![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবিতা ব্যক্তিগত মত নয়, বেদনাঘাত বা আনন্দৌন্মুখতা হতে যে উচ্চারণ বেরিয়ে আসে তাই কবিতা। -কাহলিল জিব্রান
অশ্লীল কবিতা ও কবি
প্রথম পর্ব
[link|https://youtu.be/e0-3k5v3ZBE| প্যাঁচালী দম্পতি কথা।। জয় গোস্বামী
কবি তার কবিতায় শব্দের খেলা খেলবেন এটাই স্বাভাবিক। সাহিত্যে শব্দ নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোন মানদন্ড নেই, কবিতাকে কোন কাঠামোর মধ্যেও সীমাবদ্ধ করা যায় না। শিল্পী স্বাধীনভাবে শিল্প সৃষ্টি করবেন, শিল্পের মাঝে শ্লীলতা-অশ্লীলতা খোজার চেষ্টা অর্থহীন।
বাংলা কবিতায় যেসব শব্দকে আমরা অশ্লীল বলে থাকি, তার প্রয়োগ নতুন নয়।
যেমন হেলাল হাফিজের, ' আমিও গ্রামের পোলা, চুতমারানী গালি দিতে জানি ' হুমায়ুন আজাদের, ' অপার সৌন্দর্য্যের দেবী সারারাত চুষবে নষ্টের লিঙ্গ' কিংবা কবি মলয়ের ' প্রচন্ড বৈদ্যুতিক ছুঁতার ' অশ্লীল শব্দে ভরপুর অসাধারণ সুন্দর একটা কবিতা।
এই কবিতা গুলিতে অশ্লীল শব্দের ব্যবহার থাকলেও কোন অশ্লীলতা প্রকাশিত হয় নি। অশ্লীল শব্দের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে শ্লীল সৌন্দর্য্য, ফুটে উঠেছে জীবনবোধ, প্রকাশ করে অর্থ। অর্থাৎ সেগুলি হয়ে উঠেছে এক একটি কবিতা যা পাঠকের মন জয় করতে সক্ষম।
নির্মলেন্দু গুণ
২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবে মঞ্চে আমন্ত্রিত কবি হিসেবে নির্মলেন্দু গুণ কবিতা আবৃত্তি করেন……আমি তোমাকে চুষি চুষি, মাছের কাঁটার মতো চুষি…….., তারপর পড়লেন ,… ঝুলে আছে মূলা, কেমনে খাব মূলা, বাতাসে ঝুলে মূলা….।
নির্মলেন্দু গুণ (১৯৪৫- ) গত শতকের ছয়ের দশকের কবি; প্রচলিতভাবে যাকে ষাটের দশক বলা হয়। সে সময়ই তিনি কবিতা লেখা আরম্ভ করেছেন তবে তাঁর প্রথম কবিতার বই বের হতে হতে সাতের দশক বা সত্তরের দশক এসে গেছে। প্রেমাংশুর রক্ত চাই (১৯৭০) নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কাব্যগ্রন্থ এবং এ গ্রন্থ দিয়েই তিনি প্রথম ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
প্রেমাংশুর রক্ত্ চাই-এর পর নির্মলেন্দু গুণের প্রকাশিত হয় বহু কাব্যগ্রন্থ : না প্রেমিক না বিপ্লবী (১৯৭২), কবিতা অমীমাংসিত রমণী (১৯৭৩), দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী (১৯৭৪), চৈত্রের ভালোবাসা (১৯৭৫)।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত শিল্পোত্তীর্ণ সর্বাধিক কবিতার রচয়িতা নির্মলেন্দু গুণ। এটা কম কৃতিত্বের কথা নয়। মুজিবকে নানা মাত্রায় তিনি তাঁর কবিতায় উপস্থাপন করেছেন। নির্মলেন্দু গুণ শেখ মুজিবের স্তাবক ছিলেন না বলেই তার কর্ম ও সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবৎকালে প্রশ্ন উত্থাপন করতে দ্বিধা করেন নি :
‘মুজিব মানে আর কিছু না
এক-যমুনা রক্ত;
মুজিব মানে সমাজতন্ত্র
আমি মুজিব ভক্ত।’
– মুজিব মানে মুক্তি
এইবার আপনাদেরকে তাঁর অশ্লীল কাম সূত্রের কবিতা গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। নির্মলেন্দু গুণের একটি প্রিয় বিষয় দেহ ও দেহানুষঙ্গ। তিনি কপট নন। তাই অকপটে নিজের বিশ্বাস ও কল্পনা প্রকাশ করেন। কিন্তু কখনো, কখনো তা নারীকে প্রয়োজনীয় সম্মানের পক্ষে আপত্তিজনক। যেমন, তিনি যখন লেখেন:
‘রান্নাঘর থেকে টেনে এনে স্তনগুচ্ছে চুমু খাও তাকে,
বাথরুমে ভেজানো দরোজা ঠেলে অনায়াসে ঢুকে যাও-
সে যেখানে নগ্ন দেহে গানার্র্থেই তৈরি হয়ে আছে
আলোকিত দুপুরের কাছে-, মনে রেখো,
তোমার রাত্রি নেই, অন্ধকার বলে কিছু নেই।
বিবাহিত মানুষের কিছু নেই একমাত্র যত্রতত্র স্ত্রীশয্যা ছাড়া।’
-স্ত্রী
তখন, অশ্লীলতার চূড়ান্তে পৌঁছেও কবিতার স্বার্থে তা হজম করা যায়। কিন্তু নির্মলেন্দু গুণ যখন লেখেন নিচের পঙ্ক্তিগুলো, তখন?
