নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্র হত্যা : ভূতের মুখে রাম নাম

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

গণতন্ত্র এখন একটা সস্তা বুলি হয়ে দাঁড়িয়েছে। টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশোর বিজ্ঞ টকারদের মধ্য রাতের বুলি কপচানো দেখে তাই মনে হয়। তাদের এখন বিএনপির মোড়কে জামায়াতকে সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়ার ব্যাপারে সোচ্চার দেখা যাচ্ছে। তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেন না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি তুলেন না। যুক্তির ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে যেন তারা গণতন্ত্র রক্ষার জন্য যুদ্ধের ময়দানে নেমেছেন। গণতন্ত্র চর্চার নামে তাদের এমন বুলি কপচানোর ভেতর দিয়ে এক ধরনের সংঘাত ও সহিংসতাকে উসকে দেয়ার অপচেষ্টা লক্ষণীয়। এর মধ্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অসৎ উদ্দেশ্য, অপতৎপরতা, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রয়েছে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশ এখন কোন সরকার দ্বারা চালিত হতো? সংবিধান সমুন্নত রয়েছে তারপরও নাকি সরকার বৈধ নয়। গণতন্ত্র নির্বাসিত-নির্বাপিত-ভূলুণ্ঠিত। কী সব বিচিত্র আর্গুমেন্ট! তারা সংবিধান রক্ষার নির্বাচন মানছেন অথচ গণতন্ত্র হত্যার কথাও বলছেন! গণতন্ত্র হত্যার দায়ভার আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগকে সমান দোষে দোষী সাব্যস্ত করে বিএনপির মোড়কে জামায়াতকে গণতান্ত্রিক অধিকার দেয়ার পক্ষে তারা এমন সাফাই গাইছেন। যেমন নির্বাচনই হোক যা দিয়ে সংবিধান রক্ষা হয়েছে, আর সংবিধান রক্ষা হয়ে থাকলে গণতন্ত্রও রক্ষা হয়েছে। সুতরাং গণতন্ত্র হত্যার রাজনীতির সঙ্গে আওয়ামী লীগকে একই দাড়িপাল্লায় তুলে মাপার চেষ্টা যারা করছেন তারা কি কখনো তলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন গণতন্ত্র হত্যাকারী কারা? কারা সামরিক স্বৈরতন্ত্রের গোয়াল ঘরে জন্ম নিয়ে রাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছে? ৫ জানুয়ারি সংবিধান রক্ষার নির্বাচন ছিল। গণতন্ত্র রক্ষায় এ নির্বাচন বাধ্যতামূলকও ছিল। মানুষ হত্যা, জ্বালাও-পোড়াওয়ের মধ্য দিয়ে নির্বাচন হলেও সংবিধান সমুন্নত রয়েছে। সংবিধান রক্ষা হয়ে থাকলে বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র হত্যার আলামত খুঁজে পেলেন কোথায়? হয়তো নির্বাচনটা অনেকটাই একতরফা হয়েছে। তবুও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে কি হতো দেশে, গণতন্ত্র থাকত? দেশ চালিত হতো কিভাবে? নির্বাচন ঠেকিয়ে সংবিধান স্থগিত-রহিতকরণের সব চেষ্টা হয়েছে কি তাহলে গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে? একজন অবুঝ বালকও বুঝে যে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন ব্যর্থ না হলে সে দিন গণতন্ত্র হত্যা হতো। গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টা করেও যদি কেউ গণতন্ত্র হত্যার নামে সভা-সমাবেশ আয়োজন করে বুক ফুলিয়ে দম্ভোক্তি করতে চায়, নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়, বঙ্গবন্ধুকে ‘পাকবন্ধু’ বলে ব্যঙ্গ করা হয়- তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চালিত সরকারের ওপর কি কোনো দায়দায়িত্ব বর্তায় না?
যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারা কেন ’৭১-এ পেছনে ফিরে তাকান না? পাকিস্তানি সামরিক শাসনের নাগপাশ থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার এবং রক্ষা করতে কার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছে। ’৭০ সালের নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করেও ক্ষমতার মসনদে বসতে পারেনি। গণতন্ত্র হত্যার চেষ্টার এর চেয়ে বড় কি উদাহরণ হতে পারে? পৃথিবীতে গণতন্ত্র হত্যা চেষ্টার বড় একটি বিয়োগান্তক পরিণতি হচ্ছে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন আর রক্ত দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে লেখা হয়েছে বাংলাদেশের নাম। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের সেই অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে সময় বয়ে গেছে সেই সময়ে কি দেশে গণতন্ত্র ছিল? সামরিক স্বৈরতন্ত্রের ওপর নির্ভর করে জিয়া-এরশাদ দেশ চালিয়েছেন দীর্ঘ সময় ধরে। বঙ্গবন্ধু বাকশাল করেছিলেন। বাকশাল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা ছিল বলে অনেকে অপপ্রচারের তুবড়ি বোমা ফাটিয়ে চলেছেন। বাকশাল কি একদলীয় ছিল? বাকশাল হলে কি হতো? বিশেষ আনুক‚ল্যে জিয়া কেন বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন? এমনটাও তো ভাবা যেতে পারে বঙ্গবন্ধুর বাকশাল করার চেষ্টা-উদ্যোগ হয়তো আধুনিক বিশ্বে গণতন্ত্রের জন্য নতুন একটা মডেল হতে পারত। সেই সুযোগ কি তিনি পেয়েছিলেন? তাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে যে মডেলের বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা চলেছে সে বাংলাদেশের জন্য কি দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম এবং ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধে এই দেশের মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে? তারা যে মডেলের বাংলাদেশ চায়, সেই মডেলে ফিরে যাওয়া কি সম্ভব? বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে শামিল হবে নাকি অপরাজনীতির চোরাগুপ্তা অন্ধকার পথে হারিয়ে যাবে?
জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার বেনিফিশিয়ারিদের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের ক্রীড়নক ছিলেন। জীবন দিয়ে তিনি নিজেও সেই ষড়যন্ত্রের বলির পাঁঠা হয়েছেন। এখন সেই অপরাজনীতির আবর্জনা-জঞ্জাল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। গণতন্ত্র, সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি এবং অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনের নামে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি হিসেবে চিহ্নিত নিষিদ্ধ জামায়াতকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খ্যাত জিয়াউর রহমান। যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। তাদের হাতে শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। জিয়ার এমন সব আমলনামার কথা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ রয়েছে।
গণতন্ত্রের পথ ধরেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নিরন্তর হাঁটছে। বিশ্বের উন্নত জাতির সমান স্তরে উন্নীত হওয়ার অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। সেই অপার সম্ভাবনার পথে তারা কেন এগিয়ে চলার সহযাত্রী না হয়ে গণতন্ত্র হত্যার মাতম করছেন? কী লাভ হবে তাদের? বেগম খালেদা জিয়া সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। এই সাত দফায় লুকায়িত আছে জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর এক দফা। যদিও বলা হচ্ছে যে, সাত দফার মোড়কে এক দফা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তনের দাবি আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিএনপি। জামায়াতের সঙ্গী হয়ে যুগপদ আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর উদ্দেশ্যে সরকার উৎখাতের নানামুখী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকায় বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। উপরন্তু ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য এখন কান্নাকাটি করে বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে হুমকি-হুঙ্কারও দিচ্ছে। জামায়াতকে সঙ্গী করে যারা ’৭১-এর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণতন্ত্র হত্যা চেষ্টার সহযোগী হিসেবে আলবদর, রাজাকার, আলশামস বাহিনী গঠন করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তাদের সঙ্গী করে কিভাবে বিএনপি সভা-সমাবেশ করার অধিকার পেতে পারে? দেশের মানুষের কাছে এটাই আজ বড় প্রশ্ন।
যদি ধরেও নেই যে সাত দফার মোড়কে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতির জন্য লড়াই করছে তাহলেও বলতে হয় যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। দলীয় রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির মৃত্যু ঘটিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তত্ত্বাবধায়কের লাশটিকে দাফন হতে না দিয়ে কফিনে বন্দি করে রেখে আন্দোলনের উত্তাপ ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। কফিনে বন্দি তত্ত্বাবধায়কের লাশ কাঁধে বয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ করলে অথবা বেশি টানাহেঁচড়ায় এবং আন্দোলনের প্রলম্বিত সময়ে লাশ পচে গলে আরো দুর্গন্ধ ছড়াবে বৈ আর কি। তাহলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে সংকটের সমাধান কোথায়?
যারা গণতন্ত্র হত্যাকারীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তাদের মুখে গণতন্ত্র রক্ষার কথা বেমানান। তাদের জন্য ‘ভূতের মুখে রাম নাম’ প্রবাদটি প্রযোজ্য। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির নামে বিএনপি যে আন্দোলন করছে তা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং গণতন্ত্র হত্যাকারী এবং তাদের সহযোগীদের কাছে গণতন্ত্র কোনোভাবেই আর নিরাপদ নয়। তাদের দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা হবে না। উপরন্তু সুযোগ পেলে আবারো তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করে ছাড়বে। সুত্র

