নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি\nমানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ

ানু মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি

সূফি বরষণ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব চার।। কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে

০৫ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৯:০৯

কোলকাতা কেন্দ্রীক উচ্চ বর্ণের হিন্দু জমিদাররা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে বাংলার কৃষকদের উপরে জুলুমের রাজ্যত্ব কায়েম করে।
পর্ব চার।।
প্রজাদের ধান লুঠ করা, গো হরণ করা, জলমগ্ন করে চোবানো ও প্রহার করা বর্ণ হিন্দু জমিদারদের প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়।

সূফি বরষণ
বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা (১৮০০-১৯০০) বইয়ের ( বুক ক্লব প্রথম প্রকাশ বইমেলা ২০০০) লেখক বিনয় ঘোষ ২৫ , ২৬,পৃষ্ঠা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেন, তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা লিখেছেন যে ভিন্ন ভিন্ন ভূস্বামী কতরকমের ছল বল কৌশল প্রয়োগ করে যে প্রজাদের উপরে অত্যাচার করেন তা গণনা করা যায়না । তাদের অধীন সমস্ত প্রজার যা কিছু সম্পত্তি বা ভোগ্যবস্ত্ত সবই তারা নিজেদের মনে করেন । প্রজাদের ফলমূল গাছ পর্যন্ত ভূস্বামীর( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) সর্বগ্রাসী লোভের কাছে রক্ষা পায়নি । কোনো দরিদ্র প্রজা ফলের গাছ রোপণ করে, অনেক যত্ন ও পরিশ্রম করে, বহুদিন পরে হয়তো ফল ফলাল, কিন্তু তাতেও ভূস্বামীর( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) প্রলুদ্ধ দৃষ্টি পড়ল। গাছের ফল তিনি আগে ভোগ করবেন, তারপর প্রজা করবে, ...... প্রজাদের স্থাবরাস্থাবর সম্পত্তি দূরে থাকুক, তাদের দেহে ও দৈহিক পরিশ্রমও জমিদাররা নিজেদের কেনাবস্ত্ত বলে মনে করেন।

দৃষ্টান্ত হিসেবে (কুখ্যাত ) কৃষ্ণনগরের জমিদারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জমিদারের হুকুম যে বিনামূল্যে ও বিনাবেতনে গোপরা তাঁকে দুধ দেবে, জেলেরা মাছ দেবে, নাপিতরা ক্ষৌরকর্ম করবে, যানবাহকরা বহন করবে, চর্মকাররা পাদুকাদি দেবে, ইত্যাদি সকলেই স্ব স্ব উপজীব্যোচিত অনুষ্ঠান দ্বারা তাঁহার দিগকে সেবা করিবেক। জমিদার যখন নিজের গ্রামে থাকেন, তখন তাঁহাকেও নিজধনে বাসার ব্যয় সম্পাদন করিতে হয় না। তদ্ভিন্ন তাঁহার বাটীতে কোনো ক্রিয়া উপস্থিত হইলে চতুর্দিকে হইতে নানাপ্রকার সামগ্রীপত্র আসিতে থাকে। ক্রীতদাসকেও এরূপ দাসত্ব করিতে হয়না । তাঁর জমিদারি এলাকায় যাঁরা ব্যবসা বাণিজ্য করেন, তাঁদেরও জমিদারের ইচ্ছাধীন মূল্য পণ্য দ্রব্য দিতে হবে, তার নাম সরকারি মূল্য । যে জিনিসের দাম বাজারে দুটাকা, জমিদারের কাছে হয়তো তা চার আনায় বেচতে হবে। জমিদারের শোষণের লোভ যেন সীমাহীন।

ভূস্বামীরা ( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) তাঁদের দুর্নিবার ধন তৃষ্ণা চারিতার্থ করার আরও একটি প্রশস্ত পথ প্রশস্ত করেন । প্রজায় প্রজায় বিবাদ বিসস্বাদ হলে ভূস্বামীর( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) কাছে বিচারের জন্য যেতে হয়। ভূস্বামী ( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) তখন কী করেন ? তিনি বিচারক নাম গ্রহন করিয়া সর্বতোভাবে অবিচার করেন _ ধর্মাবতার নাম ধারণ করিয়া সম্পূর্ণ রূপে অধর্মচারণেই প্রবৃত্ত থাকেন । উৎকোচের তারতম্যানুসারে তাঁহার বিচার ক্রিয়ার তারতম্য হয়...। কোনো কোনো ভূস্বামী ( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মোত্তর, দেবতার দেবোত্তর সম্পত্তি পর্যন্ত গ্রাস করতে কুন্ঠিত হয়নি ।

