![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার 'কলম' আজো আছে আমার সাথে, আমার কষ্টের সঙ্গী হয়ে,আমার সুখের ভাগ নিয়ে দেনা-পাওনা চুকিয়ে,এক চিলতে হাসি হয়ে...
--বাবা,ও বাবা
--হু,বল
--বাবা,শুননা...?
--হুম,শুনছিতো বল।
স্কুল ব্যাগের সাইড পকেট থেকে পানি বের করে বোতলের ক্যাপ খুলতে খুলতে আবারো ডাক দিল,
--ও বাবা,তুমি কি করো?
বাবা এবার মোবাইলের স্ক্রীনের দিক থেকে মুখ তুলে মেয়ের দিকে তাকালো,
--নদী,আমি মোবাইল এ একটা ইমপোর্টেন্ট ম্যাসেজ লিখছি,তোমার সাথে একটু পরে কথা বলি?
--নাহ,তুমি আমার সাথে এখনই কথা বলো!
বাবা কপাল কুঁচকে বলল,
--ওকে,কি বলবে বলো।
পাঁচ কি ছয় বছরের ছোট্ট নদীর মুখে সাথে সাথে ভূবন ভুলানো হাসি ফুটে উঠলো,হাতের বোতলটা ব্যাগে রেখে বলল,
--বাবা,জানো,আমি স্কুলে বিস্কিট দৌড় কম্পিটিশনে ফাইনালের জন্য সিলেক্ট হয়েছি,আর কালকে ড্রয়িং ক্লাসে আমি 'ভেরি গুড' পেয়েছি।
--আচ্ছা?তাই নাকি,মাশায়াল্লাহ।
বলেই বাবা আবারো মোবাইলের দিকে মনোযোগ দিল। নদীর মুখের হাসিতে মনে হয় কিছুটা ভাটা পড়ল! সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে!আশে পাশের দিকে তাকাতে লাগল... মাঝে মাঝে অবশ্য আড় চোখে বাবাকেও দেখতে লাগল,কিন্তু বাবার সেদিকে খেয়াল নেই! হঠাৎ কি মনে করে নদী আবারো চেঁচিয়ে উঠল,
--বাবা,দেখো,দেখো...ওটা কি?
বাবা একবার মাথা তুলে সেদিকে তাকালেন,তারপর আবারো মোবাইলের দিকে মনোযোগ দিলেন,
--ওটা ফ্লাইওভার মা।
--বাবা ওটার উপর দিয়ে কি রিকশা যায় না?এই যে আঙ্কেল আপনি ঐটার উপর দিয়ে যান না কেন?
--আহা,নদী,ওটার উপর দিয়ে রিকশা যায় না,বাস,সিএনজি এসব যায়।
--ওওও...
নদী মনে হলো ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যেতে না পারার দুঃখে আরেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল! কিন্তু একটু পরেই আবারো চেঁচিয়ে উঠল,
--বাবা,আমরা ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে কি নানু বাসায় যেতে পারবো?
--নাহ,তবে লায়লা ফুপির বাসা থেকে আসার সময় ওখান দিয়ে আসতে পারব।
--সত্যি?!!
--হুম।
--বাবা,আমরা লায়লা ফুপির বাসায় কবে যাবো?
--যাবো একদিন
--কবে বাবা?কাল যাবো?
হঠাৎ বাবার মোবাইল বেজে উঠলো,বাবা ইশারায় নদীকে চুপ করতে বলে,মোবাইলে কথা বলায় মনোযোগ দিলেন। কিন্তু নদীর মনে হয় না ব্যাপারটা পছন্দ হলো,সে বিরস মুখে আবারো চারপাশ দেখায় মনোযোগ দিল। মাঝে মাঝে দু'হাত দিয়ে নিজের চুলের ছোট্ট ছোট্ট ঝুটি গুলো ঠিক করছিল,একবার বাবার দিকে তাকালো,সে কার সাথে যেনো কথা বলছে,খুব গম্ভীর মুখ করে,বাবা বলছিল,
--ভাই দেখেন আমার এই মুহুর্তে লোনটা খুবই জরুরী দরকার,না হলে অনেক বড় লস হয়ে যাবে ব্যাবসায়,প্লিজ ভাই,একটু কনসিডার করেন...
নদী বাবার কথার তেমন কিছুই বুঝলো না! সে হঠাৎ রিকশা ওয়ালা আংকেলকে ডাক দিল,
--আংকেল আপনি আমার স্কুল চিনেন?
--হুম,চিনি
--আপনি আমাকে চিনেন?
রিকশাওয়ালা আংকেল হাসলেন,
--না গো মনি তোমারে চিনি না,তয় তুমিও আমার মনির মতোন ফরফর করো খালি!
নদী মনে হয় বেশ মজা পেল,
--মনি কোথায় আংকেল?আপনি ওকে আজ স্কুলে নিয়ে যাননি?
--না গো,মনি আল্লাহর কাছে গেসেগা...!
