নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল-কুরআনের পাণ্ডুলিপি বার্মিংহামে আবিষ্কার এবং সংশয় নিরসন নিয়ে কিছু কথা॥
যুবাইর মোঃ এহসানুল হক ও সূফি বরষণ
স্নায়ুযুদ্ধের পরে, পশ্চিমের ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখতে এবং মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদ দখলের জন্যে ওয়ার অন টেরর প্রথমে টার্গেট ছিল মুসলমানেরা, তারপরের টার্গেট ছিল ইসলামের রাসূল মুহাম্মাদ (সা.), এখন তাদের টার্গেট মুসলমানদের মহা পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআন। এরই ধারাবাহিকতায় গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বৃটেনে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালা থেকে বিশ্বের এ যাবৎকালের সবচেয়ে প্রাচীনতম কোরআনের পাণ্ডুলিপি পাওয়া গেছে। রেডিও কার্বন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা করে গবেষকরা বলছেন এটি অন্তত ১৩৭০ বছরের পুরনো। তারা বলছেন বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে সংরক্ষিত এই পাণ্ডুলিপি হয়তো পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে পুরনো পণ্ডুলিপির অংশ। কোরআনের এই পৃষ্ঠাগুলো বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে প্রায় একশ বছর ধরে অবহেলিতভাবে পড়েছিল। গবেষকরা বলছেন যিনি এই পাণ্ডুলিপি লিপিবদ্ধ করেছিলেন তিনি সম্ভবত মহানবী (স.)-এর সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন অথবা মুখোমুখি তাঁর বাণী শুনেছিলেন। এই আবিষ্কারে গবেষকরা বিস্মিত ও আনন্দিত। সূত্র বিবিসি। http://www.bbc.co.uk/news/business-33436021
এবং আল জাজিরার নিউজ Click This Link
তখন আমি ভেবেছিলাম এই এক কোরআন নিলামে তুলে আরব ধনকুবদের কাছ থেকে বিলিয়ন পাউন্ড কামিয়ে নেয়ার ধান্দা ॥ কিন্তু জল এখন অন্য দিকে গড়িয়েছে, চক্রান্ত মোড় দিয়েছে মুসলমানদের বুদ্ধি ভিত্তিক চিন্তা চেতনাকে দুর্বল করে দেয়া॥
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার পরিচালক বলেছেন কার্বন ডেটিং পরীক্ষা বলছে যে চামড়ার ওপর এই পাণ্ডুলিপি লেখা হয়েছে তা ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে লেখা হয়েছিল এবং এই ফলাফলের নিশ্চয়তা শতকরা ৯৫ ভাগ।কিন্তু, আজকে দেখা যাচ্ছে ঘটনা আরও জটিল।
সেই একই আল কোরআনের কপি আবার নিউজে আসছে যে, কার্বন ডেটিং করে পাওয়া গেছে , এই কপিটা আসলে রাসূল (সা.)-এর জন্মের আগে লিখিত। এই নিউজটা নিয়ে প্রাশ্চাত্যের মিডিয়া আউটলেট গুলোতে ব্যাপক প্রোপাগান্ডা শুরু হয়ে গেছে যে, আল কোরআন রাসূলের (সা.) জন্মের আগেই কেউ লিখে রেখেছিল। পরবর্তীতে, লেখা গুলো কপি করা হয়েছে। সূত্র ডেইলি মেইল
Click This Link
যুদ্ধের সময়ে প্রোপাগান্ডা দিয়ে শত্রু পক্ষের আদর্শকে কিভাবে, ডিলিজিটিমাইজ করতে হয়, তার যেই থিওরি আছে, সেই থিওরির সূত্রমতে এখন শেষ ধাপের বাস্তবায়ন চলছে। এরপরে মুসলমানদের ডিহিউমানাইজ প্রসেস কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পরে, তাদেরকে এনিহিলেট করা হবে।
http://www.bbc.co.uk/news/business-33436021
Click This Link
http://www.timesofisrael.com/uk-researchers-say-quran-fragments-could-predate-muhammad/
