নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তাই বলি যা আমি বিশ্বাস করি

আমি তাই বলি যা আমি বিশ্বাস করি

তাজমুল আক্তার

আমি আসলে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ বা জ্ঞানী ব্যাক্তি নই। কিন্তু আমি তাই বলি যাই বলি তা আমি বিশ্বাস করি।

তাজমুল আক্তার › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সবচেয়ে সল্পকালীন প্রেমঃ১ম- পর্ব

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৪

আর সবার মতো আমার অতিশয় রোমাঞ্চকর প্রেমের গল্প না থাকলেও। আমার একটা প্রেমের গল্প আছে এবং তা সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে সল্পকালীন প্রেম।





দিনটি ছিলো ২৯শে জানুয়ারী, ২০০৫ রোজঃশনি বার।

অন্যসব দিনের মতই সেদিন আমি কলেজে যাই তারপর ইতিউতি তাকিয়ে তার মুখ দর্শন করে ক্লাসে যাই। ক্লাসে লাস্ট পিরিয়ডে বরাবরের মতোই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলা শুরু করি। একসময় কলেজ ছুটি হয় কিন্তু তখনও আমাদের খেলা শেষ হয় না। খেলার এক পর্যায়ে দেখি সে ধীরে ধীরে আমার দিকে আসতেছে। তার আসা দেখে আমিও সামনে এগিয়ে গেলাম। সে আমায় জিজ্ঞেস করলো, খেলা শেষ হবে কখন? আমি বললাম, এইতো একটু পরে। সে বললো ,ঠিক আছে। আমি গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করছি। ঠিক মনে নাই সে কতক্ষন আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলো তবে আমি খেলা শেষ করেই ঘর্মাক্ত অবস্থায় তার সামনে উপস্থিত হলাম। তারপর আমি সাইকেল চালানো শুরু করলাম আর সে পাশে পাশে হাটতে লাগলো। আমি অনেক কথা বলতেছিলাম কিন্তু বুঝতে পারতেছিলাম আমার কথার দিকে তার মনযোগ নাই। চলতে চলতে ঠিক যখন বাফওয়ার সামনে আসলাম তখনই সে দাড়ালো এবং পূর্ণদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো , ‘‘তাজমুল, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। আমার বাসা থেকে তোমাকে কখনও মানবে না। আবার আমি তোমাকে ছাড়াও বাঁচবো না। আমার আত্বহত্যা করা ছাড়া কোন উপায় নাই।’’ এক নাগাড়ে ওর কথাগুলোর সবটাই আবেগ নিঃসৃত হলেও আমার কানে শুধু বাঁচতে লাগলো তিনটা শব্দই । আমি কি বলবো আমি খুজে পাচ্ছিলাম না, শুধু ভাবছিলাম অবশেষে আমি পেলাম তাকে। এইসব ভাবতে ভাবতেই চলে আসলাম বালুঘাট গেটের সামনে মানে আমাদের বিদায়ের জায়গা। ও আল্লাহ হাফিজ বলে চলে গেলো আমি যতদূর দেখা যায় ওকে দেখতে থাকলাম আর নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হতে লাগলো। এরপর সারাদিন আমি হাওয়ায় উড়তে লাগলাম । মনে গভীরতম কোনে কোন বেদনা অনুভব করতেছিলাম। মাঝে মাঝে শুধু ভয় করতেছিলো এই ভেবে আসলেই কি দুনিয়াতে এতো সুখী হওয়া সম্ভব?? মাঝে মাঝে মনে হইতেছিলো এতো সুখ কোনোভাবেই স্থায়ী হতে পারে না। ও আগেই বলছিলো পরের দিন কলেজে আসবে না। তাই ৩০ই জানুয়ারীতে ওর দেখা পেলাম না । দেখা না পেলেও হাওয়ায় উড়াউড়ি আমার বন্ধ হলো। পৃথিবীর সবকিছু থেকেই যে আনন্দ নেওয়া সম্ভব তা আমি সেই দিনগুলোতে শিখছিলাম। তারপর আসলো ৩১শে জানুয়ারী, সোমবার। ওর সাথে দেখা হবে এই খুশীতে সারা রাত ঘুমই আসে নাই । তাই সকাল সকাল কলেজে এসে পরে ওর সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছিলাম । ইচ্ছা ছিলো ওর সাথে দেখা করে স্টেডিয়ামে যাবো বাংলাদেশ –জিম্বাবুয়ের সিরিজের ৫ম ওয়ানডে ম্যাচ দেখার জন্য। ঠিক সকাল সাতটা থেকে ওর জন্য অপেক্ষা করা শুরু করলাম সাড়ে আটটা বাজলেও যখন ও আসলো না তখন ভয় ভয় লাগতেছিলো। কারন ওতো কখনো আটটার পরে কলেজে আসে না। এর ভিতরেই ওকে দেখলাম রিকশা করে আসতে। সঙ্গে সঙ্গে যে কি আনন্দ লাগতেছিলো তা বলার মতো না। মানুষ আনন্দে কখন নাচে বুঝতে পারলাম। আমি আবেগ সংযত রেখে ধীরপায়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম। ও আমাকে দেখে রিকশা ছেড়ে নেমে এলো। দুইজন পাশাপাশি হাটতে থাকলাম। আমি অনেক কথাই বলতে থাকলাম কিন্তু ওর ভিতর দেখতে পারলাম আশ্চর্য নীরবতা। এমন সময় ও আমাকে বললো, ‘‘ তাজমুল আমাকে মাফ করে দিও। আমার ভূল হয়ে গেছে । আমি তোমাকে মিথ্যা বলছি। ’’ মানুষের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলে কেমন লাগে সেদিন আমি বুঝতে পারছিলাম। আমার কান ভোঁ ভোঁ করা শুরু করলো, পা ভারী হয়ে গেলো আমি স্থির হয়ে গেলাম কিন্তু হাসতে থাকলাম।হাসতে হাসতেই ওকে বললাম, ‘‘ এমনটা হবে আমার জানা ছিলো। তবে এতো তাড়াতাড়ি হবে তা বুঝতে পারিনি। আমি জানতাম এই পৃথিবীতে এতো সুখের অনুভূতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। মানুষ পৃথিবীতেই জান্নাতের সুখ বেশীক্ষন পেতে পারে না।’’ বলে আমি হাসতে থাকলাম আর সে চোখে পানি নিয়েই কলেজে প্রবেশ করলো। আর এইভাবেই সমাপ্তি ঘটলো পৃথিবীর সবচেয়ে সল্পকালীন ৪২ ঘন্টার প্রেমের।

তবে ৪২ ঘন্টার আগে পরের ঘটনাও কম না। তা পরের পর্বে বলবো।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩৬

মদন বলেছেন: বাহ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.