নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানিয়া লাইজু সুমি

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি

আমি একজন মানুষ। হেঁটে চলেছি জীবনের পথে। ভালোবাসি শিশুদের। শিশুদের নিয়েই কাজ করি। ভনিতা ঘৃনা করি। প্রতিদিন অন্তত একজন মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিসলেক্সিয়া এবং শেখা

৩০ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:২৪

স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা থাকা সত্ত্বেও শিশুর পড়া এবং বানান নিয়ে প্রতিবন্ধকতাকে বলে ডিসলেক্সিয়া। পৃথিবীতে অনেক শিশু আছে যারা স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তার অধিকারি, অনেক কাজ অনেক ভালোভাবে করতে পারে, কিন্তু পড়ার সময় ঠিক অনুধাবন করতে পারেনা অর্থাৎ, পড়তে পারে না। তারা বানান নিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়ে। এর ফলে শুদ্ধ উচ্চারণ করে পড়তে পারে না। পড়া বলতে যেহেতু উচ্চারণ এবং বোধগম্যতা বোঝায় তাই তাদের পড়ার যোগ্যতা অর্জিত হয় না। আর পড়ার স্বাভাবিক যোগ্যতা যাচাই করা হয় উচ্চারণ, গতি, বিরতি, স্বরভঙ্গি এবং বোধগম্যতার ওপর ভিত্তি করে। এর যেকোনোটির ঘাটতির জন্যই পড়ার যোগ্যতা ব্যহত হতে পারে। আর পড়ার যোগ্যতা ব্যহত হলে ভাষার আরও তিনটি দক্ষতা- শোনা, বলা এবং লেখায় এর প্রভাব পড়ে। আর পড়া যেহেতু সকল শিখনের সফল চাবিকাঠি হিসেবে কাজ করে তার ফলে অপর সব শিখনের ক্ষেত্রেও একটি বড় বাঁধা হয়ে দাড়ায় এই প্রতিবন্ধকতা।
আমাদের সবারই মোটামুটি তারে যামীন পার সিনেমার কথা মনে আছে। ঐ ছবিতে ছোট যে শিশুটি ছিল তার ডিসলেক্সিয়া ছিল। আমাদের মনে আছে শিশুটিকে বিদ্যালয় তো নয়ই, তার পরিবারের লোকজনও বুঝতে পারেনি। বাস্তবেও তাই হয়ে থাকে। সমস্যা বুঝতে না পারায় ডিসলেক্সিয়ায় থাকা শিশু সঠিক পরিচর্যা পায় না। ফলে সে ভালো করে শিখতে পারে না; ক্রমেই পিছিয়ে পড়ে।
কারণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে, সাধারণত জেনেটিক্স এর কারণেই ডিসলেক্সিয়া হয়ে থাকে। কারণ যাই হোক না কেন, এসব শিশুর অসীম সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলা যায় সঠিক যতœ ও পরিচর্যা করে। সাধারণত দেখা যায় এসব শিশুরা পড়ার সময় অন্য দিকে মন দেয়, কারণ স্বাবাবিক পড়া শেখানোর নিয়মে তারা কোনো আনন্দ বা উৎসাহ পায় না। তাদের মনে হয়, বর্ণ, শব্দ, বাক্য তাদের সামনে নাড়াচাড়া করছে। তারা সঠিক শব্দটি সঠিক বানানে দেখতে পায় না। অনেকে আবার বর্ণ বা শব্দ উল্টো ইমেজে দেখতে পায়; ছোট বেলা অনেক শিশুই উল্টো করে লেখে। ৭ উল্টো করে লেখে। এ কার উল্টো করে দেয়। একে মিরর ইমেজ প্রতিবন্ধকতা বলে। এসব ঘাটতিই পূরণ হতে পারে শিশুটিকে একক ধরে শিখন-শেখানো পরিকল্পনা করলে। হাওয়ার্ড গার্ডনার এর বহুমুখী বুদ্ধিমত্তা তত্ত্ব অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন শিশু ভিন্ন ভিন্ন রকম করে শিখতে পছন্দ করে। এ তত্ত্ব অনুযায়ী সাধারণত আট ধরনের বুদ্ধিমত্তার শিশু দেখা যায়:
১. মৌখিক ও ভাষামূলক বুদ্ধিমত্তা (Verbal/Linguistic Intelligence).
২. যৌক্তিক ও গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা (Logical/Mathematical Intelligence).
৩. অনুভূতি ও শরীরবৃত্তিক বুদ্ধিমত্তা (Body/Kinesthetic Intelligence).
৪. ছন্দ ও সংগীতমূলক বুদ্ধিমত্তা (Musical/Rhythmic Intelligence).
৫. দৃষ্টি ও অবস্থানমূলক বুদ্ধিমত্তা (Visual/Spatial Intelligence).
৬. অন্তঃব্যক্তিক বুদ্ধিমত্তা (Interpersonal Intelligence).
৭. আন্তঃব্যক্তিক বুদ্ধিমত্তা (Intrapersonal Intelligence).
৮. প্রাকৃতিক বুদ্ধিমত্তা (Natural Intelligence).
একজন সহায়ককে শিশুর ঘাটতি নয়, বরং এসব বুদ্ধিমত্তা জেনে শিখন-শেখানো পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। শেখার কিছু স্তরভিত্তিক যোগ্যতা নির্ধারিত আছে। সে যোগ্যতাগুলোকে সামনে রেখে বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে শিখন পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। শিখন পরিকল্পনায় এক ধরনের পদ্ধতি না রেখে বিভিন্ন রকম পদ্ধতি রাখা প্রয়োজন। আর এ বিভিন্ন রকম পদ্ধতি বাস্তবায়ন করার জন্য উপকরণের বৈচিত্র্য থাকাও প্রয়োজন। কোনো শিশু হয়তো খেলে ভালো শিখবে, কেউ গল্প বা ছড়া পড়ে ভালো শিখবে, কেউ আবার পর্যবেক্ষণ করে ভালো শিখবে। এর বাইরেও অনেক রকম শেখার পদ্ধতি রয়েছে। তাই শেখার অনেক রকম পদ্ধতির যুক্তিসম্মত সমন্বয় প্রয়োজন। আর একে বাস্তবায়িত করার জন্য কখনো বই, কখনো প্রকৃতির জিনিস (বিচি, পাতা, মাটি ইত্যাদি), কখনো ছবি, কখনো খেলার সরঞ্জাম ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। কে জানে, সঠিক পরিচর্যা পেলে হয়তো আজকের শিশু আগামী দিনের আইন্সটাইন হয়ে গড়ে উঠবে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১০:২৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বিষয়টি জানা ছিল না। শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:২৩