‘যেমন প্রত্যহ মানুষ ঘরের দরোজা খুলেই
দেখে নেয় সবকিছু ঠিক আছে কিনা, তেমনি প্রত্যহ
শাড়ির দরোজা খুলে স্ত্রীকেও উলঙ্গ করে
দেখে নিতে হয়, ভালো করে দেখে নিতে হয়:
-জঙ্ঘায়, নিতম্বে কিংবা সংরক্ষিত যোনির ভিতরে
অপরের কামনার কোনো কিছু চিহ্ন আছে কিনা।’
- ‘স্ত্রী’
কবিতাটি কবির ১৯৭২ সালে প্রকাশিত না প্রেমিক না বিপ্লবী কাব্যগ্রন্থভুক্ত। তার মানে, গুণের কবিতায় কাম শুরু থেকেই ছিল। ২০০০ সালে বেরিয়েছে বাৎসায়ন, এর পর কামগন্ধী বহু কবিতা মিলিয়ে বের করেন কামকানন (২০০৭)। কেন কামের রাজ্যে বসবাস?- এক সাক্ষাৎকারে (প্রথম আলো : ২২শে জুন, ২০০৭) নির্মলেন্দু গুণ জানিয়েছেন: ‘আমি [নির্মলেন্দু গুণ] কিছুটা সচেতনভাবেও করেছি বলা যায়। আমি ভেবেছি, কামকেন্দ্রিক কবিতার ধারাটিকে আরও প্রবল করে উপস্থাপন করি।’ । নির্মলেন্দু গুণের কবিতায় প্রেম-কাম-রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে- এটাই তাঁর বৈশিষ্ট্য। নারীর স্তনাগ্র-চূড়ায় তাঁর বিশ্ব কেঁপে ওঠে।
তিনি লিখলেন :
‘আমার অন্তিম চুম্বনের জন্য আমি
তোমার নেত্রকোণার উদ্দেশ্যে তখন
প্রসারিত করবো আমার অধরোষ্ঠ।
ঝর্নার উচ্ছল জলের দিকে যেরকম
তৃষিত গ্রীবাকে প্রসারিত করে উষ্ট্র।
তোমার বাম চোখে আমি পান করব
এক লক্ষ ক্যান ঠাণ্ডা জার্মান বিয়ার,
ডান চোখে লক্ষ পেগ স্কচ হুইস্কি।’
-চুম্বন-স্তবক
এক সময় কামকে কাব্যের বড় উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হতো। আমাদের পূর্বপুরুষরা সেটা চেষ্টা করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি কামকে কতটা শিল্পরূপ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। এ চেষ্টা এখনও অব্যাহত আছে। প্রেম তো যৌনতারই একটি সংস্কৃত প্রকাশ।’ (মহুয়া : নির্মলেন্দু গুণ সংখ্যা : ২০০৮)।
কবি নির্মলেন্দু গুণ উপলব্ধি করেছেন নর-নারী সম্পর্কের আদি ও মৌলিক উৎসটি এখনও শরীর। ‘বাৎসায়ন’ কাব্যটি তাঁর এই মানবিক বোধের সতেজ প্রস্ফুটন। তিনি পুরুষ হিসেবে নারীর শরীরের প্রতিটি গিরিগুহাকে, প্রতিটি স্পর্শকে, প্রতিটি আলিঙ্গনকে, প্রতিটি শীৎকারকে প্রবল প্রাণ প্রবণতায় উপভোগ করেছেন। পুরুষ নির্মলেন্দু এক কাব্যের অধ্যবসায়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়েছেন নারীর শরীর ও কামসূত্রকে। তাঁর কবিমন ও ‘কাব্যকাম কুশলতা’আশ্রয় পেয়েছে শরীর মন্থনে। তিনি জানেন মানুষের সর্বোচ্চ আনন্দের অনুভূতি ও জ্ঞানের উপলব্ধি ঘটে এই শরীর বিনিময়েই।
তাই তিনিই বলতে পারেন-
“আনন্দের শ্রেষ্ঠ উৎস হচ্ছে কাম।
কাম থেকে জন্ম নিয়েছে কবি।”
জীবনচেতনার সামগ্রিক উপলব্ধির শীর্ষে দাঁড়িয়ে কবি বুঝেছেন-
“যখন আমি নগ্ন হই
তখনই আমি কবি।”
“আমি যাই, আমি ছুটে যাই; আমি
কামভিখিরির মত কপর্দকশূন্য করপুটে
তোমার অগ্নির টানে ছুটে যাই, হাওয়া।”
তারপরও তিনি নিশ্চিত নন, তাঁর অন্বেষণ গন্তব্যে পৌঁছাবে কি না।
তিনি মনে করেন-
“কাম নিয়ে আমি যত সাধনা করেছি,
শ্রী অমর্ত্য সেনও মনে হয় না তত।
এই কাজে আমি যত শ্রম দিয়েছি,
তত শ্রম ষ্টেশনের কুলিও দেবে না।
তারপরও আমার কাটে না সংশয়,
আমার কি হয়? কোনো কিছু হয়?”
