নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃশব্দে ছুটে চলা অবিরাম....

আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে...!

দূরের বাতিঘর

আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে...!

দূরের বাতিঘর › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌনতা যেখানে পুরো মাত্রায় শিল্প

০৮ ই জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:১৬



দূরের বাতিঘর
যৌনতার মতো অতি তুচ্ছ বিষয়ে ভাবতে কিছুতেই অভ্যস্ত নয় ফরাসিরা। দৈনন্দিন জীবনে অন্য সবকিছুর মতো এটিও তাদের কাছে সাধারণ ঘটনা। কোনো বিশেষ নারীর প্রতি একজন পুরুষ আকর্ষণ বোধ করতেই পারে। তাতে দোষের কিছু নেই। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির উঁচুমানের জন্য ফরাসিদের খ্যাতি আছে। যৌন আচরণেও তাদের রয়েছে বিশেষত্ব। এক্ষেত্রে অন্য জাতির চেয়ে তারা আলাদা। আর তা যদি হয় রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে তা হলে তো কথাই নেই। নারী রমনযোগ্য বলেই ‘রমনী’ তা ফরাসিদের চেয়ে ভালো সম্ভবত আর কেউ জানে না।
যৌনতাকেও তারা নিয়ে গেছে শিল্পের পর্যায়ে। সেখানে স্ত্রীরা স্বামীকে বগলদাবা করে রাখার ক্ষেত্রে মোটেই রক্ষণশীল নয়। রাজনীতিকদের স্ত্রীরা তো তাদের স্বামীদের পরনারী আসক্তিতে রীতিমতো গর্ববোধ করেন। যেমনটি আইএমএফের সাবেক প্রধান ডোমিনিক স্ট্রাউস-কানের বেলায়। নিউইয়র্কে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে জেলে গেলেও জোরালোভাবে এর প্রতিবাদ করেছেন তার স্ত্রী। তিনি বলেছেন- তার স্বামীর আকর্ষণ করার ক্ষমতা আছে। তাই তাকে কিছুতেই কেলেঙ্কারি বলা যায় না। একজন রাজনীতিকের বড় গুণই হলো প্রলুব্ধ করার ক্ষমতা, যা স্ট্রাউসের আছে। সেজন্য তিনি নিজেও গর্ব অনুভব করেন।
ফ্রান্সে দৃশ্যত একগামিতা প্রচলিত। পরিবারগুলোও ছোট। সেখানে বহু বিয়ের চল বলতে গেলে নেই-ই। কিন্তু তাই বলে যৌনতা? সেটি নিয়েও তাদের মধ্যে রাখঢাকের বালাই নেই। মনের ইচ্ছাই সেখানে বড় কথা। আবেগের কথা অসঙ্কোচে প্রকাশের সৎসাহস তাদের আছে। এ নিয়ে অহঙ্কারের সীমাও নেই তাদের। ফরাসি নারীরাও তাই তাদের স্বামীদের বহুগামিতা নিয়ে কোনো আপত্তিও করেন না। স্ট্রাউস-কান তো সে দেশেরই মানুষ।
সম্প্রতি আইএমএফ-প্রধানের যৌন কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী; বিশেষ করে আমেরিকা, বৃটেন ও ফ্রান্সে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। কানের মতো বয়স্ক পক্ককেশ লোকের জন্য বৃটেনে অবশ্যই এ ঘটনা যৌন কেলেঙ্কারি। আর আমেরিকায় তা মহাঅপরাধ। কিন্তু ফ্রান্সের ক্ষেত্রে তা নয়। যৌনতার বেলায় বৃটেন সাধারণত রক্ষণশীল আর ফরাসিরা উন্মুক্ত। সৌন্দর্যের কদর বোঝে তারা। তারা সুন্দরের পূজারী। এমন জাতির একজন হয়ে তার মর্যাদাই যেন রক্ষা করেছেন স্ট্রাউস-কান।
