নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পর্ব নয় ক
উপমহাদের রাজনীতিতে রক্ত দেয়া নেয়ার খেলা চলছে এবং ভবিষ্যতেও কি চলবে ????
বেনজির ভুট্টোর যেভাবে মৃত্যু হয়॥
সূফি বরষণ
২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বেনজির ভুট্টো আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারালেন রাওয়ালপিন্ডিতে। স্থানীয় সময় ১৮:১৬ (জিএমটি ১৩:১৬)-তে রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার সময় বেনজীরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে দলের কর্মীসহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘাড়ে গুলি লাগার কারণে বেনজীরের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, যে আততায়ী গুলি করেছিল সে-ই নিরাপত্তা রক্ষীদের হাত থেকে বাঁচতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী৷ একই স্থানে নিহত হয়েছিল পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান॥ গত বছর ১৮ অক্টোবর নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে করাচিতে আত্মঘাতী হামলা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও দ্বিতীয় হামলা থেকে আর রক্ষা পেলেন না। এখন তার ছেলে বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টো পিপিপি’র নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন। বেনজির ভুট্টোর জন্ম ২১শে জুন ১৯৫৩, করাচিতে৷ বেনজিরের বাবা ছিলেন জুলফিকার আলি ভুট্টো৷ জুলফিকার আলি ভুট্টো ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন৷ তাঁর রাজনৈতিক দলের নাম ‘পিপল্স পার্টি অফ পাকিস্তান' বা সংক্ষেপে পিপিপি৷ ১৯৮৮ সালে বেনজির ভুট্টো সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হন এবং মাত্র ৩৫ বছর বয়সে পাকিস্তানের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷
পাকিস্তানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেনজির আমেরিকায় যান উচ্চশিক্ষার জন্য৷ এরপর ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেন৷
১৯৭৭ সালে বেনজির ফিরে যান পাকিস্তানে৷ এবং এর পরপরই ‘হাউজ অ্যারেস্ট' করা হয় তাঁকে৷ সে সময় জেনারেল জিয়াউল হক সামরিক ক্যু-এর মাধ্যমে জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ক্ষমতাচ্যুত করেন৷ এর এক বছর পর, জিয়াউল হক প্রেসিডেন্ট হন পাকিস্তানের এবং ১৯৭৯ সালে জুলফিকার আলি ভুট্টোকে ফাঁসি দেয়া হয়৷ প্রচণ্ডভাবে ভেঙ্গে পড়েন বেনজির৷ ১৯৮০ সালে আসে আরেক পারিবারিক দুর্ঘটনা৷ প্যারিসের একটি ফ্ল্যাটে বেনজিরের ভাই শাহনেওয়াজ ভুট্টোকে হত্যা করা হয়৷ ভু্ট্টো পরিবার থেকে দাবি ওঠে যে, তাঁকে বিষপ্রয়োগ করে মারা হয়েছে৷ অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ জানান না তাঁরা৷ এরপর আরেক ভাই মূর্তজা ভুট্টো ১৯৯৬ সালে করাচিতে একটি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন৷ সেসময় বেনজির ভুট্টো ক্ষমতায়৷ তিনিই তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী৷