প্রকৃতিপ্রেমী কবি প্রকৃতির মাঝেই বারবার খুঁজে পান তাঁর কামচরিতার্থতা। প্রকৃতি ক্রমাগত কামসুলভ আনন্দ আহ্বান নিয়ে তাঁর সামনে নিজেকে উন্মোচন করে-
“রাত্রি হচ্ছে একটি কামার্ত কালো মেয়ে”
নিজেকে লুকিয়ে না রেখে তিনি অকপটে বর্ণনা করেন তাঁর পুনর্জন্মের কথামালা-
“বর্ষা ছিল পাকতে-শুরু ডাঁসা ভুবির স্তনে,
দিন-দুপুরে আঁধার করা যোগীশাসন বনে।
বর্ষা ছিল ধান-ডোবানো মাঠ-ভাসানো জলে,
সাঁতার কাঁটা বুনো হাঁসের কামার্ত দঙ্গলে।
তাদের কাছেই চিনেছিলাম তেপান্তরের মাঠ,
তারাই আমায় দিয়েছিল কামশাস্ত্রের পাঠ।
কামকলাতে এই যে আমার একটু বাহাদুরি,
বর্ষাবালার কাছ থেকে তা করেছিলাম চুরি।”
জীবনপ্রেমী কবি জানেন তাঁর কবিমনের গতিপথ। এ মানসবোধে কামজ অনুভূতির মূল্য এবং ভূমিকা অনেক বেশি। একারণে নিজেকে হাতের মুঠোয় তুলে ধরতে তাঁর কোনো দ্বিধা নেই।
“সেই আমাকে অধিক পায়,
যে আমাকে কামের চুলায়
কাঠের মতো পুড়িতে দেয়।….
সেই আমাকে অধিক পায়,
যে আমাকে নাড়ায় না।
যে আমাকে স্বাধীন রাখে
সে আমাকে হারায় না।”
শৈশবে মাকে হারিয়ে কবি বঞ্চিত হয়েছেন স্তনদুগ্ধসুধা পানে। স্তনতৃষ্ণা তাঁর মন থেকে কখনো মুছে যায়নি-
“আমার স্তনস্তবমুখরিত কবিতায়, তাই
দুগ্ধবতী নারীরা হয়েছে আমার ঈশ্বরী”
তিনি নারীর বুকের পুষ্পযুগলের অপরূপ শোভা প্রাণভরে উপভোগ করেছেন। বিকশিত পুষ্পদ্বয়ের গভীরে প্রাণরূপ মধু ও কামরূপ শক্তির যে বিরাট খনি লুকিয়ে আছে তার সৌন্দর্য দেখে মোহিত হয়েছেন।
কামশাস্ত্রজ্ঞ যে কবি বিস্ময়ে তাকিয়ে তাকিয়ে-
“দেখিলেন সেই অপরূপ শোভা,
মনোলোভা, নিদ্রিতা, নিশ্চুপ।”
সেই তিনিই দেখেছেন সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো সুডৌল পুস্পকলি দুটি প্রস্ফুটনের জন্য অপেক্ষা করে পুরুষ আঙ্গুলের সামান্য স্পর্শের, আর তারপরেই ঘটে যায় মহাবিস্ফোরণ-
“অসতর্ক পুরুষ-আঙুলের
সামান্য আঘাতে বিভাজিত হল
পরমাণু, বিস্ফোরিত হল বোমা।”
তাঁর সমস্ত কাব্যসাধনা, কাব্যযশ এবং ‘কাব্যকাম কুশলতা’র প্রধান উৎস কাম। সমকালীন বাস্তববিমুখ মানুষের কাছে তা অপরিচিত হলেও প্রেমিক কবি চণ্ডীদাশ ও বাৎসায়নকে অনুধাবন করে তিনি জেনে নিয়েছেন পরম সত্যটিকে-
“তাঁরই কল্যাণে নারীকে চিনেছি,
শিখেছি সঙ্গম কলা, রতিরঙ্গরস;
তা না হলে সকলি গরল ভেল,
কামসিদ্ধি বিনা ব্যর্থ কাব্যযশ।”
নাকি দেহ মনেরই প্রকাশ?”
