নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শঙ্কাপ্রেম

মেহেদী হাসান তামিম

কবিতা ব্যক্তিগত মত নয়, বেদনাঘাত বা আনন্দৌন্মুখতা হতে যে উচ্চারণ বেরিয়ে আসে তাই কবিতা। -কাহলিল জিব্রান

মেহেদী হাসান তামিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধ্রুপদ সাহিত্য - ট্রাফিকজ্যাম

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৫

সময়: দুপুর ১১.৫৬
স্থান : প্রভাতী পাবলিক বাস
এয়ারপোর্ট গোল চত্বর

চরিত্র:

১) কুদ্দুস :
বয়স ২২ এর বেশী নয়। পড়াশোনা পঞ্চম শ্রেণী পাস। কিছুদিন হলো গাজীপুর BRTC তে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দিয়ে লাইসেন্স নিয়েছে। রিটেন পরীক্ষায় পাস করেছিল একেক প্রশ্নে চারটা উত্তরের একেকবার একেকটা থেকে উবু ১০ ২০ ৩০ ৪০ গুনে যেখানে গিয়ে ১০০ তে ঠেকত সেই ঘরে গাঢ় করে বৃত্ত ভরাট করে। মালিকের নির্দেশমতো ৫০ টা প্রশ্নের মধ্যে গুনেগুনে ২৫ টা প্রশ্নে অবশ্য কোন বৃত্ত ভরাট না করে কলমের কালিটা বাঁচাতে পেরেছিল। কারণ এমনি ১০ লাফ দিয়ে দিয়ে ১০০ পর্যন্ত গুনতে পারলেও টানা ১, ২, ৩ করে এগুগে এগুতে বড়জোর ১৬ পর্যন্ত যেতে পারে, বারবার সে যখন ১৬ পর্যন্ত গিয়ে হোঁচট খেয়ে কেঁচেগণ্ডূষ হচ্ছিল তখন পাশের ওই পরীক্ষার্থী স্বপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসাতে শেষ রক্ষে পঁচিশটা প্রশ্নের উত্তরের ঘর ফাঁকা রাখতে পেরেছিল। যদিও পরীক্ষা শেষে একবোতল ঠান্ডা আর একটা গোল্ডলীফ সিগারেট বিনিয়োগ করেছিল ওই ব্যাটার পিছনে তবুও সে মহাখুশী।

প্রাকটিকাল পরীক্ষার সময় বাস চালাতে গিয়ে সাতটির মধ্যে তিন চারটি খাম্বা পড়ে গিয়ে বহুদূর গড়িয়ে গিয়েছিল, তবু বিকল্প পথ তো আছেই। যেখানে লাইসেন্স নেবার জন্য যেকেউ গেলেই প্রায় শতভাগ বীর বেশে যুদ্ধ জয়ের মতো লাইসেন্স নিয়ে ফিরে, যাদের মাথা একেবারে মোটা, ঘটে সামান্য বুদ্ধিসুদ্ধি নাই শুধু তারা একমাত্র পাস করতে পারেনা। গত কয়েক বছরের ইতিহাস দেখলে দেখা যায় লাইসেন্স না পেয়ে ফেরা ড্রাইভারের সংখ্যা বড়জোড় ১০০ তে ০.৬ জন, একজনেরও কম!

যে দেশে মানুষ পরীক্ষার্থীর তুলনায় যতবেশী ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় ধরে নেয়া উচিত সে দেশে জনগনের শিক্ষার হার তত বেশী।( সম্প্রতি স্কান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে করা ড্রাইভিং লাইসেন্স পায় এ নিয়ে একটা ফিচার পড়লাম- সেখানে ড্রাইভিং পরীক্ষা দিতে আসা ৮০ শতাংশ মানুষ ড্রাইভিং লাইসেন্স পায়। বাকীরা না পাবার কারণ অভিজ্ঞতার অভাব ও পরীক্ষায় ফেল করা। উন্নত দেশগুলোতে নাকি এ পরীক্ষাই সবচেয়ে বেশী কঠিন ভাবে হয়। সর্বোচ্চ শিক্ষিতরাও সে পরীক্ষায় ফেল করে, আবার সেসব দেশে এই ড্রাইভিং পেশায় জড়িত ব্যাক্তিরা সর্বোচ্চ বেশী বেতন পান, সেটাও যানবাহনের সাইজ আনুপাতিক হারে যত বাড়ে বেতন তত বাড়তে থাকে। এমনকি যারা রাস্তায় নেমে এ যানবাহনগুলির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ ট্রাফিকপুলিশ, তাদের চাকরিটাও সেসব সমাজে সম্মানের এবং বেতনটাও অন্যান্য ডেক্স জবের থেকে তুলনামূলক অনেক বেশী।)

