নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গুজরাত সালতানাত এর ইতিহাস

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮


১৫৩৭ সালে দিউ অবরোধের সময় বাহাদুর শাহর মৃত্যু (১৬শ শতাব্দীর শেষের দিকে আকবরনামায় চিত্রায়িত)
গুজরাত সালতানাত ছিল ১৫শ শতাব্দীর প্রথম দিকে গুজরাতে প্রতিষ্ঠিত একটি স্বাধীন সালতানাত। ১৩৯১ সালে শাসক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা জাফর খানকে দিল্লি সালতানাতের পক্ষ থেকে গুজরাতের গভর্নর নিয়োগ দেয়া হয় ।জাফর খান পরবর্তীতে প্রথম মুজাফফর শাহ পাতনের নিকটে ফারহাত-উল-মুলককে পরাজিত করে শহরে নিজ রাজধানী স্থাপন করেন। ১৪০৭ সালে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তার নাতি প্রথম আহমেদ শাহ তার পরে সুলতান হন এবং তিনি ১৪১১ সালে সাবরমতি নদীর তীরে নতুন রাজধানী হিসেবে আহমেদাবাদ স্থাপন করেন। একে তিনি শহর-ই-মুয়াজ্জাম বা মহান শহর উপাধি দেন। প্রথম মাহমুদ শাহ বেগারহার সময় সালতানাতের সমৃদ্ধি সর্বো‌চ্চ শিখরে পৌছায়। ১৫০৯ সালে দিউর যুদ্ধের পর পর্তুগিজরা গুজরাত সালতানাতের কাছ থেকে দিউ ছিনিয়ে নেয়। ১৫৩৫ সালে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন গুজরাত আক্রমণ করেন। ১৫৭৩ সালে আকবর গুজরাতকে নিজ সাম্রাজ্যের সাথে একীভূত করে নেন। এরপর গুজরাত মুঘল সুবায় পরিণত হয়। শেষ শাসক তৃতীয় মুজাফফর শাহকে বন্দী করে আগ্রা নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫৮৩ সালে তিনি পালিয়ে যান এবং অভিজাত ব্যক্তিদের সহায়তায় সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সিংহাসন পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। এরপর আকবরের সেনাপতি আবদুর রহিম খান-ই-খানান তাকে চূড়ান্তভাবে পরাজি করেন।
গুজরাত যা বর্তমান ভারতের সর্বপশ্চিমে অবস্থিত রাজ্য। এই রাজ্যের অধিবাসীরা প্রধানত গুজরাতি। লোথাল এবং ধোলাবীরার মতো প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার কয়েকটি কেন্দ্র এই রাজ্যে অবস্থিত। প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাসে গুজরাত এক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের অধিকারী। প্রাচীন ও বর্তমান ভারতের কয়েকটি প্রধান বন্দর এই রাজ্যে অবস্থিত। এই কারণে গুজরাত প্রাচীন কাল থেকেই ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্রও বটে। বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বন্দর লোথালও এই রাজ্যে অবস্থিত ছিল। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্থপতি মহম্মদ আলি জিন্নাহ ছিলেন গুজরাতি। বর্তমানে গুজরাতের অর্থব্যবস্থা ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থব্যবস্থাগুলির অন্যতম।
মুজাফফর শাহর তাম্র মুদ্রা
প্রথম মুজাফফর শাহ
দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুগলক ১৩৭৭ সালে মালিক মুজাফফর যিনি ফারহাত-উল-মুলক নামেও পরিচিত ছিলেন এবং রাস্তি খানকে গুজরাতের গভর্নর নিয়োগ দেন। ১৩৮৭ সালে তার বদলে সিকান্দার খানকে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু ফারহাত-উল-মুলক নির্দেশ অমান্য করে সিকান্দার খানকে হত্যা করেন। ১৩৯১ সালে সুলতান নাসিরউদ্দিন মুহাম্মদ বিন তুগলক জাফর খানকে গুজরাতের গভর্নর নিয়োগ দেন এবং তাকে মুজাফফর খান উপাধি দেন। ১৩৯২ সালে মুজাফফর খান ফারহাত-উল-মুলককে পাতনের নিকটে কাম্বইয়ের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং শহরটি অধিকার করেন।১৪০৩ সালে তার পুত্র তাতার খান তাকে দিল্লির দিকে অগ্রসর হওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তিনি তাতে স্বীকৃতি দেননি। ফলে তাতার খান তাকে বন্দী করে নিজে মুহাম্মদ শাহ উপাধি ধারণ করে সুলতান হন। এরপর তিনি দিল্লির দিকে অগ্রসর হন। কিন্তু পথিমধ্যে তার চাচা শামস খান তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেন। এরপর মুজাফফর শাহ মুক্তি পান এবং পুনরায় দায়িত্বগ্রহণ করেন। ১৪০৭ সালে তিনি নিজেকে সুলতান ঘোষণা করেন। তিনি সুলতান মুজাফফর উপাধি ধারণ করেন এবং নিজ নামে মুদ্রা চালু করেন। ১৪১১ সালে তার মৃত্যুর পর তার নাতি ও তাতার খানের পুত্র আহমেদ শাহ সুলতান হন ।
১৫শ শতাব্দীতে গুজরাত সালতানাত
আহমেদ শাহর মুদ্রা
প্রথম আহমেদ শাহ
সিংহাসনে বসার পর আহমেদ শাহ তার চাচাদের বিদ্রোহের মুখোমুখি হন। তার বড় চাচা ফিরোজ খান বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন এবং নিজেকে সুলতান ঘোষণা করেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত ফিরোজ এবং তার ভাইয়েরা আহমেদ শাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এই বিদ্রোহের সময় মালওয়ার সুলতান হোশাং শাহ গুজরাত আক্রমণ করেছিলেন। তাকে প্রতিহত করা হলেও ১৪১৭ সালে তিনি কানদেশের শাসক নাসির খানের সাথে পুনরায় আক্রমণ করেন এবং সুলতানপুর ও নন্দুরবার অধিকার করে নেন। গুজরাতের সেনারা তাদের পরাজিত করে। পরবর্তীতে ১৪১৯, ১৪২০, ১৪২২ ও ১৪৩৮ সালে আহমেদ শাহ চারবার মালওয়ায় অভিযান চালান।১৪২৯ সালে ঝালাওয়ারের কানহা রাজা বাহমানি সুলতান আহমেদ শাহর সহায়তায় নন্দুরবার ধ্বংস করেন। তবে গুজরাতের সেনারা বাহমানিদের পরাজিত করে এবং বাহমানিরা দৌলাতাবাদে পালিয়ে যায়। বাহমানি সুলতান আহমেদ শাহ অতিরিক্ত সেনা পাঠান এবং কানদেশের সেনারা তাদের সাথে যোগ দেয়। এবারও গুজরাতের কাছে তারা পরাজিত হন।

