নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বঅবরুদ্ধ খালেদা জিয়া!

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৪৭

অতিরিক্ত পুলিশ নেই। জলকামান নেই। ট্রাকের ব্যারিকেডও নেই। বাইরে থেকে নেতারা আসছেন। বৈঠক করে বেরিয়ে যাচ্ছেন। শুধু বের হচ্ছেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সরকারি ‘অবরোধ’ না থাকলেও স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন তিনি। ১৫ দিন পর রোববার মধ্যরাতে খালেদার গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে অতিরিক্ত ‘নিরাপত্তা’ প্রত্যাহার করা হয়। এর মধ্য দিয়ে কার্যত তার অবরুদ্ধ অবস্থারও অবসান হয়। কিন্তু তারপরও স্বেচ্ছায় এই কার্যালয়েই অবস্থান করছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

গত ৩ জানুয়ারি রাতে খালেদা জিয়া প্রবেশের পর থেকেই তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর দুই দফা বের হওয়ার চেষ্টা করেও তিনি পুলিশি বেষ্টনী টপকাতে পারেননি। পরে ৪ জানুয়ারি রাতে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পরের দিন গত ৫ জানুয়ারি দলের সমাবেশে যোগ দিতে বের হতে চাইলেও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি অতিরিক্ত নিরাপত্তা চেয়েছেন। তাই তাকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। এরপর আরো ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও তিনি তৃতীয়বার কার্যালয় ছাড়ার চেষ্টা করেননি। সর্বশেষ তিনি দাবি করছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিজে অবরুদ্ধ থাকবেন।

‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় লাগাতার অবরোধ ডাকার পর থেকেই তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন খালেদা জিয়া। সরকারের পক্ষ থেকে খালেদাকে অবরুদ্ধ করার কথা অস্বীকার করা হলেও কার্যালয় থেকে শুধু নিজ বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তাই খালেদা জিয়াও গৃহবন্দি হওয়ার চেয়ে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকাকেই বেছে নিয়েছেন। সেখানে থেকেই তিনি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত

যোগাযোগ রেখেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অবরোধ কর্মসূচি সফলে নির্দেশনা দিয়েছেন। আন্দোলনের খোঁজখবর নিয়েছেন। এমনকি বিএনপি পন্থী পেশাজীবী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাৎও করেছেন তিনি।

গত ১৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার নির্ধারিত দিন থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি আদালতে যাননি। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সে কারণেই তিনি তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে আদালতে উপস্থিত হওয়ার ঝুঁকি নেননি। তবে এ বিষয়ে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, আদালতে না যাওয়ার জন্যই স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন খালেদা জিয়া। অথচ সরকারের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন তিনি।

দলীয় সূত্র জানায়, আন্দোলন সফলে কৌশলগতভাবে সরকারকে চাপে রাখতেই নিজ কার্যালয়ে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া। গুলশান কার্যালয়ে ১৯ দিন ধরে অবস্থান করা বিএনপি প্রধান অবাধ চলাচলের সুযোগদানের পাশাপাশি নতুন নির্বাচনের জন্য যথাশিগগিরই গ্রহণযোগ্য সমাধানে না পৌঁছা পর্যন্ত এই কার্যালয়েই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেলে চলমান অবরোধ কর্মসূচির সঙ্গে যোগ হতে পারে অসহযোগ কর্মসূচি। এমনকি আগামী সপ্তাহ থেকে অবরোধের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে টানা হরতালও। এ কারণেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী মহল সুযোগ করে দিলেও আপাতত বাসায় যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।

বিএনপি নেতাদের যুক্তি, যেহেতু গুলশান কার্যালয় থেকেই অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছেন, তাই এ কর্মসূচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন খালেদা জিয়া। দলীয় সূত্র আরো জানায়, গুলশান কার্যালয় থেকে বাসায় গেলে খালেদা জিয়া সব রাজনৈতিক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একইভাবে অবরুদ্ধদশা থেকে বেরিয়ে গেলে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মতো তার গুলশান কার্যালয়ও তালাবদ্ধ করে দেয়া হতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে খালেদা জিয়ার। তাই তিনি আপাতত গুলশান কার্যালয়েই থাকবেন। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কিংবা অন্য কোথাও সভা-সমাবেশের সুযোগ দিলে অবরোধ কর্মসূচি শিথিল করার বিষয়টি খালেদা জিয়া মাথায় রেখেছেন বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, পুলিশি ব্যারিকেড তুলে নেয়ার পরও তিনি কেন এখনো তার কার্যালয়ে অবস্থান করছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, আমার যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারলেই বুঝব অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি জানান, এ ভবন তার রাজনৈতিক কার্যালয়। এখানে তার অনেক কাজ আছে। তিনি এখানে থাকতেই পারেন, তাতে কোনো অসুবিধা থাকার কথা নয়। তবে আবারো নিজেকে অবরুদ্ধ দাবি করে সরকারের কঠোর সমালোচনাও করেন তিনি।

সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের বাধা ব্যারিকেড তুলে নেয়ার পরেও খালেদা জিয়ার নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. ( অব.) মাহবুবুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, সরকার প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পথে সরকার বাধা সৃষ্টি করেছে। নিজেরা ভীত নড়বড়ে বলেই খালেদা জিয়াকে বের হতে না দিয়ে তার কার্যালয়ে দিনের পর দিন পুলিশি ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে, এখন আবার পুলিশি ব্যারিকেড তুলে নিয়ে নাটক শুরু করেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও অনেকবার বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকার নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে গিয়ে সারা দেশকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছিল। এখনো সেই ধারাই অব্যাহত রাখছে। তবে দাবি আদায় হওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান বলেন, অবরুদ্ধ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে কি পরিমাণ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তা আমি অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছি। তখন সরকারের শীতল মনোভাব কোথায় ছিল? একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলীয় প্রধানকে দিনরাত পুলিশি পাহারায় দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে; আর এখন পুলিশি পাহারা তুলে নিলেই কি আর না নিলেই বা কি? তাছাড়া খালেদা জিয়া নিজেই তো বলেছেন- তার কার্যালয়ে তিনি তো অবস্থান করতেই পারেন; তাই এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কোনো সুযোগ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমাদের দাবি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে একজন জনগণের সরকার গঠন। এ দাবি যতদিন পর্যন্ত আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলবে বলে খালেদা জিয়া আমাদের জানিয়েছেন। টানা অবরোধ কর্মসূচির পরও নমনীয় হয়নি সরকারের মনোভাব। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বের হলে গুলি করা হয়। সেই অবস্থায় কে কখন কোথায় অবস্থান করবে এটা ২০ দলীয় জোটের প্রধানই সিদ্ধান্ত নেবেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.