নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

•ღ•_\"..মানুষ মানুষের জন্য...•ღ•জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না।\nআসুন মানুষের কথা বলি,মানুষের জন্য লিখি।

তারেক মাহমুদ ৭০১

তারেক মাহমুদ ৭০১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুঘল পাঠান হদ্য হলো ফার্সি পড়ে তাঁতি

৩১ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১:৪২


''ছাত্রদলের চামড়া তুলে নিব আমরা''
''একটা করে শিবির ধর ধইরা ধইরা জবাই কর''
''ছাত্রলীগের চামড়া তুলে নিব আমরা''

এই হলো আমাদের দেশের মুল ছাত্র সংগঠন গুলোর আক্রমনাত্বক স্লোগান,আমরা কি শিখছি নাকি আমাদের শেখানো হচ্ছে।
আমরা কি মুলদলের লেজুড়বৃত্তি করি?
এ দেশে এখন কেন ছাত্র রাজনীতি হয়?
বাংলাদেশে সুষ্ঠু ধারার ছাত্র রাজনীতির পরিবেশ নষ্ট করেছে এদেশের ক্ষমতাসীন দলগুলোর ছত্র ছায়ায় বেড়ে উঠা ছাত্র সংগঠন গুলো ছাত্রলীগ ছাত্রদল ছাত্রশিবির। এদের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দাবাজি খুন ধর্ষণ টেন্ডারবাজীর ফলে ছাত্র সমাজ ছাত্ররাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।এদেশে ছাত্র রাজনীতির সেই সুষ্ঠু ধারার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে ছাত্র সংগঠনগুলোকে মূল দলের লেজুড় বৃত্তি পরিহারের কোন বিকল্প নাই! ছাত্রছাত্রীদের মূল কাজ কি? অবশ্যই পড়াশোনা করা হবে।কিন্তু পড়াশোনাটা ঠিকমতো না করলে রাজনীতি, অর্থনীতি বা দেশের উন্নয়নে তারা কী করে ভূমিকা রাখবে, তা ঠিক বোধগম্য নয়।পড়াশোনাটা ঠিক রেখেই ছাত্রছাত্রীরা অন্যান্য কর্মকাণ্ড যেমন: বিতর্ক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদিতে অংশ নেবে। তারা অবশ্যই রাজনীতিসচেতন হবে, প্রয়োজনে রাজনীতিতে অংশও নেবে। তবে সেই রাজনীতি পড়াশোনা বাদ দিয়ে নয়, পড়াশোনা ঠিক রেখে। আর সেই রাজনীতি হবে ছাত্রছাত্রীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের রাজনীতি, সেই রাজনীতি হবে শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নের রাজনীতি। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যদি কোনো স্বৈরাচার স্থাণু হয়ে বসে, তার প্রতিবাদে শামিল হতে ছাত্রছাত্রীদের বাধা নেই। কিন্তু যে সর্বনাশা লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতি বাংলাদেশে চলছে, আমরা তার বিরোধী।পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে যাঁরা ছাত্ররাজনীতি করতেন, যাঁরা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদে নির্বাচিত হতেন, তাঁরা ছিলেন তাঁদের ক্লাসের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রী। নিয়মিত ক্লাস করে, পরীক্ষা দিয়ে, নানা বিষয়ের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে তাঁরা নিজেদের রাজনীতিসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট রাখতেন। কিন্তু এখনকার ছাত্রনেতা বা নেত্রীদের ক্লাস করতে হয় না, পড়াশোনা করতে হয় না, শুধু নেতা বা নেত্রীদের নামে ‘স্লোগান’ দিলেই হয়। এখনকার অধিকাংশ ছাত্রনেতা বা নেত্রী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানেন না, রাজনীতির ইতিবৃত্ত জানেন না, এমনকি তাঁরা যে মূল সংগঠনের অনুগামী, সেই সংগঠনের আদর্শ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যদি তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁরা তা বলতে পারবেন না। এখনকার ছাত্রনেতাদের দিনে-রাতে নেতা-নেত্রীদের নামে অনবরত ‘স্লোগান’ দিতে হয়। আর ‘‘স্লোগান’’ দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে চলে নির্মাণকাজের ঠিকাদারি বা ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন আদায় বা চাঁদাবাজি। ঠিকাদারি ও চাঁদাবাজি নিয়ে তৈরি হয় নানা দল ও উপদল, উপদলের কলহ কখনো কখনো সহিংস হয়ে ওঠে।
কিন্তু একসময় ৫২এর ভাষা আন্দলন,৭১ এর মুক্তি যুদ্ধে এমনকি নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররাজনীতির ভূমিকা ছিল অনন্য। কেননা, ছাত্রছাত্রীদের শক্তিশালী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এরশাদের পতন ঘটে,মুক্তি যুদ্ধে জয় লাভ করি,বাংলাকে ভাষা হিসেবে পাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই ছাত্ররাজনীতি তার নিজস্বতা বিসর্জন দিয়ে লেজুড়বৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ে। ছাত্র হত্যা, হল দখল, ক্যাম্পাস দখল, সেশনজট, বিলম্বিত শিক্ষাজীবন দেখে দেখে সাধারণ ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও সর্বস্তরের মানুষ ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে বিরূপ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন মহল থেকে ‘লেজুড়বৃত্তি’র ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ওঠে। পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে ওঠে যে উপদলীয় কোন্দলে একাধিক ছাত্র খুন হওয়ার কারণে বৃহত্ দুটি রাজনৈতিক দল তাদের ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করতে বাধ্য হয় কিংবা সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয় ছাত্রসংগঠনের কর্মকাণ্ড। এর পরও লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতি চলছে। এতে যে বৃহত্ দুটি রাজনৈতিক দলের খুব লাভ হচ্ছে, তা কিন্তু নয়। কেননা, তারা যখন সরকারে থাকে, তখন তাদের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের হল দখল, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, খুনোখুনি তাদের সম্পর্কে জনগণের মনকে বিষিয়ে তোলে। ওদিকে আন্দোলন-সংগ্রামের সময়ও ছাত্রসংগঠনের বলিষ্ঠ ভূমিকা দেখা যায় না। এ ধরনের ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কেন তাঁরা পোষেন, তা সত্যিই আমার কাছে রহস্য হলেও আপনারা ঠিকই ত বোঝেন। লেজুড়বৃত্তির এই ছাত্ররাজনীতির কারণে একদিকে তারুণ্যের বিপুল অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ যত দ্রুত আক্রমনাত্বক ও লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতির দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসবে, ততই মঙ্গল তা না হলে এই দেশের ভবিষ্যত নিয়ে শংঙ্কা থেকেই যাবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.