নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইয়ারমুকের যুদ্ধের ইতিহাস ( প্রথম পর্ব)

০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩


ইয়ারমুকের যুদ্ধ ৬৩৬ সালে রাশিদুন খিলাফত এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের মধ্যে সংঘটিত হয়। ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে ইয়ারমুক নদীর তীরে ছয়দিনব্যপী এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বর্তমানে এই নদী সিরিয়া, জর্ডান ও ইসরায়েলের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে এবং তা গ্যালিলি সাগরের পূর্বে অবস্থিত। এই যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয়ের ফলে সিরিয়ায় বাইজেন্টাইন শাসনের অবসান ঘটে। সামরিক ইতিহাসে এই যুদ্ধ অন্যতম ফলাফল নির্ধারণকারী যুদ্ধ হিসেবে গণ্য হয়। মুহাম্মদ (সাঃ) এর মৃত্যুর পর এই যুদ্ধ জয় মুসলিম বিজয়ের প্রথম বৃহৎ বিজয় হিসেবে দেখা হয়। তার ফলে খ্রিষ্টান লেভান্টে ইসলাম দ্রুত বিস্তার লাভ করে।আরবদের অগ্রযাত্রা রোধ ও হৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের জন্য সম্রাট হেরাক্লিয়াস ৬৩৬ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে লেভান্টে একটি বড় অভিযান প্রেরণ করেন। রোমান বাহিনী অগ্রসর হওয়ার পর আরবরা কৌশলগত কারণে সিরিয়া থেকে পিছু হটে এবং আরবের কাছাকাছি ইয়ারমুকের সমভূমিতে জমায়েত হয়। পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পর মুসলিমরা সংখ্যাধিক বাইজেন্টাইন বাহিনীকে পরাজিত করে। এই যুদ্ধ সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের অন্যতম বৃহৎ সামরিক বিজয়। এর মাধ্যমে তিনি ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ রণকুশলী এবং অশ্বারোহী কমান্ডার হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন।

শেষ বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধ চলার সময় ৬১০ সালে হেরাক্লিয়াস বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সম্রাট হন।সাসানীয়রা ৬১১ সালে মেসোপটেমিয়া জয় করে নেন এবং আনাতোলিয়ায় প্রবেশ করে কাইসারিয়া মাজাকা দখল করেন। ৬১২ সালে হেরাক্লিয়াস আনাতোলিয়া থেকে পার্সিয়ানদের বিতাড়িত করতে সক্ষম হন। কিন্তু এর পরের বছর ৬১৩ সালে সিরিয়ায় পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হলে পরাজিত হন। পরের এক দশকে পার্সি‌য়ানরা ফিলিস্তিন ও মিশর জয় করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে হেরাক্লিয়াস পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নেন এবং নিজ সেনাবাহিনীকে পুনরায় সংগঠিত করেন। নয় বছর পর ৬২২ সালে হেরাক্লিয়াস তার অভিযান শুরু করেন।ককেসাস এবং আর্মেনিয়ায় পার্সি‌য়ান ও তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর ৬২৭ সালে হেরাক্লিয়াস মেসোপটেমিয়ায় পার্সি‌য়ানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন। এসময় তার নিনেভেহর যুদ্ধে বিজয়ের ফলে পার্সি‌য়ান রাজধানী তিসফুনের উপর হুমকি তৈরী হয়। সেসকল পরাজয়ের কারণে দ্বিতীয় খসরু তার পুত্র দ্বিতীয় কাভাদের অভ্যুত্থানে পদচ্যুত এবং নিহত হন।কাভাদ অধিকৃত সকল বাইজেন্টাইন এলাকা ফিরিয়ে দিতে সম্মত হন। হেরাক্লিয়াস ৬২৯ সালে ট্রু ক্রসকে জেরুজালেমে পুনস্থাপন করেন।একই সময়ে আরবে দ্রুত রাজনৈতিক আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। মুহাম্মদ (সাঃ) ইসলাম প্রচার শুরু করার পর ৬৩০ সাল নাগাদ অধিকাংশ আরবকে সফলভাবে একক রাজনৈতিক কর্তৃত্বের অধীনে আনেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পর আবু বকর খলিফা হিসেবে তার উত্তরসুরি মনোনীত হন। সেসময় বেশ কিছু আরব গোত্র ইসলাম ত্যাগ করে বিদ্রোহ করে। আবু বকর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। রিদ্দার যুদ্ধে আবু বকর তাদের দমন করে পুনরায় খিলাফতের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।

