নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পর্ব দশ খ
উপমহাদের রাজনীতিতে রক্ত দেয়া নেয়ার খেলা চলছে এবং ভবিষ্যতেও কি চলবে ????
শেখ মুজিবের যেভাবে মৃত্যু হয়॥
সূফি বরষণ
অসংখ্য মেডিক্যাল স্কুল প্রতিষ্ঠিত করা হয়। বিজ্ঞান কলা ও বাণিজ্য অধ্যয়নের জন্য ২ শতেরও অধিক কলেজ প্রতিষ্ঠিত করা হয়। শিক্ষিত হিন্দুরা দেশ ত্যাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষিতের হার ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। পাকিস্তান আমলে শিক্ষিতের হার দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ অথচ পশ্চিম পাকিস্তানে শিক্ষিতের হার ছিল ১৮ শতাংশ।
১৯৪৯-৫০ সালে পাকিস্তানের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যারা লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এমন বাংলাভাষী ৪০ জনকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন শাখায় নিয়োগ দেয়া হয় সরকারী নির্দেশে। ১৯৪৯-৫০ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মেধা ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় ২০ শতাংশ বাকী ৮০ শতাংশ পদ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেয়া হয়। (R Symond, the British and their Successors 44-90) অথচ পূর্ব পাকিস্তানের কতিপয় পরিচিত মুখ এর বিরোধিতা করে। ষাটের দশকের মধ্যভাগ থেকে সিএসপিদের ৩ বছর কম সময় অতিক্রান্ত হলে তাদের নিজ প্রদেশে প্রত্যাবর্তন করানো শুরু হয়। ১৯৫৫ সালের প্রাথমিক পর্যায়ে পূর্ব পাকিস্তানী সিএসপির অনুপাত ৩৫ শতাংশে পৌছে। ১৯৭১ সালে নাগাদ এদের সংখ্যা পশ্চিম পাকিস্তানীদের সমপর্যায়ে উন্নীত হয়। ১৯৪৭ সালে এখানে কয়েকজন কমিশন অফিসার, ৫০/৬০জন জুনিয়র কমিশন এবং ২০০ জন জোয়ান ছিল। ১৯৭১ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০ হাজারে।
হিন্দু প্রতিযোগীদের অবর্তমানে মুসলমানরা ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও বিস্তৃতির যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিল। পাকিস্তানোত্তর পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মধ্যে খুব দ্রুত শিক্ষার বিস্তৃতি ঘটে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অর্জন করেছে নবতর মর্যাদা। যেমন এর আগে হিন্দুদের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে হীনমন্যতা অনুভব করতো, খুব সহজে এই হীনমন্যতা অতিক্রম করেছে। (জিপি ভট্টাচার্য ১৯৭৩, ১১৯, ২০) শুরু থেকে হিন্দুরা মুসলমানদের এই উত্থান অসহ্য মনে করেছে।
স্বাধীনতার প্রথম পর্যায়ে পাকিস্তানের সব মুসলমানই ভাবতে শুরু করে তারা উচ্চ শ্রেণীর, তারা শাসকের বংশধর এবং হিন্দুরা তাদের অধীন। একজন ঠেলাগাড়ী চালক ও একজন প্রভাবশালী হিন্দুকে একথা বলার সাহস রাখতো যে আপনাদের দ্বিধা সংকোচের কোন কারণ নেই, নির্ভয়ে চলাফেলা করুন। কেননা মুসলমানরা অর্থাৎ তারা শাসক এবং হিন্দুদের নিরাপত্তা দেয়া তাদেরই দায়িত্ব। এটাই ছিল মুসলমানদের মানসিকতার প্রাণবন্ত উত্থান। (পিসি লাহিরী ১৯৪৬ : ৮-৯)
