![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একটা 'আমি' হবো এই ইচ্ছা ও আকাঙ্খায় কেটে গেছে দুইটি দশক হই হই করে হয়ে ওঠা হয়নি পূর্ণাঙ্গ ভাবে কখনই অতঃপর আমার ইচ্ছারা ডালপালা মেলেছে আজ কত শত প্রতিক্ষা প্রহর শেষে, কত শত সাধনার পর আমি একটা 'আমি' হব এই চিন্তায় কেটে যায় রাত
ঃআইজ নাই ,যা এইখান দিয়া
ওই হুন বাকি পইরা গেছে কাইল টেহা না দিলে খাওন পাবি না ।
নাহ কথাটা কোন দোকানদার বা কাস্টমারের ভিতর হচ্ছিল না , হচ্ছিল একটা মেয়ে আর লঞ্চের কেবিন মাস্টারের সাথে ।
চলুন মেয়েটাকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই ।
মেয়েটার নাম আদুরী , বাবা মায়ের খুব আদরের ছিল তাই আদুরী ডাকে । মেয়েটা স্কুলে যেত পড়ালেখাতে ভালই ছিল । স্যাররাও খুব ভালো বাসত মেয়েটিকে, ফার্স্ট হত তাই ।সেবার ক্লাস এইটের পরীক্ষায় এ প্লাস পেল , পুরো উপজিলায় ও একমাত্র এ প্লাস । উপজিলা চেয়ারম্যান ডেকে এক গ্রাম মানুষে ভিতর ২ হাজার টাকা দিল । মেয়েটির বাবাকে ডেকে হেডমাস্টার স্যার বলছিলেন “আদুরীর বাপ তোমার মাইয়ডা আমাগো গর্ব, ওর যত্ন নিও মাইয়া যে পর্যন্ত লেখা পড়া করতে চায় করাবা । কোন চিন্তা করবা না আমরা তো আছিই” । আদুরীর বাবা মেয়ের যত্ন নেয় ক্লাস নাইনে স্কুল আদুরীর লেখা পড়া ফ্রি করে দেয় এছাড়া উপবৃতি তো আছেই ।
বড় নদীটার উপর ব্রিজ হবে অনেক লোক জন আসছে আদুরীর বাবাও ওইখানে কজ নেয় । প্রধানমন্ত্রী উদ্ভোধন করবে ব্রিজ সবাই দেখতে যাচ্ছে আদুরীও বায়না ধরল প্রধানমন্ত্রীকে দেখবে । লক্ষি মেয়েটার বায়না বাবা ফেলতে পারে না নিয়ে যায় ।
এত্ত মানুষ কই দিয়ে আসলো আদুরী অবাক হয় । গ্রামে এত্ত মানুষ থাকে বুঝতেই পারেনি আদুরী বুঝবে কিভাবে ওর জগৎ যে স্কুল আর ওদের ছোট ঘর । কাজ শুরু হয় ব্রিজের । হঠাৎ আদুরীর ছোট ভাইটা অসুস্থ হয়ে পরে আদুরীর বাবার জন্য এতদিন খাবার নিত সেই । আজ আদুরী নিয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট পায়ে হাঁটছে । অনেক মানুষ সবাই হলুদ হেলমেট পরে কাজ করছে । পিলারের একটা কোনায় চোখ পরল আদুরীর, একটা ছেলে ২২ কি ২৩ বছর হবে । ছেলেটা তাকালে চোখে চোখে পরে গেল লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিল । এর পরের কয়দিন গেলেও ছেলেটিকে আর দেখে নাই আদুরী । হঠাৎ একদিন পিছন দিক থেকে একটা ডাক
ঃএই শোন ।
- আমারে কইতাছেন ?
ঃ হ্যা তোমারে । কি নাম তোমার ?
-নাম দিয়ে কি করবেন ?
ঃ জানব
- জেনে কি করবেন ?
