নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ হীন পৃথিবী

দুঃখ হীন পৃথিবী

একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।

দুঃখ হীন পৃথিবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এখনি অন্ধ বন্ধ করো না পাখ

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৪

আমার পিতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আপাদমস্তক একজন রাজনীতিবিদ। আমি এই মানুষটি এবং অন্য আরও কিছু প্রসঙ্গ নিয়ে কিছু কথা লিখছি। নিজের পিতাকে নিয়ে লেখা বোধ হয় খুব শোভন নয়! আপাতদৃষ্টিতে এই অশোভন কাজটি আমি আজ করতে চাই, এবং করব।

মির্জা আলমগীরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে শ্রদ্ধা করেছেন সব সময়। এলাকায় যেকোনো বিপদ আপদে প্রথমে ছোটে তাঁর কাছে, সমাধানের জন্য। সে যে দলেরই হোক না কেন, সে যে ধর্মেরই হোক না কেন।বলুকাকার একটি কথা মনে পড়ে গেল। নির্বাচনী প্রচারণায় আমি হাঁটছি এক পাড়া থেকে আরেক পাড়ায়। বলুকাকার বাসার সামনে এসেছি, সঙ্গে থাকা দুজন বললেন, ভিতরে যাবার দরকার নেই, তিনি আব্বুর বিরুদ্ধে প্রচারণা করছেন। আমি তবুও এগিয়ে গেলাম। ঘরে ঢুকতেই দেখি বলুকাকা আর কজন বসে। বললাম, বলুকাকা, আব্বুর জন্য প্রার্থনা করবেন। বলুকাকা হেসে বললেন, মাগো, রাজনৈতিক কারনে আমি তোমার বাবার বিরোধিতা করছি, কিন্তু মানুষ আলমগীরের জন্য আমার মঙ্গল কামণা নির্ভেজাল, সব সময় ।

নাম বলছি না, তবে আওয়ামী লীগের এক বিখ্যাত বাগ্মী রাজনীতিবিদ এক টক শোতে আব্বুর সাথে বসতে চাননি। তার স্রেফ কথা, এই ভদ্রলোকের সাথে আমি ঝগড়া করতে পারবো না। শতভাগ সততার সাথে মানুষটি সারা জীবন রাজনীতি করেছেন, নিজের আদর্শ, নিজের বিশ্বাসের সাথে কখনো সমঝোতা করেন নি, শুধু বোঝেন নি, এই বাংলাদেশে তিনি বড়ই অনুপযুক্ত এক রাজনীতিবিদ। একটি “গনতান্ত্রিক” সরকার আজ এই মানুষটিকে যেভাবে অপদস্থ করল, তা আসলেই উদাহরণ হয়ে থাকবে চরম অবিচারের।

কি অপরাধ ছিল তাঁর? তিনি বিরোধী দলের জিএস, সরকারের সমালোচনা করতেন, কর্মীদের সংগঠিত করতেন, তাঁদের উজ্জীবিত করতেন সরকার বিরোধী আন্দোলনে প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিয়ে, যা পুরো বাংলাদেশের মানুষ দেখত, শুনত, উপলব্ধি করার চেষ্টা করত। তিনি বোমাবাজি করেছেন, কিংবা করিয়েছেন? গাড়িতে আগুন দিতে বলেছেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মির্জা আলমগীরের চরম শত্রুও তা বিশ্বাস করবে না !



৬৫ বছরের মানুষটাকে আমি প্রায় প্রশ্ন করতাম, আব্বু, এই নষ্ট, পচে যাওয়া সমাজে তুমি কেন এখনও রাজনীতি করছ? ৭১ পূর্ববর্তী রাজনীতির সেই পরিবেশ তো আর নেই। আগেও রাজনীতিবিদদের বন্দী করা হতো, তাদের সাথে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করা হতো, আজতো কোন নিয়ম নাই, আইন নাই, বিচার নাই, আজ তো গ্রেফতার করেই রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে প্রাগৈতিহাসিক ভাবে অত্যাচার করে। সব জঙ্গলের আইন। এসব বাদ দাও না। আব্বু স্মিত হেসে বলতেন, “শেষ চেষ্টাটা করেই দেখি, আমার তো চাওয়া, পাওয়ার কিছু নেই”। তাঁর খুব প্রিয় কবিতার একটি লাইন প্রায়ই আমাকে বলতেন “এখনি অন্ধ বন্ধ করো না পাখা”।