পরিস্কার ভাবে একথা বলা যায় যে, পাকিস্তান সামাজিক অর্থনৈতিক মনস্তাত্বিক মুক্তির ব্যাপারে কয়েক শতাব্দী রুদ্ধ দ্বার উন্মুক্ত করেছে যা তাদের মধ্যে এনে দিয়েছে সার্বিক উন্নয়নের সামর্থ। এতদ্সত্বেও এটা ঠিক যে, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বৈষম্য নিয়ে পাকিস্তানের যাত্রা শুরু হয়েছিল এবং সেই বৈষম্য পূর্ণাঙ্গভাবে দূরীভূত করা তখনও সম্ভব হয়নি।
এইচ টি ইমাম ও মোশতাকের হাঁসের মাংস ॥
শেখ মুজিব বিশ্বাস করে সাধারণ সচিব থেকে এইচ টি ইমামকে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বানিয়ে ছিলেন ॥ শেখ মুজিব হাঁসের মাংস খেতে খুব পছন্দ করতেন॥ এটা খন্দকার মোশতাক ও এইচ টি
ইমাম জানতো ॥ তাই এই দুই শয়তান বুদ্ধি করে ১৫ আগস্ট রাতে মোশতাক মুজিবের বাসায় গরম গরম হাঁসের মাংস নিয়ে যায়॥ এর পরের ঘটনা সবার
জানা॥ শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর দিন সকালে সবার আগে বঙ্গভবনে এইচ টি ইমাম গিয়ে হাজির॥ এই শয়তানই প্রথম কোনো সরকারি উচ্চপদস্হ কর্মচারী যিনি খন্দকার মোশতাকের অবৈধ ক্ষমতা গ্রহণ কে সমর্থন করেন !!!?? শুধু
তাই নয় এইচ টি ইমাম বঙ্গভবনে উপস্হিত থেকে মোশতাকের অবৈধ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা
করেন ॥ ইত্তেফাকের তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে বলে খন্দকার মোশতাকের শপথ গ্রহণকে সাত কলামে লীড নিউজ করার আর মুজিবের মৃত্যুর খবরটা এক কলামে ছাপানো জন্যে ॥, যে কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বা বাংলা একাডেমীর লাইব্রেরীতে ১৯৭৫ সালের ১৬ ও ১৭ আগস্টের ইত্তেফাক দেখলে তার প্রমাণ পাবেন॥ শেখ মুজিবের একনিষ্ঠ সমর্থকরা এইচ টি ইমামকে মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের একজন হিসেবে মনে করে॥ ক্ষমতার লোভে
হাসিনা মিয়া পিতার হত্যাকারী আর রাজাকারদের লালন পালন করছে॥ আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করে কি ভাবে জনগনের ভোট ছিনিয়ে কাউকে ক্ষমতায় রাখা যায় তা নির্বাচন কারচুপির জনক এইচ টি ইমামের চেয়ে কেউ ভালো জানে না॥ এই শয়তান হলো গণতন্ত্রকে হত্যা
করে আমলাতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের জনক॥ আর সে হলো আসল নাটেরগুরু॥ একবার আমার রুমমেইড বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হয় বিয়াম মিলনায়তনে ॥ ওনী এসেছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের
কর্মকর্তা হিসাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্যে আর আমি নিউজ কাভার করতে ॥ ভাই কে বলি নিউজের জন্যে কিছু তত্ত্ব দেন॥ তখন তিনি বললো এইচ টি ইমাম ছেলেকে দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পদোন্নতির কথা বলে ব্যাপক ভাবে ঘুষ বাণিজ্য করছে ॥ এখনও প্রশাসনে এইচ টি ইমামের কথা ছাড়া কিছুই হয়
না ॥
ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে, ফারুক তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সকাল ৫ টা ১৫ মিনিট হয়ে গেছে। ততক্ষনে ঘাতকদল তাদের গন্তব্যস্থলে পৌছে গেছে নিশ্চয়ই।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ীর অবস্থা গোলযোগপূর্ণ। ভোর সোয়া পাচটার মধ্যেই মেজর মহিউদ্দিন, নূর আর হুদার নেতৃত্বে পরিচালিত প্রধান ঘাতকদলটি শেখ মুজিবের বাড়ী পৌছে গিয়েছিলো। তাদের সঙ্গে পাঁচ ট্রাক ভরতি ১২০ জন সৈন্য আর একটি হাউইটজার ছিল। মিরপুর রোডের লেকের পাড়ে হাউইটজারটি শেখ মুজিবের বাড়ীর মুখোমুখি বসানো হলো। আরও কিছু ট্রাকে করে সৈন্য এসে পুরো বাড়ীটার চতুর্দিক ঘিরে ফেলে। তারপরি মেজরবৃন্দ আর তাদের লোকেরা ভেতরে ঢূকে পড়ে। ঐ সময় শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত প্রহরীরা বারান্দায় গুমন্ত ছিলো। আনাগোনার শব্দ শুনে ওরা জেগে উঠে। গেইট দিয়ে অচেনা লোকদেরকে অস্ত্র নিয়ে ঢুকতে দেখে তারা তাদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি চালায়। আর্টিলারির শামসুল আলমের মাথায় গুলি লেগে সঙ্গে সঙ্গেই সে মারা যায়। ল্যান্সার বাহিনীর আর একজন সৈন্য গুরুতরভাবে আহত হয়। সঙ্গীদের ঢলে পড়তে দেখে আর বাড়ীর ভেতর থেকে প্রচন্ড প্রতিরোধের কারনে সৈন্যরা তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে শত্রুর উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
কয়েক মিনিটের মধ্যেই শেখ মুজিবের দেহরক্ষীদের খতম করে দিয়ে তারা বাড়ীর ভেতরে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই নীচতলার প্রতিটি রুম পালাক্রমে তল্লাসী করে দেখে। ইতিমধ্যে প্রচন্ড গুলি বিনিময়ের শব্দে হাউইটজার থেকে রকেট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। রকেটের প্রথম দুইটিই ধানমন্ডি লেকের দুপাশে গিয়ে পড়ে। তারপর তারপর তারা তাদের কামান উচিয়ে আরও ছয় রাউন্ড রকেট নিক্ষেপ করে। একটিও লখ্যভেদ করতে সক্ষম হয়না। কামান থেকে এত বেশী জোড়ে রকেটগুলি নিক্ষিপ্ত হয়েছিলযে, এর একটা প্রায় চার মেইল দূরে মোহাম্মদপুরে এক বিহারীর বাড়ীতে গিয়ে পড়ে। ঐ রকেটের আচমকা আঘাতে দু ব্যক্তি নিহত ও অনেক লোক আহত হয়।
শেখ মুজিবের ছেলে শেখ কামাল আর শেখ জামাল সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্টেনগান হাতে নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু বেশীক্ষন টিকতে পারেনি কামাল
সিড়ির গোড়ার দিকেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। শেখ মুজিব নিজেও খুব তাড়াতাড়ি কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আক্রমন ঠেকানোর চেষ্টা চালান। প্রথমেই তিনি টেলিফোন করেন রক্ষীবাহিনীর সদর দপ্তরে। সেদিন রক্ষিবাহিনীর কমান্ডিং অফিসার ব্রিগেডিয়ার নূরুজ্জামান আর কর্নেল
সাবিহুদ্দিন দেশে ছিল না। তিনি বহু চেষ্টা করে অন্য কোন সিনিয়র অফিসারকেও মিলাতে পারলেন না। উপায় না পেয়ে তিনি সেনাবাহিনীর স্টাফ প্রধান, জেনারেল শফিউল্লাহকে ফোন করেন এবং তার মিলিটারী সেক্রেটারী মাশহুরুল হককে ফোন করে অবিলম্বে সাহায্য পাঠাবার নির্দেশ দেন। সর্বশেষ ফোন করেন সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের ডাইরেক্টর কর্নেল জামিলকে।
