নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

পয়েন্ট অব নো রিটার্ন না ছ্যাঁচড়া একগুঁয়েমি?

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:৫৭

‘দেশ এখন কোন পথে যাচ্ছে?’,

‘সামনে আমাদের ভবিষ্যৎ কী?’,

‘সব পক্ষকেই পরমতসহিষ্ণুতা আর ধর্যের পরচিয় দিতে হবে’ টাইপ কথাবার্তা শুনলে এত কষ্টেও হাসি পায়, যদিও হাসি পাওয়ার বিষয়টা ঠিক এ মুহূর্তে অবিবেচনাপ্রসূত।



রাজনীতি এখন যে রকম ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্ন’-এ এসে দাঁড়িয়েছে সেখানে এ সব বাণী-টানি শুনতে কারো ভালো লাগবে না। লাগছেও না। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই পরীক্ষাকে সামনে রেখে দুই পক্ষ থেকেই অঙ্ক কষা চলছিল। জনসাধারণও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার অপেক্ষা করছিল। সাধারণ মানুষ যারা এই দুই দলের তথা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট আর বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের ভাগাভাগি সমর্থক তারা মনে করছিলেন এই পরীক্ষাটাই ইস্যু অব স্কেপ বা ইগো থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ। সেটা উভয় দলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সুযোগ ছিল, বিএনপি সেই যে জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখ থেকে টানা অবরোধ (জোরালো করতে এরই ভেতর এপিটাইজারের মতো হরতালও) করে আসছে, যা থেকে প্রাপ্তি শূন্য বরং অপ্রাপ্তিই বেশি, সেই অবরোধ বলয় থেকে বেরিয়ে আসবে। এবারকার মতো ‘ব্যর্থ’ কর্মসূচি ভুলে ফের পরেরবারের জন্য থিতু হবে। আবার বিএনপির অবরোধ পাত্তা না দিয়ে প্রায় ৪০ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুর ‘কারণ’ হওয়ার দশা থেকে আওয়ামী লীগও বেরিয়ে আসবে। এই পরীক্ষার সময়সূচিটি ছিল সে অর্থে স্কেপ স্পেস। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দুপক্ষের কেউই সেই সুযোগটি গ্রহণ করল না। অবরোধ-হরতাল আর তুড়ি মেরে এই কর্মসূচিকে উড়িয়ে দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তই পয়েন্ট অব নো রিটার্ন হয়ে ঝুলে রইল।

বিএনপির ক্ষমতালিপ্সু নেত্রী বা তার নিকটতম নেতারা না হয় ক্ষমতা হারানোর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতে করতে ‘উন্মাদপ্রায়’। তারা না হয় ৪০ জন তো কোন ছাড় প্রয়োজনে শত শত মানুষের লাশের বিনিময়েও ক্ষমতার মসনদে আসীন হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা না হয় দেশের মানুষকে তাদের বাপ-দাদার চাকর-বাকর বা গোলাম-ভৃত্য মনে করে তাদের জীবন নিয়ে ডুগডুগি খেলে। না হয় তারা রাজনীতির নামে চরম স্বেচ্ছাচারিতা করে করে হাত পাকিয়ে এখন রাক্ষসে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই বলে সেই দলটির বা জোটটির ভেতর কি বিবেকসম্পন্ন মানবিকতাসম্পন্ন কেউ নেই? কেউ নেই যে তাদের এই মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার বুদ্ধি দেবে? না, নেই। বিলকুল নেই। বরং উস্কে দেয়ার জন্য কলম-কিবোর্ড আর মাইক্রোফোন হাতে লাইনে আছে ডজন ডজন বুদ্ধিব্যাপারী।

আবার আওয়ামী লীগ এবং তার চারপাশে মৌমাছির মতো ভন ভন করছে যারা সেই মধুলোভী মৌমাছিরাও কি তাদের কমন ‘প্ল্যাটফরম’ আওয়ামী লীগকে বোঝাতে পেরেছে যে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা তাদেরই দিতে হবে। সেটা দেয়ার জন্য তারা দায়বদ্ধ। না। তারাও ওসব জটিলতায় না গিয়ে কিবোর্ড আর মাইক্রোফোন নিয়ে রেডি হয়ে আছেন কখন তাদের স্তুতিপাঠ করতে ডাকা হবে!

শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, নাগরিক অধিকার, মানবিক অধিকারকে সজোরে লাথি মেরে বিএনপির জোট এসএসসি পরীক্ষার দিন থেকে অবরোধসহ ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকে দিয়েছে। এই ৭২ ঘণ্টা হরতাল ডাকা হতে পারে এমন গুঞ্জনের ভেতর সরকারের তরফে হুমকি এসেছিল সরকার আরো কঠোর হবে। হুমকি এসেছিল সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও কিন্তু ওই সব হুমকিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট। সরকারও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিএনপি নেত্রীর গুলশান কার্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি, কেবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এতে করে আবার সো-কল্ড মধ্যপন্থীরা নাকি কান্না শুরু করেছে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন হয়েছে বলে! যদিও ওই নাকি কান্নাঅলারা ৪০ জন মানুষের মৃত্যুতে মৌলিক অধিকার ক্ষুণœ হয়েছে কি না তা বলেননি।

মধ্যপন্থী বা দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে বলে পরিচিত বুদ্ধিজীবীরা কেউ কেউ বলছেন, আওয়ামী লীগ তো শুভবুদ্ধির পরিচয় দিতে পারে! তারা কেন ক্ষমতা ছেড়ে দিচ্ছে না? তারা কেন ক্ষমতা ছেড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিচ্ছে না? তারা কেন গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিচ্ছে না?

আদতে তারা যে কথাটি বলছেন না বা বলতে পারছেন না তা মাত্র একটি লাইন! ওই একটি লাইনেই আটকে গেছে এ দেশের ভূত-ভবিষ্যৎ তথা রাজনীতি-অর্থনীতি। আর সেই লাইনটি হলো- আওয়ামী লীগ কেন আমাদের (বিএনপির) হাতে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছে না? এই একটি লাইনকে কখনো ইলাবরেট করে দশটি লাইন বানানো হচ্ছে কখনো এর সঙ্গে মশলা হিসেবে গণতন্ত্র মিশিয়ে পরিবেশন করা হচ্ছে। যেমন, ‘স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবরোধ চলবে।’

কিন্তু সহজ-সরল বিষয়গুলো এড়িয়ে গেলে কী করে হবে? সহজ বিষয় হলো বিএনপি-জামায়াত কোনো বিপ্লবী পার্টি নয়। তারা নির্বাচনের দল। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা বদলের রাজনীতি করে। তাই যদি হবে তাহলে কেন তারা নির্বাচনে অংশ নিল না? এখন নির্বাচনে না গিয়ে যে ভুল করেছে সেটা শুধরাতে নিজেরা আত্মহত্যা করলে সমস্যা ছিল না, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার অধিকার আপনাদের কে দিল? নির্বাচনে না গিয়ে নির্বাচিত দলকে ‘কেন ক্ষমতায় বসলি’ বলার সুযোগ আছে কি? ‘কেন ক্ষমতা ছাড়ছিস না’ বলারও তো সুযোগ নেই। তাহলে কেন বলছেন তারা? গায়ের জোরে নয় কি? নিশ্চয়ই গায়ের জোরে। এখন প্রশ্ন হলো সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে, ভোট দিয়ে, দেশের বিধিবদ্ধ নাগরিক হয়ে কেন সাধারণ মানুষ একটি ক্ষমতালিপ্সু জোটের গায়ের জোরের অত্যাচার-অনাচার ভোগ করবে? কেন? তারপরও আপনারা সরকারের বিরুদ্ধে হরতাল-অবরোধ করতেই পারেন। সেটা জনমত যাচাইয়ের ‘স্বীকৃত’ পদ্ধতি বটে। কিন্তু তা কিভাবে এবং কত দিন? সাত দিন? দশ দিন? তারপর? মাসের পর মাস? কেন? এই দিনের পর দিন হরতাল-অবরোধে সব কিছু অচল হলে সাধারণ মানুষ কী করে খাবে? তাদের জন্য তো আপনাদের মতো বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকার ফান্ড আসে না। তাদের জন্য তো বিদেশি প্রভুরা উদ্বিগ্ন হয় না। তাদের জন্য তো সরকার বা সমাজের এলিটদেরও কিছু যায়-আসে না। তাহলে তারা কি করে বাঁচবে? কেন তারা আপনাদের মরণখেলার ঘুঁটি হবে? কোন দৈব আজ্ঞা বলে আপনারা তাদের ঘুঁটি বানাচ্ছেন?

আমরা বলি কি- এসব বাদ দিন। জনমতকে পক্ষে রাখার জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি দিন। রাজনীতি করুন। রাজনীতির নামে বিকৃত তন্ত্র চাপিয়ে দেবেন না। নির্ধারিত সময় আসলে নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণের সমর্থন আদায় করুন। তাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে তখতে-তাউসে আসীন হয়ে স্বভাবসুলভ ছড়ি ঘোরান। কেউ ট্যাঁ-পোঁ করবে না। তা না করে দিনের পর দিন এই নৃশংসভাবে সাধারণ মানুষ পোড়ানো বন্ধ করুন। জাস্ট বন্ধ করুন। সাধারণ মানুষ আপনাদের বা সরকারি দলের কারোরই সম্পত্তি নয়। বরং তাদের ভোটে বা আস্কারায় আপনারা রাজা-উজির হয়ে সিংহাসনে বসে সম্রাটগিরি করেন। আর সেই প্রচলিত মাধ্যমে যদি ভরসা না থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে আপনাদের ভেতর থেকে ‘রাজনীতি’ হাওয়া হয়েছে। সেখানে এখন বিশেষ কারো এজেন্ডা চেপে বসেছে। তা থেকে বাঁচতে হলে কী করতে হবে তা কেউ কেউ ইতোমধ্যে অনলাইনের উন্মুক্ত মাধ্যমে বলে দিয়েছে। তেমনই একটি মন্তব্য এরকম :

