![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইওর অনার,আগাম জামিনের মতো প্রথমেই আগাম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যদি নিজের অজান্তে কোন ভুল করে থাকি।
ইওর অনার,কয়েকদিন আগে প্রশাসনের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ব্যাবহারের ওপর একটি রুল জারি হয়েছে উচ্চ আদালত থেকে এবং মহামান্য আদালত আপনি অসন্তোষ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সচিবদের আদালতে তলব করেছেন।
মহামান্য আদালত,আপনি অতীতেও এমন অনেক জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ব প্রণোদিত হয়ে রুল দিয়ে আপানার ওপর অর্পিত সংবিধানিক কর্তব্য পালন করেছেন।
ইওর অনার,আমি বা আমরা যারা বাংলা ভাষাকে ভালবাসি তাঁরা আপনাকে অন্তরের গভীর থেকে সাধুবাদ জানাই।
কিন্তু কথা হচ্ছে একজন আলু চাষি যে মাসের পর মাস মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল তোলার পর ন্যায্য দাম পায় না তাঁর কাছে এই রুল কতটুকু আবেদন রাখবে বা বিবেচিত হবে?
মহামান্য আদালত,একটু নিকট অতীত থেকে ঘুরে আসি, নিন্দিত বা নন্দিত ১/১১।
তখন মানান্ন-জলিল প্রতিদিন সংলাপ চলছে এবং যথারিথি সন্ধ্যায় উৎসুক সাংবাদিকদের ‘’ অগ্রগতির’’ খবর দিচ্ছেন। সংলাপ তো নয় আসলে তখন চলছে দুই নেত্রীর স্নায়ুযুদ্ধ। শেষ পর্যন্ত অনেক ঘটন অঘটনের পর ১/১১।
ইওর অনার, এখানেই চলে আসে আপনার ভুমিকা। যখন তথাকথিত মান্নান-জলিল সংলাপ ব্যর্থ হতে চলছে, বড় দুটি দল যখন রাজপথে মুখোমুখি তখন হয়তো বা আপনার একটি ‘’রুল’’ তাদেরকে ফেরাতে পারতো আলোচনার টেবিলে। হয়তো বা ১/১১ প্রয়োজনও হতো না।
মহামান্য আদালত,আবারও ক্ষমা চাইছি কারন এখানে ১/১১ নিয়ে আমার ব্যক্তিগত অনুভুতির কথা বলবো। অনেক সুশীল বা তথাকথিত বুদ্ধিজিবী গনতন্রের কথা বলতে বলতে আবেগপ্লুত হয়ে যান অনেকের গালের দুই দিকে ফেনা ঝরতে দেখি। সত্যিই করুনা হয় ওদের জন্য আমার কেনোনা নবম সংসদ থেকে দশম সংসদ পর্যন্ত সরকারের শাসনামল বিবেচনায় নিলে মনে হবে ১/১১ সরকারই তো এরচেয়ে বেশী ভালো ছিলো। শুধু মহাজোট সরকারের কথা বলছি না হয়তো বি ন পি ক্ষমতায় আসলেও হয়তো এই হতো। তাই কেউ যদি ১/১১ এর মতো আর একটি সরকার কামনা করে তাকে খুব দোষ দেয়া যাবে কি? অন্তত মানুষ এটুকু দেখবে রুই কাতলা থেকে শুরু করে মলা ধলা পর্যন্ত একদিনের জন্য হলেও শ্রী ঘরের বাসিন্দা হয়েছে এবং আদালতে আসা যাওয়ার পথে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো আঙ্গুল উঁচিয়ে ভি দেখাচ্ছে। সান্তনা পুরস্কারের মতো অক্ষম জনগনের জন্য এটাই বা কম কি?
ইওর অনার, দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে জাতি এবং বিশ্ববাসী দেখেছে আন্দোলনের নামে বিরোধীদলের ব্যাপক আমানবিক অরাজকতা,অনেকগুলি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে যা কোন দিন পুরন হওয়ার নয় হবে না অথচ আপনার আপনার একটা ‘’রুল’’ হয়তো বদলে দিতে পারতো, তেমনি পারতো বন্ধ করতে এক তরফা নজিরবিহীন তথাকথিত ‘’নির্বাচন’’। যে নির্বাচনে দেশের অর্ধেকের বেশী সংসদ আসনে নির্বাচনই হয়নি।
মহামান্য আদালত,তাহলে দেখা যাচ্ছে দেশের অর্ধেকেরই বেশী মানুষ তাদের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
এখানেই আপনার ভুমিকা নেওয়ার সুযোগ ছিলো ইওর অনার।
মহামান্য আদালত,নির্বাচনের কথা যখন উঠলো তখন সবিনয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করবো ভারতের চলমান নির্বাচনের দিকে।
ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গনত্রান্ত্রিক দেশ। শারীরিক ভাবে বাংলাদেশের চেয়ে ২৭ বা ২৮ গুন বড়।
মাস ব্যাপি চলছে লোকসভা নির্বাচন, সাপ্তাহ দশ দিন পর একসাথে ঘোষণা করা হবে সব ফলাফল।এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সহিংসতার কোন খবর পাওয়া যায়নি, এমনকি কোন দল বা ব্যাক্তি প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোন প্রশ্ন করেনি।
আর আমরা কি দেখলাম আমাদের স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন নিয়ে? ধারাবাহিক নাটকের মতো পর্ব করে অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা নির্বাচন আর সাথে সাথে ধারাবাহিক ভাবে পড়েছে অগণিত মানুষের লাশ।আর যার ওপর নির্বাচন করার দায়িত্ব বর্তায় সেই তিনি সি ই সি পুরো সময়টুকু জনগনের টাকায় প্রমোদ ভ্রমণে ব্যাস্ত ছিলো আমেরিকায়। হায়রে জবাবদিহিতা।
ইওর অনার, আমরা ভারতের সব কিছুকে অনুকরন করি,করতে ভালবাসি, কিন্তু আমরা কি পারিনা লোকসভা নির্বাচন থেকে কিছু শিখতে? গনতন্ত্রের সবক নিতে? যদিও অনেকেই দ্বিমত পোষণ করবেন কেন অন্য দেশ থেকে গনতন্ত্রের সবক নিতে হবে?
