নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

•ღ•_\"..মানুষ মানুষের জন্য...•ღ•জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না।\nআসুন মানুষের কথা বলি,মানুষের জন্য লিখি।

তারেক মাহমুদ ৭০১

তারেক মাহমুদ ৭০১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৯

ঐতিহাসিক যশোর রোড। এই রোড ঘিরে আছে অনেক গল্প-গান। মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষ জীবন বাঁচাতে এই পথ দিয়েই ভারতে আশ্রয় নেন। ব্রিটিশ রাজের সময় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগকারী সড়ক হিসেবে কাজ করতো ‘যশোর রোড’। যশোর রোড নিয়ে গান গেয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান শিল্পী মৌসুমী ভৌমিক। বিখ্যাত মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ লিখেছিলেন ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড।’ নিচে এই কবিতার অনুবাদ দেয়া হল ...
.
শত শত চোখ আকাশটা দেখে,
শত শত শত মানুষের দল,
যশোর রোডের দুধারে বসত
বাঁশের ছাউনি কাদামাটি জল।
কাদামাটি মাখা মানুষের দল,
গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,
আকাশে বসত মরা ইশ্বর,
নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে,
যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ,
মাথার ভিতরে বোমারু বিমান,
এই কালোরাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোড যে কত কথা বলে,
এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে। সময় চলেছে রাজপথ ধরে যশোর রোডেতে মানুষ মিছিল, সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, গরুগাড়ী কাদা রাস্তা পিছিল লক্ষ মানুষ ভাত চেয়ে মরে, লক্ষ মানুষ শোকে ভেসে যায়, ঘরহীন ভাসে শত শত লোক লক্ষ জননী পাগলের প্রায়। রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু, পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে এইটুকু শিশু এতবড় চোখ দিশেহারা মা কারকাছে ছোটে।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, এত এত শুধু মানুষের মুখ,
যুদ্ধ মৃত্যু তবুও স্বপ্ন ফসলের মাঠ ফেলে আসা সুখ। কারকাছে বলি ভাতরূটি কথা, কাকে বলি করো, করো করো ত্রান,
কাকে বলি, ওগো মৃত্যু থামাও, মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রান।
কাঁদো কাঁদো তুমি মানুষের দল তোমার শরীর ক্ষত দিয়ে ঢাকা, জননীর কোলে আধপেটা শিশু একেমন বাঁচা, বেঁচে মরে থাকা। ছোটো ছোটো তুমি মানুষের দল, তোমার ঘরেও মৃত্যুর ছায়া, গুলিতে ছিন্ন দেহ মন মাটি, ঘর ছেড়েছোতো মাটি মিছে মায়া। সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, ঘর ভেঙে গেছে যুদ্ধের ঝড়ে, যশোর রোডের দুধারে মানুষ এত এত লোক শুধু কেনো মরে। শত শত চোখ আকাশটা দেখে, শত শত শত শিশু মরে গেল, যশোর রোডের যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছেঁড়া সংসার সব এলোমেলো কাদামাটি মাখা মানুষের দল,
গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,
আকাশে বসত মরা ইশ্বর, নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।
ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ, মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই কালোরাত কবে হবে শেষ।
শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোড যে কত কথা বলে, এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে, এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে॥
.
_ _ অ্যালেন গিন্সবার্গ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ দিকে ভারতের কলকাতায় এসেছিলেন। কলকাতার বেশ কয়েকজন সাহিত্যিকের সাথে তার বন্ধুত্ব ছিল যার মধ্যে একজন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় । তিনি সুনীলের বাড়িতেই উঠেছিলেন। তখন বাংলাদেশ থেকে অনেক শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গ ও সীমান্তবর্তী অন্যান্য শহরে আশ্রয় নিয়েছিল। ব্রিটিশ রাজের সময় পূর্ব বাংলা ও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগকারী সড়ক হিসেবে কাজ করতো "যশোর রোড"। অনেক বৃষ্টি হওয়ায় তখন যশোর রোড পানিতে ডুবে গিয়েছিল। সড়ক পথে না পেরে গিন্সবার্গ অবশেষে নৌকায় করে বনগাঁ পেরিয়ে বাংলাদেশের যশোর সীমান্তে পৌঁছেন। তার সাথে সুনীলও ছিলেন। তারা যশোর সীমান্ত ও এর আশপাশের শিবিরগুলোতে বসবাসকারী শরণার্থীদের দুর্দশা প্রত্যক্ষ করেন। এই অভিজ্ঞতা থেকেই গিন্সবার্গ এই কবিতাটি লিখেছিলেন। এই দীর্ঘ কবিতার সাথে সুর দিয়ে এটিকে গানে রূপ দিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকায় ফিরে গিয়ে তার বন্ধু বব ডিলান ও অন্যান্য বিখ্যাত গায়কদের সহায়তায় এই গান গেয়ে কনসার্ট করেছিলেন। এভাবেই বাংলাদেশী শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন গিন্সবার্গ।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৮

আসিক ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগলো ++++++++

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

আহা রুবন বলেছেন: কিছু জিনিস আছে যা মাঝে মাঝে ঝালিয়ে নিতে হয়। লেখককে ধন্যবাদ।

৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৩

বিজন রয় বলেছেন: ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
এসব এখনকার অনেকেই জানেনা।

শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.