জ্ঞান অর্জনের জন্য স্কুল কলেজের প্রয়োজনীয়তা

১৯ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:৪৯

জ্ঞান অর্জনের জন্য স্কুল কলেজের প্রয়োজনীয়তাঃ
জ্ঞান অর্জনের জন্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা সর্ম্পকে কিছূ বিতর্ক্ উপস্থাপনের প্রচেষ্টা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে জ্ঞান অর্জনের জন্য আমাদের প্রচলিত স্কুল কলেজের কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিনা। স্কুলে না গিয়েও কেউ একজন অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। বরং কোন প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে একজন মানুষ প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষিত মানুষের চেয়ে বহুগুণ বেশি জ্ঞান অর্জন করতে পারে বলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি । কারণ প্রকতিষ্ঠানে গিয়ে মানুষ নির্দিষ্ট কিছু ধরাবাধ বই ও বিষয়ের মধ্য সিমাবদ্ধ হয়ে পরে । যে কারণে জ্ঞানের দৃষ্টি সবদিকে প্রসারিত না হয়ে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে সীমাবদ্ধ হয়ে যায় । তাই বলে সবাইযে একই রকম হয় তানয় । কিছু ব্যক্তি ব্যতিক্রম থেকেই যায়, যারা এই সিষ্টেম থেকে বের হয়ে আসতে চায় অথবা সর্বদা বের হওয়ার প্রচেষ্টা করে । আমি নিজেই ঐ রকম একজন হওয়ার প্রচেষ্টা করি সবসময় । যেন আমার পরবর্তী প্রজন্ম এই সিষ্টেমের মধ্যে না পরে । আমি সেই সিষ্টেমের কথা বলি যেটা আমাদের সমাজে তথাকতিথ শিক্ষিত হওয়া অথবা শিক্ষা অর্জন করার সিষ্টেম ।

মজার বিষয় হল আমাদের পিতা মাতা বর্তমান সিষ্টেমের জোয়ারে গা ভাসিয়ে বলে সন্তানকে ডাক্তার বানাবো, নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাব । সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানানোর জন্য নিজেদের জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করতে দ্বীধা বোধ করে না আমাদের পিতা মাতা । সন্তান উচ্চশিক্ষিত হয়ে অথবা বড় বড় ডিগ্রি অর্জন না করতে পারলে তাদের সম্মান ক্ষুন্ন হয় । আমাদের পিতা মাতার সম্মান কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে, ভাবতে ভালই লাগে কারণ পুরো বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে আমরা কেন পিছিয়ে থাকব । সন্তানদের তথাকথিত ভালো একটি স্কুলে বা কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হলে সন্তানকে তো বটেই পিতা মাতাকেও রিতিমত যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয় । অদ্ভুদ যুদ্ধু । কে কার সন্তান কে কত ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারে । আমার মনে হয় ভালো স্কুলে ভালো ভালো ও টাটকা জ্ঞান পাওয়া যায় এবং মন্দ স্কুলে সব মন্দ ও পচাপচা জ্ঞান ও শিক্ষা পাওয়া যায় । প্রতিযোগীতা করে যদি আগে ভর্তি না হওয়া যায় তাহলে তো ভালো ভালো জ্ঞান ও শিক্ষাগুলো আগে শেষ হয়ে যাবে, পরে আমার সন্তান কী শিখবে। আমাদের পিতা মাতার একটি কমন সমস্যা আছে, সেটা হল তারা চায় তার সন্তান ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হোক, কিন্তু আফসোস হলো কেউ আশা করে না যে আমার সন্তান একজন ভালো মানুষ হোক অথবা মানুষের মত মানুষ হোক ।