এই অমীমাংসিত প্রশ্ন বাৎসায়নের মতো নির্মলেন্দু গুণকেও বিক্ষত করেছে জীবনভর। অবশেষে উত্তীর্ণ যৌবনে কবি পেয়েছেন সত্যের সন্ধান।
“বুঝেছেন মন বড় সত্য নয়
মানবের দেহই প্রধান।”
নারীর নূপুরশিকলে বাঁধা পড়ে গেছেন চিরকালের মতো। তবে এ নিয়ে তাঁর মনে কোনো খেদ নেই। বরং বারবার তিনি অনুভব করতে চান নারীর অগ্নিশরীর।
“আমার কাছে অগ্নির চেয়েও
উষ্ণ মনে হয়েছিল নারীকে।
তাই আমাকে বরফ-রাতে
নারীর তাতে পুড়িয়েছিলাম।
আমার কাছে লোহার চেয়েও
ভারী মনে হয়েছিল নারীকে,
তবুও তাকে শিবের মতোন
মাথায় তুলে ঘুরিয়েছিলাম।”
একালে মানুষ ভেঙ্গে বহুধাবিভক্ত হয়ে গেছে। কখনো পশুবৃত্তি কখনো কবিতাবৃত্তি কখনো স্বার্থমুখী কখনো বৃক্ষমুখী অর্থাৎ এক মহাকালিক স্ববিরোধিতা মানুষকে অনেকাংশেই মানবেতর প্রাণীতে পরিণত করেছে। কৃত্রিম জৌলুষ ও চাকচিক্যতেই মানুষ এখন আচ্ছন্ন। যা মোটেও মানুষের মানবিক বোধের সচেতন প্রকাশ ঘটায়না। মানুষের এই সামগ্রিক স্ববিরোধিতায় কবি মনে করেন-
“মানুষকে কখনোই আমার
শ্রেষ্ঠ প্রাণী মনে হয়নি।
আমি মানুষের চেয়ে বেশি
ভালোবাসি হাঁসের সঙ্গম।”
তাই বলে কবি মানুষের মাঝেই বারবার খুঁজেছেন মানুষের মানবিক মনুষ্যত্ব।
“অনিবৃত্ত কামের অগ্নিতে
যখন ডালির জেব্রার মতো
ঝলসে গিয়েছে এই দেহ,
তখন গণিকার পদতলেই
আমি খুঁজে পেয়েছিলাম
আমার বেহেশ্ত।”
এবং তিনি নিজেকে বারবার প্রশ্ন করেন-
“মাঝে-মাঝে আমি ভাবি, ভাবি
আমার কাব্যকামকুশলতা নিয়ে
এই যে আমি গর্ব করে চলেছি,
আমার কি আদৌ কিছু হচ্ছে?”
‘বাৎসায়ন’ গ্রন্থের প্রথমেই তিনি নিজের ভিতরে,মানুষের ভিতরে খুঁজেছেন, খুঁজতে বলেছেন গভীর ও গোপন সেই অনুভূতিটিকে যে অনুভূতি মানুষকে জাগিয়ে রাখে জীবনভর, মানুষকে উপলব্ধি করায় জীবিত বলে। বুঝতে চেয়েছেন মানুষ হিসাবে আমাদের আগ্রহ, দায়িত্ব, কর্তব্য ও উদ্দেশ্যকে। যা তিনি পেয়েছেন তাই আসলে সমগ্ররূপ ধারণ করেছে তাঁর সামগ্রিক
‘কাব্যকাম কুশলতা’য়।কালব্যাপী নিরন্তর অন্বেষণে তাঁর সামনে মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি মাত্র প্রধান প্রশ্ন-
“ভিতরে তোমার ঘুমাচ্ছে না, কে?
জীবনবিচ্যুত জড়ের মৌনতা,
না কি সুখ-বুদ্ধি চতুর যৌনতা?
অনুসন্ধান কর, অনুসন্ধান কর।”
কবি সাইয়েদ জামিল
জীবনানন্দ দাস সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত ২০১৫ সালে। যখন কোন কবিতার সমালোচনা করা হবে তখন তার ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে কথা বলা অর্থহীন। তিনি কবিতার মাধ্যমে কি বলতে চেয়েছেন, কবিতা হিসেবে কতটুকু স্বার্থক হল এসবই মূল আলোচনা হওয়া উচিত।
সাইয়েদ জামিলের কবিতারর কিছু নমুনা দেখি -
''পৃথিবীতে আমরা গান গাই
পক্ষী শিকার করি,
চোদাচুদি করি, এবং নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করি ''
আমরা এসবই করি, ভুল কিছু নেই। আর একটা কবিতায় তিনি লিখেছেন,
''স্বেচ্ছায় শাড়ি খুলে শ্রীমতি কাদম্বরী আমার
মুখের ভেতর পুরে দিলো
তার অহংকারী দুধের বোঁটা। দুপা ফাঁক
করে ঊরুসন্ধি দেখিয়ে বললো,