‘’জন্মিলেই মরিতে হইবে’’ মৃত্যু অমোঘ নিয়তি, কেউ রেহাই পাবে না। কিন্তু এমন মৃত্যু কেউ কামনা করে না।
হ্যাঁ মহামন্য আদালত আমি নারায়নগঞ্জের কথা বলছি।
ইওর অনার,নারায়নগঞ্জে সাত সাতজন মানুষ দিনেদুপুরে মহাসড়ক থেকে অপহরণ হলো,দুইদিন পর পেটকাটা লাশ হয়ে ভেসে উঠলো শীতলক্ষ্যায়। তারপর থেকে প্রতিদিনই অপহরণ হচ্ছেন কোন না কোন মানুষ। কাউন্সিলর নজরুলের পরিবার স্পষ্ট করে অভিযোগ করেছে র্যাবের প্রতি, যে র্যাব ভারাঠে খুনি হিসাবে কাজ করেছে।
চট্টগ্রামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকেও র্যাব অপহরণ করছে বলে অভিযোগ আছে,চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কোঠর অবস্থান এ যাত্রা মরতে মরতে বেঁচে গেছে ঐ ব্যবসায়ী।
সেই যে ইলিয়াছ আলীকে দিয়ে গুম,অপহরন শুরু হয়েছে তা প্রতিদিন বাড়ছেই পালাক্রমে।
বাতাসে গুঞ্জন ও দুই একটি অনলাইন পত্রিকা আকার ইঙ্গিতে বলছে প্রতিবেশী দেশের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থা বেশ সক্রিয় এদেশে, সক্রিয় তো সব সময় ছিলো, মুজিব হত্যা, জিয়া হত্যা সব বড় বড় রাজনৈতিক হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী বলা যায় ঐ গোয়েন্দা সংস্থাটিকে। এখনকার পরস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন,এখন নিজেরায় নাকি সক্রিয় ভাবে অপারেশন করছে, এবং কি এক অজ্ঞাত কারনে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী দেখেও না দেখার ভান করছে। এই যদি হয় তাহলে বুঝতে হবে আমাদের সরকার কতোটা অসহায়।
এসব কিছু দেখার পরও আপনার নিরবতা সাধারন মানুষকে হতাশ করে ইওর অনার।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হাইকমিশনার মিজারুল কায়েসের নেতৃতে জনগণের কোটি কোটি টাকা হরিলুট হচ্ছে, বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পরও সরকার বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কারো কোন মাথাব্যথা নাই, যেন এটাই স্বাভাবিক।
খোঁজ করলে দেখা যাবে বিদেশে বাংলাদেশে মিশন সব গুলিতেই একই অবস্থা।
মহামান্য আদালত, সৃষ্টিকর্তার পর আপনি হচ্ছেন মানুষের শেষ ভরসা, মনে করুন একটি বিশাল ছাতার মতো, ছাতা যেমন মানুষকে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা করে তেমনি অসহায় মানুষ আপনার ছাতার নীচে নিরাপধ বোধ করে।
সেই আপনার ভূমিকা মাঝে মধ্যে প্রশ্ন তৈরি করে বৈকি। যেমন –
শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব মাঠ নিয়ে বলতে হয়, আগে উচ্চ আদলত রায় দিয়েছে মাঠ সর্বসাধারণের জন্য খুলে দিতে কিন্তু রায় মানা হয়নি, এটি কি আদালত অবমাননা নয় কি ইওর অনার?
