নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
সিঙ্গাপুরে মাউন্টা বেট্টান রোডে প্রায় হাটতে যেতাম, অনেক ভাল লাগে এলাকাটা। ছিম ছাম নিরব, মনেহয় জন বসতি একেবারে কম, বাস্তব চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। জন বসতি আছে কিন্তু তেমন হৈ হোল্ল নেই। সিঙ্গাপুরের একটু উপরের শ্রেণীর লোকেরা এই এলাকায় বাড়ি করে, বলতে গেলে এই এলাকার ৮৫% বাড়ি ব্যাক্তি মালিকানা। এই দেশে সাধারনত সব কিছুই সরকার নিয়ন্ত্রীত, কিন্তু এই এলাকাটা একটু ভিন্ন। আগে জানতাম বাংলাদেশের সরকার টাকা উয়ালাদের নিকট বন্ধী এখন দেখি সিঙ্গাপুরের সরকারও উচ্চ শ্রণীর মানুষ গুলিকে তেমন ঘাটতে চাইনা।
পার্কিং লট ছাড়া গাড়ি পার্কিং করেছেন সাথে জরিমানা ৭০ ডলার, কিন্তু এই এলাকায় নিয়ম তেমন কঠিন না তবে নিরাপত্তা কোন অংশেই কম না বরং অন্য এলাকার চেয়ে অনেক বেশি।
রাস্তার দু'পাশে বাংলো বাড়িগুলি দেখলে মনে হয় এই যেন আমাদের দেশের গৃহস্থের বাড়ি, বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরী প্রতিটা বাড়ি। বাংলোর সামনে একটা ছোট্ট বাগান সাথে একটা পার্ক ছোট্র একটা মাঠ কি অপূর্ব সুন্দর দেখতে।
''স্কাই ভিউ'' এই বাড়িটার পাশে আমি প্রায় দাড়িয়ে থাকি, অনেকে হইত ভাবতে পারে কোন খারাপ মতলব নিয়ে দাড়িয়ে থাকি। কে ভাবল তা চিন্তা করার সময় আমার নেই শনি বারে অফিস শেষে সারাটা বিকাল ঐ বাড়ির পাশে দাড়িয়ে থাকি, আপন মনে অনেক চিন্তা করি। এলোমেলো চিন্তা গুলিকে সাজিয়ে নেই মনের মত করে, যখন বসায় ফিরি নিজেকে অনেক খালকা মনে হয় যেন সব ক্লান্তি রেখে এসেছি ''স্কাই ভিউ''র পাশে সাগরে।
বাড়িটার লোকশনটা অন্য দশটা বাড়ির মত নই, রাস্তার অপর পাশে রেইস কোর্স পার্ক এর পরই সাগড় সম্পূর্ণ উন্মুক্ত আকাশ এই বাড়িতে বসে দেখা যায়।
উন্মুক্ত আকাশ, সবুজ পার্ক আর সাগরের ঢেউ কিছুই আমাকে তেমন আকৃষ্ট করতে পারে না, যে জন্য এই বাড়িটার পাশে বসে থাকি তার প্রথম কারন হল একটা বকুল গাছ। বকুল ফুল কখন ফুটে আমার তেমন জানা নেই কিন্তু এই গাছটায় প্রায় সব সময় ফুল ফুটে। আসলেই কি বকুল ফুল সারা বছর ফুটে নাকি শুধু এই গাছটায় একা করে ফুটে। এই প্রশ্ন আমার জন্য না, আরেক জনের বাড়ির পাশে বসে বকুল ফুলের গ্রাণ নেই তাতেই আমার অতিরিক্ত পাওয়া শুধু শুধু উল্টা পাল্টা চিন্তা করে সময় নষ্ট করার কোন মানে হয়?
আজ বসে আছি মনটা খুব খারাপ, বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসছে আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতির কাছে নিয়তির সন্ধ্যা হার মানছে। মনে হচ্ছে এখন অন্য রকম দিন, তবে ঠিক গাছটার নিচে বসে সাগরের দিকে তাকালে কিছু আলো কিছু আধারে নিজেকে লোকিয়ে রাখা যায়। আর দৃশ্যটা আমার অনেক প্রিয়, প্রায় শনিবার রবিবারে এই দৃশ্যটা দেখতে আসি। আজ মনটা তেমন ভাল না থাকায় এই সব কিছু আমাকে তেমন আকর্ষন করতে পারছেনা। আমি আমার আপন মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, শুধু দেশের কথা ভাবছি। বাবা মা ভাই বোন সবাইকে ফেলে কত দূরে আমি পরে আছি................