'ও নব্য ঠাকুরপো, এ শরীর তোমারও'
আমি মুসলমানের পোলা, আমার ঘেন্না হল।
তবু আমি কাদম্বরীর সাথে রতিক্রিয়া সম্পন্ন করলাম ''
কবি এখানে কাদম্বরীর সাথে রতিক্রিয়ার এক অন্যায় ভাবনা প্রকাশ করেছেন। কাদম্বরী কোন প্রেম কামের দেবী নয়, নয় কবির প্রেমিকা। তাই এরকম ভাবনা আসলে বিকৃত বাসনা। দ্বিতীয়ত এখানে ' আমি মুসলমানের পোলা ' কথাটি চরমমাত্রার সাম্প্রদায়িকতা, যা নিন্দনীয়।
দ্যা স্পিরিট অব ইসলাম নামক কবিতায় লিখেছেন,
''আমি গুরু চোদা জামিল।
সুতরাং রবীন্দ্রনাথকে পাল্টা থাপড়াইতে দ্বিধা করিলাম না।
এবং মাদারচোত বলিয়া গালিও দিলাম।
তারপর পোস্টারের সেই রবীন্দ্রনাথরে ছিঁড়ে ছিন্নভিন্ন
করে কমোডে ফেলে তার উপর মুত্র
বিসর্জন করিলাম এবং ফ্ল্যাশ আউট
করিয়া গৃহ হইতে ঠাকুর তাড়ায়া দিলাম ''
বাইবেল
বাইবেল একটি অধ্যায় আছে যার নাম “পরমগীত” সেই অধ্যায়েটিতে পুরো কবিতা রয়েছে, এই কবিতা গুলি নিবেদিত হয়েছে প্রেমিকের উদ্দেশ্যে প্রেমিকার এবং প্রেমিকার উদ্দেশ্যে প্রেমিকের। একে আবার ‘সলোমানের গীত’ নামেও অভিহিত করা হয়েছে কারণ হিব্রু ভাষায় রচয়িতা হিসাবে তাঁর নামই লিপিবদ্ধ আছে। (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ভূমিকা)
এখানে এমন অশ্লিল ভাবে প্রেমিক প্রেমিকার কথা হচ্ছে যা প্রকাশ করাই কঠিন। সাধারণ প্রেমের ছড়ার বইগুলোতে এত অশ্লিল কথা থাকে কিনা আমার জানা নেই মনে হবে যেন “ফ্রী সেক্স” এর বই। তবুও আবার এ অশ্লীল গুলো সুলাইমান আলাইহি সালামের নামে চালাচ্ছে, কিভাবে শায়ত্বন এদেরকে পথ ভ্রষ্ট করেছে। প্রিয় পাঠক কিছু কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করলাম যাতে বুঝতে পারেন এটা ধর্মিয় কিতাব না অসামাজিক অশ্লীল প্রেম কাহিনীর কিতাব, বিচার করবেন আপনারা। আসুন এবার দেখি অশ্লীলতা গুলো কেমন!
(ক) প্রমিকা
ওগো প্রিয়তম, চুম্বনে চুম্বন আজ ভরে দাও বিবশ অঙ্গ মোর,
(বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ১/২)
(খ) প্রেমিকা
ওগো সিয়োন ললনা, এস, দেখ আমার রাজা সলোমনকে, কিরীট শোভিত রাজা আমার। এ কিরীটখানি জননী যে তাঁর, বিবাহের মধুরলগনে আনন্দের মিলনবাসরে পরিয়েছিলেন তাঁরে। (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৩/১১)
(গ) প্রমিক
কুচযুগ যেন যুগল মৃগ যমজ হরিণ যেন পদ্মবনে। (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৪/৫)
(ঘ) প্রেমিকা
আমি খুলেছি আমার আবরণখানি কি করে আবার পরি, ধুয়েছি আমার চরণযুগল কি করে মলিন করি? (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৫/৩)
(ঙ) প্রেমিক
নাচো, নাচো ওগো শুলেমবাসিনী কন্যা আমরা দেখব তোমার নৃত্যপরা তনুভঙ্গিমা। (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৬/১৩)
(চ) প্রেমিক
কী অপরূপা রূপকন্যা তুমি! পাদুকাশোভিত পদপল্লব তব অপরূপ রূপময়! সুঠাম জঘন যেন শিল্পীর কারুকার্য, তোমার নাভিকুণ্ড যেন সুরায় উচ্ছল এক সুগোল পানপাত্র, কটিদেশ যেন কুমুদ কমলে ঘেরা গোধূমের স্তূপ। কুচযুগ যেন যুগল মৃগ, যমজ হরিণসম। তব মরাল গ্রীবা যেন গজদন্তের শুভ্র মিনার” (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৭/১-৪)