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

সাঈফ শেরিফ বলেছেন: জামাতীরা কী বাংলাদেশের নাগরিক?

যদি নাগরিক হয়, তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার দিতে হবে

আর যদি নাগরিক না হয়,

তাদের বাংলার মাটিতে বিচার করার কোন যুক্তি থাকেনা, তাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিন

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৬

সরদার হারুন বলেছেন: সুশীল সমাজের কিছু লোক টাকার বিনিময় "ঠক শোতে" অংশ নিয়ে আমাদের মত বোকা সমাজের লোক গুলিকে পথ দেখান। ন্তিু এরা কারা ?

আমাদের গ্রামে লোকে শিল বলতে বুঝতো শান পাথর । আবার যারা সেলুনে চুল কাটে তাদেরও বলে শিল । তবে যদি বলা হয় সুশীল তাহলে কি অর্থ দাড়ায় ? উত্তম শান পাথর ? চুল কাটার উত্তম কারিকর ? যা হোক " সুশীল সমাজ বলতে আমরা কি বুঝব ? অবশ্যই উল্লেখিত দু;টির একটিও নয় । তা হলে কি বুঝায় ? আর একটা অর্থ আছে বলে হালে শুনি সেটা হলো-"সুশীল-সচ্চরিত্র ।
এটাই হবে কিন্তু যারা টকশোতে অংশ নেয় তারা যে সুশীল তার সনদপত্র দেয় কারা ? যাহোক কারো জানা থাকলে বলবেন ।
লেখকের সাথে এক মত ।++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.