![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খালেদা জিয়ার বক্তব্যে আমার অনেক জাতীয়তাবাদি দল সাপোর্ট করা বন্ধুদের কাছেই হতাশার কথা শুনেছি। আমিও হতাশ হয়েছি। কিন্তু ফেইসবুকে একেএম ওয়াহিদুজ্জামান নামের এক ভদ্রলোকের লেখা পড়ে কৌতুক বোধ করলাম। নিচে তার লেখার ও আমার জবাব একই সাথে দিলাম যেন পড়তে সুবিধা হয়। ভুল ত্রুটির জন্য অগ্রীম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি কাউকে আঘাত দেবার জন্য এই লেখা লিখছি না। আমার কথা এত আমলে নেয়ারও কিছু নাই। যার ভালো লাগে পড়বেন; যার ভালো লাগে না পড়বেন না।
<<খালেদা জিয়ার বক্তৃতাঃ দেশে চলমান সহিংসতার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারকে দায়ী করেছেন;
ওয়াহিদুজ্জান সাহেবের বক্তব্যঃ ৯০% সত্যি। সরকার রায়ের আগেই প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছিলো, কিন্তু সেই প্রস্তুতি যে মিছিল দেখামাত্র গুলি করে মানুষ মারার প্রস্তুতি তা জানা ছিলো না। সরকারের উচিত ছিলো রায়ের বিষয়টিকে এবং রায়ের ফলে সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাময় জনগোষ্ঠীকে তাদের ধর্মীয় মতবাদ দিয়েই বোঝানো। যে ফেসবুক/ব্লগ জনগোষ্ঠী দিয়ে সরকার 'ছাগু' ডাকা পদ্ধতিতে জনমত তৈরী করার চেষ্টা করছে, তারা বরং টার্গেটগ্রুপকে ক্ষেপিয়েই তুলতে পেরেছে।
অধমের জবাবঃ দেশের চলমান সহিংসতার জন্য সরকার ৯০% দায়ী???? জামায়াত শিবিরের লোকজন প্রতিবাদের নামে অস্ত্র নিয়ে সাধারন জনগন বিশেষ করে পুলিশের উপর ঝাপিয়ে পড়বে-আর তার প্রতিরোধ করলে দোষ সরকারের??? মিস্টার ওয়াহিদুজ্জামান মিছিল দেখামাত্র যদি পুলিশ গুলি করত তাহলে হতাহতের সংখ্যা ৪ অংক ছাড়িয়ে যেত। ফেইসবুকে বসে এমন পাকা পাকা বুলি দেয়া যায়; যেই পুলিশটা হামলার স্বীকার; যেই পুলিশটার সহকর্মী হামলার স্বীকার তারা জানে পরিস্থিতি কেমন ছিল। আর দয়া করে শুধুমাত্র ‘দৈনিক আমার দেশ’, ‘নয়া দিগন্ত’, ‘সংগ্রাম’ টাইপের পত্রিকা না পড়ে অন্য পত্রিকাগুলোতেও একটু চোখ রাখবেন যদি আপনার সময় হয়। >>
<<খালেদা জিয়ার বক্তৃতাঃ ইসলাম ধর্ম অবমাননা বিষয়ে এবং সেই অবমাননাকারীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেবার বিষয়ে কথা বলেছেন;
ওয়াহিদুজ্জান সাহেবের বক্তব্যঃ ১০০% সত্য। যে কারো অধিকার আছে আস্তিক বা নাস্তিক হবার। কিন্তু কারো অধিকার নেই আরেকটি ধর্মকে অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফিক ভাষায় আক্রমণ করে দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের পথ উম্মুক্ত করার।
অধমের জবাবঃ ১০০% চাপাবাজিমার্কা কথাবার্তা। ধর্ম অবমাননাকারীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ব্যাপারটা আপনি কোথায় পেলেন? এখন পর্যন্ত যতদূর খবর পাওয়া গেছে ব্লগার রাজীবকে শিবিরের লোকজন হত্যা করেছে। সে নাস্তিক ছিল মানি; আর সে যদি ধর্ম অবমাননা করেই থাকে (যদিও ইন্টার্নেট থেকে পাওয়া তথ্য বলছে ধর্ম অবমাননা করে ব্লগগুলি আসলে তার না)। আর সেই ব্লগগুলো যদি তার লেখাই হয়ে তাহলে কেন সেগুলি তার মৃত্যুর পরেই প্রকাশিত হবে? এতদিন কী জামায়াত শিবিরের লোকজন চোখে ঠুলি পরে ঘুরছে? জামায়াত শিবিরের লোকজনের যেই ইন্টার্নেট অ্যাকটিভিট তাতে তা জীবনেও গোপন থাকার কথা না। কথা হচ্ছে ব্লগার রাজীবকে হত্যা করে তাকে নাস্তিক বানিয়ে শাহবাগ চত্ত্বরের আন্দোলনের বিরোধীরা এই আন্দোলনকে নাস্তিকদের আন্দলন বলে প্রপাগান্ডা চালিয়েছে। এই