নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা নয়, যুদ্ধাপাধী সংগঠন হিসেবে বিচারের জন্য যুদ্ধাপরাধ আইন (আইসিটি) সংশোধন হচ্ছে- জানিয়েছেন স্বনামধন্য আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক। তিনি কানাডার হাই কমিশনারকে কথাটি বলেন গত ১০ ডিসেম্বর, ২০১৪- যা পত্রপত্রিকার সংবাদগুলোতে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়। পাঠক-পাঠিকারা অবশ্যই বিষয়টি অবগত আছেন। আমি এ খবরে বিস্মিত। মনে হলো, বিদেশি ক‚টনীতিকের সঙ্গে কথা বলতে নিয়ে তিনি আসলে সত্য কথাটিই বলে ফেলেছেন। থলের বিড়ালটি বেরিয়ে এসেছে। এখন নিশ্চিন্তেই বলা চলে, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জনপ্রিয় দাবিটির ব্যাপারে মানুষকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্য নিয়েই এতকাল তিনি শুনাচ্ছিলেন যে, বিদ্যমান আইনে কোনো সুযোগ নেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার, তাই একটি নতুন এবং ফাঁক-ফোঁকড়বিহীন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। প্রণয়ন শেষ হলে তা মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠনো হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে তা ২০১৫ সালের প্রথম সংসদ অধিবেশনেই পেশ করা হবে অনুমোদনের জন্য। বলাবাহুল্য পেশ করা হলে সংসদে তার অনুমোদন নিশ্চিত।
আমি স্তম্ভিত মন্ত্রী মহোদয়ের এই শেষের বা আগের উভয় উক্তিতেই। কারণ এর কোনোটাই জনদাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। সরকারি দলের নেতানেত্রীদের এ প্রসঙ্গে পূর্বাপর উক্তি বা ক্রিয়াকলাপের দিকে চোখ বুলালেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আমি আমার প্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের স্মরণে আনার জন্য আমার স্মৃতি থেকে পূর্বাপর বিষয়গুলো তুলে ধরছি।
এক. এই সরকারেরই বিগত আমলে একটি রিট মোকদ্দমায় রায় দান প্রসঙ্গে মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের সংবিধানের পঞ্চম ও অষ্টম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেন। স্পষ্টভাবে তারা এটাও উল্লেখ করেন যেহেতু জিয়াউর রহমান ও এরশাদ উভয়েই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হননি সেহেতু তাদের ক্ষমতায় আরোহণ অবৈধ ও সংবিধান বিরোধী। এবং যেহেতু তারা সংবিধান বিরোধী পন্থায় ক্ষমতা দখল করেছেন তাদের সব কাজই এ কারণে অবৈধ। তাই জামায়াতে ইসলামী অবৈধ, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং একইভাবে ‘বিসমিল্লাহ’ সংযোজনও অবৈধ। এই রায়ের বিষয় জেনে জামায়াতে ইসলামী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে, অফিসগুলো খোলা-বন্ধ করে দেয়, নেতানেত্রীরা আত্মগোপনে চলে যায়, প্রকাশ্যে ক্রিয়াকলাপও বন্ধ করে দেয়।
দুই. এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়। শুনানি অন্তে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। অর্থাৎ চূড়ান্তভাবেই ‘বিসমিল্লাহ’, ‘জামায়াতে ইসলামী’ ও ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বেআইনি হয়ে গেল। কিন্তু বিস্ময়কর ঘটনা হলো, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে চূড়ান্তভাবে ওই রায় প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হলো, আদালত যা-ই রায় দিক না কেন জামায়াতসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রকাশ্যে রাজনীতি করার বৈধ অধিকার থাকবে- কোনো দলকেই বেআইনি ঘোষণা করা হবে না।
তিন. সরকারের পক্ষ থেকে সংবিধান সংশোধন প্রসঙ্গে জনমত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়েছিল সংসদে ডেপুটি লিডারের নেতৃত্বে। সাব কমিটি দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে পরামর্শ নিলে তাদের মধ্যকার একজন ব্যতিরেকে বাদবাকি সবাই একবাক্যে ওই রায় বহাল রাখার পক্ষে অভিমত প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে দুজন সিনিয়র মন্ত্রীর জনাদুয়েক সাবেক মন্ত্রীও ছিলেন। এ জাতীয় মতের অনুক‚লেই সাব-কমিটি সংবিধান সংশোধনের সুপারিশ সরকারের কাছে পাঠান।