বিদ্রোহ দমন করার পর আবু বকর বিজয় অভিযান শুরু করেন। প্রথমে ইরাক জয় করা হয়। আবু বকর তার সবচেয়ে দক্ষ সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদকে ইরাক পাঠান। সাসানীয় পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক যুদ্ধের পর ইরাক মুসলিমদের হস্তগত হয়। খালিদ ইরাকে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর তাকে ৬৩৪ সালে ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় অভিযানে পাঠানো হয়। সিরিয়া অভিযান সুকৌশলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং অপারেশনগুলো উত্তমরূপে সংগঠিত ছিল। মুসলিম সেনাবাহিনী বাইজেন্টাইনদের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম হওয়ায় সেনাপতিরা আরো সৈন্য সরবরাহের আবেদন করেন। ফলে আবু বকর সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদকে ইরাক থেকে সিরিয়া পাঠান এবং সেখানকার নেতৃত্ব দেন। ৬৩৪ সালের জুলাই মাসে আজনাদয়ানের যুদ্ধে বাইজেন্টাইনরা পরাজিত হয়। সে বছরের সেপ্টেম্বরের দামেস্কের পতন ঘটে। এরপরে সংঘটিত ফাহলের যুদ্ধে ফিলিস্তিনে শেষ গুরুত্বপূর্ণ গেরিসন মুসলিমদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
৬৩৪ সালে আবু বকর মারা যান এবং উমর ইবনুল খাত্তাব তার উত্তরসুরি হন। তিনি সিরিয়ায় অভিযান অব্যাহত রাখেন। খালিদ বিন ওয়ালিদের পূর্ববর্তী অভিযানগুলো সফল হলেও খলিফা উমর আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহকে খালিদের স্থলাভিষিক্ত করেন। দক্ষিণ ফিলিস্তিন সুরক্ষিত করার পর মুসলিমরা বাণিজ্য রুটের দিকে অগ্রসর হয়। বড় কোনো প্রতিরোধ ছাড়া টাইবেরিয়াস এবং বালবিকের পতন ঘটে এবং ৬৩৬ সালের প্রথমদিকে এমেসা জয় করা হয়। সেখান থেকে মুসলিমরা লেভান্টে অভিযান অব্যাহত রাখে ।এমেসা অধিকারের পর মুসলিমদের জন্য বাইজেন্টাইন শক্ত ঘাটি আলেপ্পো এবং এন্টিওকের দিকে যাত্রা সহজ হয়। হেরাক্লিয়াস এসময় এন্টিওকে অবস্থান করছিলেন। ধারাবাহিক পরাজয়ের কারণে উৎকণ্ঠিত হয়ে হৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারের জন্য হেরাক্লিয়াস পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। ৬৩৫ সালে সাসানীয় সম্রাট তৃতীয় ইয়াজদিগার্দ বাইজেন্টাইন সম্রাটের সাথে মিত্রতা স্থাপন করতে উদ্যোগী হন। মিত্রতা মজবুত করার জন্য হেরাক্লিয়াস তার মেয়ে মানয়ানকে তৃতীয় ইয়াজদিগার্দের সাথে বিয়ে দেন। হেরাক্লিয়াস লেভান্টে একটি বড় আকারের আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়ার সময় ইয়াজদিগার্দের ইরাকে একই প্রকার আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হন। এসকল আক্রমণ সমন্বিতভাবে করার প্রয়োজন ছিল। ৬৩৬ সালের মে মাসে হেরাক্লিয়াস তার আক্রমণ শুরু করার পর ইয়াজদিগার্দ তার সাথে সমন্বয় করতে পারেননি।ইয়ারমুকে মুসলিমরা বাইজেন্টাইন বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়। এরপর তৃতীয় ইয়াজদিগার্দের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করা হয়। তিন মাস পর ৬৩৬ সালের নভেম্বরে কাদিসিয়ার যুদ্ধে সাসানীয়রা পরাজিত হয় ফলে পারস্যে সাসানীয় শাসনের অবসান হয় এবং পারস্য মুসলিমদের হস্তগত হয়।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:২৭

হানিফঢাকা বলেছেন: তিন মাস পর ৬৩৬ সালের নভেম্বরে কাদিসিয়ার যুদ্ধে সাসানীয়রা পরাজিত হয় ফলে পারস্যে সাসানীয় শাসনের অবসান হয় এবং পারস্য মুসলিমদের হস্তগত হয়। - এর মাধ্যমেই ইসলামের ধ্বংসের বীজ রোপিত হয়। বাকিটা মুসলমানদের পতনের ইতিহাস।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই দেখি পরের ইতিহাস কি বলে ।

২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:২০

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: আরেকটি যুদ্ধের সুন্দর ইতিহাস আমরা জানতে যাচ্ছি ।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৬

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:৫৮

নতুন বিচারক বলেছেন: ভালো লাগলো যুদ্ধের ইতিহাস । পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই ।

১০ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৪| ১০ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:০৯

নাইম রাজ বলেছেন: ভালো লাগল ।

১০ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.