প্রোপাগান্ডায় তারা সফল। গত ২২ তারিখ শুক্রবার জামায়াত শিবিরের দেশব্যাপী তান্ডব এবং তাতে বাকি ইসলামী দলগুলোর অংশগ্রহন(যারা জামায়াতের ঘোরবিরোধী)-ই তার প্রমান। আর তর্কের খাতিরেও না হয় আপনাদের সব কথা মেনে নিচ্ছি- রাজীব নাস্তিক; সে ধর্ম অবমাননা করেছে। তাকে তো হত্যা করা হয়েছে। তাহলে তাকে এখন কি করতে হবে? তার লাশ ফাসিতে ঝুলিয়ে দিতে হবে? তার লাশের জেল দিতে হবে? আপনারা বিদগ্ধ জন। আপনারাই ভালো জানেন। আর আপনারা বহুত আস্তিক মানুষ। আপনারা ধর্মের কসম খেয়ে বলুন তো কবে শাহবাগ থেকে নাস্তিকতা প্রচার করা হয়েছে? শাহবাগ গিয়েছেন কখনো? নাকি খালি দিগন্ত টিভি আর দৈনিক আমার দেশ পড়ে দেশের খবর রাখেন? ধর্মটাকে নিজের সম্পত্তি দাবি করবেন না। ধর্ম আমাদেরও।>>
<<খালেদা জিয়ার বক্তব্যঃ ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ এমন কী মুক্তিযোদ্ধাদেরও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় অপমান করা কথা বলেছেন;
ওয়াহিদুজ্জান সাহেবের বক্তব্যঃ ১০০% সত্য। কাদের সিদ্দিকীর মত মুক্তিযোদ্ধাকে যখন রাজাকার উপাধী দেয়া হয়, তখন আর এই বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে না।)
আমার জবাবঃ বেহুদা কথা না বলে উদাহরণ দিলে ভালো হতো। কাদের সিদ্দিকীর উদাহরন দিয়েছেন। হুমায়ুন আজাদ (এই বান্দা নাস্তিক ছিল বলে উনার লেখা কোট করতে একটু অস্বসস্তিই হচ্ছে- আপনারা আবার বিরাট আস্তিক মানুষ) একটা কথা বলেছেন- ‘একজন রাজাকার সব সময়েরই রাজাকার; কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরজীবন মুক্তিযোদ্ধা না)। এই কথাটা কাদের সিদ্দিকী সমন্ধে সবচাইতে ভালো প্রযোজ্য। মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, কামারুজ্জামান ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, এরা মুক্তিযুদ্ধের সময় হয়তো বা ছোটখাটো ইউনিয়নের ছোটখাটো রাজাকার ছিলেন কিন্তু যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না। আজ তারা জাতীয় নেতা হওয়ার কারণে তাদের বিচার করছেন। এই হচ্ছে এখনকার কাদের সিদ্দিকী। ১৯৭১ সালের কাদের সিদ্দীকী নিয়ে আমাদের কোন কথা নেই। কিন্তু ২০১৩ সালের কাদের সিদ্দীকী নিয়ে আমাদের ঘোর আপত্তি। >>
<<খালেদা জিয়ার বক্তব্যঃ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করেছেন;
ওয়াহিদুজ্জান সাহেবের বক্তব্যঃ ১০০% ঠিক/ বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের উপর হামলার ঘটনা ধামাচাপা দেয়া এবং গতকাল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা করে বিষয়টিকে আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। গতকাল নিহতদের তালিকা পর্যবেক্ষণ করলেই এর সত্যতা প্রমানিত হয়)
আমার জবাবঃ এই ডায়লগ শুনে জোরে তালিয়া হবে। ম্যাডাম খালেদা জিয়া করেছেন সংখ্যালঘদের উপর হামলার প্রতিবাদ। ২০০১ সালে এই ম্যাডাম খালেদা জিয়া সরকারের দলীয় কর্মীরা সংখ্যালঘুদের উপর যেই অত্যাচার চালিয়েছে এখন তাদের মুখে সংখ্যালঘুদের নিয়ে কোন কথা মানায় না। ২০০১ সালে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার; ৭১ –এর কথা মনে করিয়ে দেয়। জনাব যদি বিস্মৃত হয়ে থাকেন; তখনকার পত্রিকা পড়ে দেখতে পারেন। আর ওই যে বলেছিলাম নিহতের তালিকা শুধুমাত্র ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকা দেখে হিসেব করবেন না।>>
<<খালেদা জিয়ার বক্তব্যঃ একদিনের হরতাল দিয়েছেন;
