![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(১)
মহান আল্লাহ মানব জাতিকে তার সৃষ্টির শ্রেষ্ট জীব হিসাবে ঘোষনা করেছেন পবিত্র কুরআনে।
পৃথিবীতে আল্লাহর ইচ্ছাতেই মানুষের আগমন ও বিদায় ঘটে। জন্ম ও মৃত্যুর উপর মানুষের কোন হাত নেই।
জন্মের পর মানুষ ছোট থেকে যত বড় হতে থাকে ততই সে নিজেকে বিস্তার করতে থাকে।
পৃথিবীতে মানুষ তার নিজস্ব সত্তাকে প্রকাশ করতে জীবন যুদ্ধে আমরন লড়াই করতে থাকে।
ভলভাবে বেঁচে থাকতে সুষম খাদ্য দ্রব্য থেকে শুরু করে আরাম আযেশ সুখ শান্তির জন্য
নিজের সত্ত্বার বিকাশ ঘটায়, কঠোর পরিশ্রম করে উপার্জন করে।
আমি শুধু মানব জীবনের চাওয়া পাওয়ার আশা আকাঙ্খার পরিপূর্ণতায় ভালবাসার দিকটা তুলে ধরলাম।
ভালবাসা বিধাতার দান, মানুষকে দেয়া বিধাতার শ্রেষ্ট উপহার। জন্মের পরে বাবা মায়ের ভালবাসা মানুষকে প্রথম বেঁচে থাকার পথ দেখায়।
বাবা মা আত্নীয় স্বজনের ভালবাসা পেয়ে প্রাপ্ত বয়সে মানুষ তার নিজস্ব ভালবাসার সত্ত্বার প্রতিফলন ঘটাতে চায়।
মানুষ নিজেকে প্রকাশ করতে তার অস্থিত্বকে টিকিয়ে রাখতে ভালবাসার আশ্রয় নেয়।
মানব জীবনে একবার না একবার কাউকে ভালবেসে নিজস্ব সত্ত্বার শক্তি বা সাহশ যোগাতে হয়।
তা না হলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা তার স্বার্থক হয়না।
আমরাও যুগ যুগান্তর ধরে পৃথিবীর ইতিহাসে ভালবাসার গল্প কাহিনী পড়ে আসছি শুনে আসছি।
ভালবাসায় অনেক মানুষের জীবনী লিপিবদ্ধ হয়ে আছে বিশ্বের ইতিহাসের পাতায়।
আজও আমাদের মানব জাতি সেই ভালবাসার সম্পর্কে জড়ায়। ভালবাসার সঠিক সঙ্গা এই পর্যন্ত কোন গবেষক বা মুনিষী আবিস্কার করতে পারেনি।
আর ভবিষতেও পারবে বলে মনে হয়না। তার পরেও অনেক গবেষক ভালবাসার অস্থিত্ব বুঝাতে নানাভাবে সঙ্গায়িত করার চেষ্টা করেছে।
আবেগ অনুভুতি অনুভব ইত্যাদি। তবে সবগুলোই মানুষের আত্নার সাথে যুক্ত বা অদৃশ্য এক বন্ধন, হৃদয়ের টান বা প্রানের সন্চার বলে মন্তব্য করে গেছে।
ভালবাসা, যার কোন রুপ, আকার, আকৃতি, অস্তিত্ব, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ,ব্যাস, পরিধি, দুরত্বের সীমানা কেউ নির্ধারন করতে পারেনি
তবুও সকলে এই অদৃশ্য ভালবাসাকে পৃথিবীতে সবথেকে বড় বলে দাবী করেছে।
ভালবাসার কোন স্হান কাল পাত্র, উচু নিচু বংশ, জাত ধর্ম বর্ণ, বরয়সের কোন সীমারেখা, অর্থাৎ কোন প্রকার বৈশিষ্ট্য দিয়ে নির্ধারন করে যায়নি।
ভালবাসা বিধাতার মহান দান তাই কখন কিভাবে কে কাহাকে ভালবেসে ফেলে তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল।
আজ আমাদের মানব জাতি ভালবাসাটাকে একটা বয়সের গন্ডিতে বেঁধে ফেলেছে।
যৌবন বয়সই হল একমাত্র ভালবাসার সময় আর যুবক যুবতিরাই হল ভালবাসার পাত্র পাত্রী।
আমি এত বিস্তারিত লিখতে পারবনা। শুধু পবিত্র এই ভালবাসা মানব জীবনের সাথে কিভাবে জড়াতে হবে তাই নিয়ে লিখব।
ভালবেসে কারো হাতে হাত রাখা অনেক সহজ কিন্তু ভালবেসে ধরা হাতটাকে শক্ত করে বেঁধে নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়া অনেক কঠিন।
ভালবেসে কারো সাথে সম্পর্ক গড়া অনেক সহজ কিন্তু ভালবেসে গড়া সম্পর্কটা মৃত্যু পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা অনেক কঠিন।
ভালবেসে কাউকে আপন করা অনেক সহজ কিন্তু ভালবেসে কারো আপন হওয়া অনেক কঠিন।
আর তাইতো ভালবেসে কেউ ভালবাসা না পেয়ে দুঃখ কষ্ট বুকে চেপে রেখে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে ধ্বংস করছে জীবন।
আবার কেউ ভালবাসা পেয়ে অবহেলা করে জীবন থেকে হারাচ্ছে ভালবাসার মানুষ। বড় অদ্ভুত এই ভালবাসা!
