![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেঘ স্বপ্ন ( পর্ব ১ )
বাবার ডান হাতের আঙ্গুল খুব শক্ত করে ধরে আছে মুনিয়া , ডানও হতে পারে বামও , কোন হাত সেটা বোঝা এখন জরুরী না। জরুরী হলও খুব সুন্দর একটা বাগান , অনেক ধরনের ফুল , পাতা , গাছ , নাম না জানা পাখির ডাক ।পাশ আছে একটা পুকুর । পানি টল মল করছে ।আর অনেক শুকনো পাতা পড়ে আছে পুকুরে । একটু বাতাস হলে পুকুর পাঁড়ের গাছ থেকে পাতা পড়ছে । তাহলে কি এটা শীত কাল ? নাকি বসন্ত ? পুকুর পাঁড়ের ঘাসের উপরে মুনিয়া আর বাবা বসে আছে । বাবা একদম চুপ । মুনিয়াই বাবাকে প্রশ্ন করা শুরু করে ,
- আচ্ছা বাবা মুনিয়া মানে কি ?
- মুনিয়া একটি পাখির নাম ।
- যেমন কাক?
- হ্যাঁ মা । চ্ছোট্ট একটা পাখি ।
- কিন্তু বাবা আমি তো মানুষ , মানুষ এর নাম তো মানুষ এর নাম এ হবে , পাখির নাম এ কেন ?
- আমার মুনিয়া মামনি তো চ্ছোট্ট একটা পাখি ।
- বাবা আমার তো ডানা নেই । আমি পাখি না ।
- ডানা না থাকলেও পাখি হওয়া যায় ।
- কিভাবে বাবা ?
- এই যে বিশাল আকাশ এই আকাশে তোমার মনের ডানা দিয়ে তুমি উড়ে বেড়াবে মা।
তুমি যখন বড় হবে তোমার মনের ডানা দিয়ে এই বড় পৃথিবীতে উড়ে চিনবে ।
- বাবা , তুমি আমাকে ওড়া শিখাবে ?
- নিশ্চই , আমার মা পাখি না হয়েও একদিন এই পৃথিবী তাকে পাখি বলে চিনবে ।
- বাবা , তাহলে ......
এই মুনিয়া মুনিয়া ... মুনিয়া ... মুনিয়া ...
মাথায় হালকা একটা ধাক্কা লাগলো মনে হচ্ছে , বাবা কে ঝাপসা দেখছি । একটু একটু করে সরে যাচ্ছে ।... কি হচ্ছে বুঝে উঠতে পারছি না । চোখটা খুলেই দেখি মা দাঁড়ানো । আজও মা এসে আমার আর বাবা এর গল্প এর শেষ ঘটাল । বাবাতো সব সময় আসে না এটাতো আর মা কে বুঝাতে পারব না । বললে আমাকেই পাগল বলবে । অবশ্য কথাটা একদম ভুল হবে না । পাগল আমি হতেও পারি কোন সন্দেহ নেই আমার ।
- বল , মা
- টেবিলের উপরে মাথা দিয়ে না ঘুমালে হয় না ?
- বুঝিনি যে ঘুমায় যাব ।
সাদাসিধে জবাব দেই
- বিছানায় আরাম করে ঘুমালেই তো পারিস ।
- টেবিলের উপরের ঘুম যদি বিছানা থেকে ভাল হয় তাহলে সমস্যা কোথায় মা ?
- খালি মুখে মুখে কথা বলিস , এই সন্ধায় কেউ ঘুমায় ?
- মা তোমার রাগের কারণ টা আসলে কি ? আমার টেবিলের ঘুম নাকি সন্ধ্যার ঘুম ?
- চা খাবি ?
- খাব , তুমি বস আমি বানিয়ে আনি ।
মা এর সাথে এমন করতে আমার বেশ ভালই লাগে কিন্তু বেশি রাগালাম না । সন্ধ্যার সময়টায় আমার নিজের চা বানাতে অনেক ভাল লাগে । মা এর সাথে বসে একা চা খাওয়া আর সাথে মা এর পছন্দের পুরানো দিনের গান । মা নিজেও সন্ধ্যায় আমাকে ডাকেন কেননা সে ও আমার সাথে এই সময় টুকু কাটাতে চান । সারা দিন মা মেয়ে ২ জনই ব্যস্ত থাকি । চা আমাদের কাছে নেশা এর মত । চা এর ব্যাপারটা অন্য রকম , খেলে কিছুই মনে হয় হয়না আবার যেদিন খাব না সেদিন ঝিমঝিম লাগবে । আবার কোন কোন দিন অনেক কাপ চা খেতে ইচ্ছা করবে ।বৃষ্টি হলে ইচ্ছা করবে । চায়ের সাথে বিস্কুট ভালো লাগবে কত কিছু আছে এক চা কে ঘিরে ...
চা নিয়ে এলাম
- মা চা নাও ।আবারো তোমার সেই ছাই পাশ সিরিয়াল দেখা লাগবে ?
- চুপ কর তুই , আজ কত ইম্পরট্যান্ট পর্ব আছে জানিস ?
আমি সিরিয়াল দেখি না। আমি আমার মা কে দেখি। তার টেনশান মাখা মুখ দেখি, নায়িকা এর আনন্দে তাকে আনন্দিত হতে দেখি, নায়িকা এর কষ্টে কষ্ট পেতে দেখি । ক্লাইম্যাক্স এর সময় রাগ হতে দেখি। আমার সিরিয়াল দেখা লাগে না , ৫ মিনিট তার পাশে বসে থাকলে সব কাহিনী আপনা আপনি জানা হয় যায়। আমি ইচ্ছা করে বসি। মা তাহলে কথা বলার কেউ তো পাবে।
নায়ক নায়িকা এর কষ্ট তাকে ছুঁয়ে যায় , তাদের বিচ্ছেদ এ সে কষ্ট পায় । কিন্তু মা এর পাশে বসে থাকা তার মেয়ের বুকের ভেতেরে জমে থাকা কষ্ট তাকে ছুঁয়ে যায় না । সে বুঝে না । টিভি সিরিয়াল থেকে বেশি বাস্তবতা যে আমাদের জীবনের প্রতিটি সময় এ ঘটে যাচ্ছে কয়জন সেটা বুঝার চেষ্টা করে ?
( চলবে )
১৭ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:২৬
স্বাগতা জেবিন বলেছেন: ধন্যবাদ , আপনাদের আলোচনা সমালোচনা নতুনদের অনুপ্রেরণা দেয়
২| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:০৩
মনিরুল ইসলাম বাবু বলেছেন: +
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্লগে সুস্বাগতম! এখানে আপনার বিচরণ আনন্দময় ও স্বচ্ছন্দ হোক! হ্যাপী ব্লগিং!
এখানে প্রকাশিত আপনার প্রথম পোস্টটা পড়ে গেলাম। কিছু টাইপো আছে, যা সম্পাদনার প্রয়োজন রয়েছে। তবে শেষ তিনটে লাইনের কথাগুলো ভাল বলেছেন।