নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপহৃত বাস্তব

নিষ্পাপ শব্দগুলো যখন ক্লান্তিতে হারিয়ে যায় গভীর থেকে গভীরে, ফেলে আসা কিছু কথা যখন বলতে যেয়ে থেমে যেতে হয়- কেপে কেপে উঠে ভুলে যেতে হয় পুরনো ঘুণে ধরা কিছু স্মৃতি- তখনই জন্ম আমার। আমি শুধু থেমে থাকা আর ভুলে থাকা।.

শুভ্র গাঙচিল

ক্ষুধাতুর অঙ্গ / স্বপ্নভুক পতঙ্গ

শুভ্র গাঙচিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের সুন্দরবন এখন ঘোর সঙ্কটে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটু দেখবেন কি?

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭

ঘুরে এলাম শেলা নদীতে এবং দেখে এলাম পরিবেশ বিপর্যয়ের কিছু নগ্ন চিত্র।
কথায় আছে পানি আর তেল কখনও একসাথে মিশে না। গত ৯ তারিখে ডুবে যাওয়া ফার্নেস তেল বাহী অয়েল ট্যাংকার এ থাকা ৩,৫০০০০ লিটার ফার্নেস তেল এখন ভাসছে শেলা নদীর পানিতে। কয়েক মিলিমিটার পুরু এই ফার্নেস অয়েল এর আস্তরণ জোয়ার ভাঁটার টানে ছড়িয়ে পড়ছে আরও দুরদুরান্তে। আমরা ওখানে যেয়ে যতদূর জানতে পেরেছি এই তেল এখন মানিকতলা পয়েন্ট থেকে জয়মনি ঠোডা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিমি. জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
অসংখ্য জীববৈচিত্রে ভরপুর পৃথিবির সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ বন এর অভ্যন্তরে ঘটা সব থেকে বড় মানবসৃষ্ট বিপর্যয় এটা। এই রাসায়নিক বিপর্যয় এ যে সুন্দরবন এর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পরবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর জায়গাটি চাদপাই বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম অভ্যন্তরে এবং ডলফিন এর ব্রিডিং এরিয়া এর অন্তর্গত। এলাকাবাসীরা জানায় যে এলাকাতে মাঝে মাঝেই ডলফিন ভেসে উঠত কিন্তু তেল ছড়িয়ে যাবার পর থেকে একবারও দেখা যায়নি কোনও ডলফিনকে। কারন অই এলাকা এখন ফার্নেস তেলের ঝাঁঝালো গন্ধে ভারী হয়ে আছে। দুই দিকের সবুজ ঘাস এখন তেলে ভিজে কালো। যেখানে সকাল সন্ধ্যা পদচারনা ছিল হরিণদের তারা আজ ভয়ে পালিয়েছে বনের অভ্যন্তরে। সত্যি কথা বলতে কি একটা পাখি পর্যন্ত আমি দেখিনি নদীর পাড়ে কিংবা বনের মধ্যে যতদূর দেখা যায়। এই তেল এর লেয়ার যদি বেশিদিন পানির সারফেসে থাকে তাহলে নদীর ইকোসিস্টেম মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেই। কারন সূর্যরশ্মি যদি পানির ভেতর ঢুকতে না পারে তাহলে ফুড প্রোডাকশন সহ অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেয়ে সমস্ত জলজ ইকোসিস্টেম টি ভেঙ্গে পরতে পারে। এতে অক্সিজেন ও খাদ্যের অভাবে অনেক জলজ প্রাণী যেমন বিভিন্ন জাতের মাছ সহ অনেক জলজ উদ্ভিদ মারা যাবে এবং সুন্দরবন এর কুমির গুলোও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এলাকাবাসীরা নিজেদের মতো করে তেল সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে ৬০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছে।
পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম ঘটনা বিরল না। এরকম পরিস্থিতিতে অয়েল ডিকম্পোজিং ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেগুলা অয়েলের বন্ড ভেঙ্গে সেগুলোকে পানিতে মিশে যাবার উপযোগী করে তোলে। তবে এটা প্রচুর পরিমানে অক্সিজেন ব্যবহার করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড প্রকৃতিতে অবমুক্ত করে। এবং এগুলো মারা যাবার পরেও পরিবেশ দূষণ করে। যা বনের পরিবেশকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। তাই এখন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অনতিবিলম্বে টিম গঠন করে প্রয়োজনে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ এনে আমাদের সব থেকে বড় প্রাকৃতিক সম্পদকে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানো উচিত। এক্ষেত্রে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আর পরবর্তীতে এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য সরাকারের প্রতি কিছু দাবী জানাচ্ছি-
১) বনের মধ্যে কয়েকটি চ্যানেল ছাড়া বাকি চ্যানেল গুলা দিয়ে মালবাহী ভারী জলযান চলাচল অনতিবিলম্বে বন্ধ করা হোক।
২) সুন্দরবন আমাদের দেশে না হয়ে অন্য কথাও হলে তারা কি করতো বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এখন আমাদের বনের রক্ষনাবেক্ষনের জন্য পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ দের নিয়ে স্পেশাল টাস্কফরস গড়ে তোলা হোক যারা এরকম বিপর্যয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে।
৩) এলাকার মানুষদের নিয়ে বন ব্যবস্থাপনায় একটি সম্মিলিত উদ্যোগ গঠন করা উচিত। যার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারে বনের জীববৈচিত্রের প্রয়োজনীয়তা এবং এদের রক্ষা করার কৌশল। এতে তারা অনেক সচেতন হবে।
৪) আইন ভঙ্গকারীদের প্রতি কোঠর শাস্তির বিধান রেখে নতুন কিছু আইন প্রনয়ন করা উচিত। এবং সেগুলো সঠিক ভাবে প্রয়োগ করার জন্য বাংলাদেশ নেভি এবং কোস্টগার্ড সদস্যদের নির্দেশ দেয়া উচিত। প্রয়োজনে বনাঞ্চলে আইন প্রয়োগকারী সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হোক।
৫) আর এরকম বিপর্যয়কে পরবর্তীতে গুরুত্ব সহকারে দেখে এটাকে রাসায়নিক বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করে সর্বাত্মক ভাবে এটা মোকাবেলা করা উচিত।
সুন্দরবন তো আমাদের মায়ের মতো শত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের আগলে রেখেছে বারবার। আমরা কি আমাদের মায়ের জন্য কিছু করতে পারি না?

