নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের মিসিং লিঙ্কের হালচাল

০৯ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩২



০ মিয়ানমার ভারত নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ হতে যাচ্ছে

০ এ বছরেই লাইন নির্মাণ শুরু



দীর্ঘ ৩ বছর পর অবশেষে চট্টগ্রামের দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুনধুম রেললাইন প্রকল্পে অর্থ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আগামী অর্থবছরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এডিবির অর্থায়নের আশ্বাসের ফলে সরকার অতি প্রয়োজনীয় এ রেলপথটির নির্মাণকাজ চলতি অর্থবছরেই শুরু করবে। এতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় ৫০ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের পথ সুগম হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া উপআঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতায় (সাসেক) রেলপথ সংযোগ স্থাপন কর্মসূচীর আওতায় এ প্রকল্পে এডিবি অর্থায়ন করবে। এডিবি সূত্র জানায়, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানকে একই রেলপথে যুক্ত করতে কাজ করছে এডিবি। এ ক্ষেত্রে মিসিং লিংকগুলোয় (যে সব স্থানে রেল সংযোগ নেই) রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এডিবি সম্মত হয়েছে অর্থায়নে।

রেল মন্ত্রণালয় জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে জরিপ সম্পন্ন করে ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা ও জ্বালানি সাশ্রয় হবে। আর পরিবেশবান্ধব রেলস্টেশনে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকবে। এ ছাড়াও রেলওয়ে বাঁধ নির্মাণ, রেললাইন স্থাপন, ভূমি কার্যক্রমসহ সম্ভাব্য ক্ষেত্রে নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ, স্টেশনে গমনের রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, সিগন্যালিং, যাত্রী ছাউনি, সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ওভার ব্রিজ নির্মাণ করে সীমান্ত এলাকা হিসেবে হাতি চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখা হবে। আগামী ২০১৫ সালে সম্ভাব্য দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে ঐ বছরেই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। যা আগামী ২০২০ সালের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে। রেললাইন নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ঐ বছরেই রেল চলাচল শুরু করা হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলওয়ের একক লাইন নির্মাণসংক্রান্ত পূর্ববর্তী সম্ভাব্যতা, সমীক্ষা, বিপদ নক্সা ও দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত বিষয়াদি হালনাগাদকরণ বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার গত মেয়াদেই যে কয়েকটি বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। ১ হাজার ৮শ’ ৫২ কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত প্রকল্পটি ২০১০ সালের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বৃদ্ধি, দেশী-বিদেশী পর্যটক আকৃষ্ট করতে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নসহ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতকে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রের আদলে গড়ে তুলতে এ রেলপথ স্থাপনের এ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ সঙ্কটই এ প্রকল্প ধীরগতির মূল কারণ। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় বলা হয়েছিল, চীন ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। কিন্তু গত ৩ বছর তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই বর্তমানে হন্যে হয়ে বিকল্প উন্নয়ন সহযোগী খুঁজতে শুরু করে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে বিকল্প অর্থসন্ধানে ইতোমধ্যে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংককেও (আইডিবি) অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি ৩৫ কোটি ডলার ঋণ পেতে গত বছরের ২৫ এপ্রিল পুনরায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংককে (এডিবি) চিঠি দেয় ইআরডি। কিন্তু সংস্থাটি এখনও লিখিত সাড়া দেয়নি। তবে ২৬ মে এডিবির সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে এ প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকে এ প্রকল্পটিতে এডিবি সম্মতির কথাটি বেশ জোরেশোরেই উঠে আসে।

২০১২ সালের ৬ জুন ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি), অর্থ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যৌথ আয়োজনে এক কর্মশালায় তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আইডিবির আঞ্চলিক পরিচালককে রেলের এ প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ জানান। যোগাযোগমন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে আইডিবির আঞ্চলিক পরিচালক প্রস্তাব গ্রহণ করে এ প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগে আশ্বাস দেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে আইডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাতে ইআরডিকে চিঠি দেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের কাছে ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন মিটারগেজ রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮শ’ ৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬শ’ ৭০ কোটি এবং প্রকল্প সাহায্য বাবদ ১ হাজার ১শ’ ৮২ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চীন ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে এ অর্থ পাওয়ার আশা করেছিল সরকার। কিন্তু ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও অর্থ দেয়ার কোন আশ্বাস দেয়নি চীন। ফলে অর্থায়ন জটিলতায় কাজ শুরু করতে পারছে না রেলপথ মন্ত্রণালয়।

পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পের আওতায় দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং রামু হতে ঘুনধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার মোট ১শ’ ২৮ কিলোমিটার মিটারগেজ নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, দুলাহাজরা, রামু, ঈদগাহ, কক্সবাজার, উখিয়া মোট ৯টি নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হবে। একই সঙ্গে ৪৭টি ব্রিজ, ১শ’ ৪৯টি কনক্রিট বক্সকালভার্ট, ৫২টি কনক্রিট পাইপ কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। ২০১৪ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা অথচ প্রকল্প গ্রহণের ৩ বছরে গত মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রামের দোহাজারী-ঘুনধুম পর্যন্ত রেলওয়ে ট্র্যাকিং নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অনুমোদনের ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ প্রকল্পে দাতাদের অর্থায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অর্থায়ন করবে বলে প্রাথমিক সম্মতি পাওয়া গেছে।

রেলসূত্র জানায়, পর্যটন শহর কক্সবাজারকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করতে নেয়া প্রকল্পটি চালুর মাধ্যমে পরিকল্পিত রেললাইনটিকে একই সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত টেনে নেয়া হবে। প্রকৃতপক্ষে এটি প্রস্তাবিত ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের অংশ। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের অংশ হিসেবে দোহাজারী-রামু-ঘুনধুম অংশটি ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ঐ রেলপথেরই আরেকটি অংশ তৈরি হবে।

২০০৩ সালে এই রেলপথের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। সমীক্ষা অনুযায়ী রেলপথটি চালু হলে সরকারী হিসেবেই বছরে প্রায় ১২ লাখ যাত্রী এই রুটে বহন করা সম্ভব হবে। এছাড়া কক্সবাজারে লবণ, শুঁটকি এবং অন্য অনেক মৎস্যজাত পণ্য উৎপাদন হয়, সেদিক থেকে চিন্তা করলে এ পথটি লাভজনক হবে বলেই সরকার মনে করে। ভবিষ্যতে ট্রান্স এশিয়ান রেলপথ এবং কক্সবাজার পর্যটন কেন্দ্র দুটি মিলিয়েই রেলপথটি লাভজনক হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ ট্রান্স এশিয়ান রেলপথের একটি সদস্য দেশ এবং সে কারণে এ পথের যেসব স্থানে সংযোগ স্থাপন করা দরকার যা বাংলাদেশ করবে।

এডিবির অর্থায়ন বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যুগ্মসচিব ও এডিবি ডেস্কের প্রধান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ জনকণ্ঠকে জানান, আগামী ৩ বছরের (২০১৫-১৭) এডিবি বাংলাদেশকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদান করবে। সেখানে রেল খাত অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। আলোচিত প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এবার এডিবি এতে অর্থায়ন করবে। এ লক্ষ্যেই কাজ চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ইতোমধ্যেই প্রকল্প এলাকায় জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আশ্বাস পাওয়া গেছে। দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুনধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলওয়ের একক লাইন নির্মাণসংক্রান্ত পূর্ববর্তী সম্ভাব্যতা, সমীক্ষা, বিপদ নক্সা ও দরপত্র আহ্বানসংক্রান্ত বিষয়াদি হালনাগাদকরণ বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।

দীর্ঘদিন পর এডিবির অর্থায়নের আশ্বাস পাওয়ায় আশা করি প্রকল্পটির কাজ পুরোপুরিভাবে চলতি অর্থবছরেই শুরু করা সম্ভব হবে। সরকার এ রেললাইন স্থাপনের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার খুলে দিয়ে সরকার পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের ভ্রমণপিপাসুসহ বিশ্বের সকল দেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে চায়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হবে ও ট্রান্স এশিয়ান রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হতে সহায়তা হবে।

সুত্র

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩৯

মামুন রশিদ বলেছেন: ট্রান্স এশিয়ান রেলপথ আমাদের আন্তর্জাতিক বানিজ্যে কতটুকু ভূমিকা রাখবে বলা মুশকিল, তবে আভ্যন্তরীন ভাবে আমরা লাভবান হব । কক্সবাজারকে রেলওয়ের আওতায় আনা হবে দারুণ ব্যাপার । এটা আমাদের পর্যটনে বিশাল অবদান রাখবে ।

সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।

০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

তালপাতারসেপাই বলেছেন: সহমত! কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:১৬

নীল আকাশ ২০১৩ বলেছেন: ঐ ট্রেনে কক্সবাজার পৌঁছতে পৌঁছতে পর্যটনের খায়েশ বাতাসের বেগে ঊড়ে না গেলেই হয়।

০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৪

তালপাতারসেপাই বলেছেন: নীল হতাশ কেন?
সমস্যা কি?
গোলাপিরা ট্রেনে চবেনা বলে?
:)

৩| ০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

জেরিফ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট , বাস্তবায়নের অপেক্ষায়

০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

তালপাতারসেপাই বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য আপনাকে আনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.