এরই মধ্যে বাড়ীর সর্বত্র ওরা ছড়িয়ে পড়েছে। মেজর বাহাউদ্দিন, হুদা আর নুর বাড়ীর প্রতিটি কামরা মুজিবের খোএজে তন্ন তন্ন করে চষে বেড়াচ্ছে। হঠাত অপ্রত্যাশিতভাবে মহিউদ্দিন মুজিবকে পেয়ে গেলো। সে দুতলায় উঠতে সিড়ির গোড়ায় পা ফেলতেই শেখ মুজিবকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পায়। তাদের মধ্যে দূরত্ব ২০ ফুটের বেশী হবেনা। শেখ মুজিবের পরনে একটি ধূসর বর্ণের চেক লুঙ্গি আর সাদা পাঞ্জাবী। ডান হাতে ছিলো ধূমপানের পাইপটি। শেখ মুজিবকে হত্যা করার দৃঢ় মনোবল নিয়ে এ অভিযানে বেরুলেও মহিউদ্দিন শেখ এর সামনা সামনি দাঁড়িয়ে পুরোপুরিভাবে মনোবল হারিয়ে ফেলে। মহিউদ্দিন আমতা আমতা করে তাকে বলেছিল, স্যার আপনি আসুন।।
'তোমরা কি চাও?' মুজিব অত্যন্ত কর্কশ ভাষায় জিজ্ঞেস করলো। 'তোমরা কি আমাকে খুন করতে চাও? ভুলে যাও। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী তা করতে পারেনি। তোমরা কি মনে করো, তা করতে পারবে?
মুজিব স্পষ্টতই সময় কাটাতে চাচ্ছিলেন। তিনিতো আগেই বেশ কয়েক জায়গায় ফোন করে রেখেছে। ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই লোকজন তার সাহায্যে ছুটে আসছে। সেই সময়ে তিনি অত্যন্ত সাহসের পরিচয় দিচ্ছিলেন।
মহিউদ্দিন তখনও ঐ একই কথা বলে চলছিলো "স্যার আপনি আসুন" আর অন্যদিকে শেখ মুজিব তাকে অত্যন্ত কড়া ভাষায় ধমকিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় নূর এসে পড়ে। তার হাতে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। সে বুঝে ফেলে, মুজিব সময় কাটাতে চাইছেন। মহিউদ্দিনকে একপাশে সরিয়ে নিয়ে নূর চিতকার করে আবোল তাবোল বকতে বকতে তার স্টেনগান থেকে মুজিবকে লক্ষ্য করে ব্রাশফায়ার করে। শেখ মুজিব তাকে কিছু বলার সুযোগ পেলেন না। স্টেনগানের গুলি তার বুকের ডানদিকে একটি বিরাট ছিদ্র করে বেরিয়ে গেলো। গুলির আঘাতে তার দেহ কিছুটা পিছিয়ে গেলো। তারপর নিস্তেজ হয়ে তার দেহ মুখ থুবড়ে সিড়ির মাথায় পড়ে গেলো। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের মহান নেতার নিথর দেহ সিড়ি দিয়ে কিছুদুর গড়িয়ে গেয়ে থেমে রইল........ তার ধূমপানের প্রিয় পাইপটি তখনও তিনি শক্তভাবে ডান হাত দিয়ে ধরে রেখেছিলেন।
সময় তখন সকাল ৫ টা ৪০ মিনিট। বাঙ্গালী জাতির সাথে শেখমুজিবের প্রচন্ড ভালোবাসার চিরতরে অবসান ঘটলো।
[তথ্যসূত্রঃ Anthony Mascarenhas; Bangladesh: A legacy of Blood
৪৭ এ দেশ ভাগের সময় পূর্ব বাংলার অবস্থা ঃ আওয়ামী লীগের এমপি এম এ মোহায়মেনের ইতিহাসের আলোকে ভারত ভাগ ও কায়দে আযম জিন্নাহ বইয়ের ভূমিকা তুলে ধরছি॥