(ছ) প্রেমিক
ওগো প্রিয়া মোর, কত মনোলোভা তুমি, তুমি কত সুন্দর। তোমার প্রেমের অসীম আনন্দে হৃদয় ভরে যায় কানায় কানায়। খেজুর গাছের মত শোভাময়ী তুমি তব কুচযুগ যেন খেজুরের গুচ্ছ। সেই গাছ থেকে আমি পেড়ে আনব তার ফলসম্ভার। আমার নয়নে তোমার স্তনযুগল যেন গুচ্ছ গুচ্ছ রসাল দ্রাক্ষাফল, আপেলের মধুর সুগন্ধ আসে তোমার নিঃশ্বাসে, (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৭/৬-৮)
(জ) প্রেমিকা
তুমি যদি মোর সহোদর হতে, লালিত হতে যদি মোর জননীর স্তন সুধায়, তবে পথের মাঝে তোমায় চুম্বন করলেও মনে করত না কেউ কিছুই। আমি নিয়ে যেতাম তোমায় আমার জননীর গৃহে, আমার শৈশবের লীলা নিকেতনে, সেখানে তুমি শিখাবে আমায় প্রেমের ললিত কলা। আমি দিতাম তোমায় মশলা সুরভিত মদিরা হাতে তুলে দিতাম আমার আনারের সুরা। বামবাহু তব হবে মোর উপাধান, দক্ষিণ বাহুডোরে বাঁধিবে আমারে তুমি। ওগো জেরুশালেমের কামিনীকুল, শপথ কর, দোহাই ওগো ভেঙ্গো না মোদের প্রেমের বাসর। (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৮/১-৪)
(ঝ) প্রমিকা
আমাদের ছোট্ট একটি বোন আছে যৌবন তার আসে নি এখনও কোন নবীন যুবক যদি আসে তার কাছে প্রেম নিবেদন মানসে, বল, কি করব আমরা তার জন্য?” (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৮/৮)
(ঞ) প্রেমিকা
আমি এক প্রচীর স্বরূপা কুচযুগ মোর যেন তার সুউচ্চ মিনার” (বাইবেল, পুরাতন নিয়ম, পরমগীত, ৮/১০)
মেহেদী হাসান তামিম
পিষব চুমুতে
--------------------
দিতে পারবো না তোমায় মনি মানিক্য হীরে রত্ন
তোমার জন্য রাখতে পারি তুলে এক মহাকাশ অনন্ত যত্ন
ওগো কাশবনের মেয়ে তোমার জন্য করব শিকার
জগতের যত নক্ষত্র পড়ন্ত।
জানিনা কোন সে বাহন তোমার প্রয়োজন
দিতে পারি শুধু ধবধবে তুলতুলে কিছু সাদা শিমুল তুলোদের দল অনিন্দ্য স্বাচ্ছন্দে আনবে তোমায় ভাসিয়ে আনবে আমার এ প্রকৃতিসম নীড়ে, ভীড়কে রেখে দূরে।
রুবির হারে থাকে যদি তোমার শখ, পাবেনা
চাইলে ঘরের সামনে বসিয়ে দিব চাঁদের আলোর হাট
কিছু আলো তার বাকীতে নিয়ে দেব গড়ে গলার সাধ।
ওগো রোদের দেশের কন্যা, ও তুমি অনন্যা
উর্বর কোন ক্ষেত দোফসলা জমি নেইগো আমার,
আমি নইযে কোন জমাধিরাজ
পাইক পেয়াদা বরকন্দাজীদের দিয়েছি চিরছুটি
তবু করবে তোমায় কুর্ণিশ পোষা কুনোব্যাঙ আর আছে মাছদল পুঁটি।
হয়তো জ্বলবে না চুলো বছর থেকে বছর
ভেবোনা সোনা, চুমু চুমুতে মিটাবো খিদে প্রতিপ্রহর
পেয়ে আমার ঠোটের পরশ উঠবে কেঁপে তিরতির
কমলাকোষ ওষ্ঠযুগল তোমার রসালো টসটসে মিষ্টিতায় ভরপুর
আরো নিবিড় আরো বিদ্যুদ্দাম হয়ে বাঁধের জল দেব
সে ঠোটে ছেড়ে পরম চুমুময়তায়
নিষ্ঠা ভরে নিংড়ে দিব যত চাও তুমি সুখ।
জানি সোনা হয়তো সামান্য জলতেষ্টাই মিটবে তাতে
না হয় আরেকটু ওম দিব, তাতেও যদি না মিটে খিদে
আরো একবার শক্ত করে জড়িয়ে বুকের মাঝে পিষব
চুমুতে চুমুতে পিষব বুকের খাঁজে, মনের ভাঁজে....