চার. অবাক বিস্ময়ে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনা ও অনুমোদন করা হয়। ওই সংশোধনী মোতাবেক জামায়াতে ইসলামী বৈধ সংগঠন হিসেবে থাকল, ধর্মাশ্রয়ী অপরাপর দল ও সংগঠনগুলোও থাকল, থাকল বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও। তাহলে এক অর্থে ওই সরকারের এক্সটেনশন বর্তমান সরকার কি ওই পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করবেন? কারণ ওটা বাতিল না করলে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা যাবে না।
পাঁচ. সেই অবধি আজতক জামায়াতে ইসলামী বৈধ সংগঠন হিসেবে নিজের অস্তিত্বই শুধুমাত্র বজায় রেখে চলেছে তাই নয়, ওই সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এবং বিচারান্তে ঘোষিত রায় প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভয়াবহ সশস্ত্র সন্ত্রাসী কাণ্ড দেশজোড়া ঘটিয়ে চলেছে। এমনকি যুদ্ধাবরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত দুটি ট্রাইব্যুনালই একাধিক রায়ে বা তাদের প্রদত্ত অভিমতে জামায়াতে ইসলামীকে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অভিহিত করেছেন। ফলে সরকার চাইলে, সন্ত্রাস বিরোধী আইন প্রয়োগ করেই জামায়াতে ইসলামীকে অনেক আগেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারতেন। চান না তাই তারা তা করছেন ও না। কারণটা সম্ভবত এই যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদসহ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে। সরকারও বিরুদ্ধে তারাও বিরুদ্ধে তাই এরা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করবেন এমন ভাবার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
কিন্তু জনগণ তো জামায়াতে ইসলামীর ১৯৭১ এবং তার আগে ও পরের ভয়াবহ কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত। দলটি ক্যাডারভিত্তিক এবং নানাভাবে, দেশি-বিদেশি অর্থে ও প্রশিক্ষণে তার শক্তিও সংহত করেছে প্রচুর তাই তারা আজ সরকারি মনোভাব বুঝতে পেরে তারা হয়ে পড়েছে বেপরোয়া যার ভুক্তভোগী দেশের কোটি কোটি নিরপরাধ মানুষ। তাই তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি ছাড়তে নারাজ।
এমতাবস্থায় কী করা? সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন আছে তাই সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে না। মামলার রায় দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলা বিচারাধীন? কোথায়? কী মামলা? অনুসন্ধানে জানা গেল জামায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে আদৌ কোনো মামলা নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত কোথাও এমন কোনো মামলার আদৌ কোনো অস্তিত্ব নেই। যে মামলার কথা অমন জোরেশোরে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল তা হলো জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আনীত মামলা। ওই মামলায় জিতলেও জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হবে না- কারণ এমন কোনো প্রার্থনাও ছিল না। ইতোমধ্যে রায় অনুক‚লে পাওয়া গেছে যাতে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকে জামায়াত তার নিজস্ব নাম ও প্রতীক ব্যবহার করে কোনো নির্বাচনে/উপনির্বাচনে ওই রায়ের দ্বারা জামায়াতে ইসলামী আদৌ নিষিদ্ধ হয়নি বরং তারা আরো জোরেশোরে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে তবে ওই কোর্ট স্থগিতাদেশ না দেয়ায় আজো নির্বাচন কমিশন দলীয় প্রতীক নিয়ে জামায়াতকে নির্বাচনে অংশ নিতে দিচ্ছে না।
ফলে জনদাবি প্রশমিত হলো না। অতঃপর এ মামলার কাহিনীর অবতারণা করলেন নতুন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক। তিনি জানাতে থাকলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার মতো কোনো আইন নেই তাই তিনি নতুন একটি আইন প্রণয়ন করছেন- যা সংসদে অনুমোদিত হলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী বিচার ট্রাইব্যুনাল বিচার করে তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবেন। লোকে সম্ভবত এতদিন তাই বিশ্বাস করে আসছিলেন। কিন্তু সেদিনের আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সব গোমরই ফাঁস করে দিল।