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পড়ার জন্য ও ফিডব্যাক দেয়ার জন্য।

২| ৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:২৭

বিজন রয় বলেছেন: কাব্যময় নিক নেম!

সুন্দর।

ব্লগে স্বাগতম।
শুভকামনা রইল।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:২২

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি বলেছেন: নিক নেমটা মনের ইচ্ছেটারই প্রকাশ মাত্র। ধন্যবাদ।

৩| ৩১ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩৪

পংঙ্কজ অধিকারী বলেছেন: সুন্দর

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:২৩

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০২ রা জুন, ২০১৭ সকাল ৮:১২

শিপন মোল্লা বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম । এতোদিন আপানার লিখা ফেইসবুকে পড়ছি এখন থেকে ব্লগেও পড়তে পারবো ভাল লাগতেছে ব্যাপারটা। পছন্দের লিখা গুলি পিয়েতে নিয়ে রেখে দিতে পারবো।

নিক পছন্দ হয়ছে।

এই লিখাটা সিরিজ লিখা আশা করি বাকি লিখা গুলিও ব্লগের পাঠকরা পাবে। শুভকামনা ।

৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৮

ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি বলেছেন: আপনাদের উৎসাহ আমার লেখার জন্য প্র‌য়োজনীয়। ইচ্ছা আছে আমার জানা, অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, শিখন লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করার। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.