নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

•ღ•_\"..মানুষ মানুষের জন্য...•ღ•জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না।\nআসুন মানুষের কথা বলি,মানুষের জন্য লিখি।

তারেক মাহমুদ ৭০১

তারেক মাহমুদ ৭০১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুবোধ তুই ভালো থাকিস

৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৩

‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা,এখন সময় পক্ষে না’
‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা,তোর ভাগ্যে কিছু নেই’
‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা,মানুষ ভালোবাসোতে ভুলে গেছে’
‘সুবোধ এখন জেলে,পাপবোধ নিশ্চিন্তে করছে বাস মানুষের হৃদয়ে’
কিংবা
‘তবুও সুবোধ রাখিস সূর্য ধরে’!
-এই কথাগুলো এখন লেখা দেখা যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের দেওয়ালে।







আচ্ছা এই সুবোধ কে? ‘HOBEKI?’ ট্যাগ লাইন নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওসহ অন্যান্য এলাকার রাস্তার দেয়ালগুলোতে আঁকা গ্রাফিটিগুলোর মূল চরিত্র সুবোধ। একজন হতাশ, দুর্দশাগ্রস্ত, হেরে যাওয়া মানুষ হিসেবেই আমরা তাকে দেখি। কিন্তু সুবোধ কি কোনো চরিত্র? নাকি সুবোধ আমাদের মাঝে হাজির হয় বিমূর্ত কোনো ধারণা নিয়ে?
সুবোধ বা ‘সু বোধ’ হয়তো আমাদের সুন্দর বোধগুলো, আমাদের সুন্দর চিন্তাগুলো কিংবা আমাদের সুন্দর স্বপ্নগুলো। আমরা দ্বিধায় ভুগি, এ দ্বিধা চিরন্তন। আমরা হলফ করে বলতে পারি না চরিত্র নাকি রূপক হয়ে সুবোধের জন্ম। তবু ঠিক জানি, সুবোধের সাথে আমাদের কোথায় যেন মিল আছে। কেন যেন ওকে খুব আপন মনে হয় আমাদের।
অন্যদিকে সুবোধ আমাদের মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন-মধ্যবিত্ত সমাজের প্রতিনিধি। সে সব কিছুই মেনে নেয়। নিত্যদিন শহরের বুকে মানুষের প্রতি মানুষের নির্মমতা সে মেনে নেয়। পাথর এ সমাজে সে এখনও ততটা কঠোর হয়ে যায়নি। সুবোধ সে নির্মমতা সহ্য করতে পারে না বলে নিজেকে আবদ্ধ করে জেলের অন্ধকারে। কলুষিত সিস্টেমের মাঝে টিকতে না পেরে সে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবু ঘুরে দাঁড়াবার চিন্তা করে না, তাতে যে জানের ভয়! তার শুধু আকুতি থাকে, ব্যক্তিগত সূর্যটাকে শেষ পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখবার আকাঙ্ক্ষা থাকে।
স্যোশাল মিডিয়ার নিজেকে জাহির করার এ যুগে কে বা কারা নিভৃতে সুবোধকে দেয়ালের পটে এঁকে যাচ্ছেন, তার খোঁজ জানেন না কেউ। লোকচক্ষুর আড়ালে থেকেই হয়তো মানুষের জন্য কথা বলতে ভালোবাসেন সুবোধের কারিগর। জনসম্মুখে এমন কাজ হয়তো তাকে সময়ের নিয়ন্ত্রকদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে। তাই অগোচরে থেকে তার এ প্রতিবাদ সাধারণের কাছে আরো ব্যঞ্জনাময় হয়ে ওঠে।
রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের গুণকীর্তনে ঢেকে থাকা আমাদের দেয়ালগুলোতে সুবোধের আগমন ব্যতিক্রম, তবে প্রথম নয়। নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ‘কষ্টে আছি, আইজুদ্দিন’ দেয়াল লেখাটি সাধারণ মানুষের মনে দাগ কেটেছিলো খুব। এখনও সে প্রজন্মের মানুষেরা দুঃখ-দুর্দশায় পড়লে সেই কষ্টের ফেরিওয়ালা আইজুদ্দিনের কথা স্মরণ করেন। সময়ের সাথে দেয়ালের বয়স বাড়ে, মুছে যায় আইজুদ্দিনের কষ্টের বয়ান। পরের দশকে আমরা দেখি ‘অপেক্ষায় নজির’। নজির হয়তো কোনো ভালো সময়ের অপেক্ষা করতে করতে মলীন হয়ে গেছেন, কিন্তু হারিয়ে যাননি। তিনি ঠাঁই পেয়েছেন আইজুদ্দিন, সুবোধদের তালিকায়। সুবোধ সিরিজের নতুনত্ব হলো দেয়াল লেখার সাথে সাথে আমাদের নায়ক সুবোধের ছবি আর তার সূর্য।


