![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কাজী তাহমিনা ভালোবাসেন পড়তে, পড়াতে, ঘুরতে, খেতে ও আড্ডা দিতে। জন্ম সিলেটে, বেড়ে ওঠা বাবার বদলির চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি সাহিত্যের এককালের ছাত্রী; এখন পড়াচ্ছেন ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে।
ডিজিটাল খরগোশ আর বোকা কচ্ছপের গল্প
-কাজী তাহমিনা
সে অনেক অনেককাল আগের কথা। একদেশে ছিল এক জ্ঞানী লোক, তার নাম ছিল ঈশপ। তিনি আমাদের যে খরগোশ আর কচ্ছপটার গল্প বলেছিলেন, তারই নাতির নাতির নাতির গল্প বলবো আজ তোমাকে।
দিনে দিনে অনেকদিন চলে গেছে। খরগোশটা এখন থাকে বাংলাদেশ নামের একটা দেশে, একটা ছোটখাটো বনের ভিতরে।। সে খুবই ডিজিটাল, খুবই আধুনিক আর খুবই চালাক। আর কচ্ছপের দাদার দাদার দাদার মতই এখনকার কচ্ছপটাও বেশ পরিশ্রমী, সহজসরল আর, ভালো মানুষ ধরণের।
খরগোশ সারাদিন ঘুরে ঘুরে বেড়ায়, আর বনের পশুপাখি সবাইকে বলে বেড়ায়, দৌড়ে সেই-ই সেরা। কোনকালে কবে কোন কচ্ছপ জিতেছিল, সেটা এখন ভাবলে হবে? এবার আবার প্রতিযোগিতা হলে, সে জিতবেই জিতবে।
কচ্ছপটাকে একদিন সে বলেই বসলো, 'শোন, হে ভায়া। দৌড়ে আমিই সেরা। আমার কথা বিশ্বাস না হলে, চলো হে, একটা ম্যারাথন রেস লড়ে দেখি।'
কচ্ছপ সরল শান্ত মানুষ। সে ভাবলো, এতো করে যখন বলছে, লড়েই দেখা যাক তবে।সে বললো, 'ঠিক আছে, স্যারজী। চলুন, তবে শুরু করি।'
খরগোশ বললো, 'রোসো, রোসো! সবাইকে আগে খবরটা দিই।কালকে সকাল ১১টায় চলে এসো।আমি বাপু, আবার দশটার আগে ঘুম থেকে উঠতে পারিনে। '
কচ্ছপ বললো, 'তথাস্তু। তবে তাই হোক। এখন বিদায়।'
কচ্ছপ বাড়ি গিয়ে খুব করে কাঁচা ছোলা খেয়ে, বারকয়েক বুকডন দিয়ে, সকাল সকাল ঘুমিয়ে পড়লো। তাড়াতাড়ি উঠতে হবে কাল।
আর এদিকে, খরগোশ তো, চারিদিকে মাইক লাগিয়ে, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে, ঢেঁড়াপেটা করে বলতে লাগলো, 'ভাইসব, ভাইসব, আগামীকাল আবার সেই ঐতিহাসিক দৌড় প্রতিযোগিতা হবে। কচ্ছপ দি স্লো ম্যান আর খরগোশ, দি চ্যাম্পিয়ন সেখানে অংশ নেবে। আপনারা সকলে আমার জন্য ফুলের মালা আর হাততালি নিয়ে চলে আসবেন। কারণ, আপনারা জানেন যে, আমিই আসলে সেরা।'
বনের যত পশুপাখি, খরগোশের প্রচারণা শুনতে শুনতে প্রায় বিশ্বাসই করে ফেললো, আর পরের দিন সবাই মিলে চলে এলো খরগোশের কীর্তি কারখানা দেখবার জন্য।
কচ্ছপ ও চলে এলো ঠিকঠাক, সময়মত। এদিকে খরগোশ আর আসেনা, আসেনা। আসবে কি করে, সে তো রাতভর ইউটিউবে নাচ দেখে ঘুম থেকে উঠতেই পারেনি!