আমার এই বাবার বিরুদ্ধে এই সরকার দুটি আজব মামলা দিয়েছে। একটিতে অভিযোগ, আব্বু এবং আরও কজন মিলে সচিবালয়ে ককটেল ফুটিয়েছে বা ফোটাতে সহযোগিতা করেছে, আরেকটিতে অভিযোগ, তাঁর এবং আরও কজনের প্ররোচনায় ২৯শে এপ্রিল একটি বাস পোড়ানো হয়েছে।

মামলার চার্জশিট পড়ছিলাম। নিজের অজান্তেই হেসে উঠলাম। আমাকে হাসতে দেখে আমার এক স্টুডেন্ট প্রশ্ন করলো, কেন হাসছি। ওকে পুরো ঘটনাটা খুলে বললাম। ও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল। তোমার বাবাকে আসামী বানিয়েছে? এই মামলায়? ওর বিস্ময় দেখে বললাম, বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ মানুষ তোমার মতই বিস্মিত! ওকে বললাম, জানো, এই সরকার, দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে, এরা দিন বদলের কথা বলেছে! ওর বিস্ময় আরও বাড়ল। “বল কি? এটা নির্বাচিত সরকার ! আমিতো ভেবেছি, এটা স্বৈরাচারী সামরিক সরকার”। খারাপ লাগছিল। বললাম, “চিন্তা করো না, ঠিক হয়ে যাবে, সরকার একটু টালমাটাল এখন, ঠিক হয়ে যাবে”।

আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ঘটনাটা আসার পরে অনেকেই আমার কাছে জানতে চাইল পুরো ব্যপারটা। খুব চেষ্টা করলাম দেশের “ভাবমূর্তি” রক্ষা করে বুঝিয়ে বলবার! সকলকেই আশ্বাস দিলাম, আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে।আজ নিম্ন আদালত আব্বুদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে। রায় ঘোষণার পর পরই আব্বুক্কে ফোন দিলাম। ভীষণ পজিটিভ, হাসছিলেন আমার দুশ্চিন্তা দেখে। হঠাৎ গলাটা বোধ হয় আবেগে কিছুটা বুজে এলো। বললেন “মাগো, তুমি সাহস হারায়ও না, আমরা একসাথে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবো, করতেই হবে, যা-ই হোক, তুমি সাহস হারায়ও না মা”।



আমি আর কথা বলতে পারলাম না। তাঁকে বললাম না, আমি আর স্বপ্ন দেখি না বাংলাদেশ নিয়ে, আমি আর আশা করি না, আমার কেন জানি আজকাল শুধু মনে হয়, ওরা ভিন্ন মতাবলম্বী, সাহসী, সত্যবাদী, দেশপ্রেমিক কোন বাংলাদেশী নাগরিককে মুক্ত থাকতে দিবে না। তুমি যদি স্বাধীন ভাবে কথা বলতে চাও,চুপ করে থাকো। এর কিছুই তাঁকে বলা হোল না। শুধু বললাম, “তুমি ভালো থেকো আব্বু”।

