নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোগাদিশুর যুদ্ধ বা ব্ল্যাক হক ডাউন এ যা ঘটেছিল ?

২৩ শে আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১


মোগাদিশুর যুদ্ধ অর্থাৎ রেঞ্জারদের দিন যা কৃষ্ণ সাগরের যুদ্ধ বা ব্ল্যাক হক ডাউন নামেও পরিচিত । এটি হচ্ছে অপারেশন গোথিক সার্পেন্টের আওতাধীন একটি যুদ্ধ। ১৯৯৩ সালের ৩ ও ৪ অক্টোবর সোমালিয়ার রাজধানী শহর মোগাদিশুতে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। যুদ্ধের এক পক্ষে ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের সমর্থিত ইউএনওএসওএম ২ (UNOSOM II), এবং অপরপক্ষে ছিলো তৎকালীন সোমালিয়ার রাষ্ট্রপতি ও মিলিশিয়াদের নেতা যুদ্ধবাজ মোহাম্মদ ফারাহ এইদিদ। যুদ্ধে এইদিদের পক্ষে অনেক বেসামরিক ব্যক্তিকেও যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছিলো। এই যুদ্ধটি মোগাদিশুর প্রথম যুদ্ধ নামেও পরিচিত কারণ পরবর্তীকালে ২০০৬ সালে মোগাদিশুতে আরো একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় যা মোগাদিশুর দ্বিতীয় যুদ্ধ নামে পরিচিত।

যা ঘটেছিলো
মোহাম্মদ ফারাহ এইদিদের অনুগত হাবার গিদির গোত্রীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আটক করতে মোগাদিশু শহরে তাদের অবস্থানকে লক্ষ্য করে টাস্ক ফোর্স রেঞ্জারের সেই অপারশেন পরিচালিত হয়। সেই টাস্ক ফোর্স রেঞ্জারদের মধ্যে ছিলো মার্কিন সেনাবাহিনীর ডেল্টা ফোর্স এবং ৭৫তম রেঞ্জার রেজিমেন্ট যাদের আকাশ থেকে সহায়তা প্রদান করেছিল মার্কিন সেনাবাহিনীর-ই ১৬০তম স্পেশাল অপারেশন্স এভিয়েশন রেজিমেন্ট এবং পাঁচজন নেভি এসইএএল অপারেটর। তাছাড়াও সহায়তা করেছিল মার্কিন বিমান বাহিনীর এয়ার ফোর্স প্যারাসিকিউর এবং কমব্যাট কন্ট্রোলার দল। এই ত্বরিত অপারেশনে ব্যবহৃত হয়েছিলো ১৯টি যুদ্ধবিমান ১২টি যানবাহন এবং ১৬০জন সৈন্য।অপারেশনের সময় দুইটি মার্কিন ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার রকেট চালিত গ্রেনেডের কপলে পড়ে ভূপাতিত হয়। তাছাড়া আরো তিনটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিছু সৈন্য আহতদের উদ্ধার করে মূল কম্পাউন্ডে ফিরে আসতে সমর্থ হলেও বাকিরা হেলিকপ্টার ধ্বংসের স্থানে আটকা পড়ে। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধারের প্রচেষ্টার্থে রাতব্যাপী যুদ্ধ চলে।

পরের দিন ভোরে জাতিসংঘের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন দেশের সৈনিকদের একটি দল আটকে পড়া সৈনিকদের রক্ষার্থে রওনা হয়। বিভিন্ন দেশের সৈন্যদের মধ্যে ছিলো পাকিস্তান এবং মালয়েশিয়া। তাছাড়াও মার্কিন ১০তম মাউন্টেন ডিভিশনের সৈন্যরাও তাদের সাথে উদ্ধার অভিযানে রওনা হয়। তাদের যুদ্ধযানের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১০০। তার মধ্যে ছিলো পাকিস্তানি ট্যাংক এম৪৮ প্যাটন ও মালয়েশীয় ট্যাংক কন্ডর আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার APC। তাদেরকে সহায়তা করার জন্য আকাশে ছিলো মার্কিন এ/এমএইচ-৬ লিটল বার্ড, এবং ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার। এই টাস্ক ফোর্স প্রথম হেলিকপ্টার ধ্বংসের স্থানে যায়, এবং সেখানে আটকে পড়া সৈন্যদের উদ্ধার করে। দ্বিতীয় হেলিকপ্টার ধ্বংসের স্থানের একমাত্র জীবিত সৈন্য আহত পাইলট মাইক ডুরান্ট সোমালি মিলিশিয়াদের হাতে বন্দী হয় যদিও পরবর্তীকালে কিছু দিন পর তিনি মুক্তি পান।