জীবনে কাউকে ভালবাসতে না পারলেও জীবন থেমে থাকেনা আবার কারো ভালবাসা না পেলেও জীবন অচল হয়না।
তবে কাউকে ভালবাসতে চাইলে জীবনের গতি অবশ্যই পাল্টে যায়। কেননা ভালবাসার তৃপ্তি জীবন ফুড়িয়ে গেলেও মিঠবেনা।
আজকাল ভালবাসা সবাই মনে করে বিয়ে পর্যন্ত। যৌবনে কাউকে ভালবাসল বিয়ে করে জীবন সঙ্গী হিসাবে আপন করে ঘর বাঁধল।
ভালবেসে বিয়ে করতে না পারলে বুঝি ভালবাসা শেষ। অর্থাৎ বিয়ে হল ভালবাসার শেষ পরিনতি।
আর এজন্য ভালবাসার মানুষটার অন্য জায়গায় বিয়ে মেনে নেয়া দুস্কর হয়ে উঠে প্রেমিক প্রেমিকার জন্য।
তিলে তিলে নিজের জীবন ধ্বংস করা নতুবা ভালবাসার মানুষটাকে স্বর্থপর, বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক বলা।
ভালবাসার অনেক গল্প ফেইস বুকে পড়ি। নিজের অভিজ্ঞতা হোক আর শুনা যারা লিখে কত কষ্ট তাদের বুকে !
ভালবাসার মানুষকে কত অপমানজনক, অশালীন, নোংরা, নিচু, ভাষায় তুলে ধরে। ভালবেসে কি শুধু তার দোষ ত্রুটি গুলো খোজ করে যুবক যুবতিরা ?
একটু আঘাত পেলেই শুরু হয় তাকে অপবাধ দেয়া। তাদের নিকট একটা প্রশ্নের উত্তর জানতে খুব ইচ্ছে হয়।
তারা কি সত্যি ভালবাসে ?
বাস্তব জীবনে আমরা যা কিছু দেখি তার ব্যতিক্রম আমরা কামনা করলে জীবন চলবে কি করে? আমরাতো বাস্তবে বহু স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভেঙ্গে যেতে দেখি।
ভালবাসার মানুষটাকে বিয়ে করে সারাজীবন ঘর করতে পারবে এমন গ্যারান্টি কয়জন প্রেমিক প্রেমিকা দিতে পারবে। মানুষের জীবনে অনেক কিছুই চাওয়ার থাকে।
সব চাওয়াই জীবনে পূর্ণ হয়েছে এমন ব্যাক্তিই বা বিশ্বে কয়জন ইতিহাসে রয়েছে। ভালবাসাও মানব জীবনে চাওয়ারি একটা অংশ মাত্র।
বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যত মুনিষী বা গবেষক রয়েছে তারা মানব কল্যানে যা কিছু আবিস্কার করেছে সফলতা পেতে সারাজীবন সাধনা করেছে।
দুনিয়ার সুখ শান্তি জীবন থেকে অনেকেই বিসর্জন দিয়েছে। আর ভালবাসাতো দুনিয়ার সকল বস্তুর উর্ধে।
যা দেখা যায়না ধরা যায়না স্পর্শ করা যায় না তার জন্য মানুষকে কতটা সাধনা করা প্রয়োজন এবার ভাবুন।
মানুষের গড়া সম্পর্কের চেয়ে বিধাতার গড়া প্রানের মূল্য অনেক বেশি। ভালবাসা দিয়ে একটা প্রান আরেকটা প্রানকে বাঁচিয়ে রাখে।
যে ভালবাসায় প্রানের মূল্য থাকেনা তা কি করে ভালবাসা হয়! ভালবেসে নিজের প্রানটা রক্ষা করতে যে জানে সেইতো আরেকটা প্রানের মূল্য বুঝে।
ভালবেসে যারা প্রতারনা করে ধোকা দেয় তারা কখনো নিজের প্রানের কথাই চিন্তা করেনা, তারা কিভাবে ভালবাসার মানুষটির প্রানের চিন্তা করবে ?