আমাদের দেশে এসব ট্রাফিককন্ট্রোল নিয়ে শুধু ট্রাফিক পুলিশকেই তো আর চিন্তা করতে হয়না, এনিয়ে চিন্তার জন্য মোড়ে মোড়ে মাস্তান, পয়েন্টে পয়েন্টে সিভিল পোশাকে নামী, নামবিহীন বিভিন্ন রকম নিয়ন্ত্রক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োজিত লোকজন থাকেন। উনারা বিশেষ একটি স্লিপের মাধ্যমে পরিবহন পারাপারের পাস দিয়ে থাকেন। পয়েন্টে পয়েন্টে যানবাহনের আয় গুলো ভাগ হয়ে যাওয়াতেই হয়ত এদেশে ট্রাফিক সাহেবরা ন্যায্য বেতন পাচ্ছেন না।

তবে আশার কথা এই যে, উন্নত বিশ্বের তুলনায় আমাদের দেশে ড্রাইভিং পরীক্ষায় পাশের হার বহুগুন বেশী। অর্থাৎ আমার দেশে তাদের দেশের তুলনায় শিক্ষিতের হার বোধহয় অনেক বেশী। ড্রাইভিং পরীক্ষা যারা দিতে যান অবশ্যই শিক্ষিত তাই তাদের লাইসেন্স না দিয়ে হয়তো পারার জো'ও নাই।

আমাদের এ ঘটনার চরিত্র পঞ্চম শ্রেণী পাস করা, চার পাচটা খুটি নাড়িয়ে দিয়েও উনি লাইসেন্স পেলেন, সেটা আবার নাকি ডিজিটাল। উনার শিক্ষার মূল্যায়ন স্কুল করতে না করতে পারলেও লাইসেন্স প্রদানকারীরা তো ঠিকই করতে পেরেছেন।

২) মাখন :
বয়স ১৭ ছুই ছুই। কিছুদিন আগেও পলিথিনের ভিতরে আইকা, জুতার আঠা, পঁচাগলিতভাত দিয়ে তা মুখবন্ধ করে যে গ্যাসটি ব্যুৎপাদিত হয়, সেখানে পুরো মস্তক ঢুকিয়ে তৃপ্তির সাথে নেশা করতে সময় শেষ হতো তার। কুদ্দুসের জায়গায় বর্তমানে উনাকেই নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে। আগে যে ড্রাইভার বাসটি চালাত তার পদোন্নতি হয়ে লোকাল বাস থেকে গেটলক বাসের ড্রাইভার হওয়ায়, মালিকের মনের মতো অন্যকোন ড্রাইভার না পাওয়াতে, তখনকার হেল্পার কুদ্দুসকে ডেকে বলে দিলেন সে বাসটি আল্লাহ'র নাম নিয়ে চালানো শুরু করতে। কুদ্দুস যদিও আকাশ থেকে পড়েছিল কিন্তু আদৌতে কোন ব্যাথা পায়নি বরং গাম দিয়ে নেশাকরা তরতজে টাটকা হলদে দাঁত বের করে মাথা খানিকটা পাগলপাগল চুলকিয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, স্যার আমারতো লাইসেন্সই নাইকা। "
মালিক বলেছিল, বাল বেঠা, ঢাহা শহরে গাড়ী চালাতে আবার লাইসেন্স লাগে নাকি! হালা বকচোদ কুনানকার, হেইডা আমি দেখবানে। তখন কুদ্দুস আশ্বস্ত হলেও প্রশ্ন করল, তইলে মহাজন, হেল্পারি করব কিডা?
এরপরে মালিক উত্তর যা দিয়েছিল তাতে প্রথমে তার মাখনের ময়লা মাখা তন্দ্রিত মুখটার কথাই মনে পড়েছিল। বেচারা কুদ্দুসের হেল্পারি করার দিনগুলিতে বিভিন্ন পয়েন্টে নেশা রেডী করে পলিথিন ফুলিয়ে দাড়িয়ে থাকত, আর সিগনালে বাস থামলে দৌড়ে গিয়ে সে পলিথিনের ভিতরের হাওয়া এক নিশ্বাসে টেনে নিত।তাই মাখনকে এনে তার জায়গায় দাঁড় করিয়ে সু্যোগ পেয়েই প্রতিদানটা দিয়েই ছেড়েছে কুদ্দুস।