সেই যুদ্ধে নিহত সোমালির প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না। মার্কিন হিসাবে সেই নিহতের সংখ্যা ১,০০০ থেকে ১,৫০০-এর মধ্যে। সেই সংখ্যা সোমালি মিলিশিয়া এবং বেসামরিক নাগরিকসহ। তাছাড়াও আহতের সংখ্যা প্রায় ৩,০০০ থেকে ৪,০০০। যদিও আন্তর্জাতিক সংগঠন রেডক্রসের হিসাবে প্রায় ২০০ বেসামরিক সোমালি সেই যুদ্ধে নিহত হয় এবং আরো কয়েকশত বেসামরিক নাগরিক আহত হয়।সেই যুদ্ধের ওপর লেখা বই ব্ল্যাক হক ডাউন আ স্টোরি অফ মডার্ন ওয়ার এ আনুমানিক নিহতের সংখ্যা বলা হয় ৭০০ সোমালি মিলিশিয়ার। তাছাড়াও আরো ১,০০০ আহত হয়েছিলো বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে মার্কিন টেলিভিশনে সোমালি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের এক তথ্যচিত্রে দাবি করা হয় সম্পূর্ণ যুদ্ধে মাত্র ১৩৩ জন সোমালি প্রাণ হারিয়েছিলো। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার প্রতিবেদনে সোমালি নিহতের সংখ্যা ৩১২জন এবং আহতের সংখ্যা ৮১৪জন উল্লেখ করা হয়। এই যুদ্ধে নিহত মার্কিন সৈন্যের সংখ্যা ছিলো ১৮ ও আহত হয়েছিলো ৭৩ জন। দুই দিন পর মোগাদিশুর অপর এক মর্টার হামলায় আরো একজন মার্কিন সৈন্য নিহত এবং একজন আহত হয়। জাতিসংঘের সৈন্যের মধ্যে শুধু মালয়েশিয়ার একজন সৈন্য নিহত হয় ও অপর ৭ মালয়েশীয় সৈন্য ও ২ পাকিস্তানি সৈন্য আহত হয়।
১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে ঐক্যজোটের দল ইউনাইটেড সোমালি কংগ্রেস সোমালিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সিয়াদ বারেকে উৎখাত করে। সেই বিপ্লবের পর ঐক্যজোটের সরকার দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন আলি মাহদি মুহাম্মদ যিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন এবং অপর অংশের নেতৃত্ব দেন মোহাম্মদ ফারাহ এইদিদ। সবমিলিয়ে সোমালিয়ায় তখন মোট চারটি বিরোধী দলের সৃষ্টি হয়েছিল। সেগুলো হচ্ছে ইউনাইটেড সোমালি কংগ্রেস USC, সোমালি স্যালভেশন ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট SSDF, সোমালি প্যাট্রিয়টিক মুভমেন্ট SPM, এবং সোমালি ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট SDM। সবগুলো দলই সোমালিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিল। ১৯৯১ সালের জুনে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা পরে ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে জুন মাসেই পঞ্চম একটি দল সোমালি ন্যাশনাল মুভমেন্ট SNM সোমালিয়ার উত্তরপশ্চিম অঞ্চল দখল করেন। এসএনএম এই অংশের নতুন নাম দেওয় সোমালিল্যান্ড প্রজাতন্ত্র। এটির রাষ্ট্রপতি হন আবদেল রহমান মোহাম্মদ আলি।

ছবি তথ্য্_ইন্টারনেট !!

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:

এই ইউ-এইচ ব্ল্যাক হক-৬০ হেলিকপ্টার ফ্যাক্টরীতে অ্যাসামবল করায় আমিও একজন ছিলামন ২০০৪ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত। যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রায় সব অপারেশনে এ (খুবই নিরভরশীল ও কার্যক্ষম) হেলিকপ্টার ব্যাবহারিত হয়ে থাকে।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৬

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ।ভালো থাকুন,শুভকামনা থাকল।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১০

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার তথ্যমূলক পোস্ট ।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো থাকুন শুভকামনা থাকল ।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:৩৪

হাকিম৩ বলেছেন: ভালো লাগল ইতিহাসটি জেনে ।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:৫৮

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ।

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩

ঝালমুড়ি আলা বলেছেন: সুন্দর যুদ্ধ ছিল ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: হুম হয়ত হতে পারে ।

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:১১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক নতুন তথ্য জানা হল ।
সোমালিয়ার সাম্পতিক কালে
ঘটে যাওয়া অনেক বিষয়ই
জানার বাইরে ছিল ।
জানার ক্ষেত্রে অনেক
আপডেট হল ।

ধন্যবাদের সাথে শুভেচ্ছা রইল ।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:২২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ডঃ এম এ আলী ভাই ।

৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৫

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:

ব্ল্যাক হক ডাউন নামে একটি মুভি তৈরি করা হয় সেই প্রেক্ষাপটে । চমৎকার পোস্ট ++

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই সৌরভ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.