![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বিনোদন সাংবাদিক। দেশের একটি স্বনামধন্য দৈনিকে কাজ করছি..
'লাভগুরু' সম্বন্ধে দেশের তরুণ-তরুণীদের নিকট অজানা কিছু নেই। প্রতি বৃহস্পতিবার মানেই ভালোবাসার আড্ডা আর সাথে আছেন লাভগুরু। জনপ্রিয়তার কারণে ভালোবাসা ও লাভগুরু অনেকটাই সমার্থক শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে। লাভগুরু, যিনি ভালোবাসার নানা তত্ত্ব ও তথ্য নিয়ে হাজির হন শ্রোতাদের মাঝে। ভালোবাসার নানা সমস্যাগুলো যিনি চিহ্নিত করেন নিজের উপলব্ধি দিয়ে। রেডিও আমার ৮৮.৪ এফএম-এর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান 'আমার ভালোবাসা' এগিয়ে গেছে সাধারণ মানুষের অসাধারণ ভালোবাসার গল্পগুলো নিয়ে। লাভগুরুর সাথে রয়েছেন তার দুই সারথি, যারা শ্রোতাদের এসএমএস-এ প্রাপ্ত মতামতগুলো তুলে ধরেন লাভগুরুর কাছে। এবং সারাক্ষণই মেতে থাকেন খুনসুটিতে। তাই আমাদের এবারের আয়োজন 'লাভগুরু' খ্যাত সাংবাদিক ও উপস্থাপক তামিম হাসান ও তার দুই সারথী আরজে টুটুল ও আরজে শিমুকে নিয়ে। তাদের সঙ্গে একটি জমপেশ আড্ডার গল্প নিয়ে লিখেছেন রিয়াদ খন্দকার
'ভালোবাসা আমি তোমাকে নিয়েই সবচেয়ে বেশি বিব্রত আজ, তোমাকে নিয়েই এমন আহত, এত অপরাধী, এত অসহায়! তোমাকে নিয়েই পালিয়ে বেড়াই তোমাকে নিয়েই ব্যাকুল ফেরারী' মহাদেব সাহার কবিতার লাইনগুলো যেন আমাদের জীবনেরই একটি ভিন্ন প্রতিচ্ছবি। ভালোবাসা ভালো থাকার মূল উপাদান হলেও ভালোবাসাই অনেক সময় হয়ে উঠে আগ্রাসী। আবার অনেক সময় ভালোবাসার মূল পুঁথিপাঠও হয়ে যায় মিথ্যা। নানা কথা নানা কাণ্ড নিয়ে গড়ে উঠে একেকটি ভালোবাসার গল্প। যা একজন মানুষের কাছে অনেক যত্নের স্মৃতি। আর এই গল্পগুলো নিয়েই যাদের কাজকারবার তারাই এবার জমিয়েছেন এই আড্ডা, ছিলেন লাভগুরু ও তার দুই সারথী আরজে টুটুল ও আরজে শিমু। প্রথমেই প্রশ্ন ছিল গুরু ভালোবাসা কারে কয়? বরাবরই সহজ উত্তরে লাভগুরু বলেন, 'ভালোবাসার রঙের মধ্যে কোনো এক অদৃশ্য প্রবল আকর্ষণী শক্তি থাকে, যেটার সামনে সব যুক্তি একেবারে ভ্যানিশ হয়ে যায়। একেবারেই অজানা, অচেনা, অদেখা কাউকে হঠাত্ করে মন দিয়ে ফেলার ঘটনাও আমাদের চোখের সামনেই ঘটে। এখানে যৌক্তিক-অযৌক্তিক ব্যাপারগুলোকে একটু পাশ কাটিয়ে দেখলে বুঝা যাবে ভালোবাসা নিতান্তই মনের খেলা। আমার মতে ভালোবাসা কোনো স্থান-কাল-পাত্রভেদে হয় না, অনেকটাই নিজের মাঝে ধারণ করা প্রিয় মানুষের প্রতিচ্ছবি। এখানে সুখের সাথে সাথে দুঃখও থাকবে। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে এই দুঃখগুলোও মাঝে মাঝে সুখস্মৃতিতে রূপ নেয়। এটাই ভালোবাসা।' তার কথার রেশ ধরে আরজে শিমু তার চটপটে উত্তরে বলেন, 'আমার মতে ভালোবাসা নির্দিষ্টতায় আটকে রাখার বিষয় নয়, এটা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়াই হচ্ছে মূল ভালোবাসা।' আর আরজে টুটুল বললেন, 'প্রতিটি মানুষের পেশা ভিন্ন হতে পারে, মানসিকতা ভিন্ন হতে পারে, রুচি থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু প্রতিটি মানুষের মাঝে ভালোবাসা বর্তমান। কেননা মানুষমাত্রই ভালোবাসায় শুরু। তাই প্রতিটি মানুষই বিশেষ একজনের কাছেই তার এই একান্ত অনুভূতিগুলো প্রকাশ করে।' 