১৯৪৭ সাল অবধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম ছাত্র সংখ্যা ছিল অত্যল্প এবং মুসলিম শিক্ষকের সংখ্যা ছিল অনুল্লেখযোগ্য। দ্বিতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজের অবস্থা এর চেয়ে উত্তম ছিল না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের প্রাধান্য ১৯৫০ সাল অবধি একই রকম বিরাজ করছিল। এদের পরীক্ষা নেওয়া হতো কোলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয়ে। এই প্রদেশে প্রশাসনিক জ্ঞান সম্পন্ন জনশক্তি ও স্থানীয় নেতৃত্ব ছিল না, যাদের উপর নির্ভর করে উন্নয়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া যায়। মাত্র একজন আই সিএস অফিসার ছিল তিনি হলেন ব্রাহ্মণবাড়ীর ছেলে আক্তারুজ্জামান, তিনি দেশ ভাগের সময়ে ভারতে থেকে যান পূর্ব বঙ্গে না এসে॥ আর দুই জন্য ছিলেন নমিনেটেড নুরুনবী ও মোর্শেদ॥ এই দুজনের মধ্যে একজন পূর্ব বঙ্গে আসেন অপর জন ভারতে থেকে যান॥ এখানে ২০/২৫ জন ডিপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট এবং সাব ডিপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ছিল কিনা সন্দেহ । পুলিশ অফিসার এবং কনষ্টেবলের সংখ্যা ছিল ন্যূনতম প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগ্ন । অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানে যেমন রেলওয়ে জনশক্তিতে পূর্ব বাংলার মানুষ ছিল প্রায় অনুপস্থিত। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে। মাত্র ২শ’ জন শক্তি নিয়ে একটি সেনা বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না। তখন প্রশাসনিক সামরিক কোন ক্ষেত্রেই পূর্ব বাংলা স্বনির্ভর হওয়ার মত প্রয়োজনীয় পরিমাণ দক্ষ জন শক্তি ছিল না। ভারত থেকে আসা অবাঙালী দক্ষ জনশক্তি ও প্রশাসনিক জনশক্তি তৎকালীন পূর্ব বাংলার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল।। দুই শত বছরের গোলামী আর হিন্দুদের ষড়যন্ত্রে পূর্ব বাংলায় কিছুই গড়ে উঠেনি যে একটি রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে ॥ সে সময় যদি বাংলা পাকিস্তানের সাথে না যেত তবে আজকের বাংলাদেশের অবস্থা হায়দ্রাবাদ বা সিকিমের মতো হতো॥ সে সময় যেসব নেতারা যুক্ত বা পৃথক বাংলার প্রস্তাব দিয়েছিল তারা কত অজ্ঞ আর অদূরদর্শী ছিল চিন্তা করেন ॥ ১৯৪৭ সালে এখানে কয়েকজন কমিশন অফিসার, ৫০/৬০জন জুনিয়র কমিশন এবং ২০০ জন জোয়ান ছিল। ১৯৭১ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০ হাজারে। দুই শত বছরে বাংলাদেশে এবং স্বাধীনতার ৪৪ বছরে যা হয়নি ২৫ বছরের পাকিস্তানের শাসন আমলে বাংলাদেশে অনেক বেশি হয়েছিল ॥ এই দীর্ঘ আলোচনার পর এ কথা বলতে আর বাকী নেই যে মুজিব হঠাৎ করেই ইন্দিয়া গান্ধীর কু পরামর্শে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ লাগিয়ে ইতিহাসের নারকীয় গণহত্যা চালায়॥ এই জন্য শুধু মুজিব নয় ভুট্রো ইন্দিয়া গান্ধী দায়ী॥ অপর দিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুজিব জাসদের ত্রিশ হাজার নেতা কর্মীদের হত্যা হত্যা করে ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য ॥ মুজিবই সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল কোথায় সেই সিরাজ সিকদার ॥ মানে মুজিবের নির্দেশে সিরাজ সিকদারকে হত্যা করা হয়॥