♣"প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য" ♣
ধারাবাহিক কবিতা সিরিজ - ২
শ্রেষ্ট চঞ্চল ঝড়ো সংগীত
---------------------------
অস্থির মোহনিয় নিগূঢ় প্রশান্তিতে শরীর হয়ে আসে বিবশ,
কি এক জাদুময় আক্রোশে ঝাপিয়ে পড়ো প্রতিবার
সে আবিষ্টতা ছিঁবড়ে কামড়ে খাবলে খেতে চায় সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
ঝড়া পাতার মর্মর মাদুরে শুয়ে তোমার হিংস্রতা
পরিণত করে আরো বেশী উন্মত্ত উন্মাতালে
অথচ নিথর শীতল সমর্পিত বাগানে
খুঁজে পাই শুধু র্নির্লিপ্ত নিস্তেজ অতৃপ্ত ম্রিয়মাণ কিছু ফুল মালা
যেভাবে শিউলী ফুলের মালা দিনশেষে ত্যাগ করে তার কামুকী রুপ
শুকাবার পরে বকুলগুলো তার রমনীয় সুগন্ধ আরো আকুল হয়ে ছড়ায়
তবুও এ সৌষ্ঠব টানটান নির্ভাজ মুখশ্রী হয় কালচে সিটেপড়া।
তোমার নখরগুলো আমার বুকের মাংসপিন্ডে যখন আরো গেঁথে বসে
ভেতর থেকে ভেতরে, তীব্রভাবে, আরো গভীরে
হাল্কা সাদা মাংস চামড়া স্তর ভেদ করে উঁকি দিয়ে হয়ে উঠে লালাভ
তখন আরো বেশী রক্তাতিসার হতে ইচ্ছে জাগে
তোমরা মেথিগন্ধময় উস্কখুস্ক বিচলিত ধূসর কেশগুলো
চাবুকের মতো করে মুঠিতে নিয়ে আঘাত কর, আঘাত
কানে চিবুকে কপালে চোখে গালে জিহ্বায় নাকে
ভয়ানক লক্ষ বছরের নির্জলা মরুর সকল পিপাসাগুলো যেন এসে ভর করে
মরে যেতে ইচ্ছে হয়, যেন মরে যাই সুতীব্র কোন বাসনায়
আশেপাশে হরিণের পায়ের শব্দ, হস্তীকুলের জলকেলি
বন্যগরুর পায়তারা, ডাহুকের ডাকাডাকি, আগুনখেকো ডাইনোসর
প্রত্যেকটি প্রাণধারীর নিঃশ্বাস ধীরেধীরে মিলিয়ে আসতে থাকে
তারা যেন সহসাই সে যুগলের দুরন্ত ঝড় হয়ে উঠার গল্পটা অগ্রীম আঁচ করে
বন-বনানীর সবগুলো সবুজ পাতার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসতে থাকে
একসময় পুরো পৃথিবীর সবকিছু
মুহূর্তের জন্য দমবন্ধ করে ফেলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায়
প্রত্যেকে তার জীবনের সেই ক্ষণে হয়ে রয় নীরব
প্রত্যাশা, শুনবে জগতের শ্রষ্ঠ চঞ্চল ঝড়ো সংগীত।
♣"প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য" ♣
ধারাবাহিক কবিতা সিরিজ - ৩
আহারে বাহারে উহুরে
----------------------------------
আকাশের মনকালো চমকাল বৃথা আলো, মেঘের পতনে হৃদয় বিহনে, গহীনে
বরিষধারা বহে শিরীষের বনেতে, কাঁচামাটির ঘরে রে
বালির দামে মিলে খ্যাতিযশ মনুরে, ভবেতে ভাবেরে - " মুই কি হনুরে"
জিন নাম স্থান ব্যবধানে বানে পরিচয়, ভাবেতে বাঁচেনা রে, ওরা কারা রে
কানকষে ধরে ওরে চড়া রে, ওরে তোরা আচ্ছামতো জুতা দে।
জাগে ভুল, হয় ভুল যত ভুলে, বিঁধে হুল মনেতে
ভুলে ভরা এ জগতে ওরা ঝাকে ঝাকে মানবে মারে যে
ওরে ভোলা দে দোলা, ধরে ধরে শুলে চরা সব মাতারি গনেরে
যাবে কার গর্দান! জানে কেউ? জানে না যে
মরে তারা প্রাণে তে, বাঁচে শুধু শরীরে, দেখে যা ওরে তুই ও হরি রে!
যার যায় সে-ই জানে, বাঁচাবি কাহারে ও কাহারে?
অর্থের খোঁজে খামাকা বাজিয়ে ধামাকা নিশিদিন নষ্ট না কর তোর মাথাটারে
তাতারী যতসবে সারে ভুঁড়িভোজ আহা রে! তাতার তো তারাই যে
আছে কেউ হেথা এ ভবেতে না পায় দেখা বহুকাল আহারে, আহা রে!
তাহাদের মুখের আহার আসলে গেল কই বল তুই বল ওরে।
সবেমিলে মার টান পড়ে হবে খানখান আছে যত - বিচিবড়ো রাজা রে,
মার বাড়ি জোরে খিঁচে, বাজা তুই দুন্দুভি বাজারে।
দামী গাড়ী সুরসুরি, সাধে ঘোড়া মরে নারে ওরা, করে সব ধবধব ঝিকমিক চিকমিক
গাড়ীর সাবান ঘোড়ার স্যাম্পু ফেণিল ছিলছিল পিচ্ছিল
চুলে নয়গো রামভোদাই লাগা তোর পোঁদেতে, ধরে ওর পদরে
লাগে যদি আধা বেশী, আরো কষে আরো জোরে হেইয়োহো লাগা হে,
লা লা গুনগুন গাও গান টুনটুন , আহা বেশ বাজে তোর গলা! শেষ হলো নাকি রে!
বাহ বা মারহাবা, লাগা তালি তালে, ঝোলে তাল গাছে, ঝোলে সোনাগাছিতে
ঝোলা সব মধু ভরা, আহা না জানি মধু কত মিঠে যে!