'আমার ভালোবাসা' প্রোগ্রামটি সম্পর্কে লাভগুরু বলেন, 'এই প্রোগ্রামে যারা অতিথি হয়ে আসেন তারা যে শুধু নিজেদের ভালোবাসার গল্পটিই বলেন তা কিন্তু নয়, তার গল্পটির অনেক উপাদানই শ্রোতাদের জীবনের গল্পগুলোর সাথে মিলে যায়। আমরা সাধারণত গল্পের ওই অংশগুলোকে উপজীব্য করে তার সমাধানের চেষ্টাটা করি, যা পৌঁছে যায় শ্রোতাদের কাছেই। জীবনযাপনে ভুল হবে এটাই স্বাভাবিক তবে কেউ যেন এই ভুলের বোঝাটা টেনে নিয়ে জীবনযাপন না করে, সেখান থেকে শুধু শিক্ষাটা গ্রহণ করে বাকি আক্ষেপটা যেন ঝেড়ে ফেলে নতুন আনন্দে মেতে উঠে তারই একটি প্রচেষ্টা চলে 'আমার ভালোবাসায়'।' রাত ১০টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী 'আমার ভালোবাসা' প্রোগ্রামে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার এসএমএস এসে জমা পড়ে তা থেকে সহজেই অনুমেয় যে এর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে, এখানে হটসিটের অতিথি নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি কেমন? এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছিলাম প্রোগ্রামটির প্রোডিউসার ও আরজে টুটুল বলেন, 'আমার আর শিমুর মূলত কাজ হচ্ছে শ্রোতাদের এসএমএসগুলো থেকে নির্বাচিত এসএমএসগুলো লাভগুরুকে পৌঁছে দেওয়া। তারপর লাভগুরু গল্পটিকে সামারাইজ করে এর উপসংহার দেন। এত এসএমএসের মাঝে নির্বাচিত ১০ থেকে ১২টি নিয়ে এসএমএসকারী শ্রোতার সাথে আমরা যোগাযোগ করি তাদের গল্পটি শুনি। সেখান থেকেই লাভ গুরুর নির্বাচিত ঘটনাটি আমরা শ্রোতাদের জন্য তুলে ধরি।' অনেকেই মনে করেন এই অতিথিদের দিয়ে বানানো গল্প বলানো হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে—এ সম্পর্কে টুটুল বলেন, 'আমাদের কাছে অনেকেই বলেন, 'ভাইয়া আজকের গল্পটায় খুব বেশি মজা পাইনি' যদি আমরাই গল্পটি ঠিক করে দিতাম তাহলে তো আমরা চাইতাম প্রতিদিন চমত্কার সব গল্প এখানে সাজাতে। এখানে দর্শকদের নিজেদের গল্পগুলোই উঠে আসে।' টুটুলের কথা টেনেই শিমু বলেন, 'অনেক অতিথিই আছেন যারা গল্প বলার সময় কিছুটা মিথ্যার আশ্রয় নেয়, তা আমরা বুঝি কিন্তু লাইভ প্রোগ্রামে সেভাবে তাকে বলতে পারি না, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে এই প্রোগ্রামটির সাথে শ্রোতারা এত বেশি জড়িয়ে থাকে যে তারা সাথে সাথে তার ফিডব্যাক দেয়। কোনো এক প্রোগ্রামে এক অতিথি বলে বসেন যে তিনি ঢাকা কলেজের কোনো একটি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তার তথ্যে ভুল ছিল। তাই শ্রোতারা সাথে সাথে ফিডব্যাক দেন যে, ঢাকা কলেজে ওই নামে কোনো বিষয়ই নেই। এতেই বোঝা যায় প্রোগ্রামের স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে শ্রোতাদের অংশগ্রহণ স্বতস্ফূর্ত।' লাভগুরুর সাথে দুই সারথী আরজে টুটুল ও শিমুকে নিয়েও শ্রোতাদের মাঝে রয়েছে বেশ কৌতূহল, অনেকে তাদের প্রণয়জুটি হিসেবে দেখলেও বাস্তবে তা নয়। তবে পুরো অনুষ্ঠানজুড়েই তাদের নানা খুনসুটিই সময়টাকে আরও মজাদার করে তোলে। মূলত শ্রোতারা অনুষ্ঠানটি এত শুনে যে সকলের মনে আমাদের নিয়ে একটি ভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে।'
সবশেষে লাভগুরু পাঠকের উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথাই বলেন, 'পরস্পরকে বুঝুন আর ভালোবাসার মাঝে থাকুন, দেখবেন ছোট্ট জীবনটা কত আনন্দময়।' সেই কথা ধরেই ভালোবাসা নিয়ে আমাদের আড্ডার সমাপ্তি ঘটে।
©somewhere in net ltd.