নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একশত সিপাহী ঢাল-তলোয়ার লইয়া যে ক্ষমতা না রাখে, অনুতাপের হাত তাহার চেয়ে অধিক ক্ষমতা রাখে।
এটার নাম কোন জীবন হল?
সকাল ৬ টা ঘুম থেকে উঠে অফিসে যাওয়া, আবার সন্ধ্যায় বাসায় ফিরা। এই ভাবে যন্ত্র চালিত জীবন কি চলতে পারে।
- কিরে কি ভাবছিস?
পিছনে তাকিয়ে দেখি তনি দাড়িয়ে আছে, আজ তনিকে অনেক সুন্দর লাগছে। বাঙ্গালী মেয়েদের মত শাড়ি পরেছে, কপালে টিপ দিয়েছে।
আজই প্রথম তনিকে শাড়ি পরতে দেখলাম, হতবাক হয়ে বল্লাম -
- এই হযবরল জীবনে কিছুই ভাবার নেই, কিন্তু তুই আজ শাড়ি পরেছিস কেন? আর শাড়ি পেলি কোথাই?
- কিনেছি।
- কোন মার্কেট থেকে?
- এত কিছু তোকে বলব কেন? এখন বল, কি চিন্তা করছিস?
- এই ভাবে যন্ত্র চালিত জীবন আর চলছেনা, ভাবছি কোথাও বেড়াতে যাব।
- কোথই যাবার চিন্তা করছিস? কখন যাবি?
- কোন এক সাগর পারে। আজ শনিবার অফিসের পরে যাব।
- আমাকে নিবি?
- সত্যি যাবি?
- হুম, তই যায়গাটা আমি সিলেক্ট করব।
- ঠিক আছে।
- আচ্ছা পালাও উভেন গেলে কেমন হয়? (পালাও উভিন সিঙ্গাপুর এর ছোট্ট একটা দ্বীপের নাম, অসাধারন সুন্দর একটা লোকেশন। মুল দেশ থেকে প্রায় ১০ মিনিট সমুদ্র পথ)
- যেখেতু যায়গাটা তর ঠিক করার কথা সেহেতু আমি কিছুই বলবনা।
১২টায় অফিস থেকে বেরিয়ে একটা টেক্সি নিয়ে ছুটলাম পালাও উভেন এর দিকে, ১৫ মিনিটের মধ্যে পৌছে গেলাম ফেরী ঘাটে। দুইটা টিকট কেটে সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করছি, প্রায় ৩০ মিনিট পর আমরা ফেরীতে উঠলাম। তনিকে বেশ হাশি খুশি লাগছে কেন লাগছে সেই ভাল যানে। আমি শুধু তাকিয়ে আছি এক দৃষ্টিতে তনির দিকে, সে সমুদ্রের জলে নিজেকে খুজছে। মাঝে মঝে মুক্ত আকাশে এক পলক চোখ তাকাচ্ছে।
মেয়েটাকে আজ অসাধারন লাগছে, যেন এক পরীর রাজ্যে আমার বসবাস।
ঠিক ১০ মিনিট পর আমরা পালাও উভিন এসে নামলাম, একেবারে গ্রামের পরিবেশের মত করে তৈরী ছিমছাম সুন্দর একটা দ্বীপ।
- তনি চল সাইকেল নেই, তাতে অনেক দূর পর্যন্ত যাওয়া যাবে।
- তর কি মাথা খারাপ হয়েছে? আমি শাড়ি পরে সাইকেল চালাতে পারব?
আসলেই আমি এই জিনিসটা খেয়াল করিনি, কেমন যেন একটা লজ্জা পেলাম।
- তনি সাইকেন যখন চালানো যাবেনা তাখলে হাটা শুরু করতে হবে যত দূর যাওয়া যায়।
- আমি আজ হাটতে পারবনা, তার চেয়ে ভাল কোথাও একটু বসি। গল্প গোজব করে সময়টা পার করি। বলাত যায়না আর কখনো এই দিকে আসা হয় কিনা।
পাশেই সুন্দর একটা লোকেশন, কিছু নারিকেল গাছের সারি। ডানদিকে তাকালে মনে হয় গহিন সাগরে আমরা দুইজন, আর বামদিকে তাকালে বিশাল নারিকেল গাছের সারি অনেক সুন্দর লাগছে।
আমরা দুইজন এসে এই পাশা পাশি একটা পাথরের উপরে বসলাম।
অনেক ক্ষন বসে আছি কোন কথা নেই দুজনের মাঝে, যেন শুধু সাগর দেখা তনির নিরবতাটা কিছুতেই কাটছেনা। আমার অনেক ইচ্ছা করছে তনির সাথে কথা বলতে কিন্তু মনে হচ্ছে সে এখন কোন কথায় আনন্দ পাবেনা শুধু নিরব থেকে প্রাকৃতি দেখবে।
আজ সাগরে কিছুটা উত্তাল ঢেও, আমরা যে পাথরের উপরে বসে আছি তার কাছে ঢেও আছড়িয়ে পরছে। জল রাশি গুলি কেমন যানি একটা ঠান্ডা অনুভুতি দিয়ে যাচ্ছে। বাতাসে তনির চুল গুলি উড়ছে আমার তাকিয়ে থাকতে অনেক ভাল লাগছে।
অগুছালো জীবনটা কেমন জানি সুন্দর পরিপাটি মনে হচ্ছে, এই আমি সকালে ভাবছিলাম জীবনটা যন্ত্র চালিত কোন বস্তু কিন্তু এখন কত সুন্দর লাগছে।
এখন যদি কোথাও এই গানটা বাজত কতইনা ভাল লাগত, যেন সব টুকু অনুভুতি একত্রিত হয়ে মিশে সুর করত -
এক পায়ে নূপুর তোমার অন্য পা খালি
এক পাশে সাগর, এক পাশে বালি
আমার ছোট তরী বলো... যাবে কি?
বলবো না আকাশের চাঁদ এনে দেব,
বলবো না তুমি রাজকন্যা!
শুধু জিজ্ঞেস করি, দেবে কি পাড়ি যত ঝড় বন্যা?
এক পায়ে নূপুর তোমার, অন্য পা খালি
এক পাশে সাগর, এক পাশে বালি
আমার ছোট তরী বলো... যাবে কি?
জয় হোক বন্ধুত্বের, জয় হোক মানবতার।
০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:১৭
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা
২| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১
সেবা করতে চাই বলেছেন: সব কিছুতে এই তনিটা থাকে, কারনটা কি?
তনির ব্যাপারে একটু বিস্তারিত লিখবেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:২৯
দুঃখ হীন পৃথিবী বলেছেন: এই তনিটা আমার কল্প রাজ্যের রাণী, অনেক খুজছি একটা বাস্তব তনি পাওয়ার জন্য।
জানিনা কোন দিন পাব কিনা, যদি পাই তাখলে বিস্তারিত লিখব বাস্তব তনিকে নিয়ে।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৭:১২
এহসান সাবির বলেছেন: বেশ....
নতুন বছরের শুভেচ্ছা!!