শেষপর্যন্ত আহমেদ শাহ বাহমানিদের কাছ থেকে থানা এবং মাহিম অধিকার করতে সক্ষম হন।শাসনামলের শুরুর দিকে তিনি আহমেদাবাদ শহর প্রতিষ্ঠা করেন এবং পাতন থেকে এখানে রাজধানী স্থানান্তর করেন। তার শাসনামলে আহমেদাবাদ জামে মসজিদ ও তিন দারওয়াজা নির্মিত হয়।১৪৪৩ সালে সুলতান আহমেদ শাহ মারা যান এবং এরপর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র মুইজউদ্দিন মুহাম্মদ শাহ সুলতান হন।
প্রথম মুহাম্মদ শাহ
মুহাম্মদ শাহ ইদার আক্রমণ করে এর শাসক রাজা হরি রায়কে তার আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করেন। এরপর তিনি রাওয়াল থেকে কর আদায় করেন। ১৪৪৯ সালে তিনি চাম্পানিরের দিকে যাত্রা করেন। কিন্তু চাম্পানিরের শাসক রাজা কনক দাস মালওয়া সুলতান মাহমুদ শাহ খিলজির সহায়তায় তাকে প্রতিহত করেন। ফেরার পথে মুহাম্মদ শাহ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৪৫১ সালের ফেব্রুয়ারি মারা যান। এরপর তার পুত্র দ্বিতীয় কুতুবউদ্দিন আহমেদ শাহ সুলতান হন।
মাহমুদ বেগারহা
দ্বিতীয় কুতুবউদ্দিন আহমেদ শাহ ১৪৫৮ সালে মারা যান। এরপর অভিজাত ব্যক্তিরা তার চাচা দাউদ খানকে সিংহাসনে বসায়। কিন্তু অল্প সময় পড়ে তারা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং দ্বিতীয় মুহাম্মদ শাহর পুত্র ফাতেহ খানকে সিংহাসনে বসায়। ফাতহ খান সিংহাসনে বসার পর আবুল ফাতেহ মাহমুদ শাহ উপাধিধারণ করেন। কিন্তু তিনি মাহমুদ বেগারহা নামে পরিচিত ছিলেন। বেগারহা অর্থ দুই দুর্গ বিজেতা। গিরনার এবং চাম্পানির দুর্গ জয়ের পর এই নামে তিনি পরিচিত হয়ে থাকতে পারেন। ১৫১১ সালের ২৩ নভেম্বর মাহমুদ মারা যান।
দ্বিতীয় মুজাফফর শাহ
মাহমুদ বেগারহার পুত্র খলিল খান তার পিতার উত্তরসূরি হন এবং মুজাফফর শাহ উপাধি ধারণ করেন। ১৫১৯ সালে রানা সাঙ্গা মালওয়া ও গুজরাত সালতানাতে জোটবাহিনীকে পরাজিত করেন এবং মালওয়ার দ্বিতীয় মাহমুদ শাহকে বন্দী করেন। পরবর্তীতে রানা সাঙ্গা গুজরাত আক্রমণ ও লুন্ঠন করেন।মুজাফফর শাহ ১৫২৬ সালের ৫ এপ্রিল মারা যান এবং তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিকান্দার সুলতান হন।

তথ্য:




মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:


এইসব মোগল, গোগল, তুর্কী, ফুর্কীদের ইতিহাস খুবই ঝামেলার ইতিহাস।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৫

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: তবে পড়লে অনেক কিছু শেখা যায়। ধন্যবাদ ভাই চাঁদগাজী ।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪১

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: পড়া শেষ করলাম ........ #:-S

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসু মামা।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:০৭

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: +

ইতিহাস বিষয়ক পোস্ট পড়ে মন্তব্য করতে গিয়ে হা হয়ে যাই। এই পোস্ট গুলোয় পারফেক্ট মন্তব্য কী আসলে? B:-)

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রক্তিম দিগন্ত ।

৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪

চিন্তিত নিরন্তর বলেছেন: আপনার লেখাগুলো পড়ে ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৫

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সেটা আমার সৌভাগ্য ধন্যবাদ ভাই চিন্তিত নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.