নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:০৭

৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ হলো। বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের ইতিহাসে এ নির্বাচনটি বিভিন্ন দিক থেকে অত্যন্ত আলোচিত-সমালোচিত। শুধু তাই নয়, এবারই প্রথম কোনো নির্বাচন-বার্ষিকী ভিন্ন ভিন্ন স্লোগান দিয়ে পালিত হচ্ছে। এভাবে আগে কখনো নির্বাচন-বার্ষিকী পালনের ইতিহাস আমার জানা নেই। প্রশ্ন হলো- অন্যান্য নির্বাচনের বার্ষিকী পালন না করে শুধু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বার্ষিকী পালনের হেতু কী?
এই নির্বাচনে দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। শুধু কি তাই। এ নির্বাচনকে ঘিরে যে সহিংসতা, নাশকতা ও নির্বাচন প্রতিহতের নামে মানুষ খুনের মহোৎসব এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জ্বালানো, হাজার হাজার বৃক্ষ নিধন, রেলওয়ে লাইন উপড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেছে, তা অতীতে কোনো নির্বাচনের সময়ই ঘটেনি। তবুও নির্বাচন হয়েছে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার ছোটখাটো দুয়েকটি ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নেই এক বছর পার করতে পেরেছে। যদিও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করে বিএনপি ১৫ দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। যাই হোক, আমার আলোচনার বিষয় কিন্তু তা নয়। আমি যে বিষয়টি মূলত এখানে আলোচনা করতে চাই, তা অনেক আগেই হয়তো করা সমীচীন ছিল। তারপরও আমার মনে হয় আমার লেখার বিষয়বস্তুর প্রয়োজনীয়তা বা প্রেক্ষাপট এখনো ফুরিয়ে যায়নি।
আগেই উল্লেখ করেছি, প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ ডান-বামপন্থী আরো কিছু দল ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট যে নির্বাচনে অংশ নেবে না তা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে পঞ্চম সংশোধনী পাস করে সংবিধান সংশোধনের সময় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। যদিও সংবিধানসম্মতভাবে মহাজোট সরকারের সংবিধান সংশোধনের অধিকার ছিল। বিএনপির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো বা নির্বাচন বর্জন সবার কাছে পরিষ্কার। বর্তমান বাস্তবতায় বিএনপি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতার দাবিদার। তাই ক্ষমতার পালাবদলের খেলায় বিজয়ী হওয়ার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত না হয়ে তারা অংশ নিতে চায় না। এ ছাড়া হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে বিএনপি জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার ফলে জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারায়, এটাও বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ। কিন্তু সিপিবিসহ কিছু বামপন্থী দল এবং ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম ও অন্যান্য ছোট ছোট দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার যুক্তিগুলো মেনে নেয়া যায় না।
প্রথমেই ধরা যাক নির্বাচনের বৈধতার প্রশ্ন। নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর দাবি হচ্ছে এ নির্বাচন অবৈধ। আগেই উল্লেখ করেছি বিএনপির কাছে বৈধতা-অবৈধতার বিষয়টি মুখ্য নয়। তাদের কাছে নির্বাচনে জিতে আসার নিশ্চয়তাটাই মুখ্য। কিন্তু নীতিবাগিশ কিছু সুশীল, জনবিচ্ছন্ন বাম দল এবং বাংলাদেশের সংবিধানের জনক বলে দাবিদার ড. কামাল হোসেন গংদের কাছে বিষয়টি মুখ্য। প্রশ্নটি এখানেই। সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের তো না জানার কথা নয় যে, সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই নির্বাচনে মহাজোট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। অর্থাৎ জনরায়ে সংবিধান সংশোধনের অধিকার অর্জন করে। সুতরাং সেই অধিকার বলে সংবিধানের সংশোধনী মোতাবেক নির্বাচন কী করে অবৈধ হয় আমরা যারা আমজনতা তাদের কাছে বোধগম্য নয়। আরেকটি বিষয় কামাল হোসেন সাহেবরা বেশ জোরেশোরেই বলে থাকেন, তাহলো ১৫৩ জন ব্যক্তির বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি। এটাকে অবৈধ প্রমাণিত করার জন্য তারা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের শরণাপন্নও হয়েছেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেনসহ যারা এটাকে অবৈধ বলছেন তাদের কাছে প্রশ্ন- সংবিধান কি তাদের বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়ার অধিকার দেয়নি? আর একজন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হওয়া আর একশজন নির্বাচিত হওয়া কি এক কথা নয়? কাজেই নিজে সংবিধান রচনা করে নিজেই যদি সংবিধানের ভুল ব্যাখ্যা দেন, তাহলে আমরা আমজনতা যাবো কোথায়?
