নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া\nআমি ভালোবাসি মানুষকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে।

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া

আমি ভালোবাসি মানুষকে, তুমি ভালোবাস আমাকে

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

পান্তা ইলিশ ও বাঙালি

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৮

পান্তা ইলিশ ও বাঙালি
স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া

ভাবখানা এমন যেন, বৈশাখেই ইলিশ দিয়ে পান্তা, অথবা পান্তা দিয়ে ইলিশ খেলে তারপর বাঙালি হবো আমরা। আর না হলে চাষাভুষাই থেকে যাব। ইলিশের সঙ্গে পান্তা অথবা পান্তা খাওয়ার সাথে বাঙালি হওয়ার সম্পর্কটা কি? আমি কোন সম্পর্কই দেখিনা, একমাত্র টাকার আদানপ্রদানের সম্পর্ক ছাড়া। আর সবকিছুকে ব্র্যান্ড বানিয়ে গোলেমালে মাল কামানো ছাড়া। আর না হলে এমন ইলিশের অমৌসুমে এককেজি ইলিশের দাম কিনা ৪৫০০। ভাবা যায়, এককেজি ইলিশের দাম দিয়ে একটি পরিবার চলে গ্রামে। কেন খেতে হবে এত টাকা দিয়ে ইলিশ? এতে কি সম্মান বাড়বে মানুষের, বাঙালির? আসলে কিছুই বাড়বে না। গরিব আরো গরিব হতে থাকবে। মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত হতে থাকবে। ধনী দিন দিন ফুলে ফেঁপে আরো বড় ধনী হতে থাকবে। আমরা ইলিশ খাবো, ইলিশ মাছ সব মাছের চাইতে মজার মাছ, বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু এত দাম দিয়ে ইলিশ খাবো কেন? বাংলাদেশের ইলিশ শুনছি বাংলাদেশে পাওয়ার আগে লন্ডন আমেরিকায় বেশী পাওয়া যাচ্ছে। এখন ইলিশ ধরার মৌসুম নয়, সুতরাং ইলিশ পাওয়া যাবে না বাজারে এটাই স্বাভাবিক। এবং এই সময়ে একটা কৃত্রিম চাহিদা বৃদ্ধি করে ঐতিহ্যের নামে ইলিশের এই রমরমা ব্যবসাকে কিছুতেই আমি ঐতিহ্য বলতে পারি না। পান্তা বাঙালির একটা ঐতিহ্য। বাংলাদেশের বেশিরভাগ গ্রামের মানুষের সকালের নাস্তা হলো পান্তা ভাত দিয়ে কাঁচামরিচ কিংবা ভর্তা দিয়ে পান্তা ভাত। এতে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। আমরাও ছোটবেলায় পান্তা খেয়ে স্কুলে গিয়েছি। নিম্ন মধ্যবিত্তদের এছাড়া কোন উপায় ছিল না। তবে আনন্দের সঙ্গে খেয়েছি পান্তা। পান্তাতে লবণ মাখিয়ে কাঁচামরিচ দিয়ে শুঁটকি চাটনির কি যে মজা যারা খাননি তারা বলতে পারবে না। পান্তা বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের এখনো সকালের প্রধান খাবার। তো পান্তাকে হেয় করতে বা নিয়ম পালন করার জন্য শহুরে বাঙালিরা একদিনের জন্য যদি পান্তা খেতে চায় তাতে আমার আপত্তি নেই, তবে তা খেতে হবে কাঁচামরিচ অথবা শুঁটকি ভর্তা দিয়ে। তবেই হবে হেয় করা, অথবা পালন করা। দামের কারণে ইলিশ মাছ এমনিই খেতে পারেনা দেশের অধিকাংশ মানুষ। তারওপর পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ একশ্রেণীর লোকরা খাবে আর বেশীরভাগ মানুষ তা দেখে লালা ঝরাবে সেটা আমি কেন, বেশীরভাগ বিবেকবান মানুষরাই চাইবে না। সুতরাং পান্তা ইলিশের সঙ্গে বাঙালির সেই ধরণের কোন সম্পর্ক নাই। যা আছে তা হলো ফুটানি দেখানোর জন্য অনেক টাকা দিয়ে ইলিশ মাছ কিনে পান্তা দিয়ে খেয়ে একটু জাতে ওঠার ধান্ধা। আর যারা সাড়ে চারহাজার টাকা দিয়ে এককেজি ইলিশমাছ কিনে খেতে পারে, ওরা পুরো দেশটাকেও কিনে খেয়ে ফেলবে একসময়। সাড়ে ৪ হাজার টাকায় এককেজি ইলিশ মাছ না কিনে ওই টাকা দিয়ে দিন কোন গরিব মানুষকে। যারা পরিবার নিয়ে চলতে পারছে না তাদের। কারণ এককেজি ইলিশ টাকার মতো গিলে খাওয়ার চাইতে একটি পরিবার বাঁচানো অনেক ভালো হবে বলে আমি মনে করি। সারা দেশে ইলিশ নেই শুধু উন্নত আধুনিক শপিং মল গুলোতো বিভিন্ন সাইজের বিভিন্ন দামের ট্যাগ লাগানো ইলিশ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। তো এই যে ঐতিহ্যের নামে ব্র্যান্ডিং এর নামে সবগুলো জিনিসের দাম বাড়িয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে যারা তাদের আগে ধরতে হবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে ভাই, ঐতিহ্যর নামে এই যে ব্যবসা এটা বন্ধ করেন। দোহাই দাম বাড়ালে এমনি বাড়ান। পান্তা ইলিশ খাওয়া বাঙালির ঐহিত্য এটা প্রচার করে বিক্রি বাট্টা করবেন না। দোহাই তোদের শেষে একটি কথাই বলি, ভোজ্যপণ্য থেকে শুরু করে সব ধরণের জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের টিকে থাকাটাই দায় হয়ে যাচ্ছে। আর সেখানে পয়লা বৈশাখের দোহাই দিয়ে জামাকাপড় ও ইলিশের দাম বাড়িয়ে রমরমা ব্যবস্যাকে জিঁইয়ে রেখে ধনীদের আরো ধনীবানানোর পন্থাটাকেই বাতিল করা উচিত। আর আমাদের উচিত হলো সিম্পল লিভিং এবং গুড থিংকিং এর মধ্যে থেকে জীবনকে আসল জীবনের মতো যাপন করা। বেশী টাকা দিয়ে ইলিশ পান্তা খেয়ে বাঙালি হওয়ার আগে একবার ভাবু্ন আপনার আশে পাশের লোকজন খেতে পারছে কি না নববর্ষের দিনটিতে। সবার জন্য নববর্ষের শুভ কামনা। যাওয়ার আগে আরেকটি ট্রাকলিপি থেকে উদ্ধৃতি ‘‘মানুষের বিবেকই হলো শ্রেষ্ঠ আদালত’’।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৪