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন পাণ্ডুলিপি শাখায় আল-কুরআনের কয়েকটি পৃষ্ঠা পাওয়া যায়। কার্বন ডেইটিং-এ জানা যায় এটি লেখা হয়েছে ৫৬৮ হতে ৬৫৪ সালের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে। প্রাচীন পাণ্ডুলিপির বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সন বলা হয়নি?, বরং দীর্ঘ একটি সীমারেখা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে যখন দেখা গেল সীমারেখার শুরুটা মহানবী (সা) এর জন্মের পূর্বে তখন পশ্চিমা মিডিয়া কুরআন সম্পর্কে সংশয় সৃষ্টির জন্য খাসা একটি বিষয় পেয়ে গেল। ৩১ আগস্ট ডেইলি মেইল অনলাইনে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে যার মূলকথা হলো কুরআন মুহাম্মদেরও সা পূর্বে রচিত ??!! (), অতএব ইসলামের ইতিহাস ও মুসলিম বিশ্বাসের পুনর্লিখনও অপরিহার্য হয়ে পড়বে ॥ আর দুনিয়ার সকল অমুসলিম এবং নাস্তিকরা এটা মজাদার বিষয় পেয়ে গেলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে উচু গলায় কথা বলতে ॥
কিন্তু সমস্যা হলো এ রিপোর্ট দেখে একদল চিন্তাবিদ মুসলিম তরুণ ভয়াবহ বিপদে পড়ে গেলেন। তাদের নিয়ত সৎ, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তবে তারা প্রতিরোধের জন্য গোলপোস্টেরও পেছনে দাঁড়ালেন। ফলে প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকারদের বল তাদের হাতে আসার আগেই গোল হয়ে যাবে।
তারা এটি খেয়াল করলেন না যে কার্বন ডেইটে যে সীমারেখা দেওয়া হয়েছে সে সময়ের মাঝেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পুরো কুরআন তিনবার লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। মহানবীর জীবদ্দশায়, আবূ বাকর রা এর আমলে (৬৩২-৩৪) এবং উসমান (রা) এর আমলে (খুব সম্ভবত ৬৪৫-৫০)। তাছাড়া অহী নাযিলের শুরু হতে অর্থাৎ ৬১০ সাল হতেই অনেক সাহাবী ব্যক্তিগত ভাবে কুরআনের বিভিন্ন অংশ লিপিবদ্ধ করতেন। অতএব এতে কোন সন্দেহ নেই যে, পাণ্ডুলিপিটি মহানবী বা তাঁর দুই মহান সাহাবীর সময়ে রচিত।
এছাড়াও রাসূলের জীবনের অনেকগুলো ঘটনার আলোকে বিভিন্ন আয়াত নাজিল হয়েছে। যেমন ঃ সুরা আল আহযাবে সাহাবি জায়েদ বিন হারেস (রা.) এর বর্ণনা আছে তেমনি সুরা লাহাবে আছে রাসূলের চাচা আবু লাহাবের বর্ণনা, তায়াম্মুমের বর্ণনা, সুরা আলাক, সুরা দোহাসহ এমন অসংখ্য ঘটনার বর্ণনা রাসুল সাঃ জীবনের সাথে জড়িত । বলতে গেলে রাসুল সাঃ গোটা জীবনটাই আল কুরআন ॥ এখন প্রশ্ন হচ্ছে যারা অপপ্রচার করে বলছে যে, বার্মিংহামের আবিষ্কৃত কুরআনটি রাসুল সাঃ এর জন্মের আগের ???! কিন্তু প্রমাণিত হলো যে এই সবই ষড়যন্ত্র এবং গভীর ষড়যন্ত্র ॥
মজার ব্যাপার হল মেইল-এর ওই রিপোর্টের শেষে বিশেষজ্ঞদের মতামতের একটি ভিডিও দেয়া হয়েছে, যাতে খ্রিস্টান গবেষকগণ বলছেন যে, এটি প্রফেটের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে লেখা হয়েছে। তাদের আরো দাবী: পাণ্ডুলিপির কুরআন ও বর্তমান কুরআন এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ পাণ্ডুলিপিটি মুসলিমদের ঈমান বৃদ্ধির নিয়ামক, অথচ পশ্চিমা মিডিয়া এটিকে সংশয় সৃষ্টির কাজে ব্যবহার করতে চক্রান্তে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ॥
মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র থেকে
©somewhere in net ltd.