নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
বাংলাদেশের পর্যটন উন্নয়নে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে একটি হচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার এবং কুয়াকাটায় ট্যুরিস্ট পুলিশের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঢাকার পথে হয়তো লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ’ উৎকীর্ণ দুয়েকটি গাড়ি চলছে। একজন ডিআইজির নেতৃত্বে এরই মধ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ যাত্রা শুরু করেছে। বাংলাদেশ পুলিশের ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ’ নামক এ শাখাটি যে উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ট্যুরিস্ট পুলিশের এ যাত্রাকে সাধুবাদ জানাই।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাতের সঙ্গে পর্যটন শিল্প একটি বিশেষ সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানসহ অন্যান্য সেবা প্রদানে ট্যুরিস্ট পুলিশ ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশে পর্যটক আগমনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৩ সালে প্রায় ৫ লাখের বেশি পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছে। অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণ পুলিশ দ্বারা এত অধিক সংখ্যক পর্যটককে নিরাপত্তা প্রদান সম্ভব নয়। এছাড়া সাধারণ পুলিশ দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ২৪ ঘণ্টাই ব্যস্ত থাকে। সুতরাং ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম পুলিশের অন্যান্য শাখা থেকে ভিন্নধর্মী এবং স্পেশালাইজড হওয়ায় এদের দরকার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং যথাযথ ট্যুরিজম ওরিয়েন্টেশন।
ট্যুরিস্ট পুলিশকে সর্বদাই সেবা প্রদানের মানসিকতাকে লালন করতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সর্বোত্তম নিরাপত্তা বিধান মানে হচ্ছে বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণীয় স্থানে, গন্তব্যে, পর্যটন ট্রেইলসহ অন্যান্য স্থানে পর্যটকদের সব ধরনের দুর্ঘটনা, ছিনতাই, রাহাজানি, হয়রানি এবং বিভিন্ন উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক করা। এজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশদের পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট সব ট্যুর অপারেটর, হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট মালিক, রিসোর্ট মালিক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় পর্যটন গন্তব্যে ডিউটি করলে অনেক সময় পর্যটকরা বিশেষ করে বিদেশি পর্যটকরা আতঙ্কিত হতে পারেন। এজন্য সাদা পোশাকে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিউটি পর্যটকদের কাছে কাম্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাম করা পর্যটন গন্তব্যে ট্যুরিস্ট পুলিশরা সাদা পোশাকে ডিউটি করে থাকে। ট্যুরিস্ট পুলিশের অগ্রযাত্রা এবং সাফল্য নির্ভর করবে দেশে আগত পর্যটকদের অবিরত গুণগত সেবা প্রদানের ওপর। ট্যুরিস্ট পুলিশের খেয়াল রাখতে হবে যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে কোনো পর্যটক বিরক্তি কিংবা হয়রানির শিকার না হন। পর্যটক দম্পতি কিংবা পর্যটক পরিবার যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, তাদের প্রাইভেসি রক্ষা হয় সেদিকে সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে।
পর্যটকদের যত বেশি বিনয়ী এবং বন্ধুসুলভ সেবা দেয়া যাবে তত বেশি পর্যটক এদেশে আসবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যদের এই মানসিকতাকে লালন করতে হবে। পর্যটন হচ্ছে একটি ভঙ্গুর শিল্প। একবার কোনো পর্যটক কোনো আচরণে কিংবা সেবায় অসন্তুষ্ট হলে তিনি আর কখনোই বেড়াতে আসবেন না। সে পর্যটক তার অসন্তুষ্টির কথা আরেকজনকে বলবেন। এভাবে অনেক লোকের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে পড়বে। এতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের ক্ষতি হতে পারে। এজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটকদের ভেতর মিশে যেতে হবে। পর্যটকরা টের পাবেন না যে, পুলিশ তাদের নিরাপত্তায় ডিউটি দিচ্ছে। এতে পর্যটকরাও অশ্বস্তিতে পড়বেন না। আবার পর্যটকদের প্রাইভেসি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে ট্যুরিস্ট পুলিশদের। এজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেহেতু টুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশ পুলিশের একটি নবগঠিত শাখা, এদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এছাড়া প্রতিদিনই তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিখতে হবে। পর্যটন শিল্পে জড়িত সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করাটাই হবে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি উত্তম পন্থা।
ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটকদের সেবা প্রদানে উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য সর্বদাই আন্তর্জাতিক পর্যটকদের রুচি এবং চাহিদা সম্পর্কেও অবহিত হতে হবে। এজন্য পর্যটন শিল্পের ওপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর অফার দিয়ে থাকে, সেসব কোর্সের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে। কারণ ট্যুরিস্ট পুলিশকে প্রয়োজনে গাইড হতে হবে, প্রয়োজনবোধে ইন্টারপ্রিটার, রেসকিউয়ার কিংবা সিনিয়র পর্যটক বা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সাথী হতে হবে ।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের হিসাব মতে, সারা দেশে ৮০০-এর অধিক পর্যটন আকর্ষণ রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ২০টির মতো রয়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অধিক জনপ্রিয় কিংবা বলা যায় ল্যান্ডমার্ক পর্যটন প্রোডাক্টস। শুধু কক্সবাজারে প্রতি বছর ১৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে। অভ্যন্তরীণ ৬০ লাখ পর্যটকের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। পর্যটন যেহেতু একটি বহুমাত্রিক শিল্প, এর পরিধি এবং বিস্তারও বেশি। চীনের এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, পর্যটন শিল্পের সঙ্গে প্রায় ৮০টি সেক্টর জড়িত। পর্যটন শিল্প যেহেতু একটি দেশের ব্যাপক কর্মসংস্থান ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেহেতু ট্যুরিস্ট পুলিশের এসব বিষয়ে গভীর মনোনিবেশ করতে হবে।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নবগঠিত ট্যুরিস্ট পুলিশ বর্তমানে জরুরিভিত্তিতে যেসব ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি, তা এখানে একটু নিম্নরূপভাবে উল্লেখ করা যায়।
১. বাংলাদেশের পর্যটন সম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা; ২. প্রত্নবস্তু চুরি রোধ করা; ৩. বাংলাদেশের পর্যটন আকর্ষণীয় এলাকায় মাস্তান এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিহত করা; ৪. সাদা পোশাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধান করা, পোশাক পরা অবস্থায় ডিউটি যতটুকু সম্ভব পরিহার করা; ৫. পাহাড়ি এবং সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করা; ৬. সংরক্ষিত পর্যটন অঞ্চলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো; ৭. হরতাল এবং ধর্মঘটে পর্যটক পরিবাহী গাড়িতে এসকট প্রদান করা; ৮. সংরক্ষিত বা গ্রামীণ এলাকায় যেসব পর্যটন কেন্দ্র আছে সেখানে নিরাপত্তা বিধান করা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বর্তমানে যে গতিতে এগুচ্ছে, আশা করা যায় আগামী ২০২০ সাল নাগাদ এ শিল্পের মাধ্যমে দেশে একটি বিশাল পরিবর্তন আসবে। আর এ বিশাল পরিবর্তনে ট্যুরিস্ট পুলিশের অবদান থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
http://www.alokitobangladesh.com/editorial/2015/04/10/132257#sthash.cphIuAkE.dpuf
২| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩১
নতুন বলেছেন: ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটকদের সেবা প্রদানে উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য সর্বদাই আন্তর্জাতিক পর্যটকদের রুচি এবং চাহিদা সম্পর্কেও অবহিত হতে হবে। এজন্য পর্যটন শিল্পের ওপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যে প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর অফার দিয়ে থাকে, সেসব কোর্সের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে। কারণ ট্যুরিস্ট পুলিশকে প্রয়োজনে গাইড হতে হবে, প্রয়োজনবোধে ইন্টারপ্রিটার, রেসকিউয়ার কিংবা সিনিয়র পর্যটক বা শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সাথী হতে হবে ।
উপরের বিষয় গুলি নিশ্চিত না করা গেলে এই পুলিশের ডিপাটমেন্ট নতুন বিষফোড়া হয়ে দাড়াবে...
প্রথমে ডিআইজি এর পরে প্রতিটি সদস্যকে হসপিটালিটি ইনড্রস্টির রিলেটেড ট্রেনিং গুলি দিতে হবে...
দেশে অনেক প্রতিস্টান আছে....তারা অবশ্যই খুব ভাল একটা ধারনা দিতে পারবে....
আর এই ব্যাপারে বাইরের দেশে চাকুরী করছেন তেমন অনেক প্রবাশি বাংলাদেশি আছেন যাদের সাহাজ্য নিতে পারে.... তারাও সানান্দে দেশের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যাপারে সাহাজ্য করবে....
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:১৬
ছাসা ডোনার বলেছেন: একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, আমাদের পাশেই মালদীপ মুসলিম দেশ অথচ টুরিজম দিয়েই তাদের দেশ কত উন্নত। কেন ওখানে তো জামাত শিবির জেমবির মত ধ্বংসাত্বক এইসব পার্টি নাই। সেখানে কি ইসলাম ধর্মকে কেউ মানে না? আসুন না আমরাও আমাদের দেশটাকে টুরিজমের দিক থেকে উন্নত দেশে পরিনত করি, সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকদের আসতে উতসাহিত করি। এতে করে বিদেশে কাজ করে আমাদের লোকজন যে রেমিট্যান্স আনতেছে তার চেয়েও বেশী বিদেশীমূদ্রা আমাদের দেশ অর্জন করতে সখ্খম হবে।