আমার প্রিয় শিক্ষক প্রফেসর আনোয়ার হোসেনের লেখা আজকাল প্রায় পড়ি। সব লেখাতেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের কথা, তাঁর ভাইয়ের আত্মদানের কথা, সোনার বাংলা নিয়ে তাঁর পরিবারের স্বপ্নের কথা। আমারও মনে পড়ে, ১/১১ এর পরে তাঁর সাহসী ভুমিকার কথা, আরেকটু আগেকার কথাও মনে পড়ে, শামসুন্নাহার হলে পুলিশ অভিযানের বিরুধধে তাঁর সাহসী ভুমিকার কথা, আমরা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। স্যারকে দেখতে গিয়েছিলাম তাঁর বাসায়, তাঁর আগেও স্যারের বাসায় গেছি রাতের খাবার খেতে, কজন বন্ধুসহ। কিছুদিন আগে মেইলে পেলাম তাঁর চিঠি, ১/১১ এর পরে কোর্টে দেওয়া তাঁর জবানবন্দি সহ, তাঁকে ভোট দেওয়ার আবেদন করে।



এই স্যার আজ আর প্রতিবাদ করছেন না, গর্জে উঠছেন না, মিছিলে যাচ্ছেন না। উনি দেখছেন, সেই একই পুলিসি রিমান্ডে রাজনৈতিক নেত্রীকে চার পেয়ে পশুর মতো অত্যাচার করা হচ্ছে, মেয়েটি দাঁড়াতে পারছে না, সেই একই রিমান্ডে মানুষের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, সেই একই বাহিনী রাতে অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাচ্ছে কারো বাবাকে, কারো স্বামীকে, কারো সন্তানকে, কদিন পরে বুড়িগঙ্গায় ভেসে উঠছে মানুষের হাত, পা। স্যার কিন্তু কিছুই বলছেন না।



বছরের পর বছর ধরে একজন অনির্বাচিত ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে আছেন, তিনি কিছুই বলছেন না। স্যার একটি রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাস করেন জানি। খুব স্বাভাবিক। প্রতিটি মানুষ রাজনৈতিক। কিন্তু যেকোনো অন্যায় তো অন্যায়ই, যেকোনো অবিচার তো অবিচারই, যেকোনো অত্যাচার তো অত্যাচারই, এসবের তো অন্য কোন নাম নেই, অন্য কোন সংজ্ঞা নেই। তবে? তাঁর এই নীরবতার কারণ কি? স্যারের একটি লেখা পড়লাম, কালের কণ্ঠে। তিনি লিখেছেন তাঁর প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে। সেই লেখাতেও তিনি কয়েকবার উল্লেখ করলেন অন্যায়ের বিরুধধে তাঁর অতীত সংগ্রামের কথা। প্রশ্ন করি তাঁকে, আপনার ভাই যে আদর্শের জন্য জীবন দিয়েছেন তাঁর কতটুকু এই “সোনার বাংলায়” বাস্তবায়িত হয়েছে? প্রশ্ন করি তাঁকে, বর্তমান কে তিনি কিভাবে দেখছেন এবং বর্তমানে তিনি কি করছেন? সংগ্রাম কি চলমান প্রক্রিয়া নয়?



আমি স্যারের কথা উল্লেখ করলাম কারণ আমি মনে করি বাংলাদেশের বেশির ভাগ বুদ্ধিজীবীকে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেন। আমাদের আঁতেলরা এক একটি দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে কেমন জানি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়ে যান। একটি মার্কা, একটি রঙ তাঁদের অন্ধ করে দেয়। চোখের সামনে সমাজটা নষ্ট হয়ে যায়, চোখের সামনে মানুষগুলো কুঁকড়ে যায়, চোখের সামনে দেশটা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়, এদের কিচ্ছু যায় আসে না। (একটু আগেই খবর পেলাম, আনোয়ার স্যার জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মনোনীত হয়েছেন, স্যারের সাম্প্রতিক নীরবতার কারণটা এখন বোধগম্য হোল)!