বাংলাদেশে থাকতে বাবা প্রায় একটা ফুলের মালা দিতেন, অনেক আনন্দ নিয়ে এই মালাটা নিতাম। ৪ বোন ২ ভাই এর সংসারে আমি ছিলাম ৩য় অর্থাৎ দুই বোনের ছোট ভাইদের মধ্যে সবার বড়, বাবা মায়ের আদর একটু বেশি পেতাম। সময়টা আমার তেমন মনে নেই প্রায় সকালে আমাকে বকুল ফুল দিতেন, কোন একদিন এই ফুল আমার সবচেয়ে প্রিয় ফুল হয়ে গেল। বকুল ফুল ছাড়া আমার অন্য ফুল তেমন ভাল লাগতনা।
আজ অজানা এক মায়ার এই গাছটার নিচে বসে আছি, কেমন যানি গাছটা আপন মায়ায় আমাকে আকৃষ্ট করে রেখেছে। হয়ত একেই বলে এক প্রকার নাড়ির টান।
ফুল গুলিতে যখন হাত রাখি মনে হয় বাবা নিজে এসে ফুল গুলি ছড়িয়ে দিয়ে গেছে এই গাছ তলায়, আপন মনে ফুল গুলি একটা ছোট্র বাসকেটে রাখি।
আজ সেই দিন যেই দিন বাবা আমাকে শেষ বকুল ফুলের মালাটা দিয়ে ছিলেন, এর পর বিদেশে পারি জমাই আর কখনো বাবার হাতে ফুল নেয়া হয়ে উঠেনা। এই দিনটা গাছ তলায় বসে আপন মনে নিজেকে খুজে ফিরি, কখনো পাই কখনো পাইনা।
আজ অফিস ছুটির পর তনিকে বল্লাম চল আজ তোমাকে এক অপূর্ব সুন্দর একটা জায়গায় নিয়ে যাব। আমার বিশ্বাস কখনো এমন একটা লোকেশনে তুমি যাওনি।
- কোথায় সেই লোকেশনটা?
- চলনা আমার সাথে তাখলেই দেখতে পাবে।
- নিশ্চিত করে না বল্লে আমি কোথাও যায়না।
- ইষ্ট কষ্ট এর পাশে।
- কত ক্ষন থাকবে।
- যাওয়াটা আমার ইচ্ছায় হলেও আসাটা সম্পূর্ণ আমার মনের উপর, কখনো রাতের ১০ কখনো ২টা। যখন মনে তৃপ্তি আসে আমি চলে আসি।
- তোমার ভাব সাব ভাল ঠেকছেনা, কোন একটা খারাপ কাজ করে বসতে পার। আমি যেতে পারবনা তোমার সাথে।
তনি সাথে সাথে না করে দিল, মনটা খারাপ করে নিজেই একা একা চল্লাম আমার প্রিয় জায়গাই। চারদিকে খোলা আকাশ, সবুজ মাঠ, সাগরের ডেউ নিজেকে কোথাও হারিয়ে ফেলিছি। কিছুতেই আজ মনটা আমার কাছে আসছেনা। হালকা বাতাস কিছু বকুল ফুল ঝড়ে পরছে আমার উপর অন্য রকম একটা অনুভুতি লাগছে।
প্রতি দিনের মত আজও ঘুমিয়ে পরলাম বকুল তলার সবুজ ঘাসের উপর। কতক্ষন ঘুমিয়ে ছিলাম বুঝতে পারছিনা তবে মনে হচ্ছে রাত্র ১০টা বাজে এমন করে কখনো ঘুমাইনি, কেন যে ঘুমালাম বুজতে পারছিনা।
- তুমি প্রতিদিন এমন করে এখানে ঘুমিয়ে থাক?
তাকিয়ে দেখি তনি আমার পাশে বসে মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে, হতচকিয়ে উঠলাম।
- তুমি কখন এলে
- তোমার পরের বাসে এসেছি,
- কিন্তু তুমি বলেছিলে আসবেনা।
- বলেছিলাম তোমার সাথে আসবনা, একা আসবনা তা বলিনি।
এই বলে একটা বকুল ফুলের মালা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বল্ল
- অনেক ক্ষন সময় নিয়ে ফুল গুলি জমিয়ে তোমার জন্য এই মালাটা গেথেছি। সুন্দর হয়েছে কি?
