নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুক্তির কাঁধে রাজাকারের পাল্কিঃ আর কত?

২৬ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:১১





১৬ ডিসেম্বর এবং ২৬ মার্চ, ঘুরে ঘুরে এসব স্মরণীয় দিনগুলো আমাদের জীবনে প্রতিবছর আসে। সেই সব দিনগুলোতে যারা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, জাতির জন্য এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য আত্মহুতি দিয়েছেন, তাদের ও অজানা কত শহীদের রক্তে অর্জিত এই লাল-সবুজের পতাকা ও একটি দেশ। কিন্তু যাদের আত্মত্যাগ আর এক সাগর রক্তের পথ বেয়ে জন্ম নিল এই সব ঘটনা পুঞ্জি, তাদের আত্মা আজ কি বলছে? আর যারা এখনো বেঁচে আছে কোথায় আছে? তা হয়তো আজ আর আমরা অনেকে জানিনা, জানার প্রয়োজনীয়তা অনুভবও করিনা। স্বাধীনতার ৪৩ বছর দেখতে দেখতে চলে গেল কিন্তু এই পরাধীনতার শৃঙ্খলামুক্ত করতে যাদের রক্ত ঝরাতে হলো, ইজ্জত লাঞ্ছিত হলো তাদের কথা কেউ কি একবারও ভাববার প্রয়োজন মনে করেছে? অথচ রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সকলেই রেখেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসনসহ সার্বজনিন মুক্তির আশ্বাস সহ কতই না সান্ত¡নার বুলি। স্বাধীনতার জন্মলগ্ন থেকেই কত সরকার আসলো, আবার কত সরকার গেল, সকলেরই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটলো আকাশচুম্বি অথচ যাদের রক্তের সিড়ি বেড়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সকল আমলা তাদের ভাগ্য গড়ে নিল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা যে তিমিরে ছিল সেই তীমিরেই রয়ে গেল। শুধু কিছু সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের ভাগ্য সামান্য পরিবর্তন হলেও বেশিরভাগ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো আজও নানাভাবে বঞ্চনার শিকার।বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ধরনের অসন্তোষের দানা বাঁধতে শুরু করেছে স্বাভাবিক মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তা হরো আমরা আজও পারিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রনোয়ন করে জাতীর সামনে তুলে ধরতে? পারিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের “আইডেন্টিফাই” করে পরিচয় পত্র প্রদান করতে? পারিনি ৭১‘র মহান স্বাধীনতায় এই সব মুক্তিপাগল মুক্তিসেনাদের আত্মত্যাগ ও আত্মোৎস্বর্গের কথা সহানুভূতির সাতে বিবেচনা করে জাতীয় বীর এর মর্যাদা দিয়ে চির অম্লান ওঅকক্ষয় করে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে। এ কৃপণতা কার? কেন বার বার এ ব্যর্থতা? এই জন্য কারা মূলত দায়ী?

৭৫‘র পরের সরকারগুলো শুধু মুক্তির কাঁধে রাজাকারের পাল্কি উঠিয়ে দিয়ে মূলার গন্ধ শুকিয়ে পার করতে পারলেও আজকের সরকার এর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি যে অনেক। সুতরাং এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে যখনই দেখি সবাই নীরব, তখনই জীবনের উপর সমাজের উপর, জাতীর উপর ঘৃণায়, লজ্জায়, বুক ভরে নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। কেননা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি কে পূরণ করবে? তাদের প্রত্যাশা যে অনেক, বর্তমান সরকারের কাছে।

সামাজিক, অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিকভাবে আজও মুক্তিযোদ্ধারা অনেক পিছিয়ে”। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের একমাত্র অভিভাবক, গণতন্ত্রের ক্ষণজন্মা। নেত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থসামাজিকভাবে উন্নতি হলেও পল্লীর বেশীর ভাগ মুক্তিযোদ্ধারা সঠিক নেতৃত্বের অভাবে আজও তারা তাদের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত। সরকার প্রণীত মুক্তিযোদ্ধারা সঠিক নেতৃত্বের অভাবে আজও তারা তাদের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত। সরকার প্রনীত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য গৃহিত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা প্রায় সকল ক্ষেত্রে সঠিক প্রয়োগের অভাব পরিলক্ষিতি হচ্ছে। প্রকৃতভাবে সরকারী নীতিমালা প্রয়োগে দারুণভাবে অনিয়ম সৃষ্টি হচ্ছে। তাতে করে উপকৃত হওয়ার চাইতে মুক্তিযোদ্ধারা উপহাস এবং হয়রানীর স্বীকার বোধকরি বেশীই হচ্ছে। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা সহ তাদের পরিবার পরিজন যার সঠিক চিত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়। বিভিন্ন দফতরগুলোতে গোপনীয়ভাবে তদন্তের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। অথচ এমনতো হওয়ার কথা ছিল না।

অবাক হই, আজও যখন দেখি ৭১‘র সৈনিকটি কখনো রিক্সা কিংবা ভ্যান চালাতে অথবা মলিন, বস্ত্র পরিধেয় অবস্থায় ফুটপাথে ফেরি করে কিংবা ঠেলা গাড়ী নিয়ে ছুটছে। আর ৭১‘র রাজাকাররা দাদেও হুকুম জারি করছে তখন সত্যিই ব্যাথা লাগছে। এই যদি হয় আজকে স্বাধীনতার সঠিক চিত্র তবে কি প্রয়োজন ছিল এ স্বাধীনতার? কেন অকালে ঝড়ে পড়ল এতগুলো মূল্যবান জীবন? এই জন্যই কি সেদিনের মুক্তিকামী দামাল ছেলেরা তাদের বই-খাতা ফেলে, জীবনবাজি রেখে হাতে নিয়েছিল বন্দুক, বুলেট আর বেয়নেট, ধীক এই স্বাধীনতা, ধীক, এই জাতীর, জানিনা কবে, কতদিনে আসবে এদের চৈতন্যবোধ?