সোহেল তাজের পদত্যাগের পর একটা ব্যপার আমার কাছে পুরো পরিষ্কার। আমরা সবাই এক একটি সোহেল তাজ। আমরা খুব সাহস, উদ্যোগ নিয়ে নেমে পড়ি সমাজ বদলাবো বলে, ফেসবুকে এমন ঝড় তুলি, সে ঝড়েই যেন উড়ে যায় সব অনাচার, রাজনীতিবিদদের গালিগালাজ করে অর্গাজমের সমপরিমান আনন্দ বোধ করি, অন্যের পিণ্ডি চটকিয়ে দাবি করি, আমিই আলাদা, আমিই শুদ্ধ। তারপর যখন reality bites, দৈত্য গুলো কামড়ে দেয়, তখন গাল ফুলাই, অবুঝ শিশুর মত বলি “আমি তোমার সাথে আর খেলবো না”। বিশাল একটা চিঠি লিখে পালিয়ে যাই আমেরিকা। ব্যস, নাটকের এখানেই সমাপ্তি।



আমার কিছু উচ্চশিক্ষিত বন্ধু আছে, এরা প্রায়ই বিভিন্ন আড্ডায়, ফেসবুকে রাজনীতিবিদের পিণ্ডি চটকায়। খুব ফ্যাশনের কাজ, নিজের নিরপেক্ষতা প্রমানের কি সাংঘাতিক চেষ্টা, অনেক হাত তালি। ভাবখানা এমন “হোলতো ? দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করা শেষ, এবার চলো, শীশা খেতে যাই”। সুবিধাবাদের চূড়ান্ত! রাজনীতিবিদদের গালি দিয়ে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলানো যায় না, এ সহজ কথাটি আমার উচ্চশিক্ষিত বন্ধুদের মাথায় ঢুকে না, সম্ভবত ইচ্ছাকৃত ভাবেই!



আমার বাবা একটি কথা আজকাল প্রায়ই বলেন, “আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিবর্তনে একটি অন্যতম মূল ভুমিকা রেখেছে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত । পুঁজিবাদ আর ভোগবাদের প্রভাবে এই মধ্যবিত্ত আজ নির্লিপ্ত হয়ে গেছে, সুবিধাজনক বলে”। আর আমার মাথা বলে, এটা খুব ভয়ংকর একটা অবস্থা। কোন নিয়মতান্ত্রিক ভাবে, সভ্যভাবে এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। আজ ব্যক্তি মির্জা আলমগীরের উপর যে অন্যায় হোল, যে অবিচার হোল, এর ফল ভোগ করতে হবে পুরো জাতিকে। এ পরিষ্কার। আজ অথবা কাল। নগর পুড়লে দেবালয় এড়ায় না।



অনেক দিন আগে এই লিখাটা পোষ্ট করেছিলাম, আজ আবার মনটা কেন জানি খারাপ হয়ে আছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব এর জন্য তাই আবার শেয়ার করলাম।



Click This Link

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

নীরব দর্শক্ বলেছেন: পুরোটা না পড়েই মন্তব্য করলাম বলে দূ:খিত, কারন যে বিষুয়ে আপনি লিখেছেন সত্যি বেদনাদায়ক। আর এই বিষয়টা নিয়ে কিছু বলার রুচি বা ইচ্ছা কোনটাই নেই।
আজ ব্যক্তি মির্জা আলমগীরের উপর যে অন্যায় হোল, যে অবিচার হোল, এর ফল ভোগ করতে হবে পুরো জাতিকে। এ পরিষ্কার। আজ অথবা কাল।

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০১

কপোতাক্ষের তীরে এক অসামাজিক বলেছেন: আপনিই কি
Shamaruh Mirza ?
Click This Link

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৭

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আমি ওনার লিখাটা কপি করেছি মাত্র

৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

াহো বলেছেন:
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করলো মোশতাক গংরা সাম্রাজ্যবাদের ষড়যন্ত্রে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সবাই তাজউদ্দীন আহমদকে আত্মগোপনে যাবার জন্য বলতে থাকেন দেশের বামপন্থী নেতারা। কিন্তু তিনি আত্মগোপন করতে অস্বীকৃতি জানান। ১৫ আগস্ট প্রথম গৃহবন্দী ও পরে ২২ আগস্ট গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পরিবারের সদস্যদের প্রতি শুধু বলে গেলেন- ‘ধরে নাও আজীবনের জন্য’ যাচ্ছি৷ ৩ কন্যা, ১ পুত্রসহ স্ত্রীকে ছেড়ে যাবার সময় একটুও বিচলিত ছিলেন না। কারা অন্তরীণহলেন আরো ৩ জন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামরুজ্জামান। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানার মধ্যে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় ৪ নেতাকে। ১৫ আগস্টের পরে মোস্তাক গংরা ৩ নবেম্বর জেল হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১৮

দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: আপনার কথার সাথে একটুকু দ্বিমত পুশন করছিনা, তবু বলব আর কত কাল এই ভাবে চলবে।

৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

শার্লক বলেছেন: কোন আশা করি না আর এই দেশকে নিয়ে।

৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫

দূর আকাশের নীল তারা বলেছেন: শামারুহ ওরফে শামা, আমরা একে অপরকে ব্যক্তিগতভাবেই চিনি এবং বয়সে তুমি আমার চেয়ে ছোট। তুমি একসময় নিজেকে মন্ত্রীর বলে দাবী করতে, পতাকাওয়ালা গাড়িতে চলাচল করতে। তোমার মত আমি এত ভাগ্যবান নই। নিজেকে আমজনতার একজন বলে দাবী করেই বলছি, তোমার লেখাটি অসংখ্য মিথ্যাচারে ভরা।

১) “ওর বিস্ময় দেখে বললাম, বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ মানুষ তোমার মতই বিস্মিত!” কথাটা পুরোপুরি ভুল।ফখরুলের সাথে আজকে যা হচ্ছে, এই রাজনীতিই ১৯৯০থেকে চলে আসছে। ফখরুল কেবল সময়ের বলি। ক্ষমতায় গেলে ফখরুলও একই কাজ করবে।

২)“ওকে বললাম, জানো, এই সরকার, দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে, এরা দিন বদলের কথা বলেছে!” একসময় বিএনপিও দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছিল, তারা কতটুকু দিন বদল করেছিল? আমরা সুরন্জিত, জয়, কামালের সাথে তারেক, কোকো, মামুনের তুলনা করতে চাই না। আমরা চাই এসব বিষফোড়াগুলো সমুলে বিদায় হোক।

৩)“সকলকেই আশ্বাস দিলাম, আমাদের বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা আছে।“ না আমাদের আস্থা নাই। তোমার বাবার দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রীর উপর গ্রেনেড হামলার মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছিল, বাংলা ভাই একের পর এক খুন করে গেলেও তোমার বাবার সর্মথনকারী দল নির্দ্বিধায় বাংলা ভাইর অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। ১৯৯২-তে আমার বাবাকে অপহরণ করা হয়, থানার ওসি মামলা নিতে অস্বীকার করে। তখন বিচার-ব্যবস্থা কইছিল? কিংবা তোমার বাবা কি সোহেল তাজের মত কোন ভূমিকা নিতে পেরেছিল? তথাকথিত বুদ্ধিজীবি বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের মত তুমিও ফাকা বুলি ছাড়লে: আমরা সবাই এক একটি সোহেল তাজ। খুব হাসি পেল।

৪) “আমি আর স্বপ্ন দেখি না বাংলাদেশ নিয়ে, আমি আর আশা করি না ”। তুমি যদি সত্যিকার অর্থে দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন, তাহলে প্রফেসর আনোয়ার হোসেনের মত ঢাবির শিক্ষক হয়ে দেশেই পড়ে থাকতে, অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাতে না। আর প্রফেসর আনোয়ার হোসেন যেমন এক রাজনৈতিক বলয়ের ভেতরে বন্দী, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে তোমার যোগদানও ছিল রাজনৈতিক। তারপরও যদি দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে চাও তাহলে বলি, খালেদা-হাসিনার মত নিচশ্রেনীর নেত্রী যতদিন আছে, তাদের কুকুর-বাহিনী যতদিন আছে, ততদিন দেশকে নিয়ে আমিও আর আশা করি না।