ভাগ্যিস, এলার্ম ঘড়িটা বাজতে বাজতে বন্ধ হয়ে যায়নি। এগারোটা যখন বাজলো বাজলো, এলার্মের আওয়াজ কানে গেলো খরগোশের আর সে তড়িঘড়ি লাফ দিয়ে তড়াক করে উঠে পড়লো। ধুপধাপ রেডি হয়ে, লাফিয়ে লাফিয়ে সে চলে এলো, অনুষ্ঠানের মাঠে।
তারপর, শুরু হলো রেইস। বনের রাজা সিংহ একটা বাঁশি বাজাতেই খরগোশ দিলো দৌড়। সে কি দৌড় তার!লাফাতে লাফাতে অর্ধেক পথ সে চলে এলো ঘণ্টা খানেকের মাঝে।
আর এদিকে, কচ্ছপ তো খুবই পরিশ্রমী আর নিয়মনিষ্ঠ। সকালে উঠেই সে ব্যায়াম করেছে। পথটা ঠিকঠাক বুঝে নিয়েছে। এখন রেইস শুরু হতেই,সে গুটি গুটি হাঁটা শুরু করেছে। সে এগোচ্ছে তো এগোচ্ছেই, কিন্তু পথ আর শেষ হয়না।
বেশ অনেকদূর পৌঁছে খরগোশ ভাবলো, কচ্ছপের যেই গতি, তার তো সারাদিন লেগে যাবে ওর কাছাকাছি আসতে। তারচেয়ে বরং একটু জিরিয়ে নেওয়া যাক।
যেই ভাবা, সেই কাজ!
সে কিছুক্ষণ গুগল করেই ধারেকাছে একটা রিসোর্ট পেয়ে গেলো। সেখানে গিয়ে সে খানিকক্ষণ ফেসবুক করলো, বন্ধুবান্ধবদের সাথে ভাইবারে কথা বললো।তারপর স্পা নিতে নিতে খানিক ঘুমিয়েও নিলো। বিকেল যখন হবু হবু, তখন সে গুগল ম্যাপ দেখে, শর্টকাট একটা পথ বের করে, বেশ খানিকটা পথ উবারের গাড়িতে চলে আসলো। তারপর লুকিয়ে লুকিয়ে উবারের গাড়িটা ছেড়ে দিয়ে, খুব করে লাফাতে লাফাতে, যেন সে সারাদিন দৌড়ে হাঁপিয়ে উঠেছে, এমন একটা ভাব নিয়ে, হাঁপাতে হাঁপাতে দৌড়ের ট্র্যাকে ছুটলো।
শেষপ্রান্ত পর্যন্ত দৌড়ে গিয়ে সে দেখে কচ্ছপ গুটি গুটি পায়ে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছে যাচ্ছে। খরগোশের কি বুদ্ধি কম? হুড়োহুড়ি করে একটা শোরগোল তুলে দিয়ে, সবাই যখন শোরগোলের উৎস খোঁজায় ব্যস্ত, তখন আস্তে করে, কচ্ছপকে ল্যাং মেরে পেছনে ফেলে, ঝপাঝপ ফার্স্ট হয়ে গেলো সে।
ব্যাস, বেচারা কচ্ছপ সারাদিন খেটেখুটে হেরে গেলো, আর চালাক খরগোশ তড়িঘড়ি সেলফিসহ ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে দিলো, 'ফিলিং প্রাউড, কজ, পরিশ্রমই সৌভাগ্যের প্রসূতি। গড ইজ উইদ দোজ হু আর অনেস্ট।'
বিঃদ্রঃ সার্কাজম এলার্ট!
০২ রা জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০২
ব্রতচারী মেয়ে বলেছেন: ধন্যবাদ!
২| ১৮ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ২:১৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
০২ রা জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০২
ব্রতচারী মেয়ে বলেছেন:
ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:০২
আওরঙ্গজেব চৌধুরী রিফাত বলেছেন: হা হা হা। দারুন ছিল। কঠিন একটা ্মেসেজ দিয়ে গেল