৩) ধ্রুপদ

ঘটনা-
এয়ারপোর্টের সিগনাল ছাড়তেই সব গাড়ীর ড্রাইভারের মাথার সফটওয়্যারটা এমন স্বয়ংক্রিয় ভাবে চালু হয়ে যায় যে এটা মিগ- 29 এর মতো এদেশে স্টার্ট করলে ভারতের আকাশসীমানায় পৌঁছে ইঞ্জিন চালু হবে তেমন নয় বরং কোন পুরুষ পথে চলতে হঠাৎ চরম কোন সুন্দরী মেয়ে দেখার পর মুহূর্তেই তার হার্টে ছ্যাৎ করে একটা তরঙ্গ খেলে যায় তেমনি জায়গায় দাঁড়িয়েই ড্রাইভার সাহেবদেরও তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। শুরু হয় হুরোহুরি, পাড়াপারি, ফাড়াফারি, কে কার আগে গাড়ীর মাথা ঢুকাবে তার প্রতিযোগীতা। ধ্রুপদ বাসের ডাইভারের সীটের একেবারে লাগোয়া প্রথম সিটে বসার জায়গা পেয়েছে, যা একসময় শুধুমাত্র "মহিলাদের বসিবার জায়গা নামে সংরক্ষিত থাকত"। সে দেখল সিগনাল ছাড়ার সাথেই যেন সমস্ত রাস্তা একযোগে একযুগের ঘুম থেকে উঠে আড়মোরা ভেঙ্গে উঠে দাঁড়াল, বড় গাড়ীর ড্রাইভারদের ভাবখানা এমন এইটা তার আপন বাপের তৈরী করা রাস্তা, তাই এরাস্তায় অন্য কারো কোন হক থাকার প্রশ্নই উঠে না, বরং দয়াকরে অন্য কাউকে যে চলতে দিচ্ছে সেটাই ঢের বেশী। ছোট গাড়ীর ড্রাইভারদের ভাব মনে হলো, গাড়ীতো আমার না, লাগলে লাগুক আমার কি, আমার স্যারের মেলা আছে সে ই দিবে, আর এমনিতে গায়ে তো বল আছেই কথা বেশী কইলে বসায়া দিব দুই ঘা, এইটা বড় গাড়ীর দায়িত্ব যাতে আমার গাড়ীতে না লাগে।

সেমুহুর্তে গোল চক্কর কেবল পার হয়েছে, ধ্রুপদের মনে হলো বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের উত্তাল উদ্দাম সাগরের উপরে বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্রতটে মাছ ধরতে যাওয়া ছোট্ট একটা ডিঙ্গি নৌকাতে বসে আছে, একবার বামে হেলে এসে এমনভাবে কাত হয়, আরেকটু হলেই যেন মোরগযুদ্ধ খেলা ছেলেটির সর্বশেষ একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা মাটিতে ফেলে দেবার আগে হঠাৎ করে যে একটা ইলেকট্রিক শকের ধাক্কার মতো খায় সে অবস্থা। আবার ডানদিকে যখন হেলে, ধ্রুপদের মনে হলো যেন তিনকার্ড খেলতে বসে টেক্কার ট্রয় পেলে জুয়ারী যেমন করে কার্ডগুলি মুখের কাছে এনে একটা সশব্দ চুম্মা দেয় তেমনিভাবে বাসটিও যেন ওপাশের রাস্তায় একটা চুমা দিয়ে আসতে চাচ্ছে। ধ্রুপদের সচরাচর এমন হয়না, কোন গানের পুরোটার কথা কখনো একবারে মনে করতে পারেনা কিন্তু সে মুহূর্তে কিভাবে জানি খুব করে নজরুলের একটা গানের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি কথা মনে পড়ছে,

"মোমের পুতুল মমীর দেশের মেয়ে নেচে যায়
বিহবল চঞ্চল পায়।।
খর্জুর-বীথির ধারে
সাহারা মরুর পারে
বাজায় ঘুমুর ঝুমুর ঝুমুর মধুর ঝঙ্কারে।
উড়িয়ে ওড়না ‘লু’ হাওয়ায়
পরী-নটিনী নেচে যায়
দুলে দুলে দূরে সুদূর।।
সুর্মা-পরা আঁখি হানে আস্‌মানে,
জ্যোৎস্না আসে নীল আকাশে তার টানে।
ঢেউ তুলে নীল দরিয়ায়
দিল-দরদী নেচে যায়
দুলে দুলে দূরে সুদূর।।"