গত ( ২০০৬) বছর দুবাইতে ভারতের আউটলুক পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেনজির ভুট্টো বলেছিলেন, তিনি আশা করেন তার সন্তানরা জীবনে ভিন্ন পথে হাঁটবে, রাজনীতিতে না এসে ভিন্ন জীবন বেছে নেবে। বেনজির আরো বলেন, ‘যদিও আমি রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছি এবং দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে, কিন্তু আমি আমার সন্তানদের পরামর্শ দেবো রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে। অন্যভাবেও দেশের জন্য কাজ করার পথ খোলা রয়েছে। ডাক্তার, সমাজকর্মী বা অন্য যেকোনোভাবেই দেশ সেবা করা যায়। আমার সন্তানরা আমাকে বলেছে, তারা আমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। আমি তাদের সেই আশঙ্কাকে বুঝতে পারি। কিন্তু তারা পরিবারের রক্ত বহন করছে, জীবনে যাই ঘটুক না কেন, তা আমাদের সাহসের সাথেই মোকাবেলা করতে হবে।’ বেনজির না চাইলে কী হবে, তার ছেলে বিলাওয়ালই শেষ পর্যন্ত পিপিপি’র নেতৃত্ব পেয়েছেন। তার ভাগ্যে কী আছে তা নিয়তিই কেবল বলতে পারেন।
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
সূফি বরষণ বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ
৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
সূফি বরষণ বলেছেন: প্রকাশিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। এই থেকেই উল্লেখ করবো তাঁরই লেখা কিছু উদ্ধৃতি ॥
কোর্ট দারোগা ... আমাকে দেখে বলেন, “মজিবর খুব ভয়ানক ছেলে। ছোরা মেরে ছিল রমাপদকে। কিছুতেই জামিন দেওয়া যেতে পারে না।” (পৃঃ ১৩)। ১৯৪১ সাল তখন রাজনীতি শুরু করেছি ভীষণভাবে। সভা করি, বক্তৃতা করি। খেলার দিকে আর নজর নাই। শুধু মুসলিম লীগ আর ছাত্রলীগ। পাকিস্তান আনতেই হবে, নতুবা মুসলমানদের বাঁচানোর উপায় নাই।”(পৃঃ ১৫)। “আমরাও কলকাতা (মুসলিম লীগ) অফিসের হোল টাইম ওয়ার্কার হয়ে যাই। যদিও (ইসলামীয়া কলেজ) হোস্টেলে আমার রুম থাকত, তবু আমরা প্রায়ই লীগ অফিসে কাটাতাম। ... পাকিস্তান না আনতে পারলে লেখাপড়া শিখে কি করব?”(পৃঃ ৩২)।
“অখ- ভারতে যে মুসলমানদের অস্তিত্ব থাকবে না এটা আমি মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করতাম।” (পৃঃ ৩৬)। “এখন আর মুসলমান ছেলেদের মধ্যে মতবিরোধ নাই। পাকিস্তান আনতে হবে এই একটাই শ্লোগান সকল জায়গায়।”
“২৯ জুলাই জিন্নাহ সাহেব অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ কাউন্সিল সভা বোম্বে শহরে আহ্বান করলেন। অর্থের অভাবের জন্য আমি যেতে পারলাম না। জিন্নাহ সাহেব ১৬ আগস্ট তারিখে ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে ঘোষণা করলেন। তিনি বিবৃতির মারফত ঘোষণা করেছিলেন, শান্তিপূর্ণভাবে এই দিবস পালন করতে। ... কিন্তু হিন্দু মহাসভা ও কংগ্রেসের প্রপাগান্ডার কাছে তারা অর্থাৎ (মুসলিম লীগের অতিনমনীয় ফরোয়ার্ড ব্লক) টিকতে পারল না। হিন্দু সম্প্রদায়কে বুঝিয়ে দিল এটা হিন্দুদের বিরুদ্ধে।” (পৃঃ ৬৩)।
“আর যদি আধা ঘণ্টা দেরি করে আমরা বউবাজার হয়ে আসতাম তবে আমার ও নুরুদ্দিনের লাশও আর কেউ খুঁজে পেত না।” (পৃঃ ৬৩)।“মুসলমানরা মোটেই দাঙ্গার জন্য প্রস্তুত ছিল না, একথা আমি বলতে পারি।” (পৃঃ ৬৫)।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:১৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ক্ষমতার সাথে কি রক্তের কোন সম্পর্ক আছে???
নইলে কালে কালে সেই আদি থেকে আজ অব্দি রাজা রাজত্ব আর শৌর্যের ক্ষমতার চেয়ারের জন্য কত রক্ত!!!!!!!!!!!!!!
আপনার উদৌগে ধন্যবাদ