অনেক মুক্তিযোদ্ধাই বার বার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে ঢাকায় আসা-যাওয়ার জন্য অহেতুক হয়রানি ছাড়াও আর্থিক দিক দিয়ে যারপর নাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ফরম নিতে টাকা, ফরম পূরণ করতে টাকা, সনদ পাইতে হলেও টাকা অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রেই টাকার প্রয়োজন। সুতরাং কয়জন মুক্তিযোদ্ধাই বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল আছে? বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধাই সরকার কর্তৃক সকল সুবিধা হতে নিঃসন্দেহে বঞ্ছিত হচ্ছে। একদিকে দীর্ঘ ৪৩ বছরে স্বাধীনতা বিরোধীদের নগ্ন ষড়যন্ত্রের কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুক্তিযোদ্ধাদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যকে নানান প্রলোভন দেখিয়ে ভেঁঙ্গে টুকরা-টুকরা করে দূর্বল করে দেয়া হচ্ছে। যাতে করে এদের শক্তি যেন একত্র হতে না পারে। এভাবে একদিন দেখা যাবে, মুক্তিযোদ্ধাদের ধ্যান-ধারণার মাঝে সৃষ্টি হবে প্রচ- ফাটল। শুরু হবে, নিজেদের মাধে ভূল বুঝাবুঝি, তারপর হবে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ। আর সেই যুদ্ধে অস্ত্র যোগান দিবে তারাই যারা ৭১‘র লেলিয়ে দিয়েছিল জনতা নিধনে পাকহানাদারকে।

বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরোধী দলগুলোর অযৌক্তিক, নৈতিকতা বিবর্জিত ঘন ঘর হরতাল, গাড়ী ভাংচুর ও পরস্পর একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা ও সহনশীলতার অভাব। রাজনৈতিক ইস্যুগুলো মোটেও জনকল্যাণমুখী তো নয়ই বরং সামনের দিনগুলোতে জনগণ এবং জাতীয় সঙ্কট আরো অধিকতর ঘূণীভূত হওয়ার আশঙ্কায় জনমনে সৃষ্টি হয়েছে পুনরায় “তালেবান আতঙ্ক” তাইতো মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে আসছে নতুন করে আরও একটি কঠিন পরীক্ষা। সুতরাং তাদের এখন পা ফেলতে হবে খুব সাবধানে যদিও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কিছু মুক্তিযোদ্ধা স্বার্থান্বেসী মহলের হাতিয়ার হিসাবে পদলেহন করছে তবুও সঠিক ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নানা অত্যাচার অনাচারে বার্ধ্যকের ছোঁয়া শরীরকে ক্ষয় করলেও মনে ঘুণ ধরাতে পারেনি। তাই স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমোন্নীত রাখতে জীবন কোরবানী করতেও তারা পিছপা হবে না, এ বিশ্বাস তাদের আছে, অন্তত জাতির কাছে। কেন না মুক্তিযোদ্ধারা কেবল জাতিকে নিঃস্বার্থভাবে জীবন দিতে পারে। সেই প্রত্যাশা নিয়ে আপামর জনতাসহ কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষ আজ আবার তাকিয়ে আছে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে পূর্ণ আস্থা নিয়ে যেমন ৭১’র জাতির জনক এর নির্দেশে ছাত্র, জনতাসহ সর্বস্তরের জনগণ হাতে-হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিসেনাদের পাশে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। যার ফলে, সকলের সমবেত চেষ্টার কারণে সে দিন পৃথিবীর সেরা বাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে আনা সম্ভব হয়েছিল একটি লাল সবুজের পতাকাকে। তেমনি ৪৩ বছর পর আবার জাতির এই চরম দুর্দিনে জামায়াত-শিবির, বিএনপি জোটের আসন্ন তালেবান স্টাইলকে প্রতিরোধ করতে বাংলার স্বাধীনতা কামী জনগণ অনেক আশার ডালি মাথায় নিয়ে পথ চেয়ে বসে আছে মুক্তিযোদ্ধা সহ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের দিকে।

জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা এবং রাজনীতিকে উর্ধ্বে রেখে জনগণের কল্যাণে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সকল মুক্তিযোদ্ধাকে এখন তাদের উচিৎ নিজেদের ছোটখাটো ভুল ত্রুটি ও নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা না ভেবে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্তে সকলেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের পতাকাতলে এনে সমবেত করা তবেই সম্ভব হবে মুক্তিজনতার ঐক্য এবং সেই ঐক্যকে টেনে নিয়ে দাঁড় করাতে হবে একটি প্লাট ফরমে এবং একই সাথে শপথ নিই আসন সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে মুক্তমন নিয়ে স্বাধীনতার স্বপক্ষের পতাকাতলে সমবেত হই ও সকল প্রশ্নের অবসান ঘটিয়ে সকলের শ্রদ্ধা আর ভালবাসা নিয়ে আমাদের আজকের শ্লোগান হোক মুক্তির কাঁধে আর রাজাকারের পাল্কী নয় বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্ত বায়ন করে প্রতিষ্ঠিত করে “মা মাটি ও বাংলার দুঃখী মানুষকে”। লিন্ক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.