বর্ণ হিন্দু কুখ্যাত জমিদার কৃষ্ণদেব আরও হুকুম জারী করেন। মতি, গোপাল, নেপাল, গোবর্ধনের টিপসই যুক্ত নালিশের পত্রটি পাওয়ার পর মুখ টিপে হাসলো অত্যাচারী চতুর জমিদার- কৃষ্ণদেব রায়। হাজার হোক নিজেরই ষড়যন্ত্রের ফসল। নিজেরই তৈরি করে দেয়া নালিশনামা।

অভিযোগপত্র কয়েকবার উল্টেপাল্টে পড়লো কৃষ্ণদেব। না, যা যা বলেীছলাম- সবই ঠিকঠাক আছে। কোনো কিছুই বাদ যায়নি। সে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল। ঠিক করে রেখেছিল কৃষ্ণদেব, নালিশের প্রেক্ষিতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। ব্যাস। মতির নালিশটি পাবার পরপরই কৃষ্ণদেব বিচারের প্রহসন করলো। তারপর হুকুম জারী করলে:

১. যারা তিতুমীরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ওহাবী হবে, দাড়ি রাখবে, গোঁ ছাটবে তাদেরকে ফি দাড়ির জন্য আড়াই টাকা ও ফি গোঁফের জন্যে পাঁচ শিকা করে খাজনা দিতে হবে।

২. মসজিদ তৈরি করলে প্রত্যেক কাঁচা মসজিদের জন্যে পাঁচশো টাকা এবং প্রতিটি পাকা মসজিদের জন্যে এক হাজার টাকা করে জমিদার সরকারে নজরানা দিতে হবে।

৩. বাপ দাদা সন্তানদের যে নাম রাখবে তা পরিবর্তন করে ওহাবী মতে আরবী নাম রাখলে প্রত্যেক নামের জন্যে খারিজানা ফিস পঞ্চাশ টাকা জমিদার সরকারে জমা দিতে হবে।

৪. গোহত্যা করলে তার ডান হাত কেটে দেয়া হবে- যাতে আর কোনোদিন সে গোহত্যা করতে না পারে।

৫. যে ওহাবী তিতুমীরকে বাড়িতে স্থান দেবে তাকে ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হবে।

এই হুকুম জারীর পর তা পালন করার জন্যে অত্যাচারী কৃষ্ণদেব তার মুসলমান প্রজাদের ওপর নতুন মাত্রায় অত্যাচার আর নির্যাতন শুরু করে দিল।

শুধু কৃষ্ণদেব নয়। তার দেখাদেখি এবং তারই অনুরোধে এধরনের হুকুম জারী করলো আরও বেশ কয়েকজন জমিদার। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য- তারাগুনিয়ার জমিদার রাম নারায়ণ, গোবপর গোবিন্দপুরের জমিদার দেবনাথ রায়, গোবর ডাঙ্গার জমিদার কালী প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, কুরগাছির জমিদারের নায়েব নাগরপুর নিবাসী গৌড় প্রসাদ চৌধুরী প্রমুখ জুলুমবাজ।

বারাসাতের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে জমিদার রাম নারায়ণের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। যাতে জনৈক মুসলমান অভিযোগ করেছিল, “উক্ত জমিদার বাড়ি রাখার জন্যে তাকে পঁচিশ টাকা জরিমানা করে এবং দাড়ি উপড়ে ফেলার আদেশ দেয়।”

কিন্তু এই মামলার কোনো বিচারই হয়নি। এ কেবল একটি মামলার কথা। এ কেবল একজন মুসলমানের আরজির কথা। এরকম হাজার হাজার মুসলমানের আরজি, তাদের হৃদয়েল হাহাকার, তাদের ফরিয়াদ কেবল শূন্যে ভেসে গিয়েছিল। জমিদারদের অত্যাচারের ভয়ে কেউ মুখ খুলতৈ সাহস পেত না। আর যারা সাহস করে মুখ খুলতৈা, তাদের ভাগ্যে জুটতো কেবল শাস্তি আর শাস্তি।

এক সময় মুসলিম জমিদারগণ সমাজবিরোধী, দুষ্কৃতিকারী ও দস্যু-তস্করের প্রতি কড়া নজর রাখতেন এবং কুখ্যাত বর্ণ হিন্দু জমিদারগণ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর উল্টো ডাকাত লেঠেল ও গুন্ডাদের লালন পালন করেন প্রজাদের পীড়ন করার জন্য । মুসলিম শাসনামলে আইন ছিল যে, জমিদারগণ সমাজবিরোধী, দুষ্কৃতিকারী ও দস্যু-তস্করের প্রতি কড়া নজর রাখবে। ধরা পড়লে লুণ্ঠিত দ্রব্যাদিসহ তাদেরকে সরকারের নিকটে সমর্পণ করবে। ১৭৭২ সালে কোম্পানী এ আইন রহিত করে। ফলে, নতুন জমিদারগণ দস্যু-তষ্করকে ধীরয়ে দেয়ার পরিবর্তে তাদের প্রতিপালন করে লুণ্ঠিত দ্রব্যাদির অংশীদার হতে থাকে। এটা অনুমান করতে কষ্ট হবার কথা নয় যে, এসব দস্যু-তষ্কর কারা ছিল, এবং কারা ছিল গ্রামবাংলার লুণ্ঠিত হতভাগ্যের দল। ১৯৪৪ সালে Calcutta Review-প্রকাশিত তথ্যে বলা হয় যে, এসব নতুন জমিদারগণ দস্যু-তষ্করদেরকে প্রতিপালন করতো ধন অর্জনের উদ্দেশ্যে। ১৭৯৯ সালে প্রকাশিত ঢাকা-জালালপুরের ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টেও এসব দুষ্কৃতি সত্য বলে স্বীকার করা হয়।
-(Muinuddin Ahmad Khan –Muslim Struggle for freedom in India –oo.10)।

এই প্রসঙ্গে বাংলার সামাজিক ইতিহাসের ধারা (১৮০০-১৯০০) বইয়ের লেখক বিনয় ঘোষ ( বুক ক্লব প্রথম প্রকাশ বইমেলা ২০০০) ২৭_২৮ পৃষ্ঠায় প্রজাদের পীড়ন করার জন্য ১৮ দফা শাস্তির তালিকা প্রকাশ করে আরও বলেন, ডাকাত লেঠেল ও গুন্ডা ভূস্বামীরা ( বর্ণ হিন্দু জমিদার ) পোষণ করেন প্রজাদের পীড়ন করার জন্য । অবাধ্য ও বিদ্রোহী প্রজাদের ধান লুঠ করা, গো হরণ করা, প্রজাদের জলমগ্ন করা ও প্রহার করা তাঁদের প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে । ? গ্রামের জমিদাররা প্রজাদের উপর শুধু শারীরিক অত্যাচার যে কতরকমের কারণে, কলকাতার মতো শহরের অধিবাসীরা তা ঠিক জানেন না বলে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা তার একটি ১৮ দফা তালিকা প্রকাশ করেন:

১. দন্ডাঘাত ও বেত্রাঘাত

২. চর্মপাদুকা প্রহার

৩. বংশকাষ্ঠাদি দ্বারা বক্ষঃস্থল দলন

৪. খাপরা দিয়ে কর্ণ ও নাসিকা মর্দণ

৫. ভূমিতে নাসিকা ঘর্ষণ

৬. পিঠে দুইহাত মোড়া দিয়ে বেঁধে বংশদন্ড দিয়ে মোচড় দেওয়া ।

৭. গায়ে বিছুটি দেওয়া

৮. হাত পা শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা

৯. কান ধরে দৌড় করানো

১০. কাঁটা দিয়ে হাত দলন করা। দুখানা কাঠের বাখারির একদিক বেঁধে তার মধ্যে হাত রেখে মর্দন করা। এই যন্ত্রটির নাম কাঁটা ।

১১. গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড রোদে ইটের উপরে পা ফাঁক করে দুহাতে ইট দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা

১২. প্রবল শীতের সময় জলে চোবানো

১৩. গোনীবদ্ধ করে জলমগ্ন করা

১৪. গাছে বা অন্যত্র বেঁধে টান দেওয়া

১৫. ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে ধানের গোলায় পুরে রাখা

১৬. চুনের ঘরে বন্ধ করে রাখা

১৭. কারা রুদ্ধ করে উপবাসী রাখা

১৮. ঘরের মধ্যে বন্ধ করে লঙ্কা মরিচের ধোঁয়া দেওয়া ।

প্রজাপীড়নের এই ১৮ দফা ক্যাটালগও যথেষ্ট নয়, জমিদারদের যথেষ্ট চারিতার সম্পূর্ণ চিত্র এর মধ্যেও ফুটে ওঠে না। উনিশ শতকের বাংলা সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠায় জমিদারদের এই অত্যাচারের আরও অনেক মর্মস্পর্শী বিবরণ আছে।...... চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত জমিদারদের গোত্রান্তরিত করেছিল । পূর্বের ফিউডাল বদ্যন্যতা এই হঠাৎ জমিদারদের ছিলনা । তাঁরা স্বার্থপর অর্থপিশাচ হৃদয়হীন ঠিকাদারে পরিণত হয়ে ছিলেন _ ইংরেজদের রাজস্বের ঠিকাদার । তার উপর বাংলাদেশে, মার্কস এর ভাষায় শহরের পুঁজিপতিরাই নিলামে জমিদারি কিনে গ্রামা অঞ্চলের জমিদারে পরিণত হয়ে ছিলেন ।
গ্রাম্য সমাজের সঙ্গে তাঁদের কোনো অন্তরের যোগ, নাড়ির যোগ ছিলনা । ইংরেজ আমলে বাংলার জমিদার শ্রেণীর এই গোত্রান্তর একটা বড় রকমের সামাজিক পরিবর্তনয়া গ্রাম্য সমাজকে অনিবার্য ধ্বংসের মুখে এগিয়ে দিয়েছিল ।

চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলাদেশের কৃষক বইয়ের লেখক বিখ্যাত বামধারার গবেষক বদরুদ্দীন উমর তাঁর বইয়ের ২০ পৃষ্ঠায় শুধুমাত্র জমিদারদের ১৮ প্রকার শাস্তিই নয় বরং গোমস্তা ও নায়েবদের অত্যাচারের কথাও উল্লেখ করে বলেন, ভূস্বামীর ভয়ংকর ভ্রভঙ্গ ও রক্তাক্ত লোচন দৃষ্টি করিতে না হোক । কিন্তু তাঁহার নিয়োজিত ব্রাঘ্র সম নিষ্ঠুর স্বভাবের কর্মচারীদের কঠোর হস্তে পতিত হইতে হয়। তাহাদের কর্ণকুহরে গোমস্তা ও নায়েব শব্দ বজ্র নির্ঘোষের ন্যায় ভয়ানক বোধহয় । চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাংলাদেশের কৃষক, বদরুদ্দীন উমর, মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী, সপ্তম মুদ্রণ জানুয়ারি ২০১৩।

এই রাজনীতির স্বরূপটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। ১৭৫৭ সালে ইংরেজের হাতে মুসলমানরা শুধু তাদের রাজ্য হারালনা, হারাল তাদের সর্বস্ব। একদিন যাদের দরিদ্র হওয়া অসম্ভব ছিল, সেই মুসলমানরা কাঠুরিয়া ও ভিস্তিওয়ালায় পরিণত হলো।–[‘দি ইণ্ডিয়ান মুসলমানস’, ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টার।] খোশরোজ কিতাব মহল, নতুন সংস্করণ।

জমিদারের নির্যাতন অত্যাচারের বিরুদ্ধে একসময় বাংলায় বিদ্রোহও শুরু করে মুসলিম কৃষকরা । ১৮৭২-৭৩ এর সিরাজগঞ্জ ও পাবনার বিদ্রোহ ছিল স্থানীয় জমিদার কর্তৃক স্বেচ্ছাক্রমে খাজনা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এ বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ। এতে হিন্দু ও মুসলিম কৃষকরাও অংশ গ্রহণ করেছিল। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে পরিচালিত এ বিদ্রোহ ছিল সীমিত সহিংস, বিক্ষিপ্ত এবং প্রাক-রাজনৈতিক চরিত্রের, কেননা জমিদারি প্রথা বিলোপ করা এ আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল না। তারা এসব জমিদারের কাছে অন্যায্য খাজনা থেকে রেহাই চেয়েছিল। ‘নৈতিক অর্থনীতি’র দৃষ্টিকোণ থেকে এদের অস্তিত্ব তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য ছিল না, যেহেতু সরকার সহিংস আন্দোলনের বিকল্প হিসেবে অহিংস ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে ছিল এবং কৃষকদের শান্ত করার উদ্দেশ্যে তাদের জন্য অধিকতর অধিকার নিশ্চিত করতে চেয়েছিল এ বিদ্রোহ পরবর্তী সময়ে ১৮৮৫-র বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন (Bengal Tenancy Act, 1885) কার্যকর করতে এবং শেষপর্যন্ত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস(Indian National Congress) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বেশ ভূমিকা রাখে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.