ওয়াহিদুজ্জান সাহেবের বক্তব্যঃ আমি ব্যক্তিগতভাবে হরতাল বিরোধী। তবে একদিনে এতগুলো মৃত্যুর ঘটনায় বিএনপি যদি একদিনে হরতাল দেয়, সেটাকে আওয়ামী লীগের তুলনায় অনেক নমনীয় কর্মসূচীই বলা যায়।
আমার জবাবঃ আমিও ব্যক্তিগতভাবে; পারিবারিকভাবে;সামাজিকভাবে; রাজনৈতিকভাবে হরতাল বিরোধী। জী জনাব হরতাল যেখানে এখন বাংলালিংক দরে পাওয়া যাচ্ছে সেখানে ১ দিনের হরতাল তো অনেক কমই দিয়েছে। ম্যাডাম জিয়াকে ধইন্যবাদ। আর আগামীকালের ২ দিনের হরতালে জামায়াত শিবিরের ছেলেরা মাঠে একটু একাতীত্ত্ব বোধ করতে পারে। তাদের সঙ্গ দিতে কি বিএনপি-র লোকজন মাঠে নামবে না? হাজার হলেও বিএনপি আর জামায়াত নাকি একই মায়ের পেটের দুই ভাই (টুইন ছিল কিনা এইটা আমি বলতে পারি না)।>>
উপসংহারঃ
খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য যাদের পছন্দ হবে না, তারা কখনোই বিএনপির সমর্থক বা ভোটার ছিলেন না, ভবিষ্যতে হবেন এমন কোন সম্ভাবনাও নাই। দেশের মোট জনসংখ্যার কমবেশি ১% ফেসবুক বা ব্লগ ব্যবহারকারীকে টার্গেট না করে উনি সমগ্র দেশের সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে বক্তব্য দিয়েছেন। যারা সরকারের বিবিধ ব্যর্থতাকে আড়াল করার জন্য যুদ্ধাপরাধ ইস্যুকে একমাত্র অবলম্বন করে বসে আছেন তাদের কাছে এই বক্তব্য কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতই অসহ্য মনে হবে। আর যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পাশাপাশি দেশে বিরাজমান অন্য সকল সমস্যাকেও সমাধানের তালিকায় রাখেন, তাদের কাছে এই ভাষন অবশ্যই ভালো লাগবে।
আমার কথাঃ খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য যাদের খুব পছন্দ হবে তারা হয়তো বিএনপি-র সমর্থক বা ভোটার কিন্তু তারা সত্যিকারের একাত্তরের চেতনায় বিশ্বাসী কিনা এই নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। জী জনাব খালেদা জিয়া যে ফেইসবুক বা ব্লগের ১% লোকজনকে যে টার্গেট করে নাই এইটা আমরা খুব ভালো করে বুঝেছি। জামায়াত শিবিরের তান্ডবে দেশ এখন এক গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। আমরা আশা করেছিলাম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে এই অবস্থার কিছুটা লাঘব হবে। কিন্তু ম্যাডামের বক্তব্য অগ্নিতে ঘৃতাহতির মত মনে হয়েছে। জামায়াত শিবিরের দুই দিনের হরতালের সাথে উনি আরো একদিন হরতাল ডেকে একদিন যেমন জামায়াত শিবিরের প্রতি তার নগ্ন সমর্থন প্রকাশ্যে প্রকাশ করলেন তেমনি দেশকে আরো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিলেন। কে সঠিক সে ভুল তা সময়েই ঠিক করবে।
ওয়াহিদুজ্জামান সাহেব নাকি পুরা বক্তব্য পড়ে জামায়াত শিবিরের পক্ষে কোন বক্তব্য পান নাই। দেশের চলমান সহিংসতার জন্য জামায়াত শিবিরের কোন দোষ না দিয়ে উনি পুরা দোশ দিয়েছেন সরকারের; জামায়াত শিবিরের প্রোপাগান্ডা শুনে বলছেন ধর্ম অবমাননাকারীদের নাকি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে; জামায়াত শিবিরের সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ব্যাপারটা চেপে গেছেন; সাঈদীর রায়ের প্রতিবাদে জামায়াত শিবিরের দুই দিনের সাথে আরো একদিন হরতাল দিয়েছেন।তাও নাকি ওয়াহিদুজ্জামান খালেদা জিয়ার বক্তব্যে জামায়াত শিবিরের পক্ষে কোন বক্তব্য খুজে পান না। মাইল্রা আমারে মাইল্রা।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১২
ভোলা বাবা বলেছেন: জামাতের নায়েবে মেশিনমেন এর অনুপস্থিতিতে নতুন নায়েবে ছাগী নির্বাচিত হলেন গোলাপি আফা