পৃথিবীতে ভালবাসাই হল একটা মাধ্যম যা দ্বারা আরেকটা প্রানের দুঃখ কষ্ট বেদনা উপলব্দি বা অনুভব করা যায়।
ভালবেসে কাউকে প্রতারিত করে যে মানুষটার প্রানে শান্তি সে মানুষটার জন্য কেন মানুষ ভালবেসে নিজের জীবনটাকে নষ্ট করে।
ভালবাসা দোকানের কোন পন্য নয় যে দামের বিনিময়ে পন্যর সঠিক ওজন দেখে লেনদেন করতে হবে। যে ভালবাসতে জানে সে প্রতিদানের আশায় পূর্নতার লোভ করনা।
আমি কাউকে ভালবাসতে পেরেছি কিনা এটাই হল ভালবাসার একমাত্র উপকরন আমি কারো ভালবাসা পেলাম না সেটা নয়।
ভালবাসা ভালবাসে শুধুই তাকে ভালবেসে ভালবাসা বেঁধে যে রাখে।
আজকাল কি অদ্ভুত রকম ভালবাসা দেখা যায়। ছেলে বা মেয়ে যেই হোকনা কেন দীর্ঘদিনের ভালবাসার মানুষটাকে যদি বিয়ে করে
সারা জীবনের জন্য না পায় তাহলে দুঃখ কষ্ট বুকে নিয়ে নিজেকে শেষ করা বা ভালবাসার মানুষটাকে নানা ধরনের অশালীন মন্তব্য করা।
প্রতারক বেঈমান স্বর্থপর ন্ষটা আরো কত নোংরা উক্তি করে ভালবাসার মানুষটাকে। কিন্তু ভালবেসেতো দুটি প্রানের বাঁধন মৃত্যু পর্যন্ত বাঁধতে হয়।
আজকাল ছেলে মেয়েগুলো ভালবেসে বিয়ের সময় আলাদা হওয়াটা মেনে নিতে পারেনা অথচ তারা এটাও জানে বিয়ের পর স্বামি স্ত্রীর সম্পর্কও অনেক সময় টিকে থাকেনা।
ভালবাসার মানুষটা অন্যত্র বিয়ে মেনে নেয়া খুব কষ্টের বলে যারা মনে করে, যারা মনে করে বিয়ে করতে না পারলে ভালবাসা নষ্ট হয়ে যায়
তারা কখনও ভালবাসতে পারাতো দুরের কথা ভালবাসার মানে কোনদিন বুঝে না
আর তাইতো তারা বিয়ের পরে ভালবাসার সন্মান হানি করে নিজের ভালবাসার ঢোল পিটাতে থাকে।
যে ভালবাসায় প্রানের ছোয়া থাকে সে কখনো ভালবাসার মানুষটির সন্মান নষ্ট করে ক্ষতি করার চিন্তা করে না।
যত দুঃখ কষ্ট যন্ত্রনা হোকনা কেন বুকের মাঝে চেপে ধরে শুধুমাত্র ভালবাসার মানুষটার সুখ আনন্দ চিন্তা করে।
আজকাল ভালবাসায় দেখা যায় কৃপনতা কেউ একটু ভালবাসলতো একটু প্রতিদান আশা করে। ভালবেসে যতটুকু দিতে চায় ঠিক ততটুকুই আশা করে।
এযেন দোকানির কাছ থেকে ধর কষাকষি করে পন্য কিনার মত। যেই দাম ধরে না মিলল অমনি আবার অন্যজনের নিকট ভালবাসার প্রস্তাব দেয়া।
আবার এরকম ভালবাসার জন্য কারো কারো কষ্ট আপন করে জীবন নষ্ট করা। ভালবাসা বিধাতার রহমত অসীম দান আর মানুষের জন্য সাধনা।
সাধনা ভালবাসাকে জয় করে দেয়। ভালবাসার সাধনা মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যেতে হয়। বিয়ে করা পর্যন্ত নয় কেননা বিয়ের সম্পর্কও হয়তো কখনো ভেঙ্গে যায়।
আমি সবাইকে অনুরোধ করব ভালবাসার নোংরামি খেলায় না মেতে ভালবাসার সাধনা করতে।
যে প্রানে ভালবাসার জন্য প্রার্থনা আরাধনা থাকে সেই পারে সত্যিকারের ভালবাসতে।
©somewhere in net ltd.