শুধু তাই নয় সেই সব জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত প্রাক্তন খেলোয়ার ও পরিবেশবিদ যারা সাধারন মানুষের পক্ষে মাঠ নিয়ে আন্দোলন করছে উলটো তাদেরকেই মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
এক পক্ষ তথাকথিত এলিট শ্রেণী যার নেতৃতে আছেন প্রায়ত প্রেসিডেন্ট তনয় বর্তমান বিসিবি সভাপতি নাঃ হাসান পাপন ও আরেক প্রভাবশালী এলিট পীর বাফুফে সভাপতি গাঃ সালাহুদ্দিন।
অন্য পক্ষ প্রাক্তন কিছু খেলোয়ার সাধারন মানুষ ও পরিবেশবিদ্গন।
সর্বশেষ খবর, উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ বা একজন বিচারক শুনানি শুনতে বা করতে বিব্রত বোধ করছে। তাহলে আমরা এই হতভাগ্য জনগনের মনে যদি এই প্রশ্ন আসে যে বিব্রত বোধ করার কারন কি
‘’শেখ জামাল’’ নাম দেখে কি?
মহামান্য আদালত, এখানে সাধারন মানুষের পক্ষে আপনার যথাযত ভূমিকা কি আশা করতে পারিনা?
ইওর অনার, বর্তমান সরকারের পূর্বের মন্ত্রীসভার প্রাক্তন মন্ত্রী যিনি ঘুষ কেলেঙ্কারি মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন সেই ঝানু রাজনীতিবিদ বাবু সুরঞ্জিত সেন বলেছেন ‘’ বিচার ব্যবস্থা এখন তামাশয় পরিনত হয়েছে’’ এ টা কি আদালত আবমাননা নয়?
অন্যদিকে আর একজন বিরোধী দলের মধ্যম সারির নেতা বাবু গয়েসশর রায় মন্তব্য করেছেন ‘’সব কোর্ট মুজিব কোটে বন্দি’’ তাঁর জন্য আদালত আবমাননার রুল জারি হয় এবং তাকে ক্ষমা চাইতে হয়।
মহামান্য আদালত, কেন এমন দ্বিমুখী নীতি?
ইওর অনার, ইতিমদ্যে জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে আমরা দুইটি জাতীয় বিশ্ব রেকর্ড করে ফেলেছি যা গর্ব করার মতো এবং কিছুদিনের মধ্যে আরো একটি যুক্ত হতে যাচ্ছে, তা হলো মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচারক বদল।
বিশ্বের কোথাও এমন নজির আছে কি?
মহামান্য আদালত,বেশ কয়েক বছর আগে,কোনো এক অজানা কারণে উচ্চ আদালত মঞ্জুর হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি মেজর জেনারেল আবদুল লতিফ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুর রহমানের বিচারিক-প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এই স্থগিতাদেশ এখনও বহাল আছে, মানুষ যদি প্রশ্ন করে কি কারনে স্থগিতাদেশ এই তাহলে আদালত অবমাননা হবে কি ইওর অনার?
ইওর অনার, গত দুই দিন আগের খবর, নয় জন মন্ত্রী সহ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলেছে সে দেশের সাংবিধানিক আদালত।
কেন? কি অভিযোগ?
থাই প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপে তার এক আত্মীয় উপকৃত হয়েছ,ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলায়,বিচারক এই রায় দেন। বিচারক আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা শেষ হয়েছে। তিনি আর এ পদে থাকতে পারেন না”।
এর আগে আমরা দেখেছি পাকিস্তানের উচ্চ আদালত পাক প্রধানমন্ত্রী ইউছুফ রাজা গিলানিকে প্রধানমন্ত্রীর অযোগ্য ঘোষণা করেছিলেন।
মহামান্য আদালত, তাহলে আমরা কোথায় আছি?
আমি বলছিনা সরকারকে বরখাস্ত করতে হবে বা প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলবেন, নিদেনপক্ষে আপনার একটা ‘’চোখ’’ দিয়ে পরিস্থতি পর্যবেক্ষণ করে সময়চিত রুল বদলে দিতে পারে অনেক অনাখাঙ্কিত ঘটনা। তাহলে সরকার পারবে না সংবিধানের দোহাই দিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে বা বিরোধীদল পারবে না আন্দোলনের নামে জান মালের ক্ষতি করতে।
ইওর অনার,আমরা সাধারন মানুষ মনে প্রানে বিশ্বাস করি আপনার একটি রুল বদলে দিতে অনেক কিছু।
মহামান্য আদালত,১৪০০ বছর আগে মহান আল্লাহ্ পাক মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআন নাযিল করেছিলেন বিশ্ব মানবতার মুক্তির জন্য। সেখানে মহান আল্লাহ্ ইরশাদ করছেন-
‘’তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না’’। সুরা বাক্কারা,আয়াত ৪২।
‘’আর যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি, তাদের মধ্যে এমন এক দল রয়েছে যারা সত্য পথ দেখায় এবং সে অনুযায়ী ন্যায়চিার করে’’। সুরা আল আরাফ,আয়াত ১৮১।
''যেদিন কেউ কারও কোন উপকার করতে পারবে না এবং সেদিন সব কর্তিৄত হবে আল্লাহর''। সুরা আল ইনতিকার,আয়াত ১৯।
২| ১০ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:৩৬
মুহামমদল হািবব বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৪৬
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: ইওর অনার,আমরা সাধারন মানুষ মনে প্রানে বিশ্বাস করি আপনার একটি রুল বদলে দিতে অনেক কিছু।