মার্বেল খেলা কই, গেল সবে একসাথে গেল কই
নেই কাঁথা শীতে রাতে, গেল কোথা পিরিতের কথা সই
গোলগোল যত গোল, গোলমালে গোলেতে গেল সব হারায়ে একালে এ ভীড়েতে
দেখা মিলে মার্বেলে, মেলে তা ঘরবাড়ী দালানে কোটাতে
উঠোনে বিছানে তাহারে আর সেই সে তাঁহারে, ভরে দে কোটাতেই দে ভরে ওরে রে।
মনে তানে ধনে মনু তনু ধনু ভোলে, দোলে খুশী খুশিরে, আহ্! উহ্! সিৎকার সৎকার চিৎকার ধিক্কার অধিকার
জিবে আসে জল বাহারে। আহা রে তাহারি রুপ ভরা বাহ বাহারে!
আহাজারি ধ্বাজাধারী ভাঙা যত ধ্বজতে চারিপাশে ভরা রে, ওরে পুরোটাই ভরারে
কাঁচের বোতল টিনের বোতলে করে সে কতল, প্লাস্টিক যা ছিল গত রে, গতরে
পানি তাতে লাল নীল গোলাপী বিলেতি লাগে রঙিন, লাগে নিশা নিশিতে পেলে নিশারে
নেশা ভাগে নেশা আহা, মরি যেন হায় মরিরে, ধরা রে না বানা ভাই সরা রে,
খাবি বাবা রাম ধরা, খেতে চাস একা খা ধরা হে।
হুরের পাগল হুরেই ছাগল মিহি সুরে ডাকো তুমি ম্যাহ ম্যাহে, লুটে নাও আছে যত মজা হে
যাবে জুটে মজা সব মাজারে, বাড়া জোর মাজা তে পেতে চাস যদি তুই মজারে
নাই হুশ খাও ঘুষ মার ঢুস যত আছে মরারে, মরারাই ঘুরেফিরে বারেবারে মরে যে।
গুরুনাম পেন্নাম ভজনে ভোজনে ভাজনে বাজাবি যখন তুই অসুরো সেই বিণ
মিলিবে মিলিবে যত চাস যত ঋণ যতদিন, শুধিস রে
ওরে হাদা মন যদি চায় তোর তবে সে ক্ষণে তখনে
খেলাপী তারা সবে, থলে যত ছোটবড় ছেঁড়াফাটা নিয়ে তা হাজিরে বগলেতে বাজিয়ে
ওরে বাবা এরা দেখি হাজী হে, ডাকে কেন কেউ তারে নচ্ছার পাজীযে!
যেন সে খাপ খোলা মনভোলা ফুলতোলা তরবারি
চোরের আম্মায় রাঁধে ভারী সব তরকারি, তারে দেখি করে বেশী বেশী গলাবাজীরে
ওরে কপাল, তোর কপাল লিখা নেই পাজিতে
পেতে চাস তাকে তুই ? তবে খোঁজ কর তোর পাঁজরে।
খুঁজেখুঁজে হয়রানি, চোখ বুজে আরো খুঁজি, বোঝা আরো বাড়ে যে
আষাঢ়েতে চলিতেছে গপপো মহা খেজুরে, চোখেতে সুরমা কানে সুগন্ধি তুলা আতরে
আছে সাথে আড্ডায় নামীদামী পোস্ত পেস্তা গোমস্তা
চাঁচা ছোলা, ফালি ফালি কচি শসা, পানি রঙিন আর কাজু রে।
ওরে তোর মিথ্যা বাণী দানাপানি সবিতো খানদানী
বিতান যত বিপণী বিস্তারে বিস্তরে প্রতিক্ষণে জনে জনে
দে ওরে বিষ ভরে পেয়ালাতে তারে, ভেজালে সে মারে তোরে, সাথে তোর ছানা ও পোণারে
বানা তারে ঠেশে ধরে চিপে দিয়ে, বানা তারে বাঁজা রে
ঘূ্র্ণিবর্তে মায়ার মর্ত্যে আছে কিছুুু মিছে ঘোরে পিছু পিছু ঘরেতে, ঘোরে রে
মুখে যত মিছিরি সবি তার মিছেরে, ঘরে পালে বুকে ধরে মিশরের সুন্দরি মাসিরে, অসি মউসি পিসিরে।
ডরা ভাই ডরা তুই, কেঁদেকেঁদে ভাসা রে
ওই আইলো, এই খাইলো, ওই দেখা যায় ভুতে
সবে মিলে কাঁধেকাঁধ আসে যে, মটকাবে চটকাবে সটকাবে সব ভূতে
পালা তুই জান নিয়ে, দে ছুট পলারে, ওরে ও পোলা হে।
সিঁড়িতে সাধ, সাধ্যের অতীতে বাড়ে ক্ষতি রাতে রতি শরীরে
ভাগাড়ে হাসাহাসি ঠাসাঠাসি পাশাপাশি ঘোরে মাছি মিছেমিছি
হাতে হাত, ঠোটে ঠোট, জিবে জিব, বুকে বুক, নাকে নাক আরো কিছু
পিষে মরে, ঘষে জোড়ে শোরে, জোরে যশে উড়ে রে
আহ আহ আহারে
বাহ বাহ বাহারে
উহু উহু উহুরে
আহারে বাহারে উহুরে।
---------------------------
#প্রাপ্তবয়স্ক_কবিতা
তথ্যসূত্র ও কবিতা - অন্তর্জাল
©somewhere in net ltd.