সুবোধ হয়তো ঠিক পালিয়ে যাবে, এই নষ্ট সমাজ থেকে পালিয়ে যেতে পারলেই তার মুক্তি। কিন্তু পালাবার কোনো পথ কি আদৌ খোলা আছে? তা আমাদের জানা নেই, তবে সুবোধকে শেষবার আমরা যখন আগারগাঁও-এ দেখি, সুবোধের মন খারাপ। তার মন খারাপ দেখে আমাদের মনও ভীষণ খারাপ হয়ে যায়। তার হাতে খাঁচাটা আছে ঠিকই, কিন্তু তাতে তার পোষা সূর্যটা নেই। আশেপাশে কোনো কথাও নেই। সে খুব একা, পালিয়ে হয়তো যাবে ঠিকই, কিন্তু সে হেরে গেছে, তার সূ্র্যটা চুরি হয়ে গেছে।

সুবোধের গল্প কি শেষ হয়ে গেছে? সে কি পালিয়ে গেছে আমাদের ফেলে? আমরা সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফিরি। সুবোধের আঁকিয়ে হয়তো ফিরে আসবেন পরবর্তী সময়ে সুবোধের কী হলো তা জানাতে। কিংবা তার বা তাদের আঁকায় নতুন কোনো সুবোধ হয়ে উঠবে আমাদের প্রতিনিধি। এতকাল পরে হলেও আমাদের দেয়ালগুলোতে আমরা যে শৈল্পিক প্রতিবাদের সূচনা পেলাম, তা বারেবারে ফিরে আসুক। আমরা তার অপেক্ষা করি। আশা করি সুবোধের সুনীতির আহবান ছড়িয়ে পড়ুক রাজধানী থেকে সারাদেশে। সে আহবানে আমরা ফের মানুষ হয়ে উঠবো একদিন।
“সুবোধের এই গ্রাফি গুলো কে বা কারা করেছেন, জানি না। হয়তো কখনোই জানবো না, জানা হবে না!
সারাজীবন Banksy'র গ্রাফিটি দেখে যে ছেলেটা ঘুম নষ্ট করেছে, তার কাছে সুবোধের আবেদন যে কোনখানে, বোঝানো যাবে না।
“সুবোধ” যার বা যাদের হাত ধরেই আসুক, ভালোবাসা রইলো।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: উনি আসলে ক্রিএটিভ। বিশ্বের বড়বড় চিত্রকররা এমন করেন।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:৫২

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: দুইটা পেইজ আছে

Hobeki/

hobekibd

নিচেরটা সুবোধ

৩| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:১৪

মৌমুমু বলেছেন: যেই এটা করেছে তার আইডিটা ক্রিয়েটিভ। কিন্ত সুবোধের এই পালিয়ে যাওয়াটা ইতিবাচকের যে নেতিবাচকের প্রভাবই বেশি। নাম তো সুবোধ কিন্ত কাজটা করেছে দুর্বোধ এর মত। সিচুয়েশন যেমনই হোক সেটা মোকাবিলা করার মত মানুষিকতা অর্জন করা উচিত। আল্লাহ্ সমস্যা দিলে তার সমাধানও তিনিই করবেন। আমাদের উচিত উনার ডিসিশনকে মেনে নিয়ে উনাকে ডাকা। তাই সমস্যা থেকে পালিয়ে যাওয়া কখনোই উচিত নয় বরং আল্লাহ্ র নাম স্মরন রেখে সেটা মোকাবিলা করাই সুবোধের কাজ হওয়া উচিত।
তবুও ভালো থাকুক সব সুবোধেরা নিজ নিজ জীবনে...

৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:২৩

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আইজুদ্দীী, সুবোধেরাা আমাদের সমাজেরই প্রতিচচ্ছবি।। সমাজ যেমন হেরে যাায়, মুষ্টিমেয়র কছে, তেমনি এরাও হেরে একদিন পালিয়ে বাাচবে। যেমন করে আমরা!!

৫| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৫৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে। সুন্দর হৃদয় ছোঁয়া কথা বলেছেন ভাই।

সুবোধ এঁর জন্য শুভকামনা

৬| ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:১৪

সেতু চৌধুরী বলেছেন: ভালো লাগল খুব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.