৪) “বলুকাকা হেসে বললেন, মাগো, রাজনৈতিক কারনে আমি তোমার বাবার বিরোধিতা করছি, কিন্তু মানুষ আলমগীরের জন্য আমার মঙ্গল কামণা নির্ভেজাল, সব সময়”। রাজনীতিবিদদের এহেন অহরহ মিথ্যাচার তুমি বিশ্বাস করতে পারেন, আমরা পারি না। তোমার বাবা যদি সৎ-ই হন, উনি কি পারবেন, জামাতকে খেদিয়ে সৌদি-পাকিস্তানের ছবক না নিয়ে, খালেদা-তারেক-মামুন চক্র পরিহার করে জিয়ার শুদ্ধ রাজনীতির পথে বিএনপি কে নিয়ে যেতে? আমরা সবাই জানি তিনি পারেন না। তিনিও বদরুদ্দোজা, অলির মত হোয়াইট ওয়াশ রাজনীতিবিদ। তোমার ভাষ্য মতে, তোমার বাবা একজন সৎ ব্যক্তি। তার মত সৎ মানুষ যখন খালেদা আর চোরা তারেকের পা চাটা কথা বলে, তখন মনে হয় রাজনিতিতে নীতি বলে কিছু নাই, ভাল মানুষ বলে কিছু নাই। তোমার বাবাও কোনভাবেই ভাল মানুষ হতে পারে না।

“নগর পুড়ে ঠিকই, কিন্তু দেবালয় থাকে অক্ষত। শুধু দেবতা পাল্টায়’।

৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪১

এই আমি সেই আমি বলেছেন: এইটা আমরাও জানি আপনার আব্বু গাড়ি পোড়ায় নাই । কিন্তু আপনার আব্বুর জেহাদী বক্তৃতায় উদবুদ্ব হয়ে কেউ না কেউ যদি গাড়ি পুড়িয়ে থাকে তার দায়িত্ব কি কিছুটা হলেও আপনার পিতার উপর বর্তায় না । কিছু দিন আগে অবরোধের আগের দিন সন্ধ্যায় আপনার পিতা গাড়ি বের করতে নিষেধ করলেন । আমার গাড়ি আমি বের করব কি করব না এইটা বলার আপনার পিতা কে ?

আমার এলাকায় দরিদ্র সি এন জি চালক সংসার চালিয়ে কয়েক বছরের উপার্জন ,বউয়ের কানের দুল বিক্রির টাকা আর উচ্চ সুদে টাকা ধার করে কিছুদিন আগে সি এন জি কিনেছিল । আপনার পিতার জ্বালাময়ী বক্তৃতায় উদ্বুদ্ব হয়ে সেই অবরোধের দিন তার সি এন জি টি দিল পুরিয়ে। তার কান্নার রোল আপনি আর আপনার আব্বু কি শুনেছিলেন ।

আপনি ঠিকই বলেছেন , ৭১ পূর্ববর্তী রাজনীতি তো আর নেই। একরাতে নারী,শিশু গর্ভবতী নারী হত্যা, তাদের বিচার করা যাবেনা বলে সংবিধানে লিপিবদ্ব করা হয় । আবার তাদের বিদেশের দুতাবাসে চাকরি দেয়া হয় । প্রতিদ্বন্দীর পিতার মৃত্যু দিবসে মিথ্যা জন্মদিন পালন করা হয় । প্রতিদ্বন্দীর মিটিংয়ে গ্রেনেড হামলা করে শেষ করে দেবার চেষ্টা করা হয় । আমি তো একটি দলের কথা বললাম । আপনি ঐ দলের কথা বলেন । আর আপনি না বললেও অপেক্ষা করেন , আমার কমেন্টের পর বলার লোকের অভাব হবেনা । কিন্তু কথা হচ্ছে আপনার ভাল মানুষ আব্বু কোন দল করেন ? তাকেও সোহেল তাজ হতে বলেন না কেন ?তবে যেন সোহেল তাজের মত গাল ফুলিয়ে আমেরিকা না যায় কিংবা সিসা খেতে না যায় । আর হ্যা সেই সাথে বলবেন যেন তার আগে রেল লাইনে দৌড়াবার প্রাকটিসটা করে নেয়।

প্রফেসর আনোয়ার হোসেনের কারণটা বোজেন আর তারেকের জন্মদিনে এমাজউদ্দিন যখন বলেন বাংলার আকাশ বাতাস মাটি আজ শুধু বলছে তারেক জিয়া,তারেক জিয়া ...সে কারণটা বোজেন কি ?

