নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানিম মাহমুদ

তানিম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবিক ও শারীরিক ভালোবাসার গল্প

১৬ ই আগস্ট, ২০১১ ভোর ৬:৫৬

কেস১: স্কুল জীবনের শেষদিক থেকে তার সাথে সম্পর্ক ছিল। স্কুল পালিয়ে দেখা করা, ঘুরে বেড়ানো, প্রায় প্রতিদিন চিঠি লেখা, তার দেয়া একই চিঠি হাজারবার পড়া, ভবিষ্যতের রঙিন স্বপ্নবোনা, সবই চলেছিল টানা ৩বছর। তারপর ইন্টারমিডেয়েট পরীক্ষার আগে হঠা‌‌‌ত্ মেয়েদের সেই পুরাতন ডায়লগ, "বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, ছেলে ইটালী থাকে..........."

: তুমি মেনে নিলে.???????

"আমার কিছু করার ছিলনা.........ও.......তাছাড়া........"

অত:পর আমার এস.এস.সি'তে করা নজরকাড়া রেজাল্টের সাথে যোগ.....এইচ.এস.সি'র......লজ্জাকর রেজাল্ট।

তবে দেড় বছরের মধ্যে অন্ধকার জগত থেকে ফিরে আসতে পারলাম, বন্ধুদের সাহায্যে আর মা-বাবার করুন মুখের দিকে তাকিয়ে।



কেস২:

ভার্সিটিতে প্রথম থেকেই লেগে থাকলাম ভালো রেজাল্ট করার জন্য।

বন্ধু, পড়াশোনা, নামায, সাহিত্য এসব কিছু নিয়ে ভালোই চলছিল লাইফ। ৪র্থ ইয়ারে ঝড়ের বেগে জীবনে আসল দেবি'। হ্যা আমি তাকে দেবি বলেই ডাকতাম। এত সুন্দর মানুষ এবং এত সহজ মেয়ে আমি আর কখনোই দেখি নাই। প্রেমে পড়লাম, শুধু পড়লাম না উথাল-পাথাল অবস্থা। পড়ালেখা টেবিলে রেখে সারাদিন শুধু ঘুরে বেড়াই। এভাবে মাস্টার্স এর শেষের দিকে আবার সেই বহু-পুরাতন কথাটা শুনতে হয়....

"বাবা-মা, আমার জন্য এক ফরেনার ছেলে ঠিক করে ফেলেছে, তুমি কিছু একটা কর প্লিজ...."

: আমারতো আর ৪/৫ মাস পরেই মাস্টার্স শেষ হয়ে যাবে, তুমি যেমন করেই হোক আমাকে শুধু এইকয়টা মাস সময় দাও....' শুধু এ্টুকু বলেই বসে থাকিনি, আমি সাহস করে তার বাবার সাথে দেখা করলাম।তার শিক্ষিত, বাবা চিরাচরিত একটা কথা বলেই আমাকে চরম অপমান করলেন।

"তুমি পড়ালেখা শেষ করে যতদিনে প্রতিষ্ঠিত হবে, ততদিনে আমার নাতনিই বিয়ের উপযুক্ত হবে"..... এবং আমার সাথে সেই ফরেনার ছেলের তুলনা করে তার সৌর্য-বীর্য'র একটা ক্যারিশমা দেখিয়ে দিলেন।

........অত:পর আমার ভালোবাসা'র দেবি'র রূপান্তর ঘটে খুব দ্রুত, এবং আমার একসময় মনে হয় সে এখন দেবি 'কালিমূর্তি' ।



আসল মজাটা মনে হয় তারপর।

৭/৮ মাস পরেই আমি শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে বিদেশ যাওয়ার সব কনর্ফাম হয়ে গেল। এরপরই দেখতে লাগলাম, আমার চারপাশের অনেক পরিবর্তন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোনাকোন পাত্রী'র সন্ধান নিয়ে আমার এলাকার সুহৃদ আন্টিরা আসতো।কারণ তাদের মতে আমার নাকি এখন ডিমান্ড ভালো। প্রথম অস্বস্তি লাগতো, পরে মাথায় বুদ্ধিটা আসে।