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৩

কাঠ পাতা বলেছেন: সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে মারাত্মক ভাবে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে সুন্দরবনে

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৯

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: এভাবেই হয়ত কোনোদিন আমাদের চোখের সামনেই সুন্দরবন ইতিহাস হয়ে যাবে এদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য।

২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

নীল পেন্সিল বলেছেন: রাসায়নিক বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করে সর্বাত্মকভাবে মোকাবেলা করার মত বিবেক এবং মানসিক শক্তি সরকারের জাগ্রত হোক সেই কামনা করছি।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: আসলেই এমন দেশে বাস করছি যে রাজনিতিবিদ দের গায়ের চামড়া গণ্ডারের চেয়েও পুরু। কোনও কিছুতেই এদের টনক নড়ে না।

৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০০

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: এটা এই পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূলীয় বনের ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের ঘটনা। এর আগে ইন্দোনেশিয়া, পানামা, নাইজেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও পুয়ের্তোরিকোতে এ রকম তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। তবে এসব দুর্ঘটনার কোনোটাতেই পাঁচ-ছয় হাজার হেক্টরের বেশি এলাকায় তেল ছড়ায়নি।

আছে যাও আমাদের একটা সুন্দর বন, তারও বারোটা বেজে যাচ্ছে! আর BIWTA র চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার বলছেন, প্রথমত, এই বিপর্যয়কে তিনি বিপর্যয় বলতে নারাজ। তার মতে এই ঘটনায় পরিবেশের কোন ক্ষতি হবেনা।

সবচেয়ে মজার কথা তিনি যেটি বলেছেন তা হল, এই ঘটনার ফলে একটি বিরাট উপকার হয়েছে। আর তা হল ঐ তেল সংগ্রহ করে নদী তীরবর্তী লোকজন বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।

আর আমজনতা আমরা বসে বসে শুধু হায় হায় করি!

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৫

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: আর আমাদের মন্ত্রী মশায় তো বেপারটা নাকি জানতেন ই না। আর সে বলেছে চিন্তার কোনও কারন নেই এই তেল নাকি ভেসে সাগরে চলে যাবে। এরা কি জেগে ঘুমায় না পুরাপুরি অন্ধ সেটাই এখনও ঠিক ভাবে বুঝতে পারলাম না।
জাতির বিবেক যে কবে আবার জাগ্রত হবে সেটার প্রতিক্ষায় আছি ভ্রাতা।

৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১০

একলা ফড়িং বলেছেন: :( :( :(


কি বলবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা তো নীরব। সাধারণ জনগণ যারা এর ভয়াবহতা উপলিদ্ধি করতে পারছি তাদের কি কিছু করার আছে?

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: আমরা সকলে মিলে একটা পরিবেশ আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে এ কাজে বাধ্য করতে পারি।

৫| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬

টাবলীগহেপী বলেছেন: .... চিন্তার কোনও কারন নেই এই তেল নাকি ভেসে সাগরে চলে যাবে।
পুরো দেশই সাগরে ভেসে যাচ্ছে..
....আর ওগুলো তেল না- কালো রং মাত্র।
নিজের ময়লা নিজে যদি ছাপ না করতে পারি তবে জাতিসংঘ, ইউরোপ, ভারত এসে পরিষ্কার করবে!
শব্দ করার সাথে সাথে জনগনকে ফাঁসি দেয়া হবে!!!

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫১

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: এদের যে কবে চোখ খুলবে? যে ডালে বসে আছে মূর্খের মতো সেটাকেই কাটছে। :(

৬| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৭

ঢাকাবাসী বলেছেন: শব্দ করার সাথে সাথে জনগনকে ফাঁসী দেয়া হবে!

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৪

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: এটাই তো পারে শুধু। :( :(

৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২০

এবং অভ্র বলেছেন: :|

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৮

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: :(( :((

৮| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:১০

আলম দীপ্র বলেছেন: :( :( :( :( :(

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৯

শুভ্র গাঙচিল বলেছেন: :( :( :( :( :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.