ঃ কিছু করব না ।
-তাহলে জানারও দরকার নাই ।
বলে হন হনিয়ে চলে যায় আদুরী একবার ফিরে তাকাতে ইচ্ছে করলেও তাকায় নাই । কয়েকদিন একটু ভয়ে ভয়ে থাকলেও ছেলেটিকে দেখেনি আদুরী । ভাবছে বাঁচছে সে । বাঁচে নাই । হঠাৎ পথ আগলে দাড়ায় কেউ একজন,
ঃতোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে
-আমার আপনার সাথে কোন কথা নেই সরে জান ।
ঃ নাহ সরব না , আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে চাই আমি ।
-কথাটা শোনার পর আদুরী প্রায় দৌড়ে পালায় ।
আদুরী প্রেম ভালোবাসা প্রায় বোঝে না । বান্ধবীদের কাছে শুনেছে কিন্তু এমন ভাবে তাকে কেউ বলবে তা কখনো কল্পনাও করে নি সেই রাতে আর ঘুম হয় না আদুরী চিন্তা করছিল ছেলেটার ভিতর কি যেন একটা মায়া আছে বারবার মনে পরছে । এরপর দুই দিন স্কুলে যায়না আদুরী মা জিজ্ঞেস করলেও কিছু বলে না।
আদুরীর মা আজ প্রায় আজ জোর করেই স্কুলে পাঠাল ক্লাসে সারাদিন মন ছিল না । আসার সময় অন্যমনস্ক হয়ে পথ হাঁটছিল আদুরী হয়ত কাউকে খুঁজছিল । আচমকা হর্ন এর শব্দ শুনে ভয়ে পেয়ে লাফিয়ে উঠল আদুরী । মোটরসাইকেলটা সামনে এসে দাঁড়াল না এতো সে ছেলে না । ছেলেটা একটা বাজে ইঙ্গিত করে যা বলল তার অর্থ এমন দাড়ায় সে চেয়ারম্যানের ভাতিজা আদুরিকে দেখে ভালো লাগছে এখন আদুরিকে তার সাথে প্রেম করতে হবে । আদুরী এবার দৌড়ে পালায় । দৌড়তে দৌড়তে ধাক্কা খায় সেই ছেলেটার সাথে,প্রায় জরিয়ে ধরেই কেদে ফেলে । ছেলেটা শান্ত করে আদুরীকে, আদুরীর এই প্রথম অচেনা মানুষটিকে খুব কাছের মনে হয় । ছেলেটি আদুরীকে এগিয়ে দিয়ে আসে । আদুরী বাড়িতে এসে পথের ঘটনাটা খুলে বলে । আদুরীর বাবা বলে একটু ধৈর্য ধরতে । সে রাতে আদুরী বুঝতে পারে আদুরীর জীবনে একটা পরিবর্তন ঘটতে চলছে নতুন কেউ আসতে চাচ্ছে । তবুও চিন্তাকে সরিয়ে রাখে । পরের দিন ঠিক ঠাক স্কুল করে বাড়ি ফিরে আসে । রাতে বাবাকে একটা ছেলে নিয়ে আসে ছোট খাটো একটা দুর্ঘটনা ঘটে আদুরীর বাবার । সেই ছেলেটা যে কিছুদিন আগে আদুরীকে বলে সে তাকে ভালোবাসে । আদুরীর বাবা পরিচয় করিয়ে দেয় ছেলেটির নাম হাসান, সাইটের বিদ্যুতের কাজ করে । অনেক প্রশংসা করে ছেলেটি ভালো বলে । এর মাঝে কয়েকবার চোখে চোখ পরে আদুরী আর হাসানের ।
আদুরীর বাবা পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার মধ্যে প্রায় প্রতিদিন হাসান তাদের বাসায় আসত খোঁজ খবর নিত টুকটাক বাজার করে দিত । কখনো কথা হয় নি আদুরী আর হাসানের । আদুরীর বাবা সুস্থ হবার পর হাসান ওদের বাড়িতে আসা বন্ধ করে দিল । স্কুলের পথেও দেখা যায় না । আদুরী বুঝতে পারে ছেলেটাকে সে খুঁজছে । শেষ পর্যন্ত আদুরী সিদ্ধান্ত নেয় হাসান যেখানে থাকে সেখানে গিয়েই দেখা করবে । ছোট ভাইকে নিয়ে যায় আদুরী পথেই দেখে কাজ করছে এবার আর কোন দেরি করে না একটা কাগজ হাতে দেয় হাসানের যেখানে লেখা থাকে “আমিও তোমাকে ভালবাসি” । এরপর চলতে থাকে ওদের স্বপ্ন গড়ার কাহিনী আদুরীর এসএসসি পরীক্ষা চলে আসে প্রস্তুতি ভালোই । শেষ পরীক্ষার দিন সেই বখাটে ছেলেটা আদুরীর পথ আটকায় এবার সে আদুরীর অরনা ধরেও টান দেয় । আদুরী কেঁদে তার বাবাকে বলে । আদুরী চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ কর এরপর অত্যাচার আরও বারতে থাকে বাড়ি এসে হুমকি দেয় ।