নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় পলাতক ৬ যুদ্ধাপরাধীকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের মধ্যে ৪ জন বিদেশে পালিয়ে আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে ২ জনের অবস্থান সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই ৬ পলাতক যুদ্ধাপরাধী হলেনÑ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আলবদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মঈনুদ্দীন, সৈয়দ মো. হাসান আলী ওরফে হাছেন আলী, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার এবং ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র ও বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন।
পলাতকদের অবস্থান, বিদেশে থাকলে তাদের কোন উপায়ে অতিদ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, দেশে পলাতকদের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে তদারকি করতে গত বছর একটি মনিটরিং সেল গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই সেল আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আলবদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মঈনুদ্দীন এবং বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন কোন দেশে অবস্থান করছেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্র্তা জানান, বিদেশে পলাতকদের দেশে ফেরাতে নানামুখী চেষ্টা চলছে। যাদের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি, তাদের অবস্থান জানতে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থা।
একাত্তরে ১৮ বুদ্ধিজীবীকে হত্যার দায়ে দুই আলবদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মঈনুদ্দীনকে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদ- দেন। তাদের মধ্যে চৌধুরী মঈনুদ্দীন বর্তমানে যুক্তরাজ্যে পলাতক জীবনযাপন করছেন। অন্যদিকে আশরাফুজ্জামান খান আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। চৌধুরী মঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে বসে বাংলাদেশবিরোধী নানা কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন বলে তথ্য রয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। কয়েক মাস আগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়। দুজনের বিরুদ্ধেই ইন্টারপোলের রেড নোটিশ ইস্যু রয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বহিঃসমর্পণ চুক্তি রয়েছে। এর আওতায় চৌধুরী মঈনুদ্দীনকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চলছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বহিঃসমর্পণ চুক্তি না থাকায় আশরাফুজ্জামানকে দেশে ফেরানো নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা। তার পরও তাকে দেশে ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে একটি গোয়েন্দা সংস্থা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা এক গোপন প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাজ্যের কোন ঠিকানায় চৌধুরী মঈনুদ্দীন অবস্থান করছেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার অবস্থান সম্পর্কে জানতে অনুসন্ধান চলছে।
তবে একটি সূত্র জানায়, চৌধুরী মঈনুদ্দীনের অবস্থান সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার ওয়াকিবহাল। কিন্তু দেশটির সরকার তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে আগ্রহী নয়। তাকে যেন হস্তান্তর করা না হয়, এ জন্য ব্রিটিশ সরকারের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে জামায়াতের লবিইস্ট গ্রুপ।
একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারকে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদ- দেন। এর কয়েক মাস আগেই দেশ ছেড়ে পালান এই যুদ্ধাপরাধী। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ভারত হয়ে বাচ্চু রাজাকার পাকিস্তানে গেছেন। বর্তমানে তিনি পাকিস্তানেই আছেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রসিকিউশন গত বছরের ২১ আগস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার কমান্ডার সৈয়দ মো. হাসান আলী ওরফে হাছেন আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে। এই যুদ্ধাপরাধীও পলাতক। এ ছাড়া পলাতক রয়েছেন ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র ও বিএনপি নেতা জাহিদ হোসেন খোকন। গত বছর নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদ- দেন। আরেক যুদ্ধাপরাধী জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারও গ্রেপ্তার এড়াতে পলাতক। গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাইব্যুনাল তাকে আমৃত্যু কারাদ-ে দ-িত করেন।
জাহিদ হোসেন খোকন, সৈয়দ মো. হাসান আলী ও আবদুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের অবস্থান সম্পর্কে জানতে গত বছর সেপ্টেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়। এরপর দীর্ঘ অনুসন্ধান চালিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, জাহিদ হোসেন খোকন সুইডেনে আছে। ইন্টারপোল থেকে তার অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোল শাখাকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সুইডিশ সরকারের প্রসিকিউশন শাখার পাবলিক প্রসিকিউটর ম্যারি লিন্ড থমসিন এক চিঠিতে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্টারপোল শাখাকে জাহিদ হোসেন খোকনকে বাংলাদেশে হস্তান্তরের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
সুত্র
©somewhere in net ltd.