ফরাসিরা ‘যৌন কেলেঙ্কারি’ শব্দটির সঙ্গে মোটেই পরিচিত নয়। তার অর্থ এই নয়, সে দেশে পুরুষ কেবলই নারী সম্ভোগেই ব্যস্ত কিংবা সে এক উন্মত্ত যৌনতার দেশ। আসলে বিষয়টি তাদের আচরণের সঙ্গে এমনভাবে মিশে আছে, যা নিয়ে কোনো অভিযোগ উঠার মতো কিছু ঘটে না। অর্থাৎ ‘গিভ অ্যান্ড টেক পদ্ধতি’তে সবকিছু হয়ে থাকে। পারস্পরিক সমঝোতা গড়ে ওঠার পর আবেগপ্রবণ যুগল ভালোবাসার পূর্ণ জারক রসে ডুবে যায়। কেউ কাউকে অভিযোগ করে না। বিষয়টি এমন অলিখিত চুক্তি যে, দুজনের মধ্যের কেউ যেন অন্য কাউকে এ নিয়ে কিছু না বলে।
এমন ‘অভিজাত ভালোবাসার’ দেশের মানুষ হয়ে স্ট্রাউস কী করে নিজেকে সামাল দিতে পারেন? যেখানে ফরাসিরা তাদের প্রেম নিয়ে লুকোছাপার ধার ধারে না। কিন্তু আমেরিকা বলেই ধরাটা খেয়েছেন তিনি। প্যারিসে হলে এটি কোনো ঘটনাই ছিল না। সেখানে খ্যাতিমানদের যৌনতা কিংবা বহুগামিতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না। বরং তাদের কাছে তা স্বাভাবিক আচরণই। তবে স্ট্রউস-কানের মাথাটা বোধ হয় সেদিন (১৪ মে) একটু বেশিই বিগড়ে গিয়েছিল। শিকারকে প্রস্তুত করে নেয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতে চাননি, তাই এত বিপত্তি। এছাড়া আমেরিকার মতো দেশের রীতিনীতির সঙ্গে তিনি মানিয়ে উঠতে পারেননি। অবশ্য এ বিতর্কও উঠেছে, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। ঘটনা যাই হোক না কেন, বিষয়টি সংস্কৃতিগত পার্থক্যের।
ফ্রান্সে ক্ষমতাবান, শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিকদের জন্য নারীর প্রতি সহজাত আকর্ষণ থাকাটা একদম স্বাভাবিক। এরা এতই রসিক যে, রাজনৈতিক অবস্থানে যেমন ক্যারিশম্যাটিক, তেমনি বহু নারীকে বিছানায় নেয়ার মতো শারীরিক সামর্থ্যওে কম নয়। বড় জোর বন্ধুরা একে ‘উত্ত্যক্ত করা’ আখ্যায়িত কবতে পারে। কিন্তু কখনোই ‘যৌন নিপীড়ন’ বলবে না।
আরো আছে সে দেশের ‘প্রাইভেসি আইন’। যার কারণে এসব বিষয় সংবাদপত্র কিংবা অন্য কোনো গণমাধ্যম কোনো বাগাড়ম্বড়ে যায় না। তারা সবাই সব জানে। কিন্তু কেউ কিছু বলবে না। যেমনটি বৃটেনের পত্রপত্রিকায় ফ্রান্স সম্পর্কে লেখা হয়। বৃটেনের পত্রপত্রিকা এবং বিদেশিদের জরিপে বলা হয়ে থাকে, বিশ্ব কনডমের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ফ্রান্সে। মধ্যবয়সী যুবকরা ভিড় করে থাকে প্যারিসের হোটেলগুলোতে। আর স্ত্রীদের ফাঁকি দিয়ে তারা সন্ধ্যা কাটায় বান্ধবীর সঙ্গে। যৌনতার এমন শিল্পিত ব্যবহার আর কোনো দেশে নেই। তার মানে এই নয় যে, ফ্রান্স ধর্ষণের স্বর্গরাজ্য। তার চেয়ে বরং বলা যায় ভালোবাসায় কাতর পুরুষের দেশ। সে দেশের মানুষ স্ট্রাউস-কান; নারীর প্রতি আসক্তি তার কেন থাকবে না। তথ্যসূত্র : বিবিসি অনলাইন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.