ব্যক্তিগত ভাবে আমার পিতা মাতারও একই অবস্থা । আমি তাদের সম্মান রাখতে পারিনি কারণ, আমি অত শিক্ষিত হতে পারিনি । পারিনি ক্লাসে ফাস্ট হতে । তাদের আমি বোঝাতে পারিনি যে যুগে যুগে যত মনীষী পৃথিবীতে এসছে যারা মাণুষকে পথ দেখিয়েছে, সত্যের পথ, আলোর পথ, কল্যানের পথ তারা কখন ক্লাসে ফাস্ট হতে পারেনি । তাই বলে কী তাদের জীবন বৃথা হয়ে গেছে, আমি মনে করি না । আমার জানা মতে তাদের সংখ্যা খুব কম হবে, যারা একদিকে ক্লাসে ফাস্ট হয়েছে অপর দিকে মানুষকে কল্যানের দিকে নিয়ে গেছে । অথচ আমরা ভাবি অন্যরকম । আমি হাজারও উদাহরণ তুলে ধরতে পারব । যেমনঃ আমাদের বিদ্রহী কবি কাজি নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষার উপর কতটুকু পড়াশুনা করেছে তাআমার সঠিক জানা নেই তবে বাংলা সাহিত্যে আপনি উচ্চতর পড়াশুনা করতে যান অবশ্যই নজরুলের কাব্য আপনার রীতিমত গবেষনা করতে হবে । তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় এত কঠিন কঠিন কাব্যিক জ্ঞান নজরুল সাহেব কোন বিশ্ববিদ্যলয় থেকে শিখল ?,,

আরও একটা উদাহরণ দিইঃ মুসলমানদের শ্রেষ্ট গ্রন্থ আল কোরআন সম্পূর্ণ আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয় আমাদের সর্বশেষ নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর উপর, যিনি কোন দিন স্কুল, কলেজ অথবা মাদরাসায় লেখাপড়া শেখেননি । এথেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে প্রকৃত জ্ঞানের সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সর্ম্পক কতটু তা অবশ্যই ভাবার বিষয় । আবার স্কুল কলেজে প্রচুর লেখাপড়ার পরও দেখা যায় প্রকৃত জ্ঞানের ধারে কাছে কেউ পৌছাতে পারেনা । তাহলে প্রতিষ্ঠান আমাদের কী শিক্ষা দেয় যা বাস্তব জীবনে কোন কাজেই লাগেনা । প্রত্যেকটা শিক্ষিত ছেলে মেয়ে তার কর্মজীবনে এসে হারে হারে টের পায় । দেখা যায় সমস্ত কর্মক্ষেত্র আশঙ্কায় পরিপূর্ণ এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা তাদের কোন কাজেই লাগেনা । আমাদের দেশে স্কুলে পরিক্ষায় পাশ করতে হলে কোচিং অথবা আলাদা প্রাইভেট পড়তে হয়, এতে বোঝা যায় স্কুলের শিক্ষকরা ক্লাশে কিছুই শেখাতে পারেনা । ক্লাশের পড়া সম্পন্ন করতে হয় কোচিং বা প্রাইভেট টিউটরের কাছে । এখানে স্কুল শিক্ষকদের দায়িত্ব সর্ম্পকে প্রশ্ন উঠতেই পারে । যেটা খুবইস্বাভাবিক । ক্লাশে শুধু কয়েকটা ধরা বাধা বই, সিলেবাস, প্রশ্ন শেষ করলেই পড়াশুনা হয়ে গেল? শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে এবং অজ্ঞতা দুর করে, কিন্তু আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আলো তো দুরের কথা আরও অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে সাহায্য করে এবং অন্ধ করতে সাহায্য করে । একজন উচ্চশিক্ষিত ছেলে যখন পিতাকে Old Home এ রেখে আসে তখন তার ঐ শিক্ষা তাকে একটুকুও বাধা দেয় না, তাহলে এত শিক্ষা অর্জন করে বিবেক এতটুকুও জাগ্রত হয় না । শুধু শিখিয়েছে স্বার্থপরতা । এই শিক্ষা পিতা পূত্রের মাঝখানে দুরত্ব তৈরি করেছে । অথচ বইয়ে লেখা আছে পিতা মাতাকে সম্মান কর, তাদের কোন কষ্ট দিওনা । তাহলে কোথায় গেল সেই শিক্ষা?

শুধু আফসোস........

০ টি +১/-০