এখন স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে তাহলে কি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা আদৌ সম্ভব না? সম্ভব এবং হাজারবার সম্ভব। তা যে সম্ভব সরকার তা আমার চেয়ে অনেক ভালোভাবেই জানেন এবং জানের বলেই তারা সেই নিরাপদ ও নিশ্চিত পক্ষে হাঁটছেন না। বিস্ময়কর যে, অনেকেই দেখি মামলার মাধ্যমে অথবা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মাধ্যমে অথবা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছেন আজো। আমার মতে, এর সবগুলোই সংবিধান বিরোধী বলে ঘোষিত হতে পারে কারণ জামায়াতে ইসলামীর বৈধতা সংবিধানে নিষিদ্ধ আছে। তা হলো এখন জটিল পরিস্থিতিতে কী করণীয়? না, জটিল তো আদৌ নয় বরং অত্যন্ত সহজ বিশেষ করে বর্তমান প্রায় একদলীয় সংসদের পক্ষে। প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছার এবং দৃঢ়তার।
আমরা তো একটি সর্বজন প্রসংশিত এবং বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সংবিধান পেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কল্যাণে এবং ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম প্রমুখ সংবিধান বিশেষজ্ঞের একাধিক প্রচেষ্টায় ও তদানীন্তন সংসদ সদস্যদের সমর্থনে। ওই সংবিধান কী করে জামায়াতে ইসলামীসহ সব ধর্ম ব্যবসায়ী দল ও গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন? তারা কি আদালতে মামলা করেছিলেন? না, আদৌ তা করেননি। তারা তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পথ ধরেছিলেন এবং সেটি হলো ওই বাহাত্তরের সংবিধান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘ধর্মের নামে কোনো দল সংগঠন ছাড়া বা তার কোনো অস্তিত্ব রক্ষা করা বা তার নামে কোনো রাজনৈতিক-সামাজিক কার্যকলাপ করা চলবে না। তবে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ বিধান অনুযায়ী ধর্ম পালনের অধিকার থাকবে।
ব্যস, কলমের খোঁচাতেই কাজটি হয়ে গেল। দেশের কোটি কোটি নারী-পুরুষ যারা ১৯৭১-এর নয়টি মাস ধরে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সৃষ্টি রাজাকার, আলবদর, আলশামস প্রভৃতি কুখ্যাত সংগঠনের হাতে নির্মম নির্যাতনের অপরিসীম যন্ত্রণা ভোগ করেছেন তারা অকুণ্ঠচিত্তে ওই বিধানকে সমর্থন ও সম্মান করলেন। তদুপরি ওই বিধানের মাধ্যমে বাহাত্তরের সংবিধানটি দুরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক হয়ে ওঠার পথে বহুদূর অগ্রসর হতে পেরেছিল।
সংবিধানের এই গুরুত্বপূর্ণ ধারা পরিবর্তন হলো কেন? বলেন? কার দ্বারা? কিভাবে? প্রশ্নগুলোর উত্তর ইতিহাসের নিরিখে দিতে হবে। সাধ্যমতো সে চেষ্টাই করছি।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মমভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে অত্যন্ত বেআইনিভাবে অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা (তিনি চরম প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী এবং মার্কিন সামরিকদের অনুচর) অত্যন্ত বেআইনিভাবে নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলে ঘোষণা দিলেন। সামরিক আইন জারি করলেন। বঙ্গবন্ধুকে গণতন্ত্র বিরোধী এবং ধর্ম বিনষ্টকারী বলে চিহ্নিত করলেন। অতঃপর তাকে হটিয়ে দিয়ে চরম ক্ষমতালিপ্সু জিয়াউর রহমান ওই পদ দখল করলেন। জামায়াতে ইসলামীর সব নেতা ও সমর্থক তো ১৬ ডিসেম্বরের আগেই দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দেশান্তরী হয়েছিলেন।
জিয়াউর রহমান পাকিস্তান থেকে সেই দেশের পাসপোর্টধারী জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমিরকে বাংলাদেশের ভিসা দিয়ে দেশে আসার সুযোগ দিলেন এবং জামায়াতে ইসলামীসহ সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ওপর থেকে সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে (সামরিক আইন বলে) তাদের বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিলেন। তদুপরি সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহ’ শব্দটি নিষিদ্ধ করলেন। তখন থেকে সংবিধানটি অপবিত্র হয়ে থাকলো আর পাকিস্তানিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হলো।