বর্জনের আরেকটি কারণ হিসেবে তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- গত নির্বাচনই তো শুধু দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি অতীতে সামরিক সরকারের অধীনেও নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে সিপিবি এবং কামাল হোসেনরা অংশও নিয়েছেন। এমনকি সিপিবি জিয়াউর রহমানের তথাকথিত হ্যাঁ/না ভোটেও সমর্থন জানিয়েছিল। ড. কামাল হোসেন সাত্তার সরকারের অধীনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশও নিয়েছিলেন। শুধু কি তাই, সিপিবি ১৫ দলের শরিক হিসেবে এবং ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে এরশাদ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। তখন সিপিবি বা কামাল হোসেন তো বলেননি, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না। তবে কি সংবিধানসম্মতভাবে অনুষ্ঠিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেয়ার পেছনে কোনো রহস্য রয়েছে?
নির্বাচন বর্জনের তাদের আরেকটি যুক্তির উল্লেখ করে আমার লেখার সমাপ্তি টানতে চাই। বিএনপি-জামায়াত জোটসহ বর্জনকারী রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের একটি অংশের দাবি হচ্ছে- ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল না, এটা ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং আন্তর্জাতিক মহলে তা স্বীকৃতি পায়নি বা পাবে না। প্রথমত, এটা যে ভোটারবিহীন বা জনসমর্থনহীন নির্বাচন নয়, তার প্রমাণ হলো দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের পর এক বছর অতিবাহিত হয়েছে, অথচ এ সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ বা গণআন্দোলন সৃষ্টি তো দূরের কথা, বিএনপি-জামায়াত জোট একটা হরতাল পর্যন্ত সফলভাবে করতে পারেনি। এবং অদূর বা সুদূর ভবিষ্যতে এর ক্ষীণতম সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। আমার তো মনে হয়, দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার যদি সাজা হয়ে যায়, তাহলে বিএনপির পক্ষে আন্দোলন তো দূরে থাক দলটির অস্তিত্বই হুমকিতে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকায় সমাবেশ-মিছিল করা তো দূরে থাক জেলা পর্যায়েও দলটি দিন দিন কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। অথচ আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে ১৯৯৬ সালে বিএনপি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার মাত্র ১৫ দিনের মাথায় জনরোষের কারণে পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল। সুতরাং এ সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন নেই এ কথা বলার কোনো যৌক্তিকতা আছে কি? আর ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাপকাঠি কী? নির্বাচন কমিশন বলছে ৪০% ভোট পড়েছে। যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম হয়ত ৪০%ও নয়। তার কারণ ব্যাখ্যা করা কি সহজ নয়? প্রধান বিরোধী দল নির্বাচন থেকে দূরে থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ভোটাদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার অভাব ছিল। তাই অনেকেই ইচ্ছা করে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। তার মানে এই নয় এটা সরকারের প্রতি তাদের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। সংসদীয় গণতন্ত্র বহাল আছে এমন দেশ যেমন ভারত বা যুক্তরাজ্যে কত ভাগ ভোট পড়েছে তা দিয়ে ফলাফল নির্ধারিত হয় না, ফলাফল নির্ধারিত হয় কোন দল বেশি ভোট পেয়েছে তার ভিত্তিতে। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিক মহলের স্বীকৃতির প্রশ্ন। প্রথম প্রথম কোনো কোনো দেশ নির্বাচন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে গঠিত সরকারকে স্বীকৃতির ব্যাপারে কোনো ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেনি। বরং গত এক বছরে বিদেশি সাহায্যের পরিমাণ আরো বেড়ে গিয়েছে। এমনকি যে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির প্রশ্ন তোলে পদ্মা সেতু থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংকই আবার বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ অনুদান নিয়ে এগিয়ে এসেছে। সুতরাং গত নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন আরো জোরালো হয়েছে এগুলো তারই প্রমাণ।
তাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যে সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি এখনো ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বা মেনে নিতে পারছেন না তাদের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে লেখাটি শেষ করতে চাই। প্রশ্নগুলো হলো- যদি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হতো তাহলে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকতো কি? এবং যদি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সরকার পুনরায় ক্ষমতায় না আসত তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার প্রক্রিয়া বিগত সরকারের সময় শুরু হয়েছিল, তা অব্যাহত থাকত কি? এ ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো একটি প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো কি? সুতরাং সাধু সাবধান। শুধু বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা না করে আসুন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সম্ভাবনাময় আগামী বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি ঐক্যবদ্ধ হই। জয় আমাদের সুনিশ্চিত। সুত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৪৩

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: এইটা একটা দালাল ব্লগার। দয়া করে এর ব্লগে কোন মন্তব্য করবেন না। আমি মন্তব্য করায় ভয়ংকর ভাষায় হুমকি দিয়েছিল। এইটারে কোনদিন যদি রাস্তায় পাই, তাইলে একটা মাইরও মাটিতে পড়বেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.