নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্কুল ব্যাংকিং :সঞ্চয়ের নয়া দিগন্ত

০৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:১৯

স্কুল ব্যাংকিং হলো ছেলে-মেয়েদেরকে অর্থব্যবস্থাপনায় (Money Management) দক্ষতা বৃদ্ধি ও সঞ্চয় করার মনোভাব এবং অভ্যাস গড়ে তোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস। স্কুল ব্যাংকিং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে। কমনওয়লেথ স্কুল ব্যাংকিং, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে স্কুল ব্যাংকিং একটি জনপ্রিয় সঞ্চয় বৃদ্ধির উদ্যোগ হিসাবে বিবেচিত। কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে খরচ কমানোর মাধ্যমে সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তোলার নিমিত্তে এ ধরনের ব্যাংকিং এর শুরু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াসহ যেসব দেশে স্কুল ব্যাংকিং চালু রয়েছে সেসব দেশে সঞ্চয়ের হার অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক উচ্চহার বিদ্যমান। এই স্কুল ব্যাংকিং হিসাব থেকে দেখা যায়, পরবর্তীতে বড় ধরনের আমানত সঞ্চিত হয়, যা থেকে বাড়ি, গাড়ি, দোকান, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ এবং দৈবাত্/দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের পড়াশুনার খরচ মেটানো সম্ভব হয়। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও এই আমানতের একটি বড় অংশ নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারে। ব্যাংকগুলো সেজন্য স্কুল ব্যাংকিং স্কীমের আওতায় হিসাবধারীদের নানা রকম সুবিধা ও বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে। যেমন- ঐসকল হিসাব থেকে কোন চার্জ কর্তন না করা, কোন প্রারম্ভিক বা ন্যূনতম স্থিতির বাধ্যবাধকতা না রাখা, স্কুল কর্তৃপক্ষকে কিছু সুবিধা প্রদান করা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নামে খোলা ঐ সকল হিসাব তারা পূর্ণ বয়স প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিভাবকগণ দ্বারা পরিচালনা করার সুযোগ প্রদান ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে স্কুল ব্যাংকিং চালু করা হয়েছে। স্কুল ব্যাংকিং-এ যারা টার্গেট গ্রুপ ১১ থেকে ১৭ বছরের তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের কোন আয়ের উত্স নেই। তারা তাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদের নিকট হতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উত্সব, পার্বণে উপহার বা নগদ অর্থ পেয়ে থাকে অথবা নিয়মিতভাবে দুপুরের টিফিন বাবদ যে অর্থ পেয়ে থাকে তা থেকে কিছু কিছু অর্থ বাঁচিয়ে জমা রাখার নিমিত্তে স্কুল নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় একটি সেভিংস হিসাব খোলার উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করাই স্কুল ব্যাংকিং-এর উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা ছেলে বেলা থেকেই ব্যাংক হিসাব খোলার নিয়ম-কানুন, হিসাব পরিচালনায় দক্ষতা ও অভ্যাস গড়ে তুলতে পারদর্শী হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংকে জমা রেখে সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে তুলবে এবং নিয়মিত ব্যাংকে আসা-যাওয়া ও টাকা জমা উত্তোলন করতে করতে এক সময় দেখা যাবে সংশ্লিষ্টদের হিসেবে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা হয়েছে, যা টিফিনের পয়সায় বা গুরুজনদের দেয়া উপহারের বদৌলতে সম্ভব হয়েছে। আর এর মাধ্যমে সঞ্চয়ের যে অভ্যেস গড়ে উঠবে তা সারাজীবন সুফল দিবে।
স্কুল ব্যাংকিং-এর সুদূর প্রসারী সুফল ও বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। যারা স্কুল ব্যাংকিং-এর সুবিধা গ্রহণ করে নিজেদের নামে একটি সেভিংস ব্যাংক খুলবে এবং চলমান রাখবে তারা পরবর্তী সময়ে যে কলেজে ভর্তি হবে সে কলেজের নিকটবর্তী ব্যাংকের শাখায় তা স্থানান্তর করতে পারবে এবং নিজেদের শিক্ষা জীবন শেষে স্বীয় কর্মস্থলের নিকটের ব্যাংক শাখায় স্থানান্তর করতে পারবে এবং হিসাবে জমাকৃত অর্থ প্রয়োজনের সময় যে কোন কাজে বা ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে। পারিবারিক বা বৈবাহিক কারণে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশুনা থেকে দূরে সরে যাবে, তাদের জন্যও এ হিসাবটি কাজে আসবে অর্থাত্ হিসাবটি তাদের বাসস্থানের নিকটের ব্যাংকে স্থানান্তর করে লেনদেন অব্যাহত রাখতে পারবে।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জন্য স্কুল ব্যাংকিং-এর আমানত মূলত একটি দীর্ঘস্থায়ী আমানত— যা স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগযোগ্য। কাজেই ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে এ কর্মসূচি গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করার নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন। একজন সজ্জন কর্মকর্তাকে এ কাজে নিয়োজিতকরণ এবং প্রতিটি শাখায় একটি করে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা ডেস্ক স্থাপন করা যেতে পারে, যাতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী এসে বিড়ম্বনাহীনভাবে সহজেই অল্প সময়ে হিসাব খোলতে পারে।
স্কুল ব্যাংকিং একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ব্যাংকিং ব্যবস্থা। দেশের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে হিসাব খোলার আগ্রহ সৃষ্টি করাই ব্যাংকারদের অন্যতম কাজ। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং ক্ষেত্র হলো স্কুল/কলেজ। স্কুল ব্যাংকিং এ আগ্রহ সৃষ্টির জন্য হিসাবধারী ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু সুবিধা দেয়া যেতে পারে। যার অন্যতম হলো শিক্ষাবৃত্তি, অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পরিবারে আর্থিক সঙ্গতি থাকে না বা যে কোন পারিবারিক/সড়ক দুর্ঘটনার/পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যের উপার্জন হ্রাস পাওয়া বা চাকরিজীবনের বিপর্যয় বা অবসরগ্রহণ ইত্যাদি কারণে আর্থিক অসচ্ছলতা হঠাত্ করে দেখা দিতে পারে সেজন্য যেন স্কুল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে খোলা হিসাবধারী ছাত্র-ছাত্রীকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে এমন ঘোষণা দেয়া যায় এবং আগ্রহী ও নিডি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্টাডি লোন চালুকরণ করা যায়, যা তারা পরবর্তীতে ছাত্র জীবন শেষে কর্মজীবনের প্রথমেই ফেরত প্রদান করবে। অবশেষে বলা যায়, স্কুল ব্যাংকিং একটি অতি সম্ভাবনাময়, স্থায়ী আমানত সংগ্রহ স্কীম।
সুত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:০৩

আমার বাংলাদেশ স্বাধীন বলেছেন: ভালো উদ্যোগ..................।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.