![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনাটি প্রত্যক্ষদর্শী আমার মায়ের কাছ থেকে শোনা । আমার নানা রেলওয়েতে চাকুরী করতেন। সেই সুবাদে মা নারায়নগন্জের রেলওয়ে কলোনীতে থাকতেন । তখন মা স্কুলে পড়তেন । তখন নারায়নগন্জ শহরে প্রচুর বানর বাস করত । একদিন ঐ কলোনীর এক বাসায় এক গৃহিনী আতপ চালের ঝাউ রান্না করে ঠান্ডা করার জন্য প্লেটে বেড়ে ডাইনিং টেবিলের উপর উম্মুক্ত করে রেখে বাথরুমে ঢুকে গোছলের উদ্দেশ্যে । সেই সময়, সে তার শিশু সন্তানটিকে টেবিলের পাশে পাতা বিছনায় শুইয়ে দেয় । ঐ গৃহিনী বাথরুমে ঢুকার কিছুক্ষন পর ঘরে একটি বানর ঢুকে খাবারের সন্ধান করতে থাকে । এক পর্যায়ে বানরের নজর পড়ে টেবিলের উপর রাখা ঐ ঝাউয়ের প্লেটের দিকে । সে তখন টেবিলে গিয়ে বসে খাওয়ার জন্য প্লেটে রাখা ঐ গরম ঝাউয়ে হাত দেয় । গরম ঝাউয়ে হাত দেওয়া মাত্রই প্রচন্ড গরম অনুভূত হওয়ায় বানরটি দ্রুত ঝাউ থেকে তার হাত সরিয়ে ফেলে । তারপর নাড়া দিয়ে ঝাউ ঠান্ডা করার জন্য কোনকিছু খুজতে থাকে । একপর্যায়ে তার চোখ পড়ে ঐ শিশুটির দিকে । তৎক্ষনাত বানরটি শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে আবার টেবিলের উপর এসে বসে । তারপর শিশুটির হাত দিয়ে গরম ঝাউয়ে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করে । যেই না বানরটি শিশুটির হাত দিয়ে গরম ঝাউয়ে নাড়া দেয়, অমনি শিশুটি সজোরে চিৎকার করে ওঠে । শিশুটির চিৎকার শোনে তার মা দ্রুত বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে । বাথরুম থেকে বেরিয়ে এসে বানরটির কোলে শিশুটিকে দেখে শিশুটির মা চিৎকার-চেচামেচি শুরু করে দেয় । শিশুটির মায়ের চিৎকার-চেচামেচিতে ভয়ে বানরটি শিশুটিকে কোলে নিয়েই দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে ছাদে চলে যায় । এতে শিশুটির মা আরো জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকে । তার চিৎকার-চেচামেচিতে কলোনীর সব লোক এসে জড়ো হতে থাকে । অনেকে অনেক কৌশল করেও বানরটির হাত থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারছিল না । ক্রমেই ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে যেতে থাকল পুরা শহরময়, আর উৎসুক লোকেরও ভিড় বাড়তে থাকল । একপর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের লোক ও পুলিশ এসে হাজির হলো ঘটনাস্থলে । মানুষের উৎকন্ঠা আর উদ্বেগ বাড়তে থাকল । যতই বানরটির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা হতে থাকলো, ততই বানরটি শিশুটিকে নিয়ে একছাদ থেকে আরেক ছাদে লাফিয়ে যেতে থাকল । বানরটি যতবারই লাফ দিচ্ছিল, ততবারই শিশুটি জোরে জোরে কান্না-কাটি করছিল । শিশুটির কান্নায় পুরা এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে গিয়েছিল । এমন কোন লোক ছিলনা যে, শিশুটির এই করুন অবস্তা দেখে তার চোখে জল আসে নাই । নানা কৌশলে বানরটিকে নানা রকম ফলমূল দেওয়া হচ্ছিল কিন্ত কোন ফলই সে এক-দুই কামড়ের বেশী খাচ্ছিল না । আর ব্যাপক লোক সমাগম দেখে বানরটিও বেশ আতংকে এক ছাদ থেকে আরেক ছাদে লাফা লাফি করছিল । কিন্ত কখনও সে শিশুটিকে তার কোল থেকে নামাচ্ছিল না বা ফেলেও দিচ্ছিল না । ফলে সব চেষ্টাই ক্রমান্বয়ে ব্যর্থ হতে থাকল এবং বানরের মতলবটাও কেউ বুঝতে পারছিল না আসলে কি কারনে বানরটি শিশুটিকে নিয়ে এমন উদ্ভট কান্ডটি করছিল । সর্বশেষ ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা অনেক ভেবেচিন্তে বলল যে, বানরের প্রিয় খাবারটি দিলে বোধহয় কাজ হতে পারে । তখন বানরের প্রিয় খাবার হিসাবে দেওয়া হলো বাদাম, কিন্ত বানর এক দুটি বাদাম খেয়ে আর খেলোনা । এইভাবে একে একে অনেক ধরনের ফলই তাকে দেওয়া হলো কিন্ত কোন কিছুতেই কাজ হলো না । সর্বশেষ যখন বানরটিকে একটি কলা দেওয়া হলো, তখন সে পুরো কলাটি এক নিমিষেই খেয়ে ফেলল । আর তখনই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা একটি বড় আকারের কলার ছড়ি বাশের মাথায় বেধে ছাদের যে কিনারায় বানরটি শিশুটিকে নিয়ে বসেছিল, ঠিক তার পিছনের দিকে রাখল । এতো কলা দেখে বানরটি আর লোভ সামলাতে পারল না । তখন বানরটি শিশুটিকে আস্থে আস্থে ছাদের উপর শুইয়ে দিয়ে পিছনের দিকে সরে গিয়ে কলা খেতে শুরু করল । আর সেই ফাকে ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা একটি বড় মই দিয়ে আস্থে করে শিশুটিকে ছাদ থেকে নামিয়ে আনল । অবসান ঘটল সেই শ্বাসরুদ্ধকর এক অবিশ্বাস্য ঘটনার এবং সেই সাথে মা ফিরে পেল তার নারিছেড়া অতি আদরের প্রিয়ধনকে এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা ছাড়ল স্বস্থির নি:শ্বাস । এই যে কলার জন্য শিশুটিকে নিয়ে বানরের জিম্মি করার ঘটনাটি, সেই সময়ে দেশ জুড়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বলে জানা যায় ।
২| ১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:৪১
provat বলেছেন: অাতপ চালের নরম খাবারের নামও ঝাউ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৩
বিবর্ণ সময় বলেছেন: ঝাউ হইল একটা গাছ।