কথাটা বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনের দিকে তাকালেন। জ্যাম ছাড়ার কোন লক্ষন নেই যেনো! নদী বিরস মুখে একবার এপাশে তো একবার ওপাশে তাকাতে লাগল। নদী আবারো বাবার দিকে তাকালো,বাবা মোবাইলে কথা শেষ করেছে,রিকশা থেকে একটু উঠে সামনের দিকে তাকালেন,জ্যাম ছাড়ছে কি না তা দেখার জন্য বোধহয়। নদীর দিকে তাকিয়ে একটু অবাক হলেন বাবা!মেয়েটা এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে...!!
--কি হয়েছে?কি দেখছো?
নদী কিছু না বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল। বাবা লক্ষ্য করলেন,নদীর নাকের দু'পাশ একটু পরপর ফুলে উঠছে! একটা নিঃশ্বাস ফেলে মেয়ের মাথায় হাত রাখলেন,নদী বাবার হাত সরিয়ে দিল,
--সরি মা,বাবা একটু ঝামেলায় আছি তো তাই তোমার দিকে মনোযোগ দিতে পারছি না।
এবার নদী ঠোঁট ফোলাতে শুরু করল!
--আরে একি?!!সরি বললাম তো মা ...
নদী গাল ফুলিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বাবার দিকে ফিরে বলল,
--তুমি পঁচা বাবা,তুমি আমাকে আদর করো না!
বাবার চোখ বড় বড় করে বলল,
--সে কি?কেন?
--তুমি আমাকে কই আদর করো?সেই সকালে চলে যাও,রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়লে আসো,রোজ তো আম্মু আমাকে স্কুলে নিয়ে যায়,তুমি যাও?
বাবা হেসে বললেন,
--কি করবো বল মা? বাবার যে দোকানে অনেক কাজ এখন...
--তুমি আমাকে আর ভালোবাসো না,আমি যে এতোবার বাবা বাবা বলে ডাকি তুমি শোনই না!তুমি থাকো তোমার মুইবাল নিয়ে! (মনে হয় নদী এখনো মোবাইলটা ভালোভাবে উচ্চারন করতে শিখেনি!)
--আহারে...না মা,রাগ করো না,বাবার দোকানের ঝামেলাটা যেয়ে নিক,তারপর আমরা অনেক গল্প করবো,হ্যা?
নদী পিটপিট করে বাবার দিকে তাকালো, ঠোঁট খানিকটা বাঁকা করে বলল,
--হুম,ওকে।
ঠিক তখনই আবারো বাবার মোবাইলটা বেজে উঠলো,বাবা একবার মোবাইলটার স্ক্রিনের দিকে তাকালো,তারপর দ্রুত রিসিভ করে আবারো কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়লেন।আর নদী? সে আরেকদফা ঠোঁট ফুলিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘোরালো...
জ্যাম ছেড়ে দিয়েছে। রিকশা চলতে শুরু করলো। নদীদের রিকশাটা শাজাহানপুরের দিকে ঢুকে গেল,আর তাদের পাশের রিকশাটা মালিবাগের দিকে...
সেই রিকশায় বসা মেয়েটি ঠোঁটে অস্পষ্ট হাসি নিয়ে একবার পেছন ফিরে নদীদের রিকশাটার দিকে তাকালো। রিকশাটা দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল মেয়েটির,আর মেয়েটিও ঝাপসা চোখে সামনের দিকে চোখ ফেরালো।দ্রুত ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করলো,কেউ যেনো আবার না দেখে তার অশ্রু,তাই কাজল সহই চোখের পানি মুছতে লাগল...!
পৃথিবীতে এতো মায়া-মমতা,ভালোবাসা আছে বলেই হয়তো এখনো মানুষ স্বপ্ন দেখে,প্রাণ খুলে হাসে,আর বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়...
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন:
২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪
মৃন্ময় বলেছেন: malibager dike jaoa raicksar jatrita ke cilo......?
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৪
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: সেটা না জানলেও চলে
৩| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মৃন্ময় বলেছেন: avabe firea deoata ke ucith.......!patoker koutuhul takte pare.......
৪| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:০৪
শূন্য পথিক বলেছেন: +++
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন:
৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১৩
স্বপনবাজ বলেছেন: +++
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন:
৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১০
স্বাধীনচেতা মানবী বলেছেন: ভালো লেগেছে .।.।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৫
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
ছোট নদী বলেছেন: পৃথিবীতে এতো মায়া-মমতা,ভালোবাসা আছে বলেই হয়তো এখনো মানুষ স্বপ্ন দেখে,প্রাণ খুলে হাসে,আর বুক ভরে নিঃশ্বাস নেয়...
আর এজন্যই হাজারো কষ্টের মধ্যে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে........
মন ছুয়ে গেল আপনার লেখটি।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৫
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন: আরে,ছোট নদী...!!! এখানে কিভাবে আসল?!!!
৮| ০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৭
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: +++++
১২ ই জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৪
শুকনোপাতা০০৭ বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯
ফালতু বালক বলেছেন: +++++