তার আফসোস হচ্ছে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অথচ এ ঢেউ খেলানো, জায়গায় জায়গায় ভাঙা যেন দাঁত কেলানো রাস্তাটিতে যেকোন রকম যানবাহনে সাত - আট মাসের কোন প্রেগন্যান্ট মহিলা চলাচল করলে বিনা পরিশ্রমে ও বিনাব্যয়ে যেকোন মুহূর্তে বাচ্চা ডেলিভারী হয়ে যেতে পারে। মনেমনে ভাবে দেশের মন্ত্রী এমপিরা না হয় উচ্চমর্গীয় কোন জাতের এজন্য তাদের ভিআইপি রাস্তা আছে, তাই তাদের কাছে এ রাস্তাটি সম্পর্কে ধারণা নাই থাকতে পারে কিন্তু বড় বড় সচির, বিচারক, নেতাদের তো দেশের বাহিরে গেলে, আসলে এই একটা রাস্তাই তো ব্যবহার করে, নাকি তাদের দামী দামী সব গাড়ীগুলো ঢেউ প্রতিরোধক করে তৈরী করে প্রশান্ত মহাসাগরে তিনবার ট্রায়াল দিয়ে তারপরে এদেশে আমদানী করা, কে জানে!

বাসের হেল্পার মাখন হঠাৎ সজোরে চিৎকার করে উঠায় ধ্রুপদের ভাবনার রাজ্যে ছেদ পড়ে। মাখন চেঁচিয়ে বলছে,
- ওস্তাদ বামে পিলাসটিক, সামনে বলদ, ব্রেক হপে, ব্রেক।
ধ্রুপদ সামনে তাকিয়ে দেখল, কয়েকজন লোক যেন ডানে বামে আগে পিছে কোনদিক না তাকিয়ে রেসের ঘোড়াদের মতো চোখে ঠুলি নাকের আগায় মূলা ঝুলানো অবস্থায় রাস্তা পার হচ্ছে, কোন চ্যেতবোধ নেই যেন, বামে প্রাইভেট কার এফ প্রিমিও, সেও এই বাসের সাথে মনে হয় বিস্কুট দৌড় প্রতিযোগিতায় নেমেছে, আগে যেতে না পারলে যেন মহা মজার বিস্কুটটা হাতছাড়া হয়ে যাবে, তারপর আর তার আফসোসের শেষ থাকবেনা। অথচ ধ্রুপদের মনে হলো, শুধু যদি ড্রাইভারগুলো একটু সামান্য সৌজন্যতাবোধ দেখিয়ে, শুধু ভদ্রতাবশতই অন্য গাড়ীটিকে সাইড দিয়ে দেয় আগে যাবার জন্য ( তাই বলে এমন গোছের ভদ্রতা না যাতে, ভাই আপনি আগে যান, না ভাই আপনি আগে যান, এরকম করতে করতে বিনয়ের অবতার হয়ে নিজের জায়গাতেই তালগাছ একপায়ের মতো দাঁড়িয়ে না থাকে, তাহলে কিন্তু সাড়ে সর্বনাশ ), ঢাকা শহরের এ রাস্তা তো বটে অন্য কোন রাস্তাতেই আর জট লাগবে না। এসব ভেবে ধ্রুপদের দীর্ঘশ্বাস যখন দীর্ঘতর হয়ে বের হয়ে আসছিল ড্রাইভার কুদ্দুসের হেল্পার মাখনকে উদ্দেশ্য করে বলা কথাটি শুনে সে নিশ্বাস মাঝপথেই যেন যে পথ দিয়ে বের হয়ে আসছিল সে পথেই সেনাবাহিনীর সুশৃঙ্খল শীতকালীন মহড়ার মতো "উল্টা ঘুর" বুক কাঁপানো কমান্ডে দ্রত বেগে ঘুরে পিছনের দিকে রওয়ানা দিল।
হলদেটে দাগকে টপকিয়ে জয় করা পানের খয়েরের কিছু বিদ্ঘুটে ছোপছোপ লাল দাগওয়ালা দাঁত বের করে কুদ্দুসকে স্পষ্ট বলতে শুনেছে ধ্রুপদ,
- মাখইনা কি আবালের মতো কতা কচ্চিস তুই! বিরেক ধরতে, হারামজাদা কাইলকা রাতেই না বিরেকে সমস্যা দেইখা খুইলা রাখলাম।
**' চলুন, অন্তত একবার মরি ' গল্পসংকলনের একটি গল্প।
প্রচ্ছদ শিল্পী - ধ্রুব এষ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.