নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি\nমানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ

ানু মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামায়াতের ত্রিকাল সমাচার

২৪ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫

জামায়াতের ত্রিকাল সমাচার
সূফি বরষণ
ভারতীয় উপমহাদের রাজনীতিতে জামায়াত একটি অতি পরিচিত নাম॥ ত্রিকাল দর্শী জামায়াতের বয়স এখন ৭৫ চলছে॥ সেই ত্রিকাল নিয়েই এবারের আলোচনা ॥
ব্রিটিশ ভারত (১৯৪১-১৯৪৭):
সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরের ইসলামীয়া পার্কে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। জামায়াত ভারতের মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান সৃষ্টির বিরোধিতা করেছিল। এবং ব্রিটিশদের পক্ষোবলম্বন করার অভিযোগ আছে॥ জামায়াত ১৯৪৬ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় দল মুসলিম লীগকে সমর্থন করেনি। দেশ ভাগের প্রশ্নে এই নির্বাচনের বিরোধীতা করে জামায়াত ॥ জামায়াত অখন্ড ভারতের পক্ষে ছিল সেই সময় ॥
স্বাধীনতা ও ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর মওদুদী ভারত থেকে পাকিস্তান চলে যান।
পাকিস্তান সময়(১৯৪৮-১৯৭১):
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর জামায়াতে ইসলামী দুইভাগে বিভক্ত হয় - জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান ও জামায়াতে ইসলামী হিন্দ। উভয় জামায়াত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের পৃথক কর্মসূচী ও কর্মপদ্ধতি নিয়ে কাজ করা শুরু করে।১৯৪৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জামায়াতের কাজ শুরু হয়। ঢাকায় প্রথম চার ব্যক্তি কাজ শুরু করেন। তারা হচ্ছেন: মাওলানা রফী আহমদ ইন্দোরী, খুরশীদ আহমদ বাট, মাওলানা কারী জলিল আশরাফী নদভী ও মাওলানা আব্দুর রহীম।
১৯৫৫ সালে মাওলানা আব্দুর রহীম পূর্ব পাকিস্তানের আমীর নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের নায়েবে আমীর হলে পূর্ব পাকিস্তানের আমীর নির্বাচিত হন অধ্যাপক গোলাম আযম।
১৯৬২ সালে আইয়ুব খান প্রণিত মুসলিম পরিবার আইন অধ্যাদেশের বিরোধিতা করার কারণে ১৯৬৪ সালের ৪ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর কর্মকান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মওদুদী সহ ৬০ জন জামায়াত নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ১৩ জন জামায়াত নেতা ছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম তাদের একজন। ১৯৫৮- সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শালআইয়ুব খান 'জামায়াতে ইসলামী'কে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন।জামায়াতে ইসলামী জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক আইন ঘোষণার সময় পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এবং ১৯৬৫ সালে সর্বদলীয় গণতান্ত্রিক জোট গঠিত হয়।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ প্রদত্ত ছয় দফা এবং মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ১১ দফার তারা তীব্র বিরোধিতা করে। ১৯৭০সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী পশ্চিম পাকিস্তানে ৪ টি আসন লাভ করে।মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ডাঃ আব্দুল মালিক কে গভর্নর করে ১৭ই সেপ্টেম্বার একটি প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হয়। সে সরকারের মন্ত্রী সভায় পরবর্তীকালে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্বাস আলী খান ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী হয়॥
বাংলাদেশ অধ্যায়:
  ১৯৭০ সালে আব্দুর রহিম জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের নায়েবে আমীর হলে পূর্ব পাকিস্তানের আমীর নির্বাচিত হন অধ্যাপক গোলাম আযম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর জামায়াত প্রকাশ্যে কাজ করেতে পারেনি। ১৯৭৬ সালে কয়েকটি অধুনালুপ্ত দলের সমন্বয়ে মাওলানা সিদ্দীক আহমদের নেতৃত্বে আইডিএল [ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ] নামে P.P.R [Political Parties Regulation] এর আওতায় এক নতুন দল গঠিত হয়। জামায়াত নেতাকর্মীরা এ নতুন প্লাটফর্মে কাজ করে।
১৯৭১ সালের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াত ও এর আওতায় পড়ে।
১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমানসরকার সকল ধরণের রাজনৈতিক দলের রাজনীতিউন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। পরে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের ২৬ মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গঠিত হয়। এর ভারপ্রাপ্ত আমীর পদ লাভ করেন আব্বাস আলি খান॥ দীর্ঘ আলোচনায় আমরা বুঝতে পারি যে, দুই শত বছরের ইংরেজদের অত্যাচার নির্যাতন আর জুলুমের অতিষ্ঠ মানুষ যখন মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছে তখন দুঃখজনক হয়েও সত্য জামায়াত জনগনের সাথে ছিলো না ॥ পাকিস্তান সময়ে জামায়াত কিছু গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছে কিন্তু সামরিক সরকারের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারেনি ॥ কিন্তু সবচেয়ে বড় ভুলটি করে ফেলে ৭১ অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে আন্দোলন করতে গিয়ে ॥ ত্রিকালের কোনো কালেই জামায়াত জনগণের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হতে পারেনি ॥ এমনকি ৭৫ বছরে এখনও পর্যন্ত জনগনের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পারেনি ॥ আর কখন পারবে সেটা আল্লাহ মালুম॥ সেটা বাংলাদেশ পাকিস্তান ভারত মালদ্বীপ কোনো দেশেই হয়নি এখন পর্যন্ত ॥ আর পাকিস্তান এবং ভারতে কোনো কালেই ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়॥ আর বাংলাদেশে যে সম্ভাবনা আছে সে সম্ভাবনাটাও জামায়াত রক্ষা করতে পারে॥ শুধু মাত্র নামটা পরিবর্তন করে নতুন নামে রাজনীতি করলে ॥
৭৫ বছরের রাজনৈতিক পরিপক্ক দল আজ যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে তবে দেশের মানুষ দুঃশাসনের কবল থেকে মুক্তি পাই॥ দেশের ভাগ্য আজ জামায়াতের একটি সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভর করছে॥ আশা করি আল্লাহ জামায়াতকে এবার সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া তৌফিক দিবে॥
মুক্ত বুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
..

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.