আপনার খারাপ লাগা এবং আপনার অনুভূতি আমরা বোজতে পারছি কিন্তু আপনি মুন্তাসির মামুন,শাহরিয়ার কবির, সাবের চৌধুরীদের নামে যখন প্লেট চুরির মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়েছিল তাদের কন্যা স্বজনদের অনুভুতি আপনি বুজেনকি ?

আপনার ছাত্রী আর যে বিদেশী মিডিয়ায় আপনার আব্বুর জন্য হাহাকার তারা জানে কি আপনার আব্বুর দলটি অতীতে ক্ষমতায় এসে কি করেছিল , আর ভবিসৎএ ক্ষমতায় আসে তাহলে কি করবে, পূর্ণিমারা কিন্তু জানে আর ভীত ।

আর এখন আপনি আপনার আব্বুর মত ভাল মানুষী চেহারা করে বলতে থাকেন বর্তমান সরকার কি করছে । কারন আমরা আম জনতা সরকার অতীতে কি করেছে দেখি নাই,সরকার বর্তমানে কি করছে দেখিনা , ভবিসৎএও দেখব না , অথবা বুজিনা ।

৭| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৩:৫৩

স্বাধীকার বলেছেন:
মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরের মতো ক্লিন, শিক্ষিত লোক বিএনপি-র মহাসচিব হিসাবে থাকবেন-এটা কুলাংগাররা নাই চাইতে পারে। আর আরেক দলেরটা তো ইন্টারপাস, সব সময় পানের মধ্যে থাকে, ভারত বর্ডারে গুলি চালালে যিনি বলেন সীমান্তে গুলি চলবেই!!

এখানে জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে যারা অতীতকে এনে আজকে মির্জা সাহেবের গ্রেফতারকে জাস্টিফায়েড করার চেষ্টা করছে-তারা চাচ্ছে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এসে যেন আম্লীগের সম্পাদককে গ্রেফতার করেন। কিন্তু এর পরিবর্তন তারা চায়না, দিন বদলের কথা তারা ভুলে গিয়েছে। মির্জা সাহেবের মতো রাজনীতিতে যত বেশী আসবেন আমাদের রাজনীতি তত ভালো হবে-এটা সীসাসেবীদের ভালো লাগতে নাও পারে, তাদের দরকার হয়তো ইকবালের মতো প্রকাশ্যে পিস্তল উচানো নেতা, কিংবা আবুল চোরঞ্জিতদের মতো মহান দেশপ্রেমিকদের!!

আজ বাকশালী কুলাংগার সরকার ফকরুল স্যারের ক্ষেত্রে যেভাবে আইন লংঘন করে মিথ্যাচার করছে, অন্যায়ভাবে তাকে আটকে রেখেছে আগামীদিনে কোমড়ে রশি বেধেঁ আজকের শুয়োরদের রাজপথে ঘুরানোর দরকার পড়বে। সরকারের উচিত হবে এই প্রতিহিংসা থেকে বের হয়ে আসা। আম্লীগের মতো কুলাংগার সুবিধাবাদী দলের পশুদের কাছ থেকে আমাদের চেতনা বা দেশপ্রেম শিখতে হবেনা, যখন মখার মতো অপরাধী রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়-তখন তাদের মুখে এমনিতেই চুনকালী পড়ে। মির্জা স্যারকে স্যালুট জানাবো তার কমিটমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রাকটিস করবেন এবং ইতিবাচক রাজনীতিকে প্রমোট করবেন যখন। এই যোগ্য মানুষটির জন্য শুভ কামনা।

রাত যত গভীব হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.