- হ্যা অনেক সুন্দর হয়েছে।
চোখের কোনে টলমল করছে লবনাক্ত পানি গুলি, কি বলব কি করব কিছুই বুঝতে পারছিনা।
- তনি এখন অনেক রাত হয়েছে, তুমি বাসায় ফিরবেনা।
- আজ রাত্রটা না ফিরলে কেমন হয়, চলনা তুমি আমি পাশা পাশি বসে রাতরা কাটিয়ে দেই।
এই মেয়েটার রহস্য বুঝা এক কঠিন কাজ, কখন কি বলে কিছুই বুঝতে পারিনা।
আকাশে পূর্ণ রূপে চাঁদ উঠেছে, চার দিকে জোৎসা স্নান করছে পৃথিবী। আমি আর তনি সেই স্নানে মিলে মিশে আছি, সাগরের ঢেউ গুলি মৃধু শব্দে আছড়িয়ে পরছে তীরে। এত নিরবতার পরও কিছু পাখি ডেকে উঠছে, সবুজের আরন্ন ইষ্ট কষ্ট পার্ক থেকে। কিছুক্ষন পর পর একটা বিমান উড়ে যাচ্ছে কিছু মন ভুলা মানুষকে নিয়ে তার আপন গন্তব্যে, আমি তাকিয়ে আছি উদাস নয়নে উদের উড়ে যাওয়া পথে। কোন একদিন আমারও সময় আসবে আমিও উড়ব আকাশে যান্ত্রিক পাখায় করে।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: সে ইন্দোনেশিয়ান বা ফিলিপাইনি কেও না, সে একটা কল্পনার জগতের মেয়ে।
পৃথিবী নামক গ্রহে তার পদচিহ্ন নাই।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য
২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
ভিটামিন সি বলেছেন: ভাইজান তো দেহি অসাম লেকচেন। বাস্তবের সাথে কল্পনার অবিমিশ্রণ ঘটিয়ে কল্পবাস্তব জিনিস তৈরী কইরালাইচেন। ওয়েষ্ট কোষ্ট আসেন, বাস্তব তনি পাইবেন।
২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: বাস্তব তনি বলতে কিছু কাজের বুয়া নিয়া চলাফেরা করার চেয়ে আমার কল্পনার জগৎটা অনেক ভাল নইকি?
৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ভিটামিন সি ভাই সিঙ্গাপুর আছেন নাকি?
৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৪
অশ্রু কারিগড় বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন । শুভকামনা রইল । +++++
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:৩৬
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইজান
৫| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ভাইজান কল্পনা আর বাস্তবের সংমিশ্রণ খুবই চমৎকার হয়েছে। লিখেন, বেশী করে লিখেন। আপনি অবশ্যই ভাল লিখতে পারবেন।
ধন্যবাদ।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩১
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই, আসলে বিদেশের বাড়িতে একা একা বসে থাকলে অনেক কিছুই মনে পরে যা একটু একত্রে করে একটু প্রকাশ করা।
৬| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬
জেমস বন্ড বলেছেন: ভাল লাগলো লেখাটা পড়ে
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৭
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রবাশের দুঃখ গুলি একটু আনন্দের সাথে শেয়ার করা আর কি।
ভাল থাকবেন অনেক ভাল, আশা করি পাশে থাকবেন।
৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০১
সেবা করতে চাই বলেছেন: আকাশে পূর্ণ রূপে চাঁদ উঠেছে, চার দিকে জোৎসা স্নান করছে পৃথিবী। আমি আর তনি সেই স্নানে মিলে মিশে আছি, সাগরের ঢেউ গুলি মৃধু শব্দে আছড়িয়ে পরছে তীরে। এত নিরবতার পরও কিছু পাখি ডেকে উঠছে, সবুজের আরন্ন ইষ্ট কষ্ট পার্ক থেকে। কিছুক্ষন পর পর একটা বিমান উড়ে যাচ্ছে কিছু মন ভুলা মানুষকে নিয়ে তার আপন গন্তব্যে, আমি তাকিয়ে আছি উদাস নয়নে উদের উড়ে যাওয়া পথে। কোন একদিন আমারও সময় আসবে আমিও উড়ব আকাশে যান্ত্রিক পাখায় করে।
অনেক সুন্দর লিখেছেন, চালিয়ে জান অবশ্যই ভাল করবেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আশা করি পাশে থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৬
ভিটামিন সি বলেছেন: ভাইজান, তনিটা কি ইন্দোনেশিয়ান না ফিলিপাইনি জিনিস? জানতে মুঞ্চায়।।