নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

অযথা আন্দোলনের চেয়ে যথার্থ নির্বাচন ভালো

২২ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:০৯

বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি এবং জনসমর্থনের চিত্রটির যে রূপ, এতে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো কৌশল হবে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ভেতরে থেকে যে কোনো নির্বাচনকে কাজে লাগানো। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনসহ নাগরিক সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা ও কল্যাণকর নেতৃত্ব দিয়ে দলীয় অবস্থান মজবুত রাখতে পারে। সব দিক বিবেচনা করে আমরা এই সময়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাব।
রাজনীতিতে এখন একক খেলোয়াড় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশে পূর্ণ সহযোগিতায় পাচ্ছেন সরকারি বাহিনী ও প্রশাসনযন্ত্রকে। রাষ্ট্র যখন সর্বশক্তি নিয়ে প্রতিবাদ দমনে ও দলনে নামে তখন নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালানো কঠিন। বিএনপি বর্তমানে রাষ্ট্রশক্তির প্রচ- চাপের মধ্যে রয়েছে।
কিন্তু আন্দোলনের সূচনাতেই প্রধান বিরোধী দল পেট্রলবোমা ও নাশকতার পথ ধরায় সরকারের পক্ষে প্রতিরোধের সর্বশক্তি নিয়োগের সুযোগ মিলে গেছে। আড়াই মাসের আন্দোলনের ঝড়ঝাপ্টার পুরোটাই গেছে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর দিয়ে। আর বিপরীতে সরকার দগ্ধ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, তাদের চিকিৎসা এবং তাৎক্ষণিক আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে বিএনপি-জামায়াতকে রাজনীতির খলনায়ক বানানোর সুযোগ পেয়েছে। এ আন্দোলন বিএনপির গলায় ফাঁস হয়ে চেপে বসেছে।
ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ঘোষণা রাজনৈতিক চাল হিসেবে ভালো হয়েছে বলা যায়। বিএনপি এ নির্বাচন তিনটিতে অংশগ্রহণে সিদ্ধান্ত নিয়ে আপাতত সরকারি চাপ থেকে মুক্তি পাবে, জনগণও তথাকথিত আন্দোলন থেকে নিস্তার পাবে এবং আওয়ামী লীগও সংগঠনকে সক্রিয় করতে পারবে।
মনে হয় সরকারের লক্ষ্য দুটিÑ বিএনপিকে যুগপৎ আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনা এবং জামায়াতের বন্ধন থেকে মুক্ত রাখা। রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রচ- চাপ এবং মেয়র নির্বাচন প্রথমোক্ত ক্ষেত্রে কাজ করবে বলে মনে হয় আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে সম্ভবত আন্তর্জাতিক মনোভাবও সহায় হবে। তাছাড়া ৫ জানুয়ারি-পরবর্তী পাঁচটি মেয়র নির্বাচনেই বিএনপি প্রার্থীরা এককভাবে লড়ে ভালোভাবেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। আমভোটারদের এই মনোভাবটা বিএনপি নেতৃত্বের মনে রাখা উচিত। এমনকি ক্ষমতায় ফিরে আসার কৌশল হিসেবে তাদের উচিত হবে রাজপথের আন্দোলনের চেয়েও যে কোনো নির্বাচনকে নিজেদের শক্তি ও জনসমর্থনের প্রমাণ দেওয়ার জন্য কাজে লাগানো। এটাই হওয়া উচিত দলের কৌশল। তবে এটা ঠিক, গত আড়াই মাসের আন্দোলনে ১২৩ জনের প্রাণ গেছে, যার মধ্যে ৬৭ জন পেট্রলবোমা ও আগুনের শিকার। আগুন ও ভাংচুরের কারণে প্রায় ১৪০০ যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা। এ আন্দোলনে ঢাকার বাইরে মফস্বলে হয়তো গাড়ি কম চলছে কিন্তু তাতে কলকারখানা বন্ধ হয়নি, বাজারে সরবরাহ ঠিকই ছিল। এমনকি বিএনপি নেতাদের মালিকানাধীন কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস সচল ছিল। অবরোধ-হরতালের মধ্যে তারাও অফিস করেছেন এবং অনেকেই ব্যক্তিগত গাড়িও ব্যবহার করেছেন। এখানেই বিএনপি নেতাদের বোঝা উচিত ছিল, যে আন্দোলন নিজ দলের নেতাকর্মীরাই মানতে পারছেন না, তা জনগণ কীভাবে মানবেন? তাছাড়া আন্দোলনের লক্ষ্য সম্পর্কে জনমনে কোনো ভাবাবেগ তৈরি হয়নি। মানুষ অনিশ্চিত ভয়াবহতার আতঙ্কে দিন কাটাতে চায় না। চেয়েছে পেট্রলবোমা ও নাশকতার আশঙ্কামুক্ত জীবন। আপাতত মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাতেই জনগণ খুশি হবে।