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: পহেলা বৈশাখে ১ দিনের জন্য আমাদের যদি বাঙালি হবার সাধ জাগেই এবং তার জন্য যদি পান্তা ভাতও খেতে হয় তবে নিত্য পান্তা খাওয়া বাংলার অধিকাংশ মানুষকে উপহাস করে তাদের অনুভূতিতে আঘাত না করে তাদের সাথে মিলেমিশে পান্তা-ইলিশ এর পরিবর্তে আসুন সবাই পান্তা-পিয়া (পান্তা + তেলাপিয়া) খাই। তবে সাথে অবশ্যই আলু ভর্তা, কাচা মরিচ আর পিয়াজ থাকা চাই। কারণ এগুলোই হয়ত গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন পান্তা বিলাস !!!

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৮

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে কাউকে উপহাস করার জন্য কিছু পালন না করাই উত্তম। বাঙালির প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসের ঐহিত্যকে যদি পালন করতে চাই আমরা অবশ্যই পান্তা, লবণ, কাঁচামরিচ ভর্তা কিংবা শুঁটকি চাটনি দিয়ে খাবো। তাহলেও সম্ভবত আমরা বাঙালি থেকে যাবো।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৫

তট রেখা বলেছেন: এটা কর্পোরেট চিন্তা-চেতনার ফল বৈ কিছুই নয়। আমি আজ সকালেই ইলিশ মাছের দাম দেখেছি এবং সস্তাই দেখেছি। কিন্তু সংবাদ পত্র গুলো মনে হচ্ছে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়েছে, এটাও একটি কর্পোরেট দের স্বার্থ রক্ষার অপচেষ্টা। গৃহপালিত সাংবাদিকদের দিয়ে দেশের বারটা বাজা ছাড়া এক আনার কাজ হয়না।

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

একাকি দুশমন বলেছেন: আপনি মনে হয় ‍মুক্তমনা হতে পারেন নি। মুক্তমনাদের কাছে সব কুসংস্কার হলেও এটা কুসংস্কার না।

৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২

ইমরান আশফাক বলেছেন: আপনার বক্তব্যের সাথে একমত। পান্তা যদি খেতেই হয়, সারা বৎসর ধরে খাও। শুধু ১লা বৈশাখে খাবে আর অন্য সময়ে তাকিয়েও দেখবে না এমন আদিখ্যতা দেখানোর মানে হয়।

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

শাহ আজিজ বলেছেন: মাত্র একদিন ভিলেজের পুওর পিপলসের পান্তা উইথ গ্রিন চিলি অ্যান্ড স্মাশ পটাটো , শুটকি আর হিলশা খাব তাতেও গা জালা ধরে গেছে?? অল রাবিশ =p~ :P

৭| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬

স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই যাঁরা আমার এই লেখাটি পড়েছেন সেইসব পাঠক পাঠিকাদের। তারপর ধন্যবাদ দেই সহমত পোষণ করার জন্য হাসান জাকির, তটরেখা, একাকি দুশমন, ইমরান আশফাক এবং শাহ আজিজকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.