পাকিস্তানিকরণের এই গণতান্ত্রিক ও বাংলাদেশ বিরোধী প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্বটি সমাধা হলো যখন পরবর্তী সামরিক শাসক স্বৈরাচারী হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একই পন্থায় বেআইনি ও সংবিধান বিরোধী পন্থায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে একই পদ্ধতিতে সামরিক আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ ওই সংবিধানে সংশোধিত করলেন। এগুলো সবই সংবিধান বিরোধী রাষ্ট্রীয় মূলনীতি বিরোধী।
এই সংশোধনীগুলো দিব্যি বর্তমান সরকার পুনরায় এনে সর্বোচ্চ এক মাস সময়ের মধ্যে তা সংসদে পাস করিয়ে নিয়ে সংবিধানে পাকিস্তানিকরণ বন্ধ ও বঙ্গবন্ধু প্রণীত বাহাত্তরের মূল সংবিধান পুনরুদ্ধার করতে পারেন। তার দ্বারা জামায়াতে ইসলামী ও ধর্মভিত্তিক সব দলই স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থায়ীভাবেই নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, বঙ্গবন্ধুর ওই সংবিধানের ধারা পুনরুদ্ধার করে কুখ্যাত জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ করতে এ সরকার আগ্রহী নন। তারা বজায় রাখতে কেন জিয়া-এরশাদ প্রবর্তিত পাকিস্তানি ধারাকেই।
এবার দেখি জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে তার দ্বারা কি হতে পারে। ধরা যাক, প্রধানমন্ত্রী দলটিকে বেআইনি ঘোষণা ও প্রার্থনা জানালেন। কিন্তু এই মামলা যদি আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে দায়ের হয়ও তার রায় হতে কমপক্ষে তিন বছর এবং যদি আদালত ওই প্রার্থনা মঞ্জুর করেন তবে অবশ্যই সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে হবে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সেখানে অন্তত আরো দুবছর লাগবে। এভাবে যদি ওই প্রার্থনা মঞ্জুর হয়ও তার বিরুদ্ধে রিভিউ প্রভৃতি শেষ হতে হতে ২০২০ সাল হতে পারে। কিন্তু সে প্রশ্ন উঠেই না কারণ আইনমন্ত্রী বলেই দিয়েছেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য ওই মোকদ্দমা নয়।
এখন প্রশ্ন তাহলে এই বাহানা কেন? মামলার দ্বারা অর্জন কী কী হতে পারে? কিছু জরিমানা? কে দেবে? আর এত সময় ক্ষেপণের প্রয়োজন এবং উদ্দেশ্যই বা কী? সাবেক আইনমন্ত্রীও বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে নতুন আইন প্রণয়নের আদৌ কোনো প্রয়োজন নেই।
২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:৩০
রাফা বলেছেন: জামাত নিষিদ্ধ নয়....জামাতের আদর্শের রাজনিতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
এবং সর্বপরি বাংলাদেশের অস্তিত্য না মেনে ৭১-র চেতনা স্বিকার না করে রাজনিতি করার কোন অধিকার নেই।
৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:০১
যোগী বলেছেন: সাঈফ শেরিফ বলেছেন: শুধু জামাত নয়, ধর্ম ভিত্তিক সমস্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা ও রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, যাতে ধর্মের নামে জামাতীরা কোথাও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে ।
৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩১
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এঈ ব্লগারকে কমেন্টের রিপ্লাই দেবার জন্য কোন পেমেন্ট দেওয়া হয়না বিধায় উনি কোন রিপ্লাই করেন না। আমি এই ব্যাপারটা উল্লেখ করায় উনি আমাকে থ্রেট দিয়েছিলেন!
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০০
সাঈফ শেরিফ বলেছেন: শুধু জামাত নয়, ধর্ম ভিত্তিক সমস্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা ও রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে, যাতে ধর্মের নামে জামাতীরা কোথাও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে ।