নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

গ্রাম-প্রকৃতি-সবুজ-সারল্য যেখানে মিলেমিশে একাকার, সেখানে ফিরে যেতে মন চায় বার বার।

সুফিয়া

পৃথিবী আমাকে শূণ্যতায় বাঁধতে পারেনা অস্তিত্বে মাকে আগলে রেখেছি বলে।

সুফিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়ে তুমি সাহসী হও

০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:১১

মেয়ে আমি তোমার নাম জানিনা, জানতেও চাইনা। সেটা জানা এত জরুরী নয়। তোমার আসল পরিচয়টা আমি জানি। তুমি আমার বোন, কন্যা, একজন ভবিষ্যত বধূ বা মাতা। আজ একটি অনাকাংখিত দুর্ঘটনার কারণে আমার সেই বোন কিংবা কন্য গুমড়ে গুমড়ে কাঁদবে, বুক ভাঙ্গা ব্যথায় মর্মরিত হবে সেটা আমরা মেনে নিতে পারিনা। মানুষরূপী একটা, পশুরূপী একজন শিক্ষক--যার হবার কথা ছিল তোমার উন্নত জীবন গড়ার কারিগর। সে হয়ে উঠেছে তোমার জীবনের মূর্তিমান আতংক, সমাজের ঘৃণিত কীট। এই রকম একটা কীটের শাস্তি তো হবেই। তোমার পক্ষ থেকে এই কীটের জন্য থাকবে ঘৃণা, শুধুই ঘৃণা। এর বাইরে এই ঘটনার কোন প্রতিক্রিয়া তোমার মনে যাতে গেঁড়ে না বসে সেটাই এখন তোমার বড় কাজ। আমি জানি তুমি সেটা পারবে। কারণ, তুমি সাহসী মেয়ে, প্রতিবাদী মেয়ে। তোমার প্রতি করা অন্যায়ের বিচার যেহেতু তুমি চাইতে পেছে, আমি জানি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, শরীর থেকে ময়লা ঝেড়ে ফেলার মতো তুমি সবকিছু ঝেড়ে ফেলে দিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।



মেয়ে তুমি আরও সাহসী হবে, তোমাকে হতেই হবে। তোমার চারপাশে এই মুহূর্তে অনেক লোক পাবে যারা তোমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে আফসোস করছে, লোক দেখানো সহানুভূতি দেখাচ্ছে। তুমি তাদেরকে দেখিয়ে দাও যে, কারও সহানুভূতি কুড়ানোর মতো কোন কিছু ঘটেনি তোমার জীবনে। তোমার চারপাশে রঙিন প্রজাপতিদের উড়াউড়ি বন্ধ হয়ে যায়নি, গুন গুন মৌমাছিরা এখনও তোমার বন্ধু হয়ে আছে, দখিনা বাতাস এখনও তোমার জন্য নিয়ে আসছে অযুত সম্ভাবনার খবর। এখনও পাখির কল-কাকলী তোমার চারপাশকে মুখর করে তুলছে, এখনও তুমি ফুলের বনের ফুলপরী হয়ে উড়ে বেড়াতে পারো। এতসব যেহেতু তুমি করতে পারছসেহেতু তুমি সেই তুমিই আছো। কীট-পতংগ তো যে কোন মুহূর্তে মানুষকে দংশন করতেই পারে। তাই বলে কি মানুষ ভেঙ্গে গড়িয়ে পড়ে? না, তা করে না। বরং এর থেকে উপশমের পথ খোঁজে। কারণ, মানুষের জীবন থেমে থাকার জন্য নয়। মাগো, তোমাকেও আজ তাই করতে হবে। চারপাশকে মাড়িয়ে উঠে দাঁড়াতে হবে তোমাকে মাথা উঁচু করে। সমাজের ঘৃণিক কীটতের দু'পায়ে পিষে মারতে হবে। তোমার সব শেষ হয়ে গেল বলে আজ যারা হায় আফসোস করছে তাদেরকে দেখিয়ে দিতে হবেযে তোমার কিছুই শেষ হয়ে যায়নি। প্রত্যেকের জীবন তার তার। চাইলেই যে কেউ সেই জীবন নষ্ট করে দিতে পারেনা।



মাগো, আমি জানি তুমি পারবে। জীবনের অন্তহীন চলার পথে এই ছোট দুর্ঘটনার কালো ছায়াকে তুমি তোমার যোগ্যতা ও মহিমা দিয়ে আলোয় ভরে দিতে পারবে এ আমি বিশ্বাস করি। শুধু এই দুর্ঘটনা আর এই নরপশুর কথা বাদ দিয়ে দেখো তোমার চারপাশে আমরা সবাই রয়েছি--তোমার মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু, আত্মীয়-পরিজন সবাই। এরা সবাই তোমার শক্তি ও সাহস। আমরা সবাই তোমার প্রতি করা অন্যায় আচরণের বিচার চাইছি। এতগুলো শুভ বুদ্ধির মানুষের কাছে ঐ নর পিশাচদের শক্তি নস্যিমাত্র। সেই সামান্য শক্তির ভয়ে তুমি কুঁকড়ে থাকবে কেন? তুমি এ যুগের শিক্ষিত বুদ্ধিমতী মেয়ে। আজ যারা তোমার চারপাশে বর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের শক্তিতে নিজকে বলীয়ান করো। আমরা চাই তোমার তেজে বলীয়ান হয়ে উঠুক এদেশের আর দশটা নির্যাতীতা মেয়ে। প্রতিবাদী হয়ে উঠুক ওরা। তুমি হয়ে উঠো ওদের প্রতিবাদী শক্তির রোল মডেল।

পরিশেষে তোমার মা-বাবাকে বলছি। আপনাদের মেয়ের প্রতি যা হয়েছে তা ক্ষণিকের দুর্ঘটনা। একটা সময় ছিল যখন এমন ঘটনায় একটা মেয়ের সব শেষ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হতো। আজ সময় পাল্টেছে। জীবনটা এত ঠুনকো নয় যে এতেই আপনাদের মেয়ের জীবনের সব বরবাদ হয়ে যাবে। সামনে ওর অন্তহীন চলার পথ। এই পথে চলতে গিয়ে দুর্ভাগ্যবশত শুরুতেই একটা দুর্ঘটনা না হয় ঘটেই গেছে। তাই বলে চলা বন্ধ করে দিলে তো চলবে না। আপনাদের মেয়ে তো সেরকম নয়। সে উঠে দাঁড়িয়েছে। যে তার চলার পথে গর্ত খুঁড়ে দিয়েছে তার বিচার চেয়েছে। আপনাদের এখন কাজ মেয়েকে আরও সাহস যোগানো। জীবনে চলার পথে ও যেন চারপাশের সমস্ত অন্যায় অনাচার দুমড়ে মুচড়ে উপড়ে ফেলতে পারে সেই তেজ ওর মধ্যে জাগিয়ে তোলঅ। মনে রাখতে হবে অন্যায় আপনাদের মেয়ে করেনি, আপনারা করেননি। সমাজ বা লোক-লজ্জার ভয়ে মুষড়ে পড়ার কথা আপনাদের নয়, ঐ নর পিশাচের। ওর উপযুক্ত শাস্তি চাইছি আমরা। আাদের সকলের সম্মিলিত দাবী আর এর উপযুক্ত বাস্তবায়ন আপনাদের মেয়ের চলার পথকে সুগম করবেই করবে। এখন শুধু দরকার ওর বুকের সাহসটুকু। তাই আবারও বলছি, বার বার বলছি, মেয়ে তুমি সাহসী হও, শক্ত হও।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:২৪

সাইমনরকস বলেছেন: আবারও বলছি মেয়ে তুমি সাহসী হও শক্ত হও.....

০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৪৫

সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ। আমাদের সবার কামনায় ও জেগে উঠুক।

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৩৩

অনিক বলেছেন: "জাগো গো ভগিনী" শিরোনামে প্রায় একই বক্তব্যের একটি লেখা কাল রাতে এই ব্লগেই পড়লাম। লেখাটি ব্লগার জিকসেস-এর লেখা। ব্যাপারটা কাকতালীয় কিনা বুঝতে পারছিনা। নীচে লেখার লিংকটি দিলাম। পড়ে দেখতে পারেন।

Click This Link

০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৪৯

সুফিয়া বলেছেন: আপনার ভাবনা সম্পূর্ণ ঠিক নয়, তবে একেবারে মিথ্যে নয়। ঘটনাটা হলো লেখাটা আমি লিখেছিলাম ঘটনাটা জানার পর পরই। অভ্যাসবশত লেখা বলতে পারেন। কিন্তু অফিসের কাজের পাচে ব্লগে পোষ্ট দেবার কথাটা মনে পড়েনি। আজ সকালে ব্লগে ঢুকে উনার লেখাটা পড়ে মনে হলো আমার লেখাটাও তো পোস্ট দিতে পারি। ব্যস। দিয়ে দিলাম। এই আর কি? আপনি যেভাবেই দেখেন।

পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আর জিকসেসকে ধন্যবাদ তার লেখা দিয়ে আমাকে উৎসাহী করার জন্য।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৩৪

অনিক বলেছেন: "জাগো গো ভগিনী" শিরোনামে প্রায় একই বক্তব্যের একটি লেখা কাল রাতে এই ব্লগেই পড়লাম। লেখাটি ব্লগার জিকসেস-এর লেখা। ব্যাপারটা কাকতালীয় কিনা বুঝতে পারছিনা। নীচে লেখার লিংকটি দিলাম। পড়ে দেখতে পারেন।

Click This Link

৪| ০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৪৪

আর.এইচ.সুমন বলেছেন:
......রুখে দাঁড়াও নিজে.......

চাদের হাসি মেঘে ঢাকা
চোখের কোনে জলের ফোটা ...
কি হয়েছে বলোনা মেয়ে
খারাপ কেন মন ....

তুমি কেমন বদলে গেছো ...
চেনা যায় না ভালো ...
স্বভাবটা ও পাল্টে গেছে ...
মুখটা রাখো কালো ...

কদিন আগেও ছিলে তুমি
চঞ্চলা এক মেয়ে ...
এখন কেন বসে থাকো
মাটির পানে চেয়ে ...

জানি তোমার বাড়ছে বয়স
মন বসে না কাজে...
এমন সময় অনেক কিছুই
ঘটবে তোমার মাঝে...

ছেলেরা সব লাইন দেবে
ঘেঁষতে চাইবে কাছে...
তাই বলে কি থাকবে বসে
ঘরের কোনায় লাজে ...

মেয়ে তুমি পণ্য তো নও
ভাবতে হবে আগে ...
সব সমস্যা জয় করতে
মনের সাহস লাগে ...

মনের জোরে এগিয়ে চল
রুখে দাঁড়াও নিজে ...
বখাটেরা সব সালাম দেবে
তাদের ভুলটি বুঝে...

( উৎসর্গঃ- কৈশর উর্ত্তীর্ণ মেয়েদের উদ্দেশ্যে লেখা একটি ছড়া কবিতা ...)


মেয়েদের আরও সাহসী হতে হবে এই সব স্পর্শকাতর বিষয়ে ..। কারন সময়টা খুব কঠিন ...। আর পশ্চিমা সংস্কৃতির হাওয়াটা ও এদেশের উপর দিয়ে বেশ ভালই প্রবাহিত হচ্ছে ,, তাই এই কঠিন সময়ে ভাল ভাবে টিকে থাকতে হলে ,,,
মেয়েদের একটু চোখ কান খোলা রেখে সমস্যা গুলো মোকাবেলা করতে হবে ..।
আর কোন অন্যায়ই মাথা পেতে নেওয়া ঠিক হবে না ..........

০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৫২

সুফিয়া বলেছেন: মনের জোড়ে এগিয়ে চলো
রুখে দাঁড়াও নিজে
বখাটেরা সব সালাম দিবে
তাদের ভুলটি বুঝে--


অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১০:৫৪

মানবিক ৩০ বলেছেন: বাবা মা কে এই সব বিষয়ে খোলামেলা হতে কবে বিপদে পাশে দাড়াতে হবে .............

০৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:০০

সুফিয়া বলেছেন: একদম ঠিক বলেছেন। মেয়েটার এখন নানা শারিরীর সমস্যা দেখা দেয়াও অসম্ভব নয়। এ সময় মা-বাবাকে মেয়ের সাথে খোলামেলা হতে হবে বন্ধুর মতো। যাতে যে কোন সমস্যা সে কাটিয়ে উঠতে পারে।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.