তবে আড়াই মাসের ব্যর্থ ও অর্থহীন কিন্তু যন্ত্রণাদায়ক আন্দোলনের খেসারত কে দেবে? প্রথম বলি হবে রাজনীতি, মানুষ বিশেষত তরুণ সমাজ আরও বেশি করে রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়বে। রাজনীতিবিদদের ভাবমূর্তি সাধারণভাবে কমে যাবে। আজকের দিনে রাজনীতিবিদ মানেই বিত্তবান এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তি বলে সাধারণ মানুষ বাঙালি সমাজের ঐতিহ্য অনুযায়ী তাদের স্তাবকতা করবে বটে, কিন্তু তার বহর কমবে এবং আন্তরিকতায়ও ঘাটতি থাকবে।
এই নির্বাচনের সূচনা থেকে একটা লম্বা সময় পাওয়া যাবে বলে মনে হয়। কেননা তিনটি নির্বাচন শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে রোজা। এ সময় রাজপথে আন্দোলন চলবে না। এরপর সম্ভবত সরকার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের দিকে যেতে চাইবে। ফলে আগামী শীতের আগে আবার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তা বলার সুযোগ তৈরি হবে না। নির্বাচনী রাজনীতির হালচাল দেখে বলা সহজ যে, বিএনপির পক্ষে জনসমর্থন কম নেই। তারা দেশের মোট ভোটারের ৩৫-৪০ ভাগের সমর্থন পেয়ে থাকে। সাধারণত ওপরের দিকে অর্থাৎ ৪০ ভাগের কাছাকাছি বা বেশি ভোট পেলে নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত হয়। তবুও জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তারা জামায়াতকে সঙ্গে রাখতে চায়। তাদের ভোট শতকরা ১০-১২ ভাগ। প্রকাশ্য জোট না হলেও এ ভোট তারা পাবে। এ চিত্রটি বিএনপির জন্য বেশ স্বস্তিদায়ক। কিন্তু মুশকিল হলো তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা। দলে অনেক নেতা আছেন, লেখাপড়া জানা মানুষজনের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু মনে হয় দুটি বড় ঘাটতি তাদের সামলাতে হচ্ছে। বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের একক-যৌথ নেতৃত্বেই দল চলছে, অথচ দেখা যাচ্ছে দুজনের কেউই ভালো কৌশলবিদ নন, সময়োচিত কৌশলী চাল যেমন তারা দিতে পারেননি, তেমনি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত কুশলী চাল মোকাবেলা করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। দেখা গেছে, প্রতিবারই সরকার যথেষ্ট চাপের মধ্যে পড়েও এবং তাদের অবস্থানের যৌক্তিক ভিত্তি দুর্বল থাকা সত্ত্বেও বুদ্ধিদীপ্ত চাল দিয়ে ঠিকই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। বারবার এ ঘটনা ঘটার কারণ হলো তারেক বা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পদক্ষেপ আসছে মূলত জেদের বশবর্তী হয়ে। তাতে দল ও নেতাকর্মীরা বিশেষ সুফল ছাড়াই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, দলীয় রাজনীতিরও কোনো লাভ হচ্ছে না।
বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি এবং জনসমর্থনের চিত্রটির যে রূপ, এতে তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো কৌশল হবে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ভেতরে থেকে যে কোনো নির্বাচনকে কাজে লাগানো। বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনসহ নাগরিক সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা ও কল্যাণকর নেতৃত্ব দিয়ে দলীয় অবস্থান মজবুত রাখতে পারে।

সব দিক বিবেচনা করে আমরা এই সময়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাব।
সুত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:১৭

আমার বাংলাদেশ স্বাধীন বলেছেন: আন্দোলনটাই তো যথার্থ নির্বাচনের জন্য :((

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.