‘বিএনপির রাজনীতিতে ফিরে আসার একমাত্র পথ তারেক রহমানকে দল থেকে বিযুক্ত করা। খালেদা জিয়া এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা যদি একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করেন তাহলে নিশ্চিতভাবেই অনুধাবন করতে পারবেন; বিএনপির রাজনৈতিক শত্রু আওয়ামী লীগ নয়, তারেক রহমান। আর তারেক রহমানের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের যেসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে তাতে ওয়াশিংটনের কোনো সরকারের পক্ষেই তাকে সমর্থন দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদেরও তারেকের ব্যাপারে অপছন্দ আছে। ঠিক একই রকম অভিযোগের কারণে পাকিস্তানের মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ হোসেন লন্ডনে নির্বাসিত। দলটি বনসাই হয়ে গেছে। পাকিস্তানের মতো এত বিশৃঙ্খল ও আইনের শাসনের অভাবগ্রস্ত একটি দেশে যেখানে আলতাফ প্রবেশ করতে পারেনি; সেখানে তারেকের বাংলাদেশে ফেরার প্রত্যাশা প্রায় শূন্য শতাংশ। এটাই বাস্তবতা। খালেদা জিয়া যদি একজন মা হিসেবে না ভেবে রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে চিন্তা করেন; বুঝতে পারবেন, বিএনপির পতনের কারণ তারেক রহমান। খালেদা জিয়া নিজেই রাজনীতিতে সক্রিয়; যদি একবার আপসহীনতা দেখিয়ে তারেক বর্জিত বিএনপির নবায়ন করতে পারেন; ফলাফল হবে খুবই ইতিবাচক; অনেক সৎ সিনিয়র নেতাই উনার কাছে চলে আসবে; জনগণও বলবে খালেদা জিয়া তারেকের মা নন; একজন সফল রাজনৈতিক নেত্রী।’



এটা তো মোটামুটি ভালো উপদেশ। স্বজন হারানো মানুষদের কেউ কেউ সরাসরি অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইছে। কেউ কেউ মনে করছে সরকার সত্যিকার অর্থে কঠোর হলে এতগুলো প্রাণহানি এড়ানো যেত। এবং অনেকেই মনে করছে বিদেশিদের রক্তচক্ষু কিংবা মতামতের তোয়াক্কা না করে সরকার কঠোর হাতে এসব বিশৃঙ্খলা, খুন-খারাবি বন্ধ না করলে বরং সরকারই দায়ী থাকবে প্রাণহানির জন্য। আজকে যে ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়া অনিশ্চিত হয়ে গেল তার দায় কে নেবে? সরকার, বিএনপি-জামায়াত কে? কেউ কি নেবে? সাধারণ অভিজ্ঞতায় বলে এর দায় কেউ নেবে না। এই পরীক্ষার্থীদের কেউ মারা গেলেও দুই পক্ষের কোনো পক্ষ দায় নেবে না। আবার পরীক্ষা দিতে না পেরে যে হাজার হাজার গরিবের সন্তানের শিক্ষাজীবন এখানেই শেষ হয়ে যাবে তাদের বেঁচে থাকার উপায় কী হবে? কী হবে তাদের ভবিষ্যৎ? সেই দায়টাও কেউ নেবে না। তাই যদি হয়, অর্থাৎ সরকার বা বিএনপি যদি দায় না নেয় তাহলে পরীক্ষা দিতে এসে প্রাণহানি ঘটলে এবং তার জন্য কোনো অভিভাবক আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত কাকে দায়ী করবে? জানতে বড় ইচ্ছে হয়, আদালতে কোন পক্ষ দায়ী হবে? আমরা এখনো নিশ্চিত নই। তবে যদি সত্যি সত্যি পরীক্ষা দিতে এসে কারো প্রাণহানি ঘটে, যদি কেউ আতঙ্কে পরীক্ষা হলে আসতে না পেরে শিক্ষা জীবন শেষ করে, যদি পরীক্ষা দিতে এসে তাণ্ডবের কারণে পরীক্ষা খারাপ হয়, যদি আগুনে বা বোমায় পরীক্ষা ভণ্ডুল হয় তাহলে সাধারণ নাগরিকরা বিনা দ্বিধায় আদালতে যাবেন। বিবাদী শুধু বিএনপি-জামায়াত, না তাদের সঙ্গে সরকারও- সেটা সময়ই বলে দেবে। সুত্র

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:০৪

নিলু বলেছেন: মান উন্নয়েনের পরিক্ষা হবে আবার , ধন্যবাদ

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:১২

তালপাতারসেপাই বলেছেন: নিলু ? মনে হচ্ছে লালু B-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.