এর মধ্যে চেয়ারম্যান আদুরীর বাবার কাছে প্রস্তাব দেয় প্রস্তাব বলাতা ভুল চাপ দেয় । কোন উপায় না দেখে আদুরীর বাবা রাজি হয় কিন্তু আদুরী সরাসরি না করে দেয় । তারপরও চলতে থাকে বিয়ের তোরজোড় আদুরী হাসানকে বলে সব । ওরা সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে যাবে । এমনি একটা লঞ্চে করে বরিশাল থেকে ঢাকা পারি জমায় ওরা । অচেনা আদুরীর লঞ্চটাকে একটা স্বর্গ মনে হয় । মনে হয় । মনে হয় নদীর মাঝে একটা স্বর্গ ভেসে আছে । একটা ছোট বস্তিতে ওঠে ওরা, হাসান এক বন্ধুকে বলে সব ঠিক করে রাখে । হাসান জানে ওর কাজের অভাব হবে না একটু কষ্ট হলেও চলে যাবে দুইজনের। জমানো টাকা দিয়ে কিছু জিনিস পত্র কেনে । রাত হয়ে যায় অনেক হাসানের বন্ধু সব ব্যাবস্থা করে রাখছে কাল সকালেই কাজী ডেকে বিয়ে হবে । নিজ হাতে হাসান বিরানি খাইয়ে দেয় আদুরীকে । এতো মজার খাবার আদুরী কখনো খায় নি । রাতে ঘুমনোর সময় আদুরী খুব কাঁদে নিশ্চয়ই সবাই জেনে গেছে ওর বাবা মাকে কি না কি বলছে । হাসান বলে কয়দিন পর ওর বাবামাকেও ঢাকা এনে রাখবে এক সাথে থাকবে সবাই । আদুরী হাসানের বুকে মাথা রাখে । কালত বিয়ে হবেই তা ভেবে সে রাতের নারী পুরুষের অদম্য আদিম টানকে এরাতে পারেনি হাসান বা আদুরী কেউই । পরদিন সকালে হাসান তার বন্ধুকে নিয়ে বের হয় । সকাল গড়িয়ে দুপুর হয় ওরা আসে না । আদুরীর দুনিয়াতা এলোমেলো হয়ে যায় । বিকালে হাসানের বন্ধু আসে সাথে থাকে একটা লাশ হাসানের লাশ । যার জন্য আদুরী সব ত্যাগ করে এখানে । আদুরী অজ্ঞান হয়ে যায় । অনেক কিছু করে ওর জ্ঞান ফিরানো হয় । হতভম্ব আদুরী দিক হারিয়ে ফেলে ঢাকাতেই হাসানের দাফন হয় । অনেক বড় এক ঢাকার মাঝে ছোট এক আদুরী একা হয়ে যায় । বাড়িয়ে ফিরে যাবার আর উপায় নেই। কি করবে ? এক সপ্তাহ কেটে যায় হাসানের বন্ধু আর তার বউ আদুরীকে স্বাভাবিক করার আপ্রান চেষ্টা করে । বড় ঢাকায় ছোট এক আদুরী অনেক বড় বোঝা বুঝতে পারে আদুরী । চলে আসে বস্তিতে যেখানে আছে হাসানের সাথে এক রাতের সকল স্বপ্ন । পাশের এক খালাকে আদুরী কাজের কথা বলে খালা বলে সেজেগুজে থাকতে একজন আসবে সে নাকি কাজ দেবে । খালাই সাজিয়ে দেয় আদুরীকে । রাতে খালা একজনকে নিয়ে আসে, আসি বলে খালা চলে যায় ।তারপর লোকটি আদুরীকে ...
এরপর এভাবেই চলছিল অসহায় আদুরী কোথায় যেন একটা জালে বন্ধী হয়ে যায় বাড়ি থেকে বের হতে পারে না যে যখন যেই টাকা দিয়ে যায় খালা এসে নিয়ে যায় । খাবার দিয়ে যায় আর প্রতিদিন নতুন একজন । এভাবে কেটে যায় এক মাস । হাসানের বন্ধু এসেছিল আদুরীকে দেখতে, সব শুনে নিয়ে যায় আদুরীকে । আদুরীকে বাড়ি দিয়ে আসতে চায় সে বোরকা পরে যাবার জন্য রাজিও হয় । বাড়ি গিয়ে শোনে আদুরীর বাবা মাকে গ্রাম ছাড়া করছে চেয়ারম্যান । আবার চলে আসে ঢাকা । কিন্তু হাসানের বউ সহজ ভাবে নেয় না আদুরীকে । দুইদিন ঘাটে ভিড়ে থাকা লঞ্চের ডেকে আদুরী এর পর এক লঞ্চের মাস্টার জোর করেই ভোগ করে আদুরীকে। লেখাপড়া জানা আদুরী আজ অসহায় তারপর থেকে লঞ্চের তার বাস । কেউ যদি চুপি চুপি মাস্টারের কাছে নারী দেহের সন্ধান করে মাস্টার আদুরীকে চুপিসারে গভির রাতে তার কেবিনে দিয়ে আসে । তার খরচ দিয়েই আদুরী নিজের পেট চালায় ।
আজ আদুরীর এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দেবে সে আজ খুজতেও যাবে না জীবন যুদ্ধে ফেল করে পরীক্ষার খাতায় পাশ করছে কিনা ...
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫১
নষ্টছেলে তানিম বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৯
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এভাবেই আদুরিয়া হারিয়ে যায় অন্ধকারে।
এই সমাজ, সংসার আদুরীদের স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে দেয় না।
৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৯
নষ্টছেলে তানিম বলেছেন: অথবা আমরাই বাধ্য করি
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৬
বাংলার ফেসবুক বলেছেন: সুন্দর ভাল লাগলো।