । এক পেরিওয়ালা নির্ভয়ে ডুকে পড়ে পাকিস্থানি হানাদার ক্যাম্পে , রক্তচক্ষু শাসিয়ে বন্ধুকের বেয়নেট চেপে ধরে তার গলায় ।।

হল্ট হল্ট , পিচ্ছি

কামুশ ,

পিচ্ছির বুকটা প্রানভয়ে ধক করে উটে , অজানা আশংকায় থর থর করে কেঁপে সারা গাঁ ।। তবুও দমে যায়নি সে , চিৎকার দিয়ে বলে স্যার কলা কিনবেন , কলা ।। বস্তুত এক পাকনা কলার

কাঁদি তার মাথায় ,

কলা , হা হা হা

কটাক্ষ কুটিল হাসি দিয়ে একটা কলা ছিড়ে নেয় খান সেনা আরও সঙ্গি এসে জুটে সেই হাসির ব্যঞ্জনায় ।।

একেক জন একেক টা কলা মুখে পুড়ে আর হাসে

ভয় কাটে সুমনের , এবার তার আরও জানা চাই, ক্যাম্পের ভিতরে তড়িৎ চোখ বুলায় এবং কলার দাম চায় সে ।স্যার আরও লাগবে ,

নেতা গোছের লোকটি এবার চিৎকার করে উটে বুনু ষাঁড়ের মত , হল্ট হল্ট শালা বাঙাল পিচ্ছি এদেক মে আয় ।।

আবারও ধক করে উটে সুমনের বুক , ইশ কলার দাম চাওয়া টা মনে হয় উচিৎ হয়নি ।।

বিরাট বড় ইয়া গুছ ঝুলফির মত নাকের ডগায় ।।

চোখ বড় বড় করে তাকায় আর খুন রাঙা ব্যাঙ্গ হাসিতে যেন সারা হল ঘর থরথর করে কাঁপে ।। শালা বাঙাল মুক্তি হ্যায় ,

বন্ধুকের বাট দিয়ে টাঁস করে আঘাত করে পিচ্ছির মাথায় ।

জ্ঞান হারিয়ে লুটায়ে পড়ে সে মাটিতে ।।

এবার বুট দিয়ে তার ঘিলু তে আঘাত করার জন্য যখন পা উচু করল টিক তখন তার জুনিয়র অফিসার এসে বলল স্যার এক হুর এনেছি ধরে ।। বহুত আচ্ছা হে , আওরৎ হুর

হুর , সব কুছ সাচ্ছা আদমে ।

হুর এর সন্ধানে ছুটে নারকীয় যালিম অশ্লিল এক জানোয়ার ।।

অতর্কিত আক্রমনে দিশেহারা পাকিস্তানী হানাদার , কলা খেয়ে অনেক আগেই ঘুমের ঘুরে অচেতন বেশ কয়জন ।

যারা কৃষক শ্রমিক আর বিক্ষুক বেশ ধারন করে আশে পাশে ছিল , তারা সবাই সসশ্র , তারা আসলে সবাই মুক্তিযুদ্ধা , তাদের গাঁয়ে জীর্ণ বসন , আরেক দল পালকী লয়ে বড় যাত্রী বেশে বধু নিয়ে যায় তাদের সামন দিয়ে নেছে গেয়ে আর আনন্দ উৎসবে মেতে উটে । পাকিস্তানি পাক সেনারা সে আনন্দে মজা পায় , বউ কে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে অপ্রস্তুত খান সেনারা মুহূর্ত পরিমান সময় পায়না , গেরিলাদের গুলির আঘাতে টাঁস টাঁস করে মারা পড়ে খান সেনারা ।।

৩ ,



সেতু পেড়িয়ে গ্রামের দিকে যাবে খান সেনারা , হাজার হাজার মানুষের রক্তের বন্যায় এরা আজ পশু , এরা আজ জানোয়ার ।

সুমন সমবয়সী অনেক বালক কিশোর দের নিয়ে প্লেন আঁটে , কলাগাছ আর জারমুনি বা কচুরি পানা দিয়ে নদী পেরুনোর রাস্তা বানায় ।গ্রামের সমস্ত নারী শিশুদের আগেই সরিয়ে নেয় তারা নিরাপদ স্থানে ।।

পাকিস্থানি সেনারা গাড়ী লয়ে যেই রাস্তা পেরুনোর উদ্দেশ্য এগোয় অমনি সব নদীর মধ্য ডুবে হাবুডুবু খায় আর মুক্তিবাহিনী অতর্কিত হামলা চালায় ।।



সুমন এমন বহু অপারেশন সার্চ এ অংশ নেয় এবং সাফল্যার সাথে প্রত্যক টা মিশনে সে ছিল দূরদর্শী ।।

৮ ই ডিসেম্ভর পাক সেনাদের গুলিতে নিহত হন গেরিলা কমান্ডার ফজলুল হক , তাকে কবরস্ত করে মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা কটুর পন করে , রক্তে শপথ লয়ে শেষ লড়াই এর জন্য পাকিস্থানি ক্যাম্পে হামলা চালায় মুক্তি গেরিলারা ।।

রাস্তায় বড় বড় বৃক্ষ কপিকলে আটকানো আংটায় ঝুলিয়ে রাখে এবং খান সেনারা এদিক

দিয়ে যখন আসে তখন বৃক্ষের অপর প্রান্ত থেকে রশি কেটে দেয় , সাথে সাথে যতজন খান সেনা আসে ভারী গাছের চাপায় পড়ে এক্কেবারে মাটিতে পিশে যায় ।।

একের পর এক হামলায় অনেক পাকিস্থানি হানাদার এর লাছ পড়ে থাকে শিয়াল কুকুরের ভক্ষনের জন্য আর বাদ বাঁকি যারা তারা পিছু হটতে থাকে ।।



সবার সাথে পিচ্ছি সাহসি সুমন , তার হাতে এখন স্টেনগান , আগে প্রাথমিক সময়ে তার কোণ অশ্র ছিলনা , সে গেরিলা কমান্ডার ফজলুল হকের সাথে থাকত এবং নানা খবরাখবর এক স্থান হতে অন্য স্থানে সাহসের সাথে তড়িৎ পৌঁছে দিত ।। বর্তমানে অনেক সঙ্গি সাথি কে সে হারিয়েছে যুদ্ধে । সে আজ ৩০ জনের গেরিলা দলের কমান্ডার ।।

আজ ক্যাম্প থেকে একটা মেয়েকে উদ্ধার করল ওরা ।।

পাশবিক নির্যাতনে মেয়েটির অবস্থা খুবই আশংকা জনক । জ্ঞান ফিরে এলে সুমন তাকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উটে ।

তুমি কনক আপু না ।।

হা , তুমি

আমি সুমন , ঐ যে ফুজলুল হক কাকা তার মেয়ে রুমেনা , আপনি তার বান্ধবি না । হু

তা তুমি আমাকে চিনলে কেমন করে , কেন ঐ যে মহেশ কলার মেলায় আমরা

যবনভোজনে অংশ নিয়েছিলাম মনে পড়েনা ।।

ও হা তাই ।।

আপু তুমি সুস্থ হওঁ , আমাদের আরও অনেক কাজ বাকি ।।

সুমন ভাই আমার , আমি সুস্থ হলে আমাকে তোমাদের মত ট্রেনিং শেখাবে ।।তোমাদের সাথে নেবে , অন্তত যুদ্ধাহত যারা

তাদের সেবা তো করতে পারব ।।



অবশ্যই শেখাব আপু এবং তোমার সব ইচ্ছাই আমরা যথাসাধ্য

মিটাতে চেষ্টা করব । সুমনের নয়নে তখন অশ্রু আর তার সহপাঠীদের বুকে দিপ্ত শিখা , তাদের বুকে কঠিন পন ।।

এক বিন্দু রক্ত থাকতে স্বাধীনতা পশুদের নিকট ভুলুন্টিত হতে দেবনা ।।

ইথারে ভেসে আসে স্বাধীন বাংলার গান , মোরা একটি ফুল কে

বাচাব বলে যুদ্ধ করি , মোরা একটি '''''''''''''''''



দেশ হানাদার মুক্ত হয় ১৪ ই ডিসেম্ভর ।। ঘরে ফিরে মানুষ / সারা বাংলায় তখন লাছের স্তূপ , যারা বেচে আছে তাদের বুকে রক্তিম করুন আর্তবিলাপ । অনেক মুক্তিকামী মানুষেরা নির্বাক নিজ পরিবারের সদস্যদের হারিয়ে । কেহ পাগলের মত খুজে ফিরে তাদের হারানো স্বজনদের । একটি বিক্রিত লাছের ভিড়ে ভেসে উটে স্বজন হারাদের প্রিয়মুখ ।

কিন্তু কিশোর সুমন রা স্বাধীন বাংলায় আবার মুক্ত মানুষের প্রান চঞ্চলতায় ফিরে এসেছিল কিনা সে কথা আজও অজানা ।।

সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্ভনে ।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভাল মতামত আশা রাখি
সবাইকে আমার ব্লগে অভিনন্দন ।।

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১৫

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল কেন জানি!

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: হয়ত অনুভুতির জন্য আবার টিক হয়ে যাবে ।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.