এই কারণেই হত্যাকারীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় কি করে ???!! তাই মুজিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হয়নি যেমনটা হয়নি ভুট্রো পরিবারের ॥ শুধু আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির শাসনামলে নয়, আওরঙ্গজেবের দুটি হাতেই রক্ত ছিল। তাঁর তিন ভাই ছিলেন—দারা শিকোহ, সুজা ও মুরাদ। আওরঙ্গজেবের হাত যদি তিনটি থাকত, তা হলে তিন হাতেই থাকত রক্ত। তাঁর টুপি সেলাই ও কোরআন নকল করে বিক্রির গল্প আমরা স্কুলে পড়েছি। তাঁর সততা চ্যালেঞ্জ করার সাহস নেই। কিন্তু ভাইদের ও অন্যদের রক্ত যে তাঁর হাতে লেগে ছিল অামৃত্যু, তাতে সন্দেহ পোষণ করি না। সিরাজউদ্দৌলা ও তাঁর সেনাদের রক্ত ছাড়া ক্লাইভ ও তাঁর লোকেরা ভারতবর্ষে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে পারতেন না। ইংরেজরা খুব অল্পস্বল্প রক্তখোর ছিল না। যারাই স্বদেশের স্বাধীনতা চাইত তাদেরই রক্ত খেতে চাইত। ১৮৫৭-তে তারা দিল্লির লালকেল্লা থেকে ঢাকা সদরঘাটের বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়।
এদের কারোই স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি ॥ আর হওয়ার কথাও না ইতিহাস তার গতিতে চলে ॥ এখানে আর একটি কথা না বললে পুরো লেখাটা অপূর্ব থেকেই যাবে ॥ গোলাম আযম যিনি পাকিস্তানীর সহায়তা করার কারণে অনেক ভালো মানুষ হওয়ার পরও জেলে বন্দী অবস্থায় মৃত্যু হয়॥ এটা কিন্তু কম শাস্তি নয়॥ যারাই পৃথিবীতে হত্যা কান্ড চালিয়েছে বা সহায়তা করেছে তাদের কারোই স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি ॥ পৃথিবীতে একটা প্রকৃতিক আইন আছে॥ সেই আইন লংঘন করলে তাকে শাস্তি ভোগ করতেই হবে॥
আর মুজিবেরও ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে ॥ মুজিব একজন খুনী হিসেবে তার পাপের শাস্তি ভোগ করেছে ॥
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আমি কোনো প্রকার অ স্বাভাবিক মৃত্যুকে সমর্থন করি না ॥ সেটা মুজিব থেকে শুরু করে মেতর ঝাড়ুদার পর্যন্ত সকল নাগরিকদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
সূফি বরষণ
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:১৫
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: পাকিস্তানি সামরিক জান্তা যদি ক্ষমতা হস্তান্তর করতো (স্বায়ত্তশাসন দিতো), তাহলে কি মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন প্রয়োজন ছিল? মুজিব তো শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন । সামরিক জান্তার কি দায় নেই? গনহত্যা মুজিব-ইন্দিরা চালিয়েছিলেন, না পাকিবাহিনী? জাসদের ত্রিশ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করা হয়? আচ্ছা, জাসদের গণবাহিনীর কাজ কর্ম কি ছিলো, অাপনি কি ওয়াকিবহাল নন? ওরা যে লুট করতো, ডাকাতি করতো, খুন করতো; এগুলো কি ইতিহাস থেকে মুছে গেছে? সিরাজ শিকদারের কথা বলছেন? সর্বহারা সম্পর্কে ধারণা আছে?