নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের ইদানীং একটা রোগ হয়েছে – আমরা সবসময় অপরের ছিদ্রান্বেষণে সদা তৎপর থাকি। মানুষের ভিতরকার নোংরামি, নিষ্ঠুরতা, নৃশংসতা যখন কারো কাছে ধরা পড়ে তখন মানুষকে গণমাধ্যম বা সামাজিক মাধ্যমে জানিয়ে দিই তার জঘন্যতার ইতিহাস। একবার ভেবে দেখুনতো এতে কার কি হয়?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঘটনাটা ঘটে যাওয়ার পরই আমরা অবগত হই। হয় ভিক্টিম মারা যায় বা তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় নতুবা অপরাধী শাস্তি প্রাপ্ত কিংবা পলাতক হয়। আমরা যারা শুনি তাদের কি হয়? আমাদের ভাল এবং মন্দ দুটোই হয়। তবে ভালটার চেয়ে মন্দটাই বেশি হয়। ভালোর দিকটা হল - এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ে। আর মন্দের ঝোলাটা একটু ভারী। এ ঘটনা জানার সাথে সাথে আমাদের মস্তিষ্কের নেগেটিভ নিউরন গুলো সজাগ হয়। মনে তীব্র বেদনা অনুভব হয়। অপরাধীর প্রতি তীব্র ঘৃণা, ধিক্কার, প্রতিবাদ, কিংবা প্রতিশোধ মনোভাব জাগ্রত হয়।
প্রতিদিনের পত্রিকার দিকে চোখ রাখলে খুন, হত্যা, ছিনতাই, ধর্ষণ, গুম, দুর্ঘটনার খবর ছাড়া ভাল কিছু চোখে পড়ে না। তার মানে আমাদের দেশে কি ভাল কোন খবর নেই? তাহলে দেশটা চলছে কি করে? ভাল খবর অবশ্যই আছে। কিন্তু আমাদের সাংবাদিকরা ভালোর চেয়ে খারাপের দিকে বেশি ঝুঁকে কারণ খারাপ খবরে কাটতি বেশি। জনগণ যেটা বেশি পড়বে সেটাইতো পত্রিকার শিরোনাম হবে।
প্রতিনিয়ত নেগেটিভ সেন্সে চিন্তা করতে করতে আমরা দিনদিন নরকের কীটে পরিণত হচ্ছি। একটু ভেবে দেখুন তো, ধরুন আজ পত্রিকা হাতে নেয়ার পর দেখলেন কোন খারাপ খবর নেই। সব ভাল ভাল খবর। হুম, এরকম চিন্তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অবিশ্বাস্যও বটে। কিন্তু ভালোর চর্চা করলেই না আমরা সমাজ থেকে ভাল কিছু উপহার পাব। একটা কথা আছে – যে দেশে গুণীর কদর নাই সে দেশে গুণী জন্মায় না। আমরা ভালোকে যদি প্রচার না করি, উৎসাহ না দেই, পুরস্কৃত না করি তাহলে লোকে ভাল কাজ করার উৎসাহ হারবে। বিপরীত দিকে মন্দ লোকের মন্দ কাজের প্রলাপ শুনতে শুনতে আমরা দিনদিন মন্দের দিকে ধাবিত হচ্ছি।
ফেইজবুকে কেউ কেউ জঘন্য কিছু ছবি ছাপায়। যেমনঃ কোন সড়ক দুর্ঘটনার মাথা থেতলে যাওয়া ভয়ংকর রক্তাক্ত ছবি, কিংবা চাপাতির আঘাতে কাটা শরীর বা পুরে যাওয়া বীভৎস চেহারা। সাংবাদিকদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা ধর্ষিতার মৃত, বীভৎস বা অর্ধ নগ্ন ছবি ছাপানোর উদ্দেশ্যটা কি? পত্রিকায় ওদের ছবি ছাপানোর মানেটা কি? আমার মতে, ধর্ষক তো ওকে ধর্ষণ করেছে আর আপনারা তার ছবি ছাপিয়ে তার পুরো পরিবার আত্মীয় স্বজনকে ধর্ষণ করেন। একবার ভাবুনতো পত্রিকার ধর্ষিতার ছবি ছাপানোর পর সমাজে তার অবস্থান, তার পরিবারের অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? তার পরিবারের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিমিষেই তছনছ হয়ে যায়। এটা ঠিক না। আমাদের কি উচিৎ সামান্য পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর আশায় ওদের জীবনটা ধ্বংস করা? সমাজের প্রতি কি কোন দায়িত্বই নেই আপনাদের? বরং এটা না করে ধর্ষণকারীর ছবি না পান ওর পরিবারের ছবি দিন। ওর বাবা মায়ের ছবি দিন। সবাইকে জানিয়ে দিন এরাই ঐ পাষণ্ডের পিতামাতা। যারা সঠিক ভাবে ছেলেকে প্রতিপালন করতে পারেনি, অমানুষ বানিয়েছে। প্রত্যেক পিতামাতার উচিৎ সন্তানের পশুত্ব অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা। শুধু জন্ম দিলেই পিতামাতা হওয়া যায় না, দরকার আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে তোলা, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ শেখানো।
বীভৎসতার ছবি ছাপিয়ে কখনো ভাল কিছু পাওয়া যায় না। হিংসা প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, ঘৃণা ঘৃণার জন্ম দেয়, আঘাত প্রতিঘাতের জন্ম দেয় আর ভালবাসা জন্ম দেয় নতুন আশার। কোনটা ভাল? চলুন আমরা অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাল কিছু শেয়ার করি। আর এমন কিছু শেয়ার না করি যা অন্যের ক্ষতি করতে পারে, অন্যকে কষ্ট দেয়।
২| ২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:১৫
মোস্তফা ভাই বলেছেন: অনেকে আবার আত্মীয় স্বজনের মৃতদেহের ছবি পোষ্ট করে, কিছু মানুষ আবার তাতে লাইকও দেয়।
৩| ২৫ শে মে, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫
বিজন রয় বলেছেন: বাংলাদেশে আর কোন দিন সুন্দর আসবে না।
৪| ২৫ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৯
মুসাফির নামা বলেছেন: শেষের দিকের পরামর্শটা ভালো লেগেছে। তবে ভাই যে পরিমান আকাম হয় পত্রিকাতে তার অর্ধেকও আসতে দেওয়া হয় না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:০৭
সোজোন বাদিয়া বলেছেন: আপনার সদুদ্দেশ্যকে প্রণাম জানাই। কিন্তু পুরোপুরি একমত হতে পারলাম না। ভাল-মন্দ দুটোই সত্য, দুটোকেই চোখ খুলে দেখতে শিখতে হবে, এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে আমার মনে হয়।