আমিও একের পর এক পাত্রী দেখতে লাগলাম(অবশ্যই মর্ডাণ স্টাইলে রেস্টুরেন্ট বা পার্কে,) এবং আমার ভালোমানুষি টাইপ চেহারা নিয়ে মেয়েগুলির সাথে আলাপ করতাম, মোবাইল নাম্বার রাখতাম। এবং সবার সাথেই এমন ভাব করতাম যে, আমি তাকে ছাড়া আর কাউকেই বিয়ে করবো না। ৪টা মেয়ের ফ্যামিলিই জানতো আমি তাদের মেয়েকেই পছন্দ করি এবং আগে হোক পরে হোক এমন সুপাত্র(!) হাতছাড়া হচ্ছেনা। অতএব, লে বাবা মজাটা করে নে। আমার অতীতের সব অপমান আমি একে একে তুলে নিতে লাগলাম। ৩/৪বছর সম্পর্ক রেখেও, শুধু পবিত্র একটা সম্পর্কের জন্য কোনদিন প্রেমিকার হাতধরার বেশি কোনকিছু মনে স্থান দেই নি, সেই আমি ২সপ্তাহের রিলেশানে হবু বর হিসেবে কিসমিসের স্বাদ নেই। ফরেন পাত্র হিসেবে তেমন কোন বাধাই পাই না। কেবল শুনি.....

"তোমাকে দেখে মনেই হয় না, এত দুষ্ট তুমি!!!...."

মনে মনে হাসি আর ভাবি...এইকথাটা সে কয়জনকে বলেছে ভেবে।

আবার অনেক সময় আশ্চর্য হই, সব মেয়ে একই ডায়লগ. দেয়..

যেমন."এ..ই..ই গায়ে হাত দেবে না প্লিজ, লোকে দেখবে"

আমি গায়ে অবধারিত ভাবে হাত দেই এবং হাসি এই ভেবে 'তারতো কোন আপত্তি নেই শুধু লোকে না দেখলেই হলো।'

এবং যার বাসাতেই যাই হবু জামাইর খুব খাতির,

"এই.......তামান্না দেখে যা কে এসেছে.....তোমরা কথা বল...আমি আসছি"

এই ভাবে মেয়ের মা-খালারা আমি না চাইতেই নিরিবিলিতে একটু-আধটু ইয়ে মানে আদর করার সুযোগ করে দেয়।

শেষের দিকে ৪টা মে্য়েই প্রায় একই ডায়ালগ দেয়,

"তুমি যদি আমাকে বিয়ে না কর, আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে, আমি আত্মহত্যা করব"

আর আমি কপট রাগ করে বলি -

: "ছি: এমন কথা বলতে নেই" (আর মনে মনে বলে আমি বিয়ে না করলেও আরেকটা আরও ভালো ফরেনার পাত্র ফেলে একই ভাবে তাকেও এই কথাই বলবে )।



আমার বিদেশ যাওয়ার ১মাস বাকি, সব কমপ্লিট তাই শুধু খেয়ে দেয়ে ফা্ও ডেটিং করে বেড়াই।প্রায় প্রতিদিনই কারো না কারো সাথে ডেট্ থাকতো।

সবচেয়ে চরম মজা পেলাম আমার একসময়ের দেবি' থেকে।একদিন হঠা্ত্ ফোন পেলাম- সেই চিরচেনা কন্ঠ, সেই একই রকম...

"শুনলাম তুমি ক্যানাডা যাচ্ছ......

: হ্যা

"আমাকে একবারও বললে না.....(কান্না...কান্নার দমকে সে কথাও বলতে পারতেছিলনা, পারেও বটে দেবিরা..)"

: সময় হ্য়নি

"তাই বলে আমাকে বল্লে না.....(কান্না...)"

আমি মনে মনে বলি, তখন ফরেনার সুপাত্র পেয়ে তুমি যেভাবে পাল্টে গেলে তাতে তোমাকে আমার আপন ভাবতেই ঘৃনা হয়।

শুধু মুখে বলি

: ব্যস্ত ছিলাম

এভাবেই আবার প্রতিদিন ফোন করতো, পরে নিজেই বললো তার সেই বিয়েটা হয়নি কারণ বলতে চেয়েছিল আমি শুনিনি।

"তুমি কি আমাকে আর ভালোবাসও না?"

: এখন আমি কোন মেয়েকেই ভালোবাসি না শুধু তাদের শরীর পাবার জন্য যতটুকু ভালোবাসার ভান করতে হয় ততটুকু করি, আই থিংক দ্যাটস্ এণাফ।



তাকে এই উত্তর দিতে পেরে আমি সত্যিকারের আনন্দ পেলাম। আমার বুক থেকে মনে হয় একটা পাথর সেদিন নেমে গেলো। তারপর আর ফোন করেনি, এবং আমি খুব প্রশান্ত মনে চলে এলাম ক্যানাডা।





-- মন্জুরুল মোরশেদ

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:১৯

নিশাচর ভবঘুরে বলেছেন: ভালোবাসা কি? পরিস্থিতিতে বদলে যাবার জন্য সৃষ্টি হওয়া বস্তু? কখনো শরীরে,কখনো মনে, কখনো প্রয়োজনে?
আপনি হয়তো,সত্যিকারের ভালোবাসা পাননি। হয়তো, যাদের শরীর ছুঁয়েছেন বিকৃত মানসিকতা নিয়ে।তাদের কেউ একজন আপনাকে ভালোবেসেছিলো। তাঁর জন্য, বেদনা অনুভব করছি।

আবার, আপনি হয়তো ঠিক কাজ করেছেন। জানিনা। জানতেও চাইনা। তবে এটা জানি, ভালোবাসা না পেয়ে আপনি পশু হয়ে গেছেন। একজন কামার্ত পশু।

২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৭:৩৩

আকিল 00 বলেছেন: Like this FACEBOOK page Click This Link

৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:১১

রিফাত হোসেন বলেছেন: নিশাচর ভবঘুরে বলেছেন: ভালোবাসা কি? পরিস্থিতিতে বদলে যাবার জন্য সৃষ্টি হওয়া বস্তু? কখনো শরীরে,কখনো মনে, কখনো প্রয়োজনে?
আপনি হয়তো,সত্যিকারের ভালোবাসা পাননি। হয়তো, যাদের শরীর ছুঁয়েছেন বিকৃত মানসিকতা নিয়ে।তাদের কেউ একজন আপনাকে ভালোবেসেছিলো। তাঁর জন্য, বেদনা অনুভব করছি।

আবার, আপনি হয়তো ঠিক কাজ করেছেন। জানিনা। জানতেও চাইনা। তবে এটা জানি, ভালোবাসা না পেয়ে আপনি পশু হয়ে গেছেন। একজন কামার্ত পশু।

#__-
নিশাচর সাহেবে মনে হয় . ইয়ে হয় না । :)


ভালবাসার অর্থ বোঝেন আগে, মানসিক ভালবাসা , শরীর থেকেই শুরু হয় ।

না দেখে, না শুনে কেউ কাউকে ভালবাসে না, ভালবাসতে পারে না ।

দেখা বলতে মুখও বুঝায়, শুনা বলতে কন্ঠও বুঝায় । বুঝেছেন ।... দেবদাস নিশাচর সাহেব । :)

৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৮:৩৩

দূর প্রবাসী বলেছেন: জটিল হইছে ভাই।

৫| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:০১

আহমেদ সাব্বির পল্লব বলেছেন: ভাই লেখা বালা পাইছি.... সৌন্দর্য হইছে।

৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:৪৯

ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন বলেছেন: কিছুটা সত্য কিন্তু সব মেয়েরা কিন্তু এমন হয় না।

৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ৯:৫৫

আলোক রাশি বলেছেন: আপনার ভালো লাগছে? যোদি কখনো আপনার ভেতরে মন বলে খারাপ তাহলে বাদ দিবেন। আপনার আর ওর মাঝে পারথকক থাকছে না।

৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১০:৩২

নাঈম১২৩৪ বলেছেন: ক্ষোভ নিয়ে যা করছেন তা কি আপনার ব্যক্তিত্বের জন্য ভালো হচ্ছে ? শুধু শুধু আত্মাকে কলুসিত করার কোন মানে হয়। আপনি তো লোক খারাপ না। তাহলে কেন এই স্ববিরোধী কর্মকান্ড ?

৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:০৭

নিশাচর ভবঘুরে বলেছেন: @রিফাত হোসেনঃ ভাই, কি বুঝেছেন সেটা আপনি আর আপনার বিধাতা জানেন। আমি দেবদাস? =p~ =p~ =p~ =p~ =p~

তবে কিছু লেখার মাঝে,পক্ষে-বিপক্ষে দাড়াতে চেয়েছি। পেরেছি কি?

১০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:২০

শেখ সাব্বির আহমেদ বলেছেন: জটিল হইছে ভাই। সব সত্য সব মেয়েরাই এমন হয়

১১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ১:০২

অণুজীব বলেছেন: এটা আগেও পড়েছি

১২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩৬

তারিক১১ বলেছেন: ভাই,ভালই করছেন।্যারা শুধু টাকা আর প্রতিষ্ঠিত হওয়াকেই প্রাধান্য দেই তাদের প্রতি সম্মান আসবেই বা কিভাবে?আর সম্মান তা একবার উঠে গেলে তা আর ফিরে আসে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.