নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি\nমানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ

ানু মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?!!একেই কি বলে সভ্য সমাজ ?? আর নয় বর্ণবাদ ......

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:৪৯

আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?!!একেই কি বলে সভ্য সমাজ ??
আর নয় বর্ণবাদ ......

সূফি বরষণ
বর্ণবাদের ইতিহাস সুপ্রাচীন। সভ্যতার কোনো আদিম যুগে মানুষে মানুষে ঘৃণা, বিদ্বেষ ও নানা রকম ভেদাভেদ সৃষ্টিতে ইন্ধন জুগিয়েছে মানুষের নিছক গাত্রবর্ণ। মনুষ্যত্বের নিদারুণ অপমান ও নিগ্রহ-নিপীড়নের তা মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তথাকথিত সভ্য মানুষেরাই, সাদা মানুষের দলই, কবির ভাষায় মানুষ ধরার দলই, 'গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে 'লোহার হাতকড়া নিয়ে', কালো আফ্রিকার কালো মানুষদের শৃঙ্খলিত করে বর্ণবৈষম্যবাদের সুদীর্ঘ হিংস্র মানবতাবিরোধী কৃষ্ণ অধ্যায়ের সূচনা করেছিল।

সে অধ্যায় কালো মানুষের লাঞ্ছনায়, রক্তপাতে, নিষ্ঠুর শোষণ-নির্যাতনের অজস্র রক্তাক্ত ঘটনায় বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে রেখেছে। সাদা চামড়ার মানুষের সীমাহীন বর্বরতা ও হিংস্রতার বিরুদ্ধে, মনুষ্যত্ব ও সমানাধিকারের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ফুঁসে উঠে রুখে দাঁড়িয়েছে কালো মানুষেরা।

আর তার জবাবে তাদের নির্বিচারে গুলি করে, হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে তথাকথিত সভ্য সাদা মানুষের নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রের সৈন্য-পুলিশ-গুণ্ডা বাহিনী। সারা বিশ্বে আজ পর্যন্ত অগণিত কালো মানুষ ও তাদের অধিকার আন্দোলনের কর্মী-নেতারা অজস্রবার জেল খেটেছে, অকালে প্রাণ দিয়েছে। ষাটের দশকে কৃষ্ণ আফ্রিকাজুড়ে দেশে দেশে কালো মানুষের ব্যাপক জাগরণ হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনের অচলায়তন ভেঙে চুরমার করে দিয়ে আফ্রিকার বহু দেশেই কালো মানুষ রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে ছিল ॥

নতুন করে ঘটনার সূত্রপাত
চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে কয়েকজনের বর্ণবাদী মন্তব্যে ফেসবুক প্রতিক্রিয়ায় আশংকার কথা অনেকেই জানিয়েছে ॥
এইবার চট্টগ্রাম টেস্ট বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে আইসিসি। আরেকবার এই রকম হলে চট্টগ্রাম টেস্ট বন্ধ করে দেয়া হবে! দক্ষিণ আফ্রিকার এক কালো খেলোয়াড়কে বাংলাদেশি সমর্থকরা "নিগ্রো" বলে গালি দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকানরা এই নিয়ে ম্যাচ রেফারিকে নালিশ করেছে। ম্যাচ রেফারি জানিয়েছেন আরেকবার এই ধরনের ঘটনা ঘটলে চট্টগ্রাম টেস্ট বন্ধ করে দেয়া হবে॥
একটা বিষয় আপনাদের ক্লিয়ার করি। "নিগ্রো" এবং "ব্ল্যাক" শব্দ দুটো ব্যবহারের মাঝে খানিক পার্থক্য আছে। বাংলাদেশের মানুষ কালো কেউকে দেখলেই "নিগ্রো" বলে আখ্যায়িত করে।
এটা ঠিক না। এই ভাষাগত এবং আচরণগত মারাত্মক দোষ এখনই সংশোধন করতে হবে ॥ আমাদের আচরণ আজ দিন দিন বড়ই অসভ্য হয়ে যাচ্ছি ॥
বর্তমান বিশ্বের সভ্য সমাজের দেশের মানুষ যা না বলে না করে আমরা তাই করছি॥ বলতে গেলে মাত্রার অতিরিক্ত করছি॥

১৯৬০ সালের ২১ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার শার্পভিলে বর্ণবাদবিরোধী শান্তিমিছিলে পুলিশের বর্বর হামলা ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণে ৭০ জন নিহত ও দুই শতাধিক গুরুতর আহত হয়েছিল। এই ঘটনাকে প্রতীকী ঘটনা হিসেবে স্মরণ করে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২১৪২ ধারা অনুযায়ী ২১ মার্চকে বিশ্ব বর্ণবৈষম্য অবসান দিবস হিসেবে পালনের জন্য সাধারণ অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সারা বিশ্বে এর পর থেকে অ্যাপার্থেড বা বর্ণবাদ-নীতির বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ নির্বিশেষে সব ধরনের নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে ২১ মার্চ উলি্লখিত দিবস পালন করছে।

রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে তারা সব মানুষের সমানাধিকার কায়েম ও অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ও সমান সুযোগ-সুবিধা চালুর দাবি জানিয়ে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ও নামিবিয়ায় প্রাক-উপনিবেশ যুগে অ্যাপার্থেড নীতির সবচেয়ে নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং সেখানে ১৯৪৮ সালে সাদা-কালো বৈষম্যের মানবতাবিরোধী নীতি পাস হয়। ওই আইনের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ কালো মানুষকে সেখানে চরম বৈষম্যের শিকারে পরিণত হতে হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলিতদের শুধু আইন করে বঞ্চিত করা হয়, তা-ই নয়, তাদের বাধ্য করা হয় সঙ্গে পাসকার্ড বা পাসপোর্ট রাখতে।

৬০-এর দশকের পর থেকে "নিগ্রো" শব্দটির ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ এর সাথে রয়েছে শত বছরের দাস প্রথা, অত্যাচার ও ডিস্ক্রিমিনেশনের ইতিহাস। তাই এই শব্দটি সভ্য সমাজে এখন আর ব্যবহার করা হয় না।
এখন যদি কেউ নিতান্তই "কালো" বুঝাতে গিয়ে কিছু বলতে চায় তাহলে বলে "ব্ল্যাক আমেরিকান" কিংবা "ব্ল্যাক ব্রিটিশ" বা "ব্ল্যাক আফ্রিকান!" আর আপনি যদি "নিগ্রো" বলেন তাহলে সেটি গালির পর্যায়ে বর্ণবাদী মন্তব্য হয়ে যায়। আশা করছি এইবার বোঝা গেছে "নিগ্রো" শব্দটি কতোটা খারাপ অর্থে ব্যবহার করা হয়॥
আমি দীর্ঘদিন ধরে লিখে চলেছি আমাদের সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী মানসিকতার কথা! আপনারা বলেন, এই গুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।

এই গুলো নিয়ে লেখার কি আছে! একবার স্টেডিয়ামে গিয়ে ভালো করে শোনার চেষ্টা করবেন আপনার আশপাশের মানুষগুলো কি বলছে, কেমন মন্তব্য করছে! সাকিবের বউকে কেউ উদ্ধার করে ছাড়ছে, কেউ আবার তামিমের বল খুঁজে পাচ্ছে না বউয়ের আচলে থাকায়; কেউ বলছে সৌম্য তো হিন্দু কোটায় দলে আছে, কেউবা আবার বলছে এই খেলোয়াড়রা তো টাকা উড়ায় বেশ্যা পল্লীতে গিয়ে, এইগুলাকে পারিশ্রমিকের টাকা না দেয়াই ভালো! রুবেল তো হ্যাপীকে ফেলে অন্য মাঘী ধরছে॥ হ্যাপী কতো হট!!??

'আমি খুব ভদ্র ভাষার কিছু মন্তব্য আপনাদের বললাম। অন্য মন্তব্যগুলো বলার রুচি আমার নেই, তবে আপনারা খেলোয়াড়দের ফেসবুক পেজে ঘুরলেই বুঝে যাবেন লোকজনদের রুচি কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। এই ব্যাপারগুলো যদি এখনই বন্ধ না করা হয়, তাহলে কেবল দর্শকদের বিরূপ আচরণের কারণে আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে॥

চট্টগ্রাম টেস্টের আরো তিন দিন আছে; এই তিন দিনের মাঝে কোনো দর্শক যদি এই ধরনের মন্তব্য আবার করে বসে, তাহলে আমাদের ক্রিকেটের গত কয়েক মাসের অবদান সম্পূর্ণ ম্লান হয়ে যাবে। এটি মনে রাখবেন, এক গ্লাস দুধে, এক ফোঁটা লেবুর রস পড়লেই কিন্তু দুধ নষ্ট হয়ে যায়!

বিশেষদ্রষ্টব্য:
চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে ‘বর্ণবাদী মন্তব্যে’ সাউথ আফ্রিকার অভিযোগ চারশ’ রানের টার্গেটে তৃতীয় দিন শুরু করবে বাংলাদেশ বৃষ্টির কারণে এক সেশন খেলা হলো নাটাইগার পারফরম্যান্সে আশার উল্টোপিঠে শংকার যে মেঘবৃষ্টির বাধায় চট্টগ্রাম টেস্ট নজর কাড়া স্টাইলে ডেল স্টেইন চট্টগ্রাম টেস্টে ‘ধাক্কাকাণ্ড’প্রোটিয়াদের বোলিং চ্যালেঞ্জ ভালই সামলাচ্ছে টাইগাররা দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিং সামর্থ্য পরীক্ষায় মাঠে টাইগাররা বাংলাদেশী ক্রিকেট ধারাভাষ্যকাররা সমালোচনার মুখে॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: পৃথিবীর যেকোন অঞ্চলের মানুষের চাইতে বর্ণবাদী আমরা...এক শহরের মানুষ আরেক শহরের মানুষকে সহ্য করতে পারি না... অথচ উন্নত বিশ্বে এক টেবিলে পাঁচ মহাদেশের মানুষ একসাথে